somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভুমিকম্প হলে করনীয়

১১ ই এপ্রিল, ২০১২ বিকাল ৩:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভূমিকম্প হলে সর্ব প্রথম যেটা করণীয় সেটা হল-মাথা ঠান্ডা রাখা,স্থির থাকা,উত্তেজিত না হওয়া। এটা জরুরী এই জন্য যে, উত্তেজিত হলে করণীয় বিষয় কী তা ঠিক করা কঠিন হবে। ভয় দ্রুত সংক্রামক বলে বিপদের মূহূর্তে একজনের সামান্য কথা বা কাজ দ্রুত অন্যের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে প্যানিকের মত পরিস্থিতি সৃস্টি করতে পারে।আতঙ্কের সময় জরুরি হলো আতঙ্কগ্রস্ত না-হওয়া।

ভুমিকম্প হলে যা যা করনীয়-
[/sb
বের হওয়ার ক্ষেত্রেঃ…
১. হুড়ো-হুড়ি না করে… সতর্কতার সাথে বের হোন…
২. খোলা স্থানে অবস্থান নিন…
৩. গ্যাস-এর লাইন… ইলেকট্রিসিটি-র লাইন… এ-সব থেকে দূরে থাকুন…
৪. জানালা হতে দূরে থাকুন…
৫. দেয়াল হতে দূরে অবস্থান নিন…

যদি বের না হতে পারেনঃ
১. হুড়ো-হুড়ি করবেন না…
২. ঘরের দরজা খুলে… ঠিক দরজা-র নীচ বরাবর অবস্থান করূন…
৩. গ্যাস-এর চুলা এবং ইলেকট্রিসিটি বন্ধ করে দিন…
৪. জানালা হতে দূরে থাকুন…
৫. কাচঁ-এর জিনিস… যেমনঃ ফুল-দানি / শো-কেস / ড্রেসিং-টেবিল… এ-সব থেকে দূরে থাকুন…
৬. ঘরের যে-কোনো ভারী দ্রব্য… যেমনঃ টেবিল-এর নীচ বরাবর অবস্থান নিতে পারেন…

ভুমিকম্পের সময় করণীয়ঃ

১. ভুমিকম্পের প্রথম ঝাঁকুনির সাথে-সাথে পরিবারের সবাইকে নিয়ে খোলা স্থানে আশ্রয় নিন।
২. যদি ঘর থেকে বের হতে না পারেন তবে, ইটের গাথুনির পাকা ঘর হলে- ঘরের কোনায়, কলাম ও বিমের তৈরী ভবন হলে- কলামের গোড়ায় আশ্রয় নিন।
৩. আপনার বাসস্থান আধাপাকা বা টিনের তৈরী হলে খাটের নিচে আশ্রয় নিন।
৪. ভুমিকম্প রাতের বেলায় হলে কিংবা দ্রুত বের হতে না পারলে সজাগ হওয়ার সাথে সাথে ঘরের কোনে, কলামের গোড়ায় কিংবা শক্ত খাট বা টেবিলের নিচে আশ্রয় নিন।
৫. ঘরে হেলমেট জতীয় কিছু থাকলে দ্রুত নিজের মাথায় পরুন ও অন্যদের পরতে বলুন।
৬. রাতে ঘুমানোর সময় ভুমিকম্প হলে কোন হুড়াহুড়ি না করে গড়িয়ে মেঝেতে কুন্ডলি পাকিয়ে শুয়ে পড়ুন বিছানাকে ঢাল বানিয়ে। খেয়াল রাখবেন যেন বিচানার নীচে চলে না যান, বিছানার পাশে আশ্রয় নিন।
৭. বিল্ডিং ভেঙ্গে পড়ার সময় সিলিং যখন কোন অবজেক্টের ওপর পড়ে একে গুঁড়িয়ে দেয়, ঠিক তার পাশেই ছোট্ট একটি খালি জায়গা বা void-এর সৃষ্টি হয়। একে বলা হয় ‘সেফটি জোন’ বা ‘ট্রায়াঙ্গল অফ লাইফ’। তাই ভূমিকম্পের সময় বড় কোন সোফা বা বড় কোন অবজেক্ট যেটা কম কম্প্রেস করবে- এরকম কিছুর পাশে আশ্রয় নিলে বাঁচার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
৮. ভূমিকম্পের সময় জানালা বা বারান্দা দিয়ে লাফ দেয়া এসবও করবেন না। কোন সোফা বা সাত নাম্বার পয়েন্টে যেভাবে বলেছি সেভাবে ঘরের মধ্যেই কোন অবজেক্টের পাশে আশ্রয় নিন।
৯. ইন্ড্রাষ্টি কিংবা কারখানায় থাকলে দ্রুত বৈদ্যুতিক সুইচ ও গ্যাস লাইন বন্ধ করে দিন।
১০. টাকা-পয়সা, সোনা-দানা কোন কিছু সংগে নেওয়ার লোভে অযথা সময় নষ্ট করবেন না।
১১. এই সময় কোনমতেই লিফট ব্যবহার করবেন না। কেননা বিদ্যুৎ বন্ধ হয়ে লিফট বন্ধ হয়ে আপনি সেখানে আটকা পড়তে পারেন।
১২. ভূমিকম্পের সময় কখনই সিঁড়িতে আশ্রয় নেবেন না। সিঁড়ির ‘মোমেন্ট অফ ফ্রিকোয়েন্সী’ বিল্ডিং-এর চাইতে ভিন্ন হয় এবং অনেক সময় বিল্ডিং ভেঙ্গে না পড়লেও সিঁড়ি দ্রুত ভেঙ্গে পড়ে।
১৩. আপনি যদি গাড়ি চালানো অবস্থায় থাকেন, তবে সাবধানতার সাথে গাড়ি থামিয়ে দ্রুত ফাকাঁ স্থান দেখে গাড়িতেই অবস্থান করুন। চেস্টা করুন বিল্ডিং, গাছপালা, বিদ্যুৎ এর খুঁটি,লাইট পোস্ট হতে দূরে থাকতে।

১৪. বড় ভূমিকম্পের পরপরই আরেকটা ছোট ভূমিকম্প হয় যেটাকে ‘আফটার শক’ বলে। এটার জন্যও সতর্ক থাকুন।

ভূমিকম্প হওয়ার পর কয়েক ঘন্টার মধ্যে করণীয়ঃ

১. বৈদ্যুতিক,গ্যাস চালিত সব ধুরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহারে বিরত থাকুন।
২. যদি বহুতল ভবনের ওপরের দিকে কোনো তলায় আটকা পড়েন, বেরিয়ে আসার কোনো পথই না থাকে, তবে সাহস হারাবেন না। ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করুন। আপনি এখানে আছেন সেটা উদ্ধারকারি দলের কাছে আওয়াজ পৌছানোর চেষ্টা করুন।
৩. ভুমিকম্পের কারণে যদি আপনি আহত হন বা বিম, দেয়াল, স্লাব বা কংক্রিটের তৈরী কোন অংশে আপনার শরীর আটকে গেলে বা চাপা পড়লে বের হবার সুয়োগ যদি না-ই থাকে তবে বেশী টানা-হেচড়া করবেন না এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরন হয়ে আপনার দ্রুত মৃত্যু হতে পারে।
৪. ভূমিকম্পের ফলে after shocks,effect যেমন সুনামি হতে পারে। সেজন্য প্রয়োজনীয় প্রস্ততি নিন।
৫. রেডিও থাকলে দূর্যোগ সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় তথ্য পাবার জন্য সেটি চালু রাখুন। টেলিফোন,মোবাইল চালু থাকলে প্রয়োজনীয় সাহায্য চাওয়ার জন্য এবং ক্ষয়ক্ষতি রিপোর্ট করার জন্য সেটি ব্যবহার করুন।
৬. ধুলাবালি থেকে বাঁচার জন্য আগেই সাথে রুমাল বা তোয়ালে বা চাদরের ব্যবস্থা করে রাখুন।
৭. ম্যাচ জ্বালাবেন না। দালান ধ্বসে পড়লে গ্যাস লিক হয়ে থাকতে পারে।
৮. ছোটখাট আঘাতে সম্ভব হলে নিজের পরিধেয় বস্ত্র ছিড়ে ক্ষতস্থান বেধে দিন।
৯. চিৎকার করে ডাকাডাকি শেষ অপশন হিসেবে বিবেচনা করুন। কারণ, চিৎকারের সময় মুখে ক্ষতিকারক ধুলাবালি ঢুকে যেতে পারে। পাইপে বা ওয়ালে বাড়ি দিয়ে বা মুখে শিস বাজিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করতে পারেন। তবে ভাল হয় সাথে যদি একটা রেফারির বাঁশি বা হুইসেল থাকে, তার প্রিপারেশন নিয়ে রাখুন আগেই।
১০. একজায়গাতে,রাস্তাতে জড়ো না হয়ে বরং সড়কপথকে ফাকাঁ রাখুন যাতে জরুরী সাহায্যের যানবাহন দ্রুত চলাচল করতে পারে।
১১. আহত লোকদের যতটুকু সম্ভব সাহায্য করুন। কেউ আটকা পড়লে চেস্টা করুন উদ্ধারের। না পারলে তাকে বা তাদেরকে পানি ও খাবার দিন এবং অভয় দিন।
১২. মনে রাখবেন আপনার উত্তেজনা কিংবা ভয় আপনার জন্য সবচেয়ে বেশী ক্ষতির কারন হবে তাই যত বিপদেই পড়ুন না কেন কখনোই সাহস হারাবেন না
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই এপ্রিল, ২০১২ বিকাল ৩:৪৪
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মধ্যরাতে পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে হামলা চালাল ভারত

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৭ ই মে, ২০২৫ রাত ৩:৫২


পাকিস্তানের বাহাওয়ালপুর, কোটলি ও মুজাফফরাবাদের পাহাড়ি অঞ্চলের কাছে একাধিক জায়গায় হামলা চালিয়েছে ভারত। এ হামলায় এক শিশু নিহত ও ১২ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী এক... ...বাকিটুকু পড়ুন

জুম্মাবার

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ০৭ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৪:৪০

জুম্মাবার
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

প্রতি শুক্রবার ইমাম এর নেতৃত্ব
মেনে নিয়ে আমরা মুসলিমরা
হই একত্রিত, হই সম্মিলিত
ভুলে যাই সবাই হৃদয় ক্ষত!
খুতবা শুনি আমরা একাগ্রচিত্তে
চলে আসি সকলে একই বৃত্তে।
কানায় কানায় পরিপূর্ণ প্রতিটি মসজিদ
ঐক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসলে "ওরফে গফুর" এর উদ্দেশ্য কি....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৭ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭

আসলে "ওরফে গফুর" এর উদ্দেশ্য কি....


'ওরফে গফুর' এর লেখা আমি বহুবছর থেকেই পড়ি। ওনার লেখা পড়ে ওনার মতবাদ, আদর্শে আমি বিভ্রান্ত হয়েছি বারবার। কারণ, কোন এক পত্রিকায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা শান্তিপ্রিয় মানুষেরা একজোট হতে চাই

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ০৭ ই মে, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৫১



ভারত - পাকিস্তান যুদ্ধ বন্ধে কি করতে পারি আমরা? একজন নীতিবান, যুদ্ধবিরোধী ও মানবতাবাদী মানুষ হিসেবে একক এবং সঙ্ঘবদ্ধ ভাবে আমরা অনেক কিছু করতে পারি। চলুন নিচে দেখা যাক... ...বাকিটুকু পড়ুন

অপারেশন সিদুঁর বনাম অপারেশন নারায়ে তাকবীরের নেপথ্যে !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৭ ই মে, ২০২৫ রাত ৯:২৮


বলতে না বলতেই যুদ্ধটা শুরু হয়ে গেল। না, যুদ্ধ না বলাই ভালো—রাষ্ট্রীয় অভিনয় বলা ভালো। ভারত ও পাকিস্তান আবার সীমান্তে একে অপরকে চেঁচিয়ে বলছে, "তুই গো-মূত্রখোর ", "তোর দেশ জঙ্গি"।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×