'আসসালামু 'আলাইকুম'
পূর্ব প্রকাশের পর....
অতঃপর আল্লাহ তা'য়ালা ইয়াজুজ মাজুজ সম্প্রদায়কে প্রেরন করবেন।
তারা সারা পৃথিবীর প্রত্যেক উচ্চ স্থান হতে নিম্মস্থানের দিকে অত্যন্ত দ্রুত বিচরণ করবে। তাদের প্রথম দল সিরিয়ার তাবারিয়া নদী অতিক্রম করবে। এবং তার সম্পূর্ণ পানি পান করে শেষ করে ফেলবে। পরক্ষনেই
তাদের সর্বশেষ দল সে স্থান অতিক্রম করার সময় বলবে,হয়তো কোন এক সময় এ স্থানে পানি ছিল। অতঃপর তারা সামনে অগ্রবর্তী হয়ে , "খামার " নামক পাহাড় পর্যন্ত পৌছাবে। এ পাহাড় বায়তুল মুকাদ্দাসের নিকট অবস্থিত।উক্ত পাহাড়ে উপস্থিত হয়ে তারা বলবে,এই
পৃথিবীতে যারা অবস্থান করত তাদের সমূলে হত্যা করেছি,সুতরাং আস!
আমরা এবার আসমানের অধিবাসীদের হত্যাকার্য সম্পন্ন করি।অতঃপর তারা আকাশকে উদ্দেশ্য করে তীর নিক্ষেপ করলে আল্লাহ তাদের তীরগুলিকে রক্তমাখা অবস্থায় তাদের নিকট ফিরত পাঠাবেন। এসময়
ঈসা(আঃ) ও তাঁর সাথীদেরকে চরম দুর্ভিক্ষজনিত অবস্থায় "তুর" পাহাড়ে
অবরোধ করা হবে। তাঁরা ভীষন খাদ্য সংকটে পড়ার ফলে তাদের একটি গরুর মাথা এ যুগের একশ দীনার স্বর্ণমূদ্রা অপেক্ষা বেশী মূল্যবান মনে হবে। এ সময় ঈসা(আঃ) ও তাঁর সাথীগণ আল্লাহর কাছে ইয়াজুজ মাজুজ এর ধ্বংসের প্রার্থনা করবেন। ফলে আল্লাহ তা'য়ালা তাদের গর্দানের উপর
বিষাক্ত কীটের মর্মান্তিক শাস্তি অবতরন করবেন। যাতে করে তারা মুহুর্তের মধ্যে সমূলে ধ্বংস হয়ে যায়।
অতঃপর ঈসা (আঃ) তাঁর সঙ্গী সাথীসহ পাহাড় হতে নীচে নেমে আসবেন।কিন্তু পৃথিবীর কোন স্থান ইয়াজুজ মাজুজের মরা দেহের চর্বি ও দুর্গন্ধ হতে মুক্ত এমন কোন স্থান একবিঘাত সমপরিমানও পাওয়া যাবে না।তখন তিনি তাঁর সাথীসহ এই দূরাবস্থা হতে মুক্তির জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করবেন। ফলে আল্লাহ তা'য়ালা বখতী উটের গর্দানের ন্যায় বৃহদাকার গর্দানবিশিষ্ট পাখির ঝাক প্রেরন করবেন। সেই পাখির দল তাদের মরদেহগুলি নিয়ে আল্লাহর ইচ্ছানুযায়ী কোন স্থানে নিক্ষেপ করবে।
অপর এক বর্ণনায় আছে, "নহবল" নামক স্থানে নিক্ষেপ করা হবে। মুসলমানগণ তাদের ছেড়ে যাওয়া যুদ্ধাস্ত তীর , ধনুক, তীর ও তরবারির কোষ সমূহ সাতবছর যাবত জ্বালানী কার্যে ব্যবহার করবে।
অতঃপর আল্লাহ তা'য়ালা পৃথিবীতে প্রচন্ড বৃষ্টি বর্ষন করবেন।ফলে জনবসতির সকল স্থান ধুয়ে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয়ে যাবে।যদিও তা মাটির নির্মিত হোক বা পশমের হোক।অবশেষে যমীন আয়নার মত স্বচ্ছ ও পরিষ্কার হয়ে যাবে। অতঃপর ভূ-পৃষ্ঠকে নির্দেশ দেয়া হবে এ মর্মে যে,
তোমার ফল-ফলাদি বের করে দাও এবং তোমার অভ্যন্তরে রক্ষিত কল্যান ও বরকত সমূহ ফিরিয়ে দাও। ফলে (এমন কল্যান সমৃদ্ধ হবে) সে সময়
একদল লোক একটি ডালিম পরিতৃপ্ত সহকারে খাবে এবং তার খোসা দ্বারা লোকেরা ছায়া গ্রহণ করবে। দুগ্ধের মধ্যে এমন কল্যান দান করা হবে যে, একটি উষ্ট্রির দুগ্ধ একটি সম্প্রদায়ের জন্য , একটি গাভীর দুধ এক গোত্রের লোকের জন্য এবং একটি ছাগলের দুধ একটি পরিবারের জন্য যথেষ্ট হবে।
এমনি এক সময় হঠাৎ একদিন আল্লাহ তা'য়ালা স্নিগ্ধ বাতাস প্রবাহিত করবেন। ফলে সেই বাতাস তাদের হৃদয় স্পর্শ করবে এবং উক্ত বায়ু প্রতিটি মু'মিন-মুসলিমের প্রাণ নাশ করবে। অতঃপর পৃথিবীতে অবশিস্ট
থাকবে পাপিষ্ঠ ও মন্দ লোকেরা। তারা পরস্পরে গাধার ন্যায় দ্বন্দ-কলহে
লিপ্ত হবে। তখন তাদের উপরই কিয়ামত অনুষ্ঠিত হবে।"
সহীহ মুসলিম ৪র্থ খন্ড হা/২৯৩৭, ২২৫০-৫৫পৃঃ , ফিতনা ও ক্বিয়ামত
সংঘটিত হওয়ার অধ্যায় ও তিরমিযী ৬ষ্ঠ খন্ড হা/২৩৩৫, পৃঃ৪০৬ ।