আবার ক্রাশ লিস্ট নিয়ে হাজির। এবারো বিভিন্ন রূপের, গুনের পুরুষদের সমাহার থাকছে। আমি কেন, কিভাবে ক্রাশিত হলাম তার বর্ননা থাকছে। সুন্দর সব ছবি তো থাকছেই।
আগের পর্বগুলো:
আমার সেলিব্রেটি ক্রাশেরা (ফান পোস্ট)
আমার সেলিব্রেটি ক্রাশেরা (ফান পোস্ট) পর্ব দুই
আমার সেলিব্রেটি ক্রাশেরা পর্ব তিন (ফান পোস্ট)


নাম: সৌম্য সরকার।
পেশা: বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের ওপেনিং ব্যাটসম্যান।
ক্রাশের কারন: চেহারা না কেননা আমি বোকা বোকা চেহারা পছন্দ করিনা। কিন্তু ট্যালেন্ট আছে ছেলেটার। প্রথম কয়েকটা ম্যাচে ওর পারফরম্যান্স দেখে ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। তেড়েফুড়ে মেরে আউট! তামিম ইকবালের মতো! আমি মনে করতাম ওপেনিং ব্যাটসম্যান হিসেবে আমাদের এমন কাউকে দরকার ছিল যে মেপে মেপে সিংগেলস নেবে এবং স্ট্রাইক রোটেট করে তামিমকে দেবে। আরেকজন মারকুটে হলে দুইজনই আউট হয়ে টিমের ওপরে প্রেশার হবে। প্রথমদিকে তাই হচ্ছিল। কিন্তু পাকিস্তানের সিরিজ এবং সাউথ আফ্রিকার সাথে সিরিজে ও যেভাবে খেলছিল! চোখে কোন ভয়ডর নেই, যা পাচ্ছে তাই সীমানার বাইরে পাঠাচ্ছে। ভালো বল, খারাপ বল সব সেইম ট্রিটমেন্ট পাচ্ছে। দুদিক থেকেই সমানতালে রান এসে কি সহজে বাংলাদেশ জিতে যাচ্ছিল! সাউথ আফ্রিকার সাথে সিরিজের এক সময় আমরা বড় ব্যবধানে সহজে জিতে যাচ্ছি তখন এক বিদেশি কমেন্টেটর বলছিলেন, "তামিমের এক ডাইহার্টেড ভক্ত আমাকে বলেছিল যে তামিমের মতো প্লেয়ার কয়েক জেনারেশনে একবারই আসে। এখন তোমরা এক রোয়ে দুজনকে পেয়ে গেছ!" শুনে খুব আনন্দ হয়েছিল। ওর পেরিস্কোপ শট দেখার জন্যে বসে থাকি যদিও উত্তেজনায় কাপতে থাকি আউট না হয় আবার। লাস্ট কিছু ম্যাচে ফর্মটা ভালো যাচ্ছে না। কিন্তু আশা করি কন্সিসটেনসি গেইন করবে ও। সেটাই মর্ডান ক্রিকেটের আসল চ্যালেন্জ!
নাম: সানজ জন।
পেশা: মডেল, অভিনেতা।
ক্রাশের কারন: প্রথম দেখেই আমি পাগল হয়ে গিয়েছিলাম। টল, ডার্ক, মাচো, মাসলস, সুঠাম দেহ, হেয়ারস্টাইল আমি আর কি কি বলব? আমাদের প্রথম পরিচয় হয় এই বৈশাখে যখন ওনাকে একটা বৈশাখি গানের মিউজিক ভিডিওতে দেখি। তারপরে একটা নাচের অনুষ্ঠানেও দেখেছি। নাচে দুর্দান্ত ছেলেটা। অভিনয় এখনো দেখিনি। তবে যা দেখেছি তাতেই মরেছি। রাতে আর ঘুম আসেনা। ওর কথাই সারাক্ষন ফ্যানের মতো মাথায় বনবন করে ঘুরতে থাকে। মনে এক অজানা অনুভূতি হাহা। না সিরিয়াসলি, ওনার যে লুক, এটিটিউড তাতে চেষ্টা করলে মিডিয়া জগৎ এ অনেক উপরে উঠতে পারবেন। কিন্তু চেষ্টা থাকতে হবে।
এই সেই মিউজিক ভিডিও যার কারনে আমি আর আমি নেই!

নাম: আশফাক রানা।
পেশা: মডেল।
ক্রাশের কারন: আমার সাধারনত এত ফর্সা ছেলেদের একটু মেয়েলি মনে হয়। কিন্তু এই ছেলেটা যে কি ম্যানলি এবং হ্যান্ডসাম! নাক, চোখ, হাসি আলাদা করে দেখার মতো। চাপা দাড়িতে আরো ভালো লাগে। আর চেহারায় একটা ভদ্রতার ছাপ আছে। ওকে একটা মিউজিক ভিডিওতে প্রথমে দেখি। খুব সাদামাটা বেকার ছেলের রোল ছিল সেটাতে। আমার যে কি মিষ্টি লেগেছিল ওর অভিনয়! ঔ ভিডিওটা দেখলে পৃথিবীটা বেশি সুন্দর লাগে, উড়তে ইচ্ছে করে, মেঘে ভেসে বেড়াতে ইচ্ছে করে। এটাই কি ভালোবাসা? হাহা। জোকস আর পার্ট, ছেলেটার মধ্যে আসলেই একটা ব্যাপার আছে। বাংলা ছবিতে হিরোর সংকটে এই লুক, অভিনয় নিয়ে ও ধামাকা করে দিতে পারে। ওর জন্যে শুভকামনা।
ওকে প্রথম দেখার সেই ঐতিহাসিক ভিডিওটি।
নাম: নাইম।
পেশা: মডেল, অভিনেতা।
ক্রাশের কারন: একটা এডে প্রথম দেখেছিলাম। একদমই নেক্সট ডোর গাই চেহারা কিন্তু ভীষন কিউট! হাসিটা তো খুবই সারল্যে ভরা। জাগো ছবিতে ওর অভিনয় দেখেই প্রথম ক্রাশ খেয়েছিলাম। শেষে কুমিল্লা জিতে যাওয়ার পরে ওর খুশিতে কাঁদার দৃশ্যটা অসাধারন ছিল। আমি মনে করি ওকে কমার্শিয়াল হিরো হিসেবে না মানালেও অনেক ব্যতিক্রমধর্মী চরিত্রগুলো দক্ষভাবে করতে পারবে।
নাম: ইয়ানিক বিসন।
পেশা: অভিনেতা।
ক্রাশের কারন: কানাডায় Murdoch mysteries নামে একটা শো হয়। এই শোটা পুরোন আমলের এক ডিটেক্টিভকে নিয়ে যে নিজে অনেক কিছু আবিষ্কার করে কেস সলভ করে। অনেক ধর্মভীরু, সাহসী, সৎ, বুদ্ধিমান, ভাল স্বামী সবমিলিয়ে পার্ফেক্ট একজন মানুষ। আমেরিকান সব শো কানাডায় পপুলার। কিন্তু কানাডার বন্ধুভাবাপন্ন প্রতিবেশিরা দুই একটাই কানাডিয়ান শো দয়াপরাবশত হয়ে দেখেন। তার মধ্যে এটা একটা। শুধু আমেরিকায় না আরো দুনিয়ার বিভিন্ন দেশে এই শোটার গ্রহনযোগ্যতা আছে। এটাই বলে দিচ্ছে শোটা কত আকর্ষনীয়! আমি ওনার জেন্টেলম্যান চেহারা এবং অভিনয়ের বিরাট ফ্যান। শোটারও লয়াল অডিয়েন্স। শোটার প্রধান আকর্ষন উনি। ওনার সাথে সাথে শোটা আরো জনপ্রিয় হোক সে কামনা করি।
নাম: মোশারফ করিম।
পেশা: অভিনেতা।
সম্মানের কারন: ওনাকে প্রথম দেখি বিপাশা এবং তৌকিরের নাটকে একটা ছোট চরিত্রে। চরিত্রটা ছোট হওয়ার পরেও, অত বাঘা বাঘা তারকা থাকার পরেও অখ্যাত ওনার অভিনয়ে কেন যেন চোখ আটকে গেল। ওনার দু্ত্যি কোন অংশে কম মনে হয়নি সেদিন আমার কাছে। তারপরে অনেক জল গড়িয়েছে। উনি বাংলাদেশের ছোট পর্দার এক নাম্বার আর্টিস্ট হয়েছেন। কিন্তু অভিনয়ের মান শুধু বেড়েই গেছে। কোন ধরনের চরিত্র করে ফেলেননি উনি? সব ধরনের চরিত্র করেছেন। ওনার যে চেহারা, হাইট তাতে সব ধরনের চরিত্র করা কঠিন। অনেক হিরোইক রোলগুলো মানানোর কথা না ওনাকে। গ্ল্যামার ইন্ডাস্ট্রিতে বড্ড আনগ্ল্যামারাস উনি, বাহ্যিক রূপ থেকে কোন হেল্প পান না। কিন্তু অভিনয়ের অসম্ভব গুনের কারনেই মানিয়ে যান, ফিট হয়ে যান। উনি যখন কাঁদার সিনগুলো করেন মুগ্ধ হয়ে দেখি। চোখ একদম লাল হয়ে যায়, লাল হতে শুরু করতে করতে চোখ দিয়ে পানি পরে। কি ভীষন বাস্তব! আসলে থিয়েটার অভিনেতাদের একটা আলাদা মুন্সিয়ানা থাকেই। ওনাকে আমার অতিমানব মনে হয়! আমাদের দেশে আর্টিস্ট সংকটের কারনে যেভাবে জলদি জলদি করে একগাদি নাটক করতে হয় তাতে অভিনয়ের এমন বৈচিত্র, মান ধরে রাখতে তো অতিমানবই হতে হয়। ওনার জন্যে ক্রাশ শব্দটা ব্যবহার না করে সম্মান শব্দটা ব্যবহার করলাম, অনেক শুভকামনা ওনার জন্যে।
বি:দ্র: এটা শুধুই ফান পোষ্ট। এদের কাউকেই বিয়ে করার জন্যে আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি না। তবে এদের কাজ আগ্রহ নিয়ে দেখি। ওনাদের ট্যালেন্টকে সম্মান করি। বাস্তব জীবনে চেহারা না দেখে স্বভাব দেখে ভালবাসাই উত্তম।
