আগের পর্ব
জামাতে ইসলামি দল সম্পর্কে বলতে গেলে প্রথমেই বলা লাগে তাদের সাবেক আমীর গোলাম আজম সম্পর্কে।
একাত্তরে গোলাম আজমের ভুমিকা নিয়ে নতুন করে কিছুই আর বলার নাই। শুধু সামান্য কিছু তথ্য অ্যাড করতে চাই। ১৯৭১ এর ২৫ সেপ্টেম্বরে ঢাকার হোটেল এম্পায়ারে সে বলে “পাকিস্তান টিকিয়ে রাখার জন্যই জামাতে ইসলামী শান্তি কমিটি ও রাজাকার বাহিনীতে যোগ দিয়েছে”; “জামাতের কর্মীরা শাহাদাত বরণ করে পাকিস্তানের দুশমনদের বুঝিয়ে দিয়েছে যে তারা মরতে রাজি, তবুও পাকিস্তানকে ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করতে রাজী নয়”।
১৯৭৪ সালে গোলাম আজম পাকিস্তান ও বাংলাদেশের কয়েকজন সমমনাকে (এ টি সাদী, তোয়াহা বিন হাবিব, ব্যারিষ্টার আখতার, আলী হোসেন প্রমুখ) নিয়ে একটি বৈঠক করে যেইখানে ডিসিশন নেয়া হয় কিভাবে পাকিস্তানের সাথে একটি কনফেডারেশন সরকার গঠন করা যায়। তারই ফলশ্রুতিতে ১৯৭৬ সালে সোহরাওয়ার্দির উদ্যানে জামাত একটি সমাবেশ ডাকে। সেখানে যেইসব দাবি তোলা হয় তার অন্যতম ছিল পাকিস্তানের সাথে কনফেডারেশন গঠন করা, বাংলাদেশকে ইসলামিক রিপাবলিক দেশ হিসেবে ডিক্লেয়ার দেয়া, জাতীয় পতাকা পরিবর্তন ইত্যাদি। (সূত্রঃ বাংলাদেশে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির পুনরুত্থান, ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, বিচিত্রা, ৩০ নভেম্বর, ১৯৮৪)
গোলাম আজম ছিল রংপুরের একটি কলেজের পার্ট টাইম লেকচারার। কিন্তু তার নামে আগে লাগানো আছে অধ্যাপক। একটি ইসলামি দলের কান্ডারির সততার নমুনা!
তার মগবাজারের কাজী গলিতে বাসা ছিল টিনের চালের যা এখন ২১ টি ফ্ল্যাট নিয়ে ৮ তলা একটি বিলিডিং হয়ে গেছে। এই বাড়ি বানাবার জন্য সে ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নেয়। ব্যাঙ্কটি তাকে ৮০ শতাংশ লোন দেয় আর বাকি ২০ শতাংশ সে নিজে খরচ করে। এখন প্রশ্ন হলো ব্যাঙ্ক লোন দেবার জন্য ক্ল্যায়েন্টের আয় ও সঞ্চয় দেখে। গোলাম আজম যে কিনা একজন লেকচারার ছিল কলেজের, তার কাছে এত টাকা আসল কিভাবে?
এইখানে আরো একটা ব্যাপার তুলে ধরতে চাই জামাতের জনপ্রিয়তার ব্যাপারে। ১৯৯১ তে জামাত ভোট পায় ১২.১৩%, ১৯৯৬ এ ৮.৬১% আর ২০০১ এ এককভাবে ৪.২৯%। (সূত্রঃ প্রথম আলো, ০২ নভেম্বর ২০০৭) জামাতের জনপ্রিয়তার ট্রেন্ড কোনদিকে বুঝা যাইতেছে!!
আগামী পর্বগুলাতে জামাতি সংসদ সদস্যদের ভান্ডামির কাহিনীগুলো থাকবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে নভেম্বর, ২০০৮ সকাল ৭:৩৮