প্রিয় ব্লগার সহযোদ্ধাগণ এবং মডারেটরবৃন্দ,
গত বছরের মে মাসের মাঝামাঝি যখন আমি দৈনিক জনকন্ঠ ছেড়ে বিবিসি’তে যোগদান করি, তখন সেটা জানিয়ে একটি পোস্ট দিয়েছিলাম। অনেকেই সে পোস্টের মন্তব্যে শুভকামনা করে বলেছিলেন, শত ব্যস্ততার মাঝেও যেন ব্লগের সঙ্গেই থাকি। এর উত্তরে আমি বলেছিলাম, আমার প্রথম পরিচয় আমি একজন ব্লগার। সুতরাং, ব্লগার হিসেবে আমার সবসময়ই একটা দায়িত্ব আছে, সাধ্য অনুযায়ী বাংলা ব্লগ সাইটগুলোর জন্য একটা কিছু করার।
সেই দায়িত্ববোধ থেকেই বাংলা ব্লগ সাইট গুলোর সঙ্গে বিবিসির একটি সেতু বন্ধন তৈরীর জন্য আমি গত একবছর ধরে বিভিন্ন সময়ে চেষ্টা করে আসছি। গত বছরের নভেম্বরে যখন লন্ডনে ট্রেনিংয়ে গিয়েছিলাম, তখনই প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে আমার চিন্তার কথা জানাই বিবিসি কর্তৃপক্ষকে। ব্যাপারটিতে ইতিবাচক সাড়া দেয় বিবিসি। কিন্তু ঠিক সে মুহুর্তে কিছুই করার ছিলনা, কেননা, তখন বিবিসি বাংলার নতুন অনলাইন সার্ভিস চালুর প্রক্রিয়া চলছিল।
চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি চালু করা হয় বিবিসি বাংলা’র নতুন অনলাইন সার্ভিস- http://www.bbcbangla.com সেই সাথে চালু হয় নতুন নতুন সব উইজেট। ফলে আমার চিন্তা বাস্তবায়নের সুযোগ সৃষ্টি হয়।
গত মাসের ২৫তারিখের দিকে লন্ডনে কর্মরত আমার সহকর্মী এবং বন্ধু ওয়েন প্রোয়েল একটা ই-মেইলে আমাকে জানায় যে, বাংলা ব্লগ সাইট গুলোর সাথে সেতুবন্ধন তৈরীর কাজটি এখন শুরু ক্রা যায়। সে সময় আমি ছুটি কাটাতে কুয়ালালামপুর ছিলাম। তাই ওয়েন কে বলি আমার দেশে ফেরার তারিখ ১লা মে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে। ১ তারিখে দেশে ফিরেই কাজে লেগে যাই। ঠিক হয়, বাংলা ব্লগ সাইটগুলোর কর্তৃপক্ষের কাছে বিবিসি বাংলা’র নতুন উইজেট স্থাপনের অনুরোধ জানিয়ে ই-মেইলে বার্তা পাঠানো হবে।
উইজেট হচ্ছে এমন একটি উপায় যেটির মাধ্যমে বিবিসি বিভিন্ন ওয়েব সাইটের সঙ্গে প্রাথমিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। বিবিসির বিভিন্ন ভাষার সার্ভিস গুলোর নানা ধরনের উইজেট বিভিন্ন ওয়েব সাইটে স্থাপিত রয়েছে। এর মাধ্যমে সেইসব সাইটের সঙ্গে বিবিসির একটি বিশেষ সম্পর্ক বা Partnership তৈরী হয়েছে। বাংলাদেশেও এরকম দু’টি ওয়েব সাইটের সঙ্গে বিবিসির Partnership রয়েছে। এগুলো হচ্ছে http://www.bdnews24.com ও http://www.samakal.com.bd । Partnership –এর ক্ষেত্রে বিবিসির রয়েছে কয়েকটি পর্যায়। এগুলো হল- প্লাটিনাম, গোল্ড এবং সিলভার। http://www.bdnews24.com ও http://www.samakal.com.bd এখন আমাদের গোল্ড Partner – এ উন্নীত হয়েছে। আর “বাংলাদেশ বেতার” হচ্ছে এদেশে আমাদের একমাত্র প্লাটিনাম Partner।
তাই বাংলাদেশে বিবিসি’র Partnership –এর তালিকা দীর্ঘ করার চেষ্টার অংশ হিসেবে, গত ৫ মে থেকে আমি আর ওয়েন বিভিন্ন বাংলা ব্লগ সাইটের মডারেটরদের কাছে ই-মেইল পাঠিয়ে তাদের সাইটে বিবিসি বাংলা’র উইজেট স্থাপনের অনুরোধ জানাতে থাকি। এখনে ওয়েন এবং আমার পরিচয় দিয়ে রাখা ভাল। ওয়েন প্রোয়েল (Owen Prowel) হচ্ছে, BBC World Service- এর Asia and Pacific বিভাগের Business Development Associate। সে লন্ডন ভিত্তিক। আর আমি হচ্ছি BBC World Service- এর ঢাকা ভিত্তিক Senior Bangla Audience Champion। আমি বাংলাদেশে BBC-এর Business Development এবং MC&A বিভাগের দায়িত্বে রয়েছি।
যাইহোক, আমি আর ওয়েন মিলে যাদেরকে অনুরোধ জানালাম আর তাদের কাছ থেকে কি উত্তর পেলাম, আর এ ব্যাপারে অগ্রগতি কি - তা নিচে ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরছি---
আমার ব্লগ: গত ৫ তারিখে আমরা ই-মেইল পাঠাই জনাব সুশান্ত দাস গুপ্তের কাছে। দ্রুত সাড়া দেন তিনি। তবে সেসময় তিনি লন্ডনে ব্রিটেনের নির্বাচনে অংশ নেয়া এক প্রার্থীর সঙ্গে নির্বাচনী কাজে ব্যস্ত থাকায় কয়েকটা দিন অপেক্ষা করার কথা জানান। নির্বাচন শেষ হওয়ার সাথে সাথেই তিনি আবার যোগাযোগ করেন আমদের সাথে। এরই মধ্যে তিনি “আমার ব্লগ” এ স্থাপন করেছেন বিবিসি বাংলা’র উইজেট। শুধু তাই নয়, এ ব্যাপারে তিনি একটি নোটিসও দিয়েছেন তার ব্লগে-http://amarbloginfo.amarblog.com/posts/105996/. তবে এই উইজেটটি ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ছাড়া অন্য ব্রাউজারে দেখা যাচ্ছে না বলে তিনি জানিয়েছেন। আমরা এখন এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি। আশা করি দ্রুত আমরা সমাধান দিতে পারব।
সাম ইন: এই ব্লগের জনাব অরিল্দ-এর নিকট মেইল পাঠানো হয়। পরবর্তীতে তিনি আমাদের জানান যে, তার ব্লগে উইজেট স্থাপিত হলে, সেখানে আসা প্রতিটি ক্লিকের জন্য অর্থ দিতে হবে বিবিসিকে। তিনি আরো জানান যে, একই নিয়মে তারা ডয়েচে ভেলে- এর উইজেট বসিয়েছেন। যেহেতু বিবিসি’র Partnership গুলো আর্থিক লেনদেন মুক্ত, তাই, তার এ প্রস্তাবটি নিয়ে আমাদের পৃথকভাবে ভাবতে হচ্ছে। অচিরেই আমরা আমাদের সিদ্ধান্ত তাদের জানিয়ে দিতে পারব বলে আশা করি।
গ্লোবাল ভয়েস: এই ব্লগের বাংলা সংস্করণের মডারেটর জনাব রেজওয়ান –এর কাছে আমরা যখন মেইল পাঠাই, তখন তিনি ছিলেন সুদূর চিলি’র রাজধানী সান্তিয়াগো’তে। তিনি এব্যাপারে তার আগ্রহের কথা জানিয়েছেন। সান্তিয়াগো থেকে ফিরে তিনি এ ব্যাপারে তার চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে আমাদের লিখেছেন।
মুক্তাঙ্গন: এই ব্লগের জনাব রেহান রশিদের কাছে যে ই-মেইল ঠিকানায় আমরা চিঠি পাঠাই, তা তার কাছে পৌছে নি। ঠিকানাটি হয়ত তিনি ক্লোজ করে দিয়েছেন। পরবর্তীতে আমরা তার কাছে চিঠি পাঠানোর জন্য এই (nirman.admin@googlemail.com) ই-মেইল আইডি টি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেই এবং চিঠি পাঠাই। এখন আমরা তাদের জবাবের অপেক্ষায় আছি।
সচলায়তন: এই ব্লগের ক্ষেত্রেও একই কাহিনী। আমরা জনাব মাহবুব আজাদ হিমু -এর কাছে যে ই-মেইল ঠিকানায় আমরা চিঠি পাঠাই, তা তার কাছে পৌছে নি। ঠিকানাটি হয়ত তিনিও ক্লোজ করে দিয়েছেন। পরবর্তীতে আমরা তার কাছে চিঠি পাঠানোর জন্য এই (contact@sachalayatan.com) ই-মেইল আইডি টি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেই এবং চিঠি পাঠাই। এখন আমরা তাদের জবাবের অপেক্ষায় আছি।
প্রথম আলো ব্লগ: আমার সাবেক সহকর্মী মাহবুব মোর্শেদ ভাইয়ের (দৈনিক যায়যায়দিন- এ আমরা একসঙ্গে কাজ করেছি) হাতে গড়ে ওঠা এই ব্লগের বর্তমান মডারেটর জনাব সালাউদ্দিন শুভ্র। তার কাছে পাঠানো মেইলের তিনি যে জবাবটি দেন, সেটি কোন এক কারণে আমাদের হাতে এসে পৌছায় নাই। পরে আমি নিজে তার সাথে টেলিফোনে কথা বলি। তিনি জানান, কিছুদিনের মধ্যেই তাদের নতুন সাইট চালু হচ্ছে। নতুন সাইট চালু হলে তিনি সেখানে বিবিসির বাংলা’র উইজেট বসানোর বিষেয়টি ভেবে দেখবেন।
ক্যাডেট কলেজ ব্লগ: গত ৫ মে, তারিখে এই ব্লগের জনাব নুরুল হাসান তারেক- এর কাছে ই-মেইল বার্তা পাঠানো হলেও এখন পর্যন্ত কোন জবাব পাওয়া যায় নি।
কফি হাউসের আড্ডা: এই ব্লগের জনাব দিগন্ত সরকার –এর কাছে আমরা মেইল পাঠাই। তিনি দ্রুত উত্তর জানান আমাদের। তিনি জানান যে, তার ব্লগে ইতিমধ্যেই তিনি উইজেটটি বসিয়েছেন। কিন্তু সেটি তার ব্লগের সাইড বারের জন্য একটু বড় হয়ে গেছে। তাই তিনি তার সাইড বারের মাপের পৃথক উইজেট চেয়েছেন। যা আমরা সক্রিয় বিবেচনায় রেখেছি। তবে তার ব্লগে এখনো বিবিসি বাংলা’র নিউজ ফিড বসানো রয়েছে।
প্রিয় ব্লগার বন্ধুরা, বাংলা ব্লগ সাইটে বিবিসি বাংলা’র উইজেট স্থাপন বিষয়ে আপনাদের মতামত জানান। তাহলে আমরা বুঝতে পারব, আদৌ এটা আপনাদের জন্য উপকারি হবে কি না।
বি.দ্র – Right to know – এই তত্ত্বের আওতায় উপোরক্ত তথ্যগুলো সবার জন্য উম্নুক্ত করা হল। এই পোস্টটি আমার ব্লগ, সাম ইন, মুক্তাঙ্গন এবং প্রথম আলো ব্লগ –এ আমার ব্যক্তিগত একাউন্টে প্রকাশিত হচ্ছে।
ধন্যবাদ।