somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এক সন্ধ্যায় একই মঞ্চে নেমে এসেছিলো বনলতা আর সুরঞ্জনারা আমার আহ্‌বানে.....

১০ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


নেপথ্যে-
পিয়ানোর টুং টাং

সাথে কবিতা আবৃত্তি-পুরুষ কন্ঠে-
হাজার বছর ধরে আমি পথ হাঁটিতেছি পৃথিবীর পথে,
সিংহল সমুদ্র থেকে নিশীথের অন্ধকারে মালয় সাগরে
অনেক ঘুরেছি আমি; বিম্বিসার অশোকের ধূসর জগতে
সেখানে ছিলাম আমি; আরো দূর অন্ধকারে বিদর্ভ নগরে;
আমি ক্লান্ত প্রাণ এক, চারিদিকে জীবনের সমুদ্র সফেন,
আমারে দুদণ্ড শান্তি দিয়েছিল নাটোরের বনলতা সেন।
চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা,
মুখ তার শ্রাবস্থীর কারুকার্য; অতিদূর সমূদ্রের ’পর
হাল ভেঙে যে নাবিক হারায়েছে দিশা
সবুজ ঘাসের দেশ যখন চোখে দেখে দারুচিনি-দ্বীপের ভিতর,
তেমনি দেখেছি তারে অন্ধকারে; বলেছে সে, ‘এতদিন কোথায় ছিলেন?’
পাখির নীড়ের মতো চোখ তুলে নাটোরের বনলতা সেন।
সমস্ত দিনের শেষে শিশিরের শব্দের মতন
সন্ধ্যা আসে; ডানার রৌদ্রের গন্ধ মুছে ফেলে চিল;
পৃথিবীর সব রঙ নিভে গেলে পাণ্ডুলিপি করে আয়োজন
তখন গল্পের তরে জোনাকির রঙে ঝিলমিল;
সব পাখি ঘরে আসে-সব নদী-ফুরায় এ-জীবনের সব লেনদেন;
থাকে শুধু অন্ধকার, মুখোমুখি বসিবার বনলতা সেন।

আবৃত্তি শেষে উঠে এলো বনলতা।পরনে সবুজ বুনোলতা রং শাড়ি। দীঘল কালো এলো চুলে গোঁজা কমলা রং ডালিয়া। পাখির নীড়ের মত চোখ তুলে পরিচয় দিলো তার।

ডায়ালগ রেসিটেশন বাই আমি আর অভিনয়ে পূর্ব জনম থেকে উঠে আসা সেই বনলতা-
আমি বনলতা সেন। রক্তমাংসের মানবী নাকি নিছকই কবির কল্পনা, সে রহস্য আজও অজানাই থেকে গেছে। তবু প্রেমিকের বন্দনায়, চাওয়ায় আর সুপ্ত বাসনায় উঠে এসেছি আমি বার বার। আমি বনলতা সেন। জীবানানন্দ দাসের বনলতা সেন। হাজার বছর বেঁচে থাকতে চাই কোটি বাঙ্গালীর হৃদয়ে। তাদের ভালোবাসায়।

পরিচয় শেষে ফিরে গেলো বনলতা তার পূর্বাসনে। যাবার কালে হাতে তুলে নিলো ক্ষুদ্র দীপখানি। যে দীপালোকে আমরা স্মরি তাকে আজও আমাদের ভালোবাসায়, বন্দনায়।

কবিতা আবৃত্তি-পুরুষ কন্ঠে
সুরঞ্জনা, ওইখানে যেয়োনাকো তুমি,
বোলোনাকো কথা ওই যুবকের সাথে;
ফিরে এসো সুরঞ্জনাঃ
নক্ষত্রের রূপালি আগুন ভরা রাতে;
ফিরে এসো এই মাঠে , ঢেউয়ে;
ফিরে এসো হৃদয়ে আমার;
দূর থেকে দূর - আরো দূরে
যুবকের সাথে তুমি যেয়োনাকো আর।

আবৃত্তি শেষে হেঁটে এলো সুরঞ্জনা। পরণে গাঢ় নীলাম্বরী শাড়ি। খোঁপায় জড়ানো বেলফুলের মালা। বাংলার শ্বাসত রমনীর ছা্যা তার পুরো অবয়বে। এতদিনে জানালো সে তার মনের গোপন কথাগুলো, জানালো তার আক্ষেপ, তার দুঃখ ও বেদনার কথা-


ডায়ালগ রেসিটেশন বাই আমি আর অভিনয়ে জীবানানন্দের কবিতার বই থেকে সুরঞ্জনা

"না সুরঞ্জনারা ফেরেনা। ব্যার্থ প্রেমিক ডেকে ফেরে তাকে কিন্তু সুরঞ্জনারা ফিরেও তাকায় না। হে বিরহী যুবক শুনিনি সেদিন তোমার আঁকুতি। জানতে পাইনি তোমার বিরহের বাণী। নক্ষত্রের রুপোলী আগুন ভরা রাতে খসে পড়েছিলো একটি তারা আমার বাড়ির ছাদে। কিন্তু জানতে পারিনি সেদিন দূর থেকে দূরে বিলীন হয়ে গিয়েছিলো একটি করুন কান্নার সূর। ফেরেনি সুরঞ্জনা। দূর অজানায় হারিয়েছিলো সেও তারপর।"
ফিরে গেলো সুরঞ্জনা তার পূর্বাস্থানে-------------

হৈমন্তী বসেছিলো সিড়ির উপর আলগোছে, অবসরে। গেরুয়া রং শাড়ীতে জরীতে, স্বর্ণে, আভরনে যেন সেই জমিদার বাড়ির অপরূপা বঁধুটি।
নেপথ্যে গান বাজলো, "আমার জীবনপাত্র উচ্ছলিয়া মাধুরী করেছো দান,
তুমি জানোনাই তুমি জানো নাই তার মূল্যের পরিমান।"

হৈমন্তী উদাস হলো। উঠে দাঁড়ালো। এগিয়ে এলো। পুরোনো দিনের নস্টালজিয়ায় পেয়েছে বুঝি তাকে, সে শোনালো তার কিছু অতি একান্ত কথন।

ডায়ালগ রেসিটেশন বাই আমি আর অভিনয়ে রবিঠাকুরের হৈমন্তী-

"আমি হৈমন্তী। রবিঠাকুরের হৈমন্তী। আমার স্বামী চুপি চুপি আমার নাম দিয়েছিলেন শিশির। কেননা, আমার মাঝে দেখেছিলেন তিনি শিশিরের কান্নাহাসি। শিশিরের ভোরবেলাটুকুর কথা সেতো সকালবেলাতেই ফুরোই। আমিও ফুরিয়েছিলাম? তবে শিশিরস্নাত ভালোবাসাটুকুর বীজ পুঁতে ফেলেছিলাম ততদিনে কারো বুকের জমীনে আর তাই আমি আজও হৈমন্তী। সূর্যের মতো ধ্রুবসত্য হয়ে আজও বিরাজমান তোমাদের হৃদয়াকাশে। ধ্রুবসত্যের মত উজ্বল, প্রখর । আমি সেই হৈমন্তী।"
পূঁজোর ফুলের সাঁজি থেকে ফুল ছড়াতে ছড়াতে ফিরে গেলো সেও এরপর।


নেপথ্যে সঙ্গীত-

যারে হাত দিয়ে মালা দিতে পারো নাই
কেনো মনে রাখো তারে?

হাতে নজরুলের সেই চিঠি। অলস অন্যমনে বসে আছে আজ নার্গিস। সাদা জমীনে লাল পাড় গরদ শাড়ি, মাথায় বহুযতনে গড়া বেনীখোঁপা। আজও কি অপেক্ষায় আছে সে ? বিদ্রোহী কবি নজরুল ফিরবে কখনও। ডাকবে তার প্রিয়তমাকে?

ডায়ালগ রেসিটেশন বাই আমি আর অভিনয়ে নজরুলের নার্গিস-
"নজরুল আমি ভুলিনি তোমার সেই চিঠি। যে চিঠিতে তুমি লিখেছিলে " অন্তর্যামী জানেন, তোমার জন্য আমার হৃদয়ে কী গভীর ক্ষত, কী অসীম বেদনা! তোমার অগ্নিবীণা আজও বাজে আমার হৃদয়ে। তুমি আজও ধুমকেতুর মত বিস্ময় আমার মনোভুমিতে। ১৬টি বছর অপেক্ষা করেছিলাম আমি।তোমাকে কি ভোলা যায়? তুমি অমর, তুমি অবিস্মরণীয়। আমার চিদাকাশে চিরজাজ্বল্যমান ধ্রুবতারা! "
ফিরে গেলো বুঝি সেই আক্ষেপ নিয়েই নার্গিস। বিদ্রোহী কবির মানষী, তার প্রিয়তমা।

পরণে মাখন রং গিলে করা পান্জাবী, কুঁচানো ধুঁতির সাথে হাতে সুরার বোতল নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো দেবদাস। পারুর বিচ্ছেদ তাকে করেছে মৌন।
দুঃখী কিন্তু নিশ্চুপ। সেই মৌনব্রত দেবদাস আজ জানালো তার দুঃখ ও বেদনার কথা।

পঠন- পুরুষকন্ঠে আর অভিনয়ে শরৎচন্দ্রের সেই অভিমানী দেবদাস-

বড় প্রেম শুধু কাছেই টানেনা, দূরেও ঠেলে দেয়। পারু, ছেলেবেলার পুকুর ঘাটে সেই কানামাছি খেলা, আমার লুকোচুরির সাথী। আমার দুঃখ বেদনা, ভালোলাগা ভালোবাসায় কি করে জড়িয়েছিলি তুই বুঝিনি সেদিন। বুঝেছিলাম তখনই যখন তুই আমার থেকে অনেক দূরে। আমার ধরা ছোঁয়ার বাইরে।তবুও কি পেরেছিলো কেউ একটাদিনের তরেও আমার বুকের জমীন থেকে তোকে উপড়ে ফেলতে? পারেনি, পারবেও না কেউ কখনও। যুগে যুগে প্রেমিকের ভালোবাসায়, বিরহ বেদনায়, বেঁচে রইবো আমি। আমি দেবদাস। অক্ষয় অমর প্রেমিক।


শেষ হলো আমার রচিত, সম্পাদিত, আবৃত, গীত (শুধু অভিনীত নয়) বাংলা সাহিত্যের অমর কিছু প্রেমিক প্রেমিকার নবরূপ উপস্থাপনার প্রচেষ্টা।

আমার জীবনে কিছু কিছু খুব ছোটখাটো কাজে আমি অপরিসীম আনন্দ পেয়েছি। মনে হয়েছে এসব আছে বলেই জীবন বুঝি এত সুন্দর। কিছুদিন আগে আমার সম্পাদিত ও পরিচালিত এই চরিত্রগুলির সফল মঞ্চায়নও আমার তেমনি একটি কাজ। সেই স্বর্নালী সন্ধায় কিছুক্ষনের জন্য মনে হয়েছিলো সত্যিই বুঝি বই এর পাতা থেকে উঠে এসেছিলো আমার অতি অতি প্রিয় সেসব প্রেমিক চরিত্রগুলি আমারই হাত ধরে। যাদের ভালোবাসায় একদিন আপ্লুত হয়েছি, যাদের দুঃখে একদিন কেঁদে বুক ভাসিয়েছি আবার যাদের বিরহের চাপা কষ্ট বয়ে চলেছি আজও বুকের মাঝে লুকানো ছোট্ট নৌকাতে। তাদেরকেই যেন টেনে এনেছিলাম আমি এই মাটির ধরিত্রীতে।

অনেকদিন হলো এই ব্লগের সাথে আমার সুখ দুঃখের খেলা। যা কিছু আনন্দের যা কিছু ভালোলাগার শেয়ার করেছি আমি এই ব্লগেই। খুব সযতনে চেপে গিয়েছি কিছু দুঃখ বা নিরানন্দ লাগার ব্যাপারগুলোকে। সেই দুঃখ বা নিরানন্দ ব্যাপারগুলি ঢেকে রেখেই আবারও শেয়ার করলাম আমার এই ভালোলাগার অবিস্মরনীয় মুহুর্তটুকু।


উপরে আমার পরিচালিত মঞ্চস্থ সেই উপাখ্যানের এক টুকরো ছবি দেওয়া হলো। আর নীচে শুরুর আগে পরিচালকের পরিচালনাপনার ও নির্দেশনার তিন টুকরো ছবি সংযোজিত হলো।:)


স্টেজে রেডি সবাই আর স্টেজের সামনে হাতে স্ক্রিপ্ট নিয়ে পরিচালক রেডী। "হুম সবাই রেডী তো তোমরা?"


"হ্যাঁ হ্যাঁ এইবার ঠিক আছে।"

এত এত অমর চিরজীবি চরিত্রের রুপসীদের সাথে পরিচালককেও কি একটু না সাজুগুজু করলে চলে? তাই পরিচালকেও এলোচুলে পরিয়ে দিলাম ফুল । কানে ঝুলিয়ে দিলাম দুল। আর এই সেই ছবির কাট্টাংশ।:)


:P:P:P

আমার এ লেখাটি উৎসর্গীত হলো আমার সুরঞ্জনা আপু, অনিন্দিতা, ইখতামিন, অপুভাইয়া, বৃতি আপুনি আর Rorschach পিচ্চিভাইয়াটার উদ্দেশ্যে।:)

সবাইকে অনেক অনেক ভালোবাসা ও রমজানের শুভেচ্ছা।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:০৮
১৮৯টি মন্তব্য ১৮৯টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×