somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জিয়ার 'বহুদলীয় গনতন্ত্র' :P প্রবর্তন তথা ক্ষমতা দখলের দিনগুলি

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মার্চ ১৯৭১
জিয়ার নিজের লেখা 'একটি জাতির জন্ম' প্রবন্ধ থেকে জানা যায়, বিভিন্ন বাঙালী অফিসাররা মার্চে গোপনে বসতেন, তবে জিয়া তাদের সাথে বসলেও কোন মন্তব্য করতেন না। অথচ ২৫ মার্চ রাতে জিয়ার বস(বহুল আলোচিত) জেনারেল জানজুয়া জিয়াকে হত্যার উদ্দেশ্য নিজে এসে মাঝরাতে তাকে বন্দরে যেতে বলেন ! জিয়া মাঝরাস্তায় বেরিকেডে পরেন, ওখানে থাকা ক্যাপ্টেন খালিক জিয়াকে বিদ্রোহ করতে বলেন। জিয়া মাঝপথ থেকে ফিরলেন, 'পিছু ? নাকি তার সৈাভাগ্যের স্বর্ন দূয়ারের দিকে ?' ক্যন্টমেন্টে ফিরে জিয়া নিজ হাতে বন্দী করেন জানযুয়াকে ! এরপর যোগদেন মু্ক্তিযুদ্ধে। তবে তার পরিবার বোধহয় তার সঙ্গে যান নাই।

সৌভাগ্যের স্বর্ন দূয়ার
৭১ সালে জিয়া ছিলেন সামান্য মেজর। ৭১ সালের মার্কিন দলিল থেকে জানা যায়, ৭১ সালে সিআইএর সাথে কিছু বাঙালী মেজরের 'যোগাযোগ' হয়। তাদের নাম এখনো জানা যায় নি। দেশ স্বাধীন হবার দুমাসের মধ্যে জিয়া হলেন কর্নেল, ৭৩ এর মাঝামাঝি ব্রিগেডিয়ার, অক্টোবরে মেজর জেনারেল! (তখনকার বাস্তবতায় স্বাভাবিক) ।৭২ সালেই তাকে করা হয়েছিল উপ-সেনা প্রধান, সিআইএর সাজানো ১৫ আগস্ট কু্র ঘাতকেরা জিয়াকে ২০ আগষ্টে সেনা প্রধান করে দেন! এর আগে অতন্ত জুনিয়ার অফিসার ফারুক/রশিদরা জিয়ার বাড়ি যেয়ে তাকে কুর প্রস্তাব করেন ! তারা কি নির্বোধের মতোন কোন দু;সাহসী কাজ করলেন, নাকি কোন অদৃশ্য হাতের ইশারায় জিয়াকে এপ্রোচ করার সাহস পেয়েছিলেন, সে প্রশ্ন থেকেই যায়। কারন জিয়া যদি ভিন্ন পক্ষের লোক হতেন তবে তিনি তো ফারুক রশিদকে গ্রেপ্তার করে কোর্ট মার্শাল করতে পারতেন ! তাহলে তো ১৫ আগষ্ট কু্্য শুরুর আগেই শেষ হয়ে যেত। এতো কাচাঁ কাজ সিআইএর প্লান করা কুর সৈনিকরা করতে পারে, যদি না কোন মধ্যস্থতাকারি শক্তি না থাকে।

সেপ্টেম্বর ৭৫
উইকিলিকসে প্রকাশিত ২০ সেপ্টেম্বর ৭৫ (!) এর মাকির্ন তার বার্তার শিরোনাম- 'কেমন হতে পারে জিয়ার শাষন কাল' ! অর্থাত জিয়ার ক্ষমতাগ্রহন কোন দৈব ঘটনা ছিল না, অনেক আগের পরিকল্পিত ছিল। BANGLADESH: PROSPECTS FOR ZIA UR RAHMAN'S REGIME

নভেম্বর ৭৫
৩ নভেম্বর জিয়াকে বন্দী করেন খালেদ মোশারফ, সেনা প্রধান থেকে তাকে বহিস্কার করা হয়। কারন এর আগে খালেদ বারবার জিয়াকে ৭৫এর ঘাতকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা সত্ত্বেও জিয়া কোন ব্যবস্থা নেন নাই, বরং প্রকাশ্যেই তাদের সমর্থন করতেন। কাজেই খালেদ দেরীতে হলেও বুঝেছিলেন এই ১৫ আগষ্টের পেছনে জিয়ার হাত ছিল।
নিজকেে বাচাতে জিয়া ফোন করেন তখনকার অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল তাহেরকে। তাহের জড়িত ছিলেন বিপ্লবী সৈন্য সংস্থার সাথে। জাসদের সাথে। তখনকার জাসদের একটি অংশে সিআইএর যোগাযোগ ওপেন সিক্রেট। জিয়া কি তখনই সেটা জানতেন ? জানতেন জাসদের বিপ্লবী সৈন্য সংস্থার গোপন কার্যক্রমও ? নাহলে কেন তিনি প্রান বাচাতে কোন জুনিয়ার কর্মরত অফিসারকে ফোন না করে অবসরপ্রাপ্ত জাসদের কর্নেল তাহের কে ফোন করবেন ?

৭ নভেম্বর তাহরের নের্তত্বে জাসদের বিপ্লবী সৈন্যসংস্থা খালেদকে সহ অসংখ্য অফিসারকে মেরে ফেলেন, 'সিপাহী জনতা ভাই ভাই, অফিসারের রক্ত চাই' শ্লোগান দিয়ে জিয়াকে মুক্ত করেন।
১২ নভেম্বর থেকে তাহের আর জিয়ার সাথে দেখা করতে পারলেন না। জিয়ার পাশে তখন মোশতাকের সাথি মাহবুব আলম চাষী, তাহের উদ্দিন ঠাকুররা। উল্লেখ্য এরা ৭১ সালে সিআইএর হয়ে মুক্তিযুদ্ধ বন্ধ করতে চেষ্টা করেছিলেন। এরাই বঙ্গবন্ধু হত্যার পরে সামনে আসেন। লরেন্স লিফসুলজ এ কারনে ৭৫ এর ১৫ আগষ্ট/জিয়ার কুর লোকজনের সাথে ৭১ এর আমেরিকার পুর্ব যোগাযোগ জানতে পেরে ৭৫ এর কূর সাথেও সিআইএ র হাত আছে কিনা খুজে দেখা প্রয়োজন মনে করেছিলেন। যা ছিল পুরোপুরি সঠিক অনুমান।

২৩ নভেম্বর ৭৫
তাহেরের ভাই ইউসুফকে বিশাল এক পুলিশ বাহিনী গ্রপ্তোর করে। জিয়াকে তাহের ফোন করলেও পেলেন না। ফোন ধরলেন ডেপুটি এরশাদ ! এরশাদ বললেন, তারা কিছু জানেন না, পুলিশ কেন গ্রেপ্তার করেছে, পুলিশকেই জিজ্গেস করতে। তাহের লুকালেন।

২৪ নভেম্বর ৭৫
ঢাকা ইউনিভার্সিটির ১ হল ঘিরে ফেলল অসংখ্য পুলিশ। সেখানেই সেই রাতের জন্য লুকিয়ে ছিলেন তাহের। যে বিপ্লবী দলে সিআইএর গোপন অর্থায়নের অভিযোগ আছে, তার নেতার সাধ্য কি লুকিয়ে থাকা ?

১৫ জুন ৭৬
জিয়া অধ্যাদেশ জারি করালেন গোপন বিচারের। সেই বিচার নিয়ে কোন আপিল করা যাবে না। অধ্যাদেশ জারির দিনই ট্রাইবুনাণ গঠিত হল, এবং তার সদস্যরা যেন রেডিই ছিলেন, একসঙ্গে জেল পরিদশর্নে আসলেন ওই দিনই !

২১ জুন ৭৬
তাহরের বিচার শুরু।

১৭ জুলাই ৭৬
একমাসের কমসময়ে বিচার শেষ ! তাহেরর রায় হল- ফাসিঁ !
রায় শুনে সরকারি উকিল নিজেই অবাক। বললেন আমিতো ফাসি চাইনি, কোন অাইনেতো তার ফাসি হয় না। সবচেয়ে বড় কথা পঙ্গুু লোকের ফাসি হয় না। তাহের অবশ্য মুক্তিযুদ্ধে পঙ্গু হয়েছিলেন, তার ক্ষেত্রে তাই কোন সহানূভতি নতুন এই বাংলাদেশে প্রযোজ্য নয়।

২১ জুলাই ৭৬
রায় কার্যকর হল !
আওয়ামিলীগ ক্ষমতায় গেলে সব সময়ই সরব মিডিয়াতে এই খবর মা্ত্র ১টি পত্রিকায় ১ ইন্চি জায়গা পেল !!
নির্বাচন পেছাল
৭৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতিয় নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু জিয়ার তখনো দল সাজানো হয়নি। প্রেসিডেন্ট সায়েম কে জোর করে নির্বাচন পেছালেন।

২৮ নভেম্বর ৭৬ রাত
জিয়া, এরশাদ, মন্জুর সহ সিনিয়ার কিছু অফিসার প্রেসিডেন্ট সায়েমের বাসায় ঢুকলেন। দাবি- প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের পাদটি জিয়াকে দিতে হবে। সায়েম নির্বাচন পেছানোতে এমনিতে জিয়ার উপর ক্ষুব্ধ ছিলেন, সহজে রাজি হলেন না। সহকারি বিচারপতি সাত্তারের দিকে তাকালেন, লাভ হল না। রাত ১টায় সায়েম লিখলেন- 'আমি জাতিয় স্বার্থে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের দায়িত্ব মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানের কাছে হস্তান্তর করছি। তিনি জাতিয় স্বার্থে সামরিক আইন জারি সহ অন্য যেকোন ব্যবস্থা গ্রহনে যা তিনি প্রয়োজনীয় মনে করবেন, তা তিনি করতে পারবেন।'

২১ এপ্র্রিল ১৯৭৭
এদিন প্রেসিডেন্ট সায়েম অর্ডিন্যান্স জারি করলেন- 'আমি আবু সাদত মোহাম্মদ সায়েম, ভগ্ন স্বাস্থের জন্য প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করতে পারছি না। এই অবস্থায় আমি মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানকে প্রেসিডেন্ট পদে মনোনয়ন দিচ্ছি। এবং প্রেসিডেন্টের অফিস তার কাছে হস্তান্তর করছি।'

সায়েমের অন্তর মহলরে খবর অন্য রকম, তার এমন কোন অসুখ ছিল না যে জন্য পদত্যাগ করতে হবে। পেছনের কারন অস্ত্র !!

এই হল বহুদলীয় গনতন্ত্রের প্রচলন। এরপরের লেখায় জিয়ার নির্বাচন আর বিএনপির জন্ম, রাজনীতি নিয়ে বিস্তারিত লিখব। (চলবে...)

--------সূত্র:---------
১‌)বাংলাদেশ : ষড়যন্ত্রের রাজনীতি- জিয়া পর্ব।
২) উইকিলিকসের কিছু লিংক-
৭ই নভেম্বর দুপুরেই জিয়া ৩ জন অফিসার পাঠিয়েছিলেন মার্কিন দূতাবাসে, মার্কিন সাহায্য কামনা

প্রধান সামরিক অাইন প্রশাসক প্রসিডেন্ট সায়েমের সাথে মার্কিন রাস্ট্রদূতের সাক্ষাত, সায়েম অান্তরিকভাবেই যথা সময়ে নির্বাচন দিয়ে সরে যেতে চান। কিন্তু তার সরকারে জিয়ার ভুমিকা থাকবে মূল মনে করেন রাস্ট্রদূত

জিয়ার প্রধান সামরিক অাইন প্রশাসকের পদ অধিগ্রহন, নির্বাচন পেছানো, এবং নেতাদের গ্রেপ্তার

প্রধান সামরিক অাইন প্রশাসক হিসাবে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষন !, বিভিন্ন দলের অনুরোধে নির্বাচন পেছানোর ঘোষনা ! অর প্রথমে ইউনিয়ন চেয়্যারম্যান নির্বাচন, তারপর ধাপে ধাপে পরে সংসদ নির্বাচন

রাজনৈতিক কর্মসূচি নিষিদ্ধ থাকা অবস্থায় মে দিবসে সেনাপ্রধান জিয়ার জনসভা ! ভাষনে বললেন, গত ৪ বছর কোন ধর্মের লোক ধর্ম পালন করতে পারেন নাই !!!
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৩০
১১টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাজত্ব আল্লাহ দিলে রাষ্ট্রে দ্বীন কায়েম আমাদেরকে করতে হবে কেন?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:০৬



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ২৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। বল হে সার্বভৈৗম শক্তির (রাজত্বের) মালিক আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) প্রদান কর এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) কেড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তির কোরাস দল

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৫



ঘুমিয়ে যেও না !
দরজা বন্ধ করো না -
বিশ্বাস রাখো বিপ্লবীরা ফিরে আসবেই
বন্যা ঝড় তুফান , বজ্র কণ্ঠে কোরাস করে
একদিন তারা ঠিক ফিরবে তোমার শহরে।
-
হয়তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাইডেন ইহুদী চক্তান্ত থেকে বের হয়েছে, মনে হয়!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮



নেতানিয়াহু ও তার ওয়ার-ক্যাবিনেট বাইডেনকে ইরান আক্রমণের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলো; বাইডেন সেই চক্রান্ত থেকে বের হয়েছে; ইহুদীরা ষড়যন্ত্রকারী, কিন্তু আমেরিকানরা বুদ্ধিমান। নেতানিয়াহু রাফাতে বোমা ফেলাতে, আজকে সকাল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজ ২৫শে বৈশাখ। ১৬৩তম রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আমার গাওয়া কয়েকটি রবীন্দ্রসঙ্গীত শেয়ার করলাম। খুব সাধারণ মানের গায়কী

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০৫

আপনারা জানেন, আমি কোনো প্রফেশনাল সিঙ্গার না, গলাও ভালো না, কিন্তু গান আমি খুব ভালোবাসি। গান বা সুরই পৃথিবীতে একমাত্র হিরন্ময় প্রেম। এই সুরের মধ্যে ডুবতে ডুবতে একসময় নিজেই সুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্ব কবি

লিখেছেন সাইদুর রহমান, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৭

বৈশাখেরি পঁচিশ তারিখ
কবি তোমার জনম
দিন,
বহু বছর পার হয়েছে
আজও হৃদে, হও নি
লীন।

কবিতা আর গল্প ছড়া
পড়ি সবাই, জুড়ায়
প্রাণ,
খ্যাতি পেলে বিশ্ব জুড়ে
পেলে নভেল, পেলে
মান।

সবার ঘরেই গীতাঞ্জলী
পড়ে সবাই তৃপ্তি
পাই,
আজকে তুমি নেই জগতে
তোমার লেখায় খুঁজি
তাই।

যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×