আজ দেশ জুড়ে সবচেয়ে বেশি আলোচিত ঘটনা হলো জামাতের নেতাদের আর তাদের শুভাকাংখীদের সাম্প্রতিক কিছু মন্তব্য। হান্নান অস্বীকার করে যে দেশে কোন মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। মুজাহিদের মতে বাংলাদেশে কোনো যুদ্ধপরাধী নেই; স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিও নেই। কাদের মোল্লা চিৎকার করে জানায় মানুষ যুদ্ধে গেছিল সুন্দরি মেয়েদের লোভে।
তারা নিজেদের বলে ইসলামি দল। ইসলামের শাসন তাদের মন্ত্র। ইসলামে পথে চলাই তাদের উদ্দেশ্য। কিন্তু, এইটা কতখানি সত্যি? দেশের বিরুদ্ধে এইভাবে মিথ্যা বলে পাপাচারে লিপ্ত জামাতিদের আসল চরিত্র কেমন, আসুন দেখি।
২০০১ সালের নির্বাচনে জামাতিরা বিন এন পির সাথে ঐক্যবদ্ধভাবে নিবাচন করলেও তাদের নির্বাচনী ম্যানিফেস্টো তারা আলাদাভাবে প্রকাশ করে। ম্যানিফেস্টোর প্রধান পয়েন্টগুলো হচ্ছে
১. শরিয়া আইন প্রবর্তন করার জন্য প্রয়োজনীয় আইন গঠন।
২. এই লক্ষ্যে জনমত সৃষ্ঠি করা।
৩. নামাজ বাধ্যতামূলক করে একটি আইন প্রনয়ন করা।
৪. বাইতুল আমান গঠন করা
এইবার দেখি তারা কি করেছে এই বিষয়গুলোতে ক্ষমতায় থাকার সময়ে।
১. ক্ষমতায় ৫ বছর থেকেও তারা শরীয়া আইন চালুর বিষয়ে সংসদে কোন বিল আনেনি। তাদের এই কথা খালি ম্যানিফেস্টোর ছাপার অক্ষরেই রয়ে গেছে।
২. সংসদে একদিনও তারা জনমত পরীক্ষা করার জন্য আবেদন জানায় নাই যে দেশে শরীয়া আইন চালু হবে কি হবে না।
৩. নামাজ বাধ্যতামূলক করার আইনের ব্যাপারেও তারা টু শব্দটি করে নাই। শিক্ষার সর্বস্তরে ইসলামের মূল স্তম্ভগুলো সম্পৃক্ত করার কথা ঐ প্রস্তাবে ছিলো কিন্তু তারা ক্ষমতার ৫ বছর জবান বন্ধ করে ছিল তাদের এই ম্যানিফেস্টোর ব্যাপারে।
৪. বাইতুল আমান প্রতিষ্ঠা করে সরকারি কর আদায় সিস্টেমকে রিপ্লেস করার কথা থাকলেও তারা সেইটাও পালন করে নাই। তারা ব্যস্ত ছিল কিভাবে ট্যাক্স ফ্রি সুবিধা নিয়ে দামি গাড়ি আমদানি করা যায়।
এই বিষয়গুলাতে জামাতের মুখ বন্ধ করে রাখা কি বুঝায়? তারা আসলেই একটা ভন্ড দল। তারা মুখে ইসলামের কথা বলে কিন্তু কাজে ইসলামের কোন প্রকাশ নাই। ভন্ডামি আর অসততাই তাদের বৈশিষ্ট্য। তারা আকুল হয়ে থাকে কিভাবে ক্ষমতায় যাওয়া যায় তার জন্য। দেশের নিরপরাধ মানুষের ধর্মবিশ্বাসকে পুজি করে তারা তাদের লক্ষ্যে (ক্ষমতায় যাওয়া আর দুর্নীতিতে ডুবে থাকা) যে কোন উপায়ে পৌছাইতে চায়। সেজন্য তাদের নিজেদের কর্মীদের বলতে বাধে না যে মরলে তারা বেহেশতে যাবে। কে যাবে আর কে যাবে না, এইটা আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানে না। তারা কিভাবে নিশ্চিত হইলো জামাত শিবিরের লোকদের সব গুনাহ্ মাপ হয়ে গেছে!
এইখানে আরো একটা ব্যাপার তুলে ধরতে চাই জামাতের জনপ্রিয়তার ব্যাপারে। ১৯৯১ তে জামাত ভোট পায় ১২.১৩%, ১৯৯৬ এ ৮.৬১% আর ২০০১ এ এককভাবে ৪.২৯%। (সূত্রঃ প্রথম আলো, ০২ নভেম্বর ২০০৭) জামাতের জনপ্রিয়তার ট্রেন্ড কোনদিকে বুঝা যাইতেছে!!
আগামী পর্বগুলাতে জামাতি সংসদ সদস্যদের ভান্ডামির কাহিনীগুলো থাকবে।