somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

কাজী আবু ইউসুফ (রিফাত)
জীবনের স্বপ্নগুলো স্বপ্নেই ভেসে বেড়ায়...বাস্তবে ধরা দেয় না!, তবুও স্বপ্ন দেখি...ঘুম থেকে জেগে উঠি, আশায় বুক বাঁধি ...ভুল-ত্রুটি শুধরে নতুনে পথ চলার।

তোমাকে দেখেছি শরতের স্নিগ্ধতায়! পাখির চোখে আর স্বপ্নঘুড়ির ডানায় (একটি ভ্রমণ বিষয়ক পোস্ট)

১৪ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১১:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
১ম পর্বঃ

চল যাব তোকে নিয়ে এই নরকের অনেক দূরে .....
এই মিথ্যে কথার মিছে শহরের সীমানা ছাড়িয়ে....




এই শরতে মন জানি কেমন পালাই পালাই করছে। ইচ্ছে করছে এক ছুটে চলে যাই পাহাড়ে। তারপর সেখান থেকে গাড়িপথে এ পাহাড়, সে পাহাড় ডিঙ্গিয়ে, নদী-লেকের আশ্চর্য ল্যান্ডস্কেপ ছুঁয়ে আরও গহিনে।





সত্যিই তো !এই ঢাকা শহরে আমার নিস্পেষিত মন আর সকাল-সন্ধ্যা নাগরিক কলুষিত জীবন থেকে যখন প্রতিদিনকার সূর্যদয়-অস্ত দেখা স্মৃতি থেকে বিলীন হয়ে যাচ্ছে তখন আমরা ক'জন মিলে হুট করেই সিদ্ধান্ত নিলাম যে, পাহাড়ে যাব! বন্ধু-বান্ধব, অফিস সহকর্মী পরিবারসহ মোট ১৭ জনের একটি টিম। তো উদ্দেশ্য খাগড়াছড়ি। না না, পথচলা এখানেই শেষ হবে না। এরপরও খাগড়াছড়ির লুকিয়ে থাকা অঢেল সৌন্দর্যসুধা পান করতেই হবে...পাহাড়-সমতল-ঝর্ণার অপরূপ সৌন্দর্য অবলোকন-অবগাহন আর স্মৃতিতে সংরক্ষণ ও পরবর্তীতে অতীষ্ঠ জীবনে রোমন্থন।





খাগড়াছড়ির নামকরণঃ
অসংখ্য খাগড়াগাছ ছিল ছড়ার তীরে। এই খাগড়াগাছ আর ছড়া থেকে নাম হয় খাগড়াছড়ি।






ঐতিহাসিক ঘটনাবলীঃ

বৃটিশ সরকার কর্তৃক ১৮৬০ সালে স্বতন্ত্র জেলা ঘোষণা করার আগে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছিল বৃহত্তর চট্টগ্রামের একটি অঙ্গ। পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা ০৩টি মহকুমা নিয়ে গঠিত ছিল। মহকুমাগুলি ছিল রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি। রামগড় মহকুমা ০৩টি থানা নিয়ে গঠিত ছিল। থানাগুলি ছিল রামগড় সদর, মহালছড়ি ও দীঘিনালা। খাগড়াছড়ি তৎকালীন মহালছড়ি থানাধীন একটি ইউনিয়ন ছিল। পরে ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দে খাগড়াছড়িকে থানায় উন্নীত করা হয়েছিল। অতঃপর ১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দের ০১ নভেম্বর তারিখে খাগড়াছড়ি পূর্ণাঙ্গ জেলায় রূপান্তরিত হয়। প্রাচীন জনপদ ও নগরী হিসেবে রামগড় নামে জেলা ঘোষণা করাটা স্বাভাবিক হলেও খাগড়াছড়ির ভৌগলিক অবস্থান, পারিপার্শ্বিক অবস্থা, যোগাযোগ সুবিধা প্রভৃতি রামগড়ের চেয়ে অধিকতর সুবিধাজনক স্থান বিধায় সরকার খাগড়াছড়িকে জেলা ঘোষণা করে। খাগড়াছড়ি নামের উৎপত্তি হয়েছিল নল খাগড়ার বন থেকে। খাগড়াছড়ি সদর শহরের বুক চিরে একটি ছড়ানদী বহমান রয়েছে। অতীতে উক্ত ছড়ানদীর দু’পাড়ে গভীর নলখাগড়ার বন ছিল। এই নল খাগড়ার বন থেকে খাগড়াছড়ি নামের উৎপত্তি। খাগড়াছড়ির প্রাচীন নাম ছিল তারক।





পাহাড়ে যাত্রাঃ

গত ০৫-১০-২০১১ তারিখে রাত ১১:৩০ মিনিটে গাড়ী গাবতলী থেকে ছাড়ার সময় থাকলেও সৌভাগ্যবশত সাধের রাজধানীর সীমানা থেকে মুক্ত হতে পেরেছি রাত ২:১৫ মিনিটে তখন আমরা কাঁচপুর ব্রিজে। ঘুমঘুম চোখে আমরা যখন কুমিল্লার বাইপাসে তখন হঠাৎ করেই গাড়ীর সমস্যা দেখা দিল একরাশ বিরক্তি নিয়ে সবাই গাড়ী থেকে নামলাম কিছু হালকা চা-নাস্তা সারতে একটু প'রেই মুয়াজ্জিনের কন্ঠে সু-মধুর ফজরের আযান ভেসে আসলো ভোরের শীতল হাওয়ায় আর আমাদের গাড়ী আবার চলতে শুরু করলো এক সময় করের হাট পার হয়ে আমরা যখন খাগড়াছড়ির দিকে ছুটে চললাম তখন সূয্যিমামা তার আলোর দৃীপ্তিকণার বিচ্ছুরণে রাস্তার দু'পাশের পাহাড়ের উপর সবুজ গালিচায় এক অপরূপ প্রাকৃতিক দৃশ্যের পর্দা মেলে ধরলো আমাদের দু'চোখে সারারাতের ক্লান্তি নিমিষেই উধাও .......কেউ কেউ গান ধরল.....ঐ দূর পাহাড়ের ধারে..........






এভাবে মজা করতে করতে একসময় ঐতিহাসিক রামগড় এলাকায় আমাদের প্রবেশ। রামগড়ে রাস্তার পাশের নদীর ওপাড়ে ভারত এপাড়ে বাংলাদেশ রামগড়-খাগড়াছড়ি রাস্তা পাশেই পরে যাওয়ার সময় দেখে নিতে ভুলবেন না প্রায় ৩-৪ কিঃমিঃ রাস্তার পাশে রামগড় চা-বাগান যেন পাহাড়ের গায়ে সবুজের গালিচা।





অন্তত কয়েকশ মোড়, পাহাড়ি রাস্তার চড়াই উতরাই অভিবাদন জানায় খাগড়াছড়ি পর্যন্ত। সুর্যের আলো আর মেঘের ছায়ার আলো-আঁধারিতে খাগড়াছড়ি রাস্তার দুই পাশে যেন এক মায়াবী রূপ ধারণ করেছে। হা করে এর অপরূপ রূপ দেখতে থাকলাম। মনের অজান্তেই আমাদের গাড়ী এসে পৌঁছলো পর্যটন মোটেলের সামনে।





সবাই হৈ-হুল্লোর করতে করতে গাড়ী থেকে নেমে সোজা মোটেল লবিতে। আমাদের দলের সদস্যদের ক্যামেরাগুলোর ঘুম ভাঙ্গলো ক্লিক, ক্লিক শব্দে যে যার মতো করে মোটেল গেট, লবি, বারান্দা, পাশে বয়ে চলা ছোট্ট নদীর ধারে ফটোসেশনে ব্যস্ত হয়ে পড়লো।






টিম ম্যানেজার মোটেলের একটি রুমে সবার ব্যাগ রেখে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করা জন্য তাঁড়া দিতে লাগলো ফলে আমাদের টিমের ভাবীজানের তাঁদের কাঙ্খিত রূপচর্চায় ব্যাঘাত ঘটলো তারপরও প্রায় ৬০মিনিট অতিবাহিত হওয়ার পর আমরা খাগড়াছড়ি বাজারের উদ্দ্যেশে রওনা হলাম মোটেল থেকে মাত্র ২ কিঃমিঃ পথ, পথে যেতে যেতে পড়ল কলেজ, পৌরসভা কমপ্লেক্স, (উল্লেখ্য, পর্যটন মোটেলের উল্টো দিকে বাংলাদেশ আনসার বাহিনীর একটি সংরক্ষিত পার্ক এবং মোটেলের আগে রাস্তার পাশে চির নিন্দ্রায় শায়িত খাগড়াছড়ি প্রশাসনের ব্যবহৃত হাতির কবর যা ইটের দেয়াল দিয়ে ঘেরা রয়েছে-দেখতে ভুলবেনা) মুক্ত মঞ্চ যা শাপলা চত্তর নামে পরিচিত (যদিও শাপলা চত্তরের সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ চলার কারনে আমরা কোন শাপলা দেখিনি। মোড়ে হোটেল ভাতঘর আমরা সবাই খাবার সেরে নিলাম। (চলবে...................)
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১১:৪৪
৫টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×