somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বুলবুল পাখি ময়না টিয়ে ও পক্ষী বিশারদ আমি

২৫ শে মার্চ, ২০১০ বিকাল ৫:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বুলবুল পাখি ময়না টিয়ে,
আয়না যানা গান শুনিয়ে,
দুরদুর বনের গান .......নীলনীল নদীর গান .......

শৈশবে ছড়াগান শিখেছেন যারা তাদের মধ্যে হয়তো এমন কাউকেই খুঁজে পাওয়া যাবেনা যারা এ গানটা শোনেননি। অন্তরা চৌধুরীর ছেলেবালার মিষ্টি কন্ঠে গাওয়া এ গানটি যখনই শুনতাম আমি আমার ছেলেবেলায়, আমিও হারিয়ে যেতাম সেই দুরদুর বনে। নীলনীল জলের পাড় ছুঁয়ে ভেসে আসা স্নিগ্ধ মধুর মিষ্টি হাওয়ায় আমার ছোট্ট হৃদয় জুড়িয়ে যেত।

গানটির সাথে সাথে আমাদের বাসার বাগানে বেড়াতে আসা সব পাখিদের সাথে আমার সখ্যতা হয়ে গেলো। দিনের প্রথমভাগের অসনীয় বিরক্তিকর পড়ালেখার কবল থেকে মুক্তি পাওয়া মাত্র আমি ছুটতাম বাগানে। বাগানের কোন কোনায় দিনকানা পাখি ডাকছে, বুলবুলি পাখিটা আমগাছের কোন ডালটায় বসে গান গাইছে, কাকের বাসায় কোকিল কি চুরি করে ডিম পাড়তে এলো ? এসব ভাবনায় আর তারি সাথে নি্ত্য নতুন কর্মতৎপরতায় কেঁটে যেত আমার পুরো সকালবেলাটা।

সূর্য্যিমামা মধ্যাকাশে গড়িয়ে গেলেই বাগানে বা বাড়ীর বাইরে পা দেবার অনুমতি ছিলোনা।তখন আমি ভাব জমাতাম বারান্দায় এসে বসা শালিক চড়ুইদের সাথেই। কিন্তু ফলস্বরুপ আমি মোটামুটি বাংলাদেশের সব পাখীদের নামই জেনে ফেললাম। যেই পাখীটাই নতুন বা অন্যরকম লাগতো সেই পাখীটার নাম জানতে আমি চেঁচামেচি লাগিয়ে দিতাম । বাড়ীর সকলকে অস্থির করে তুলতাম 'শিঘ্রী আসো দেখে যাও, এটা কি পাখী? কি খায় ?কই থাকে ?কেমনে বাসা বানায়?' এসব প্রশ্নের পর প্রশ্ন করে জ্বালিয়ে মারতাম সবাইকে।:P

মনে পড়ে দুপুরে মা চাচীরা সবাই যখন ঘুমাতো আমি তখন কাউকে প্রশ্ন করার না পেয়ে, বাড়ীর সামনে দিয়ে যাওয়া রাজ্যের যত ফেরীওয়ালারা তাদেরকে হাঁকডাকে জড়ো করতাম আমাদের বারান্দার সামনে। সবাইকে ডাকাডাকি করতাম বেচারারা তাদের পণ্য বিক্রীর আশায় আমার কাছে ছুটে এসে আমার প্রশ্নবাণে জর্জরিত হয়ে পালিয়ে বাঁচতো।

এমনকি রাস্তা দিয়ে যাওয়া ভিক্ষুকদেরও রেহাই ছিলোনা আমার হাত থেকে। পরবর্তিতে তারা আমার ডাকে আর সাড়া দিতনা। এমনকি ভিক্ষুকরাও আমাদের বাড়ীর পথ মাড়াতোনা। অনেক দূর দিয়ে আমাকে এড়িয়ে সোজা মুখে হেঁটে যেত যেন আমাকে দেখতে পাননি উনারা , যেন আমার ডাক উনাদের কানেই ঢুকছেনা। সব্বাই যেন কোনো এক উপায়ে অগ্গাত উপায়ে বধির হয়ে গেছেন ।/:)
এই নিঠুর পৃথিবীর সবাই কি আর নাটক নভেলের অমলের দইওয়ালা বা মিনির কাবুলী ওয়ালা হয়?/:)

তবে আমার প্রশ্নের যন্ত্রনা সহ্য করার ক্ষমতা আমার বাবা মা ভাই বোনদের হবেনা বলেই হয়তো খোদাতায়ালা আমাকে এক বাড়ী ভর্ত্তি মানুষ দিয়েছিলেন। যেন আমি সব সময় কারো না কারো থেকে উত্তর পেয়ে যাই। তবে আমার সকল প্রশ্নের উত্তর অতি ধৈর্য্য সহকারে দিয়ে যেতেন আমার দাদীমা। তিনি কখনও কোনোদিন এতটুকু বিরক্ত হননি আমার নিত্য নতুন প্রশ্নবাণে।

একদিন বারান্দার এক কোনে বসে হাড়িপাতিল খেলার সময় গ্রীলে এসে বসলো এক পাখী। হলুদ বরণ তার গায়ের বাহার, কচকুচে কালো মাথা আর লাল টুকটুক ঠোট । এত অদ্ভুত সুন্দর পাখীটা। বসেই আমার দিকে তাকিয়ে সে ডেকে উঠলো এক অদ্ভুত সূরে। আমি সন্তর্পণে উঠে গিয়ে দাদমীমাকে গোসল থেকে টেনে আনলাম। ঠোঁটে আঙ্গুল দিয়ে ইশারায় তাকে চুপ করিয়ে, পাখিটাকে দেখিয়ে জানতে চাইলাম তার নাম।

আমি(ফিসফিস করে)- দাদীমা , দেখো কি সুন্দর পাখিটা! নাম কি এর?
দাদীমা( তিনিও ফিসফিস করে , যেন পাখিটা উড়ে না যায়)- এটার নাম কুটুমপাখি।
অমনি পাখীটা ডেকে উঠলো আবারও সেই অদ্ভুত সুরে। তারপরই ফড়ফড় করে উড়ে গেলো কোন অজানায়।
দাদীমা- শুনো এটা হলো কুটুম পাখী। আর ও কি বললো জানো? বললো "কুটুম আয়"। এই পাখী যার বাসায় আসে সেই বাড়ীতে অতিথ কুটুম আসে বুঝলা?আজকে দেখো কোনো কুটুম আসবে আমাদের বাড়িতে।
দাদীমা গোসলে ফিরে গেলেন আর আমি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা শুরু করলাম অতিথির জন্য। আমার কানে অদ্ভুত সেই সুর আর সেই সূর ধরে আমি নিজেই পাখিটার নকল করে ডেকে যেতে লাগলাম ;কুটুম আয়, কুটুম আয়।' আর আমার এমন ত্রাহী ত্রাহী রবে কুটুম না এসে পারে?:P
হাহাহাহা নিজেরই হাসি পায় ছেলেবেলার সেসব পাগলামী যখন মনে পড়ে।


পরে বড় হয়ে জেনেছি আমার সেই কুটুম পাখির পরিচয়। ইংলিশ নাম Black-headed oriol. পরিবার-Orioledae মাপ-২৫ সেঃমি কন্ঠস্বর- টুইট টু টু ( মোটেই আমার কুটুম আয় নয়/:)) ডিম পাড়ে ২ থেকে ৩টা ডিম ফুটে ১৩ থেকে ১৫ দিনে।
ভরদুপুরে কান পাতলেই বাগানে শুনতে পেতাম আরেক অদ্ভুত সূর । ঘু ঘু ঘু রঘু রঘু। মাঝে মাঝে গা ছমছম করতো। রাণীর মা আমাকে একদিন হাত ধরে নিয়ে গিয়ে দেখালেন সেই ডাকের সুত্রস্থল। দেখলাম একটা ছোট পাখী দেখতে অনেকটা পায়রা টাইপ। গাছের পাতার আড়ালে বসে বসে ধ্যানী মনিষীর মত এক মনে ঘু ঘু নাকি রঘু রঘু নাম জপ করছেন। আমাদের আভাস পেয়ে ঊনার তপঃ ভঙ্গ হলো। উনি জপ থামিয়ে দিলেন।
এই সেই ঘুঘুপাখি তবে আমার দেখা সেটার ছবি তুলে রাখিনি আমি। এটা নেট ঘুঘু:P

ইংলিশ নাম-Spotted-Dove, পরিবার -Columbidae
আকার- ৩০ সেঃমি।
আমার গানের সেই পাখি বুলবুল

ইংলিশ নাম-Redvented bulbul, পরিবার-Pycnonotidae,আকার- ২০ সেঃমি
এরপর আমার সাত বছরের জন্মদিনে নানু আমাকে দিলেন একটা সোনালী পেতলের খাঁচায় ময়না পাখি।:)
ময়নাটাকে কয়েকদিনের মাঝেই কথা শিখিয়ে ফেললো আমাদের বাসার রুস্তাম। ময়নাটা বাড়ির দরজায় কেউ এলেই অবিকল মানুষের গলায় বলে উঠতো কে এলো? মাঝে মাঝে বলতো "ভাত দাও।" বাসার সবার নাম জানতো সে। দুবছর ছিলো ময়নাটা আমাদের সাথে। এরপর ওর মাথায় এতবড় একটা টিউমার হলো। অনেক চিকিৎসার পরও বাঁচানো গেলোনা তাকে।:(
আমার প্রিয় ময়না পাখি

ইংলিশ নাম-Hill Myna পরিবার Sturnidae, আকার-২৮ সেঃমি

এরপর আমার মেজচাচার ছেলে( ঈমন ভাইয়া নয় :P) নিয়ে আসলো এক চকচকে সবুজ টিয়া পাখি। পাখিটার লালটুকটুকে ঠোঁট আর গলায় যেন গোলাপী মুক্তার মালা। কি যে সুন্দর পাখিটা! তার প্রিয় খাবার ছিলো মরিচ। বেশ কিছুদিন থাকবার পরও একদিন সকালে দেখি টিয়াটা খাঁচার দরজা কেঁটে কোথায় যেন উড়ে গেছে। আমার মন খারাপ আর আমার চাচাত ফুফাত ভাইজানেরা সেটা নিয়ে ঠাট্টা মস্করা শুরু করে দিলো। X((
পাখি নিয়ে নানা রকম গান তারা আমাকে দেখলেই ভ্যা ভ্যা করা শুরু করে দিলো। আমি সে সময়ই জানতে পেলাম বুলবুল পাখি ময়না টিয়ে ছাড়াও পাখি নিয়ে আরো সব গান। অবশ্য গান গুলোর সবই ছিলো দুঃখে হৃদয় ভরানো। :(
তখন ভাবতাম, কোন পাষানপাষানীরা যে লিখেছে সে সব গান? ওরা আমার দুঃখ দেখে, মজা করে আমাকে খেপাতো আর গাইতো যে সব গান,
খাঁচার ভিতর অচীন পাখি কেমনে আসে যায়?
পাখি খাঁচা ভেঙে উড়ে গেলে হবে অচেনা আবার এই গানটাও শোনা যেত ওদের মুখে, হলুদিয়া পাখি সোনারি বরণ। :( সবই আমাকে নিয়ে ঠাট্টা মস্করার উদ্দেশ্যে। অথচ টিয়া পাখির রঙটা ছিলো সবুজ।

তবে আমি যতই খেপতাম বা দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়েই থাকতাম না কেনো। মনে মনে গাইতাম সবুজিয়া পাখি পাতারি বরণ পাখিটি ছাড়িলো কে? :( আর আমার অনুসন্দ্ধিৎসু মন মোটেই বিশ্বাস করতে চাইতোনা যে পাখিটা আমার এত ভালোবাসা ছেড়ে নিজেই শেকল কেঁটে চলে গেছে। আমার মনেও একি প্রশ্ন জাগতো, পাখিটি ছাড়িলো কে? গোপনে ইনভেস্টিগেসনে মেতে উঠতাম অপরাধীকে ধরবার জন্য।যদিও জানি এটা শুনে সবাই হাসবে কিন্তু আমার মাঝেমাঝে দুঃখে কান্না আসতো সে সময়। :((

ইংলিশ নাম-Rose-ringed_Parakeet পরিবার-Psittacidae আকার- ৪২ সেঃমি।

এই হলো আমার পাখি উপাখ্যান। অনেক বক বক করেছি আরো বক বক করলে ছেলেবেলার ফেরীওয়ালাদের বিরক্ত করবার অভিগ্গতার হতে প্রাপ্ত শিক্ষার কোনোই লাভ আর আমার জীবনে হবেনা। তবে দোয়েল শ্যামা,লালমুনিয়া, মাছরাঙ্গা আর কাঠঠোকরা পাখিদের সৌন্দয্যে অভিভুত হবার কথা আবার পরে কোনো এক সময় লিখবোই। :)

এখন আপাতত মনে মনে গানটাই ঝালিয়ে নেই,
ঝিলমিল ঝিলমিল ঝরণা যেথায়,
কুলকুল কুলকুল রোজ বয়ে যায়
ব্যাঙ্গমা ব্যঙ্গমী গল্প শোনায়
রাজারকুমার পক্ষীরাজ চড়ে যায়,
ভোর বেলা পাখনা মেলে দিয়ে তোরা
এলি কি বলনা সেই দেশ পেরিয়ে?


:(
মনটা খারাপ হয়ে যাচ্ছে । আবার ইচ্ছে হচ্ছে ফিরে যাই সে সব দিন গুলোয়, যে সব দিনে পাখিদের গানে আমি হারিয়ে যেতাম কুলকুল নদীর গানে, ঝিলমিল ঝরণার ঝরণাধারায়।

সবার জন্য অন্তরা চৌধুরীর গাওয়া আমার মন ভুলানগ, প্রান জুড়ানো সেই গানটা।
Click This Link





সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে মার্চ, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:৪১
৭৪টি মন্তব্য ৭৪টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মি. চুপ্পুর পক্ষ নিয়েছে বিএনপি-জামাত; কারণ কী?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৬


বিএনপি গত ১৬ বছর আম্লিগের এগুচ্ছ কেশও ছিড়তে পারেনি অথচ যখন ছাত্ররা গণহত্যাকারীদের হটিয়েছে তখন কেন বিএনপি চু্প্পুর পক্ষ নিচ্ছে? অনেকেই বলছে সাংবিধানিক শুন্যতা সৃষ্টি হবে তার সংগে বিএনপিও... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এতো কাঁদাও কেনো=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৫:০৬




আয়না হতে চেয়েছিলে আমার। মেনে নিয়ে কথা, তোমায় আয়না ভেবে বসি, দেখতে চাই তোমাতে আমি আর আমার সুখ দু:খ আনন্দ বেদনা। রোদ্দুরের আলোয় কিংবা রাতের আঁধারে আলোয় আলোকিত মনের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগারেরা প্রেসিডেন্ট চুপ্পুমিয়াকে চান না, কিন্তু বিএনপি কেন চায়?

লিখেছেন সোনাগাজী, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৪



**** এখন থেকে ১৯ মিনিট পরে (বৃহ: রাত ১২'টায় ) আমার সেমিব্যান তুলে নেয়া হবে; সামুটিককে ধন্যবাদ। ****

***** আমাকে সেমিব্যান থেকে "জেনারেল" করা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিকাহের পরিবর্তে আল্লাহর হাদিসও মানা যায় না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪




সূরা: ৪ নিসা, ৮৭ নং আয়াতের অনুবাদ-
৮৭। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নাই। তিনি তোমাদেরকে কেয়ামতের দিন একত্র করবেন, তাতে কোন সন্দেহ নাই। হাদিসে কে আল্লাহ থেকে বেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ্‌ সাহেবের ডায়রি ।। পৃথিবীকে ঠান্ডা করতে ছিটানো হবে ৫০ লাখ টন হীরার গুঁড়ো

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৯:০২




জলবায়ূ পরিবর্তনের ফলে বেড়েছে তাপমাত্রা। এতে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। তাই উত্তপ্ত এই পৃথিবীকে শীতল করার জন্য বায়ুমণ্ডলে ছড়ানো হতে পারে ৫০ লাখ টন হীরার ধূলিকণা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×