অনেকদিন পর্যন্ত মদক মুয়ালকেই কিছু কিছু লোকজন দেশের সবচেয়ে উচু চুড়া মনে করত । তবে নাসার স্যাটেলাইট ডেটা থেকে দেখা যায় এটা দেশের ২য় বা ৩য় চুড়া । কোন কোন স্যাটেলাইট ডেটা অনুসারে রেংত্লাং রেঞ্জের দুমলং ২য় আর জ-ত্লং তৃতীয় । তবে অভিযাত্রী দলগুলো প্রায় সবাই জ ত্লং কেই ২য় পেয়েছে ।
ভ্রমণ বাংলাদেশ ও এডভেঞ্চারবিডির জরিপে উপস্হিত থেকে আমি জত্লং কে ৩৩৩০ ফুট আর দুমলংকে ৩৩২০ ফুট জিপিএস রিডিং -এ পাই। সেহিসেবেও এটি ২য় ।
তবে জত্লং এর প্রধান বৈশিষ্ট্য এর ১ম, ২য় বা ৩য় অবস্হান না । এর কঠিন আর দুরূহ আরোহন পথটাই একে অন্যান্য চুড়া থেকে সতন্ত্র করেছে। সব অভিযাত্রীরাই এ কথা বিনা দিধায় বলবে আমাদের দেশে জ-ত্লং আরোহন -ই সবচেয়ে কঠিন ।
বান্দর বনের থানচি থানার রেমাক্রি বাজার থেকে ৩ ঘন্টার হাটা পথ দলিয়ান পাড়া । এখানেই বসবাস করেন স্হানীয় মৌজা প্রধান বা হেডম্যান । অনেকে এটাকে দলিয়ান হেডম্যান পাড়াও বলে থাকেন। এর পাশেই মদক রেঞ্জের খাড়া খাড়া কিছু চুড়া । আর দলিয়ানের পাশের সবচেয়ে বড় চুড়াটাই জ-ত্লং।
২০০৫ সালে জনাব নিতিশ আর কানাডা প্রবাসী ডাক্তার বিজয় এই চুড়ায় প্রথম অভিযান চালিয়েছেন বাংগালী হিসেবে । পাহাড়ীরা এসব চুড়ায় শিকারের কাজে প্রায়ই যাওয়া আসা করে থাকে । চুড়ায় জুম চাষ না হলেও এখানের ঘন জংগলে অসংখ্য বন্য প্রাণী শিকার হয়ে থাকে প্রতি নিয়ত -ই। অজগর, বুনো শুকর, ভাল্লুক , বন মোরগ, বানর , বন গয়াল সহ হরেক প্রজাতির প্রাণী ২০১৪ সালেও শিকার হয়েছে এখানে ।
প্রায় ৬০০ ফুট উচ্চতায় দলিয়ান পাড়া থেকে ৩০০ ফুট নেমে লোহ ঝিরি । আর লোহ ঝিরি থেকে একদম ৩০০০ ফুট আরোহন করে ৩৩০০ ফুট উচুতে গিয়ে তবেই দেখা মিলবে জ-ত্লং চুড়ার । অনেক অভোযাত্রী দলই চুড়ায় পৌছুতে গিয়েই শেষ করে ফেলেন সারা দিন। ফল হয় সারা রাত চুড়াতে কাটিয়ে দিতে হয় - বন জংগলে !