somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

উজবেকিস্তান

২৬ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



পরিচ্ছন্ন শহর, অতিথিপরায়ন মানুষ আর মজাদার খাবারের দেশ হলো উজবেকিস্থান। আগে আমি সব সময় ভালো মানুষ হিসাবে স্বীকৃতি দিতাম ভুটানের মানুষকে এবার আরো একটি দেশের নাম আমার মনে যুক্ত হলো সেটা হলো উজবেকিস্তান। উজবেকিস্তানে আমাদের অবস্থান ছিল পাঁচ দিন।

প্রথম রাত রাজধানী তাসখন্দে থাকলেও প্রথম দিনটি ছিল উজবেকিস্তানে আমার সব থেকে চমকপ্রদ বরফ ঢাকা এলাকা আমির স বা আমিরসুইয়ে। আমির সুইয়ের পাহাড়ে ২৮টি স্কি ঢাল রয়েছে, স্কিয়ারদের জন্য এটাকে স্বর্গরাজ্যও বলা চলে। তুষারের ভেতরে পা ঢুকিয়ে হাটা আমার এই প্রথম, তাই বেশ রোমান্চিত ছিলাম আমির সুইয়ে।

দ্বিতীয় দিনটি ছিল আমাদের রাজধানী তাসখন্দ ঘুরে দেখা। এই শহর ২২০০ বছর উৎযাপন করেছে ২০০৯ সালে, এমন তথ্যটিই আমাকে বেশ রোমাণ্চিত করছিল। পরিচ্ছন্ন প্রাচিন এই শহরটি খুব ভালো লেগেছে, তবে খুব বনেদী মনে হয়নি। নিয়ম মানায় সব জায়গায় কঠোরতা রয়েছে। আর সৌদি আরবের মতো আজান দেওয়ার পর দোকান খুলে রেখে নামাজে চলে যাওয়াটাও আমার কাছে খুবই চমকপ্রদ মনে হয়েছে।

তৃতীয় দিনটি ছিল আমাদের সমরকন্দ শহর ঘুরে দেখা। উজবেকিস্তানের অন্যতম বৃহত্তম এবং গুরুত্বপূর্ণ এ শহর আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট, চেঙ্গিস খান, তৈমুর লংয়ের মতো বিশ্ববিজেতাদের উত্থান-পতনের সাক্ষী হয়েছে। ইতিহাস থেকে জানা যায়, সমরকন্দ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে রোম ও ব্যাবিলনের সমসাময়িক সময়ে। ২০০১ সালে ইউনেসকো বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় ২৭৫০ বছরের প্রাচীন সমরকন্দকে "বহু সংস্কৃতির মিলনকেন্দ্র" হিসেবে আখ্যায়িত করে। ইসলামী ইতিহাসের বিখ্যাত শহর এই সমরকন্দ।

চতুর্থ দিনটি ছিল আমাদের বুখারা নগরী ঘুরে দেখা। ইসলামী সভ্যতা-সংস্কৃতি ও শিক্ষা-গবেষণার প্রাণকেন্দ্র হিসেবেও পৃথিবীব্যাপী সমাদৃত বোখারা নগরী। হাদিসশাস্ত্রের সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য ও পরিচিত গ্রন্থ সহিহুল বোখারির রচয়িতা ইমাম মুহাম্মাদ বিন ইসমাইল (রহ.), আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের জনক ইবনে সিনা, বিখ্যাত সুফি বাহাউদ্দিন নকশবন্দি (রহ.)-সহ অগণিত আলেম, বিজ্ঞানী ও গবেষকের পদচারণে মুখরিত ছিল বুখারা।

আর বুখারা থেকে ৬০০ কিলোমিটার দূরত্বের তাসখন্দে ফিরে যেতেই আমাদের পঞ্চম দিন শেষ হয়েছে, কারণ তাসখন্দ থেকেই আমাদের রাতের ফিরতি ফ্লাইট ছিল।


(২/৩) রাতে শূণ্য ডিগ্রি তাপমাত্রা নিয়ে তাসখন্দ নামলেও ভোরে হোটেল উজবেকিস্তান লনে তুষারে ঢাকা সবুজ গালিচা দেখে সত্যিই আমি চমৎকৃত।




(৪) আমাদের দুই রাতের বাসস্থান ছিল রাজধানী তাসখন্দের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত হোটেল উজবেকিস্তান।


(৫) তাসখন্দের একটি বাজার, নাম চরসু বাজার।


(৬/৭) চরসু বাজারের বাহিরের ফুটপাতের দুটি দোকান।




(৮/৯) এখানকার প্রাচিন এবং বৃহৎ স্থাপনাগুলুর গঠনশৈলী প্রায় একই রকম। এখানে সমরকন্দ ও তাসখন্দের দুটি মসজিদ সাথে আরো কিছু স্থাপনা।




(১০) আমাদের দেশের দোয়েল পাখির প্রায় দ্বিগুণ বড় এই পাখিগুলো উজবেকিস্থানে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে।


(১১) এটা তাসখন্দের সর্বোচ্চ টাওয়ার (টিভি টাওয়ার), পাশের একটা পার্ক থেকে তোলা ছবি।


(১২) পিলাফ কোজোন রেস্তোরাঁ, তাসখন্দের সব থেকে বিখ্যাত রেস্তোরা। বিশাল বিশাল অনেকগুলো চুলায় তাদের রান্না হয়, আর এই সুস্বাদু খাবার খেতে সর্বদা এখানে ভীর লেগেই থাকে।


(১৩) আমির সুইয়ের এমন তুষারে ঘেরা গিরিপথে চমৎকার সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে করতে যাওয়াটা আমার জন্য সত্যিই ছিল খুবই রোমাঞ্চকর।


(১৪/১৫) তুষারের ভেতর দিয়ে খাড়া ঢাল এবরো থেবরো পিচ্ছিল বরফ পথে এই গাড়িতে চড়াটা কতো যে ভয়ঙ্কর আগে জানলে হয়তো আমি চড়তামই না।




(১৬) বুখারাতে ইবনে সিনার ষ্টাচু।


(১৭) নাসির উদ্দিন হোজ্জার সাথে বুখারাতে একদিন। ( নাসির উদ্দিন হোজ্জা ছিলেন মধ্যযুগীয় মুসলিম সুফি, যিনি হাস্যরসাত্মক চরিত্র হিসেবে সুপরিচিত। মধ্যযুগে আনুমানিক ত্রয়োদশ শতকে সেলজুক শাসনামলে ইরানের বৃহত্তর খোরাসানে তিনি বসবাস করতেন। অবশ্য নিকট ও মধ্য প্রাচ্য এবং মধ্য এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশই নাসিরুদ্দিনকে তাদের দেশের বলে দাবী করে। এর মধ্যে রয়েছে আফগানিস্তান, ইরান, তুরস্ক এবং উজবেকিস্তান।)-সুত্র উইকি


(১৮) সমরকন্দে ইমাম বুখারির স্বৃতি রক্ষায় তৈরি তৈরি হচ্ছে এই স্থাপনা, এখনো কমপ্লিট হয়নি।


(১৯) শেষ দিনে বুখারা থেকে তাসখন্দে ফেরার পথে তোলা এই গেইটের ছবির সাথে আমার মনের মিল হয়ে গেছে বেশ.....

## পরবর্তিতে চেষ্টা করবো উজবেকিস্থান নিয়ে বিস্তারিত লিখতে, ধন্যবাদ সবাইকে।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩০
১৯টি মন্তব্য ১৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস-পরীক্ষার হলে দেরিঃ পক্ষ বনাম বিপক্ষ

লিখেছেন BM Khalid Hasan, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



বর্তমানের হট টপিক হলো, “১ মিনিট দেরি করে বিসিএস পরীক্ষার হলে ঢুকতে না পেরে পরীক্ষার্থীর স্বপ্ন ভঙ্গ।” প্রচন্ড কান্নারত অবস্থায় তাদের ছবি ও ভিডিও দেখা যাচ্ছে। কারণ সারাজীবন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

×