somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

। ‘প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম’, যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননায় ভূষিত প্রথম বাঙালি ।

২৪ শে আগস্ট, ২০০৯ রাত ৩:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


.
গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা, শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আরেকটি বিরল সম্মান বয়ে আনলেন বাঙালি ও বাংলাদেশের জন্য। যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক পদক ‘প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম’-এ ভূষিত হলেন তিনি। ১২ আগস্ট ২০০৯ বুধবার বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত প্রায় ৩.০০ টায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা হোয়াইট হাউসের ইস্ট রুমে আয়োজিত অনুষ্ঠানে জাকজমকের সাথে মুহুর্মুহু করতালির মধ্যে দিয়ে নিজ হাতে ড. ইউনূসের গলায় এ পদক পরিয়ে দেন। এ সময় তাঁকে সহায়তা করেন ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা।

বিজ্ঞান, রাজনীতি, অর্থনীতি, ক্রীড়া, সঙ্গীত ও মানবাধিকারের ক্ষেত্রে অনন্য সাধারণ অবদান রাখার জন্য এই সম্মাননা জানাতে নির্বাচিত ১৬ জনের নাম গত জুলাই ২০০৯ মাসেই ঘোষণা করা হয়েছিলো। এদের মধ্যে ১২ জন আমেরিকান এবং ৪ জন আমেরিকার বাইরের। ড. ইউনূস ছাড়া বাকিরা হচ্ছেন দক্ষিণ আফ্রিকার আর্চ বিশপ ডেসমন্ড টুটু, ব্রিটিশ পদার্থ বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং, মার্কিন সিনেটর রবার্ট এডোয়ার্ড কেনেডি, প্রখ্যাত চলচ্চিত্র অভিনেতা সিডনি পয়টিয়ার, সাবেক প্রথম মহিলা আইরিশ প্রেসিডেন্ট মেরি রবিনসন, অভিনেত্রী চিতা রিভেরা, নাগরিক আন্দোলনের নেতা রেভারেন্ড জোসেফ-ই-লোয়ারি, আমেরিকান আদিবাসী ঐতিহাসিক ও শিক্ষাবিদ জোসেফ মেডিসিন ক্রো, সমাজকর্মী ন্যান্সি গুডমান ব্রিঙ্কার, চিকিৎসা বিজ্ঞানী ড. জানেট ডেভিসন রাউলি, সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতি সান্ড্রা ডে ও’কনর, টেনিস তারকা বিলি জিন কিং, মানবতাবাদী হিস্পানিক চিকিৎসক ড. পেড্রো জোসে গ্রিয়ান জুনিয়র প্রমুখ।
দু’জনকে মরণোত্তর পুরস্কার দেয়া হয়। তাঁরা হলেন রিপাবলিকান দলের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো কেম্প এবং সমকামী অধিকার আন্দোলনের নেতা হার্ভে মিল্ক। অসুস্থতার জন্য সিনেটর রবার্ট এডোয়ার্ড কেনেডি অনুষ্ঠানে আসতে না পারায় তাঁর পক্ষে পদক নেন তাঁর কন্যা কার কেনেডি।



১৯৪৫ সাল থেকে চালু হওয়া এই সর্বোচ্চ বেসামরিক পদক (presidential medal of freedom) প্রদানের মাধ্যমে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিশ্বের বিশিষ্ট ব্যক্তিদেরকে সম্মানিত করে থাকেন। বিগত ৬৪ বছরের ইতিহাসে এশিয়া মহাদেশ থেকে মাত্র পাঁচজন এ পদকে ভূষিত হন। তাঁদের মধ্যে ভারতের মাদার তেরেসা, মায়ানমারের ওঙ সান সুকি অন্যতম। প্রফেসর ইউনূস হচ্ছেন পঞ্চম এশিয়ান ও প্রথম বাঙালি যিনি এই সম্মান লাভ করলেন।

প্রত্যেককে পদক পরিয়ে দেয়ার ফাঁকে ফাঁকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট তাঁদের সম্পর্কে পরিচিতিমূলক সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন। বারাক ওবামা বাংলাদেশের ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে পদক পরিয়ে দেয়ার সময় বলেন, জনগণকে স্বনির্ভর করার লক্ষ্যে মুহাম্মদ ইউনূস অর্থ ব্যবস্থা ও ক্ষুদ্র বিনিয়োগের চেহারা পাল্টে দিয়েছেন। জনগণকে দারিদ্র্যের কষাঘাত থেকে মুক্ত করতে তিনি ক্ষুদ্রঋণ লাভের সুযোগ সৃষ্টির জন্য ব্যাংকিং খাতে বিপ্লব সৃষ্টি করেছেন। এর মাধ্যমে তিনি বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলোর জনগণকে লাভজনক ব্যবসার পথ দেখিয়েছেন। এভাবে মুহাম্মদ ইউনূস সৃষ্টিশীলতার নব দিগন্ত উন্মোচন করেছেন এবং বিশ্বব্যাপী লাখ লাখ মানুষকে নিজস্ব ক্ষমতার প্রতি সচেতন করেছেন।



এর আগে এই পদক সম্পর্কে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রেসিডেন্ট ওবামা বলেন- এটি আমি এবং যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এদেশ ও অন্যসব দেশের কিছু সর্বোত্তম নাগরিককে ধন্যবাদ জানানোর একটি সুযোগ। এমন এক সময়ে যখন প্রায়ই আমাদের মাঝে নৈরাশ্যবাদ ও সংশয় দেখা দেয়, পরস্পরের প্রতি দায়বদ্ধতার কথা অনেক সময়ই ভুলে যাই, আমাদের সামনে চলার পথটি অনেক দীর্ঘ ও বন্ধুর মনে হয়, তখন এ অসামান্য মানুষগুলো, এ পরিবর্তনের নায়করা আমাদের এ কথাই স্মরণ করিয়ে দেন, উৎকর্ষ অর্জন আমাদের সাধ্যের বাইরে নয়। তারা আমাদের আশার বাণী শোনান। তারা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেন, স্বপ্ন পূরণ, অন্যের স্বপ্নকে এগিয়ে নেয়া এবং আমাদের সন্তানদের জন্য এ পৃথিবীকে নতুন করে গড়ে তোলার ক্ষমতা আমাদের প্রত্যেকের মাঝেই রয়েছে।

বারাক ওবামার এমন আবেগময় চমৎকার বাণী সবার মধ্যেই সাহস ও আত্মবিশ্বাস জাগিয়ে তুলতে সক্ষম বৈ কি। এবং ভাবতে ভীষণ গর্ব হয় যে, আমেরিকার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত কালো মানুষ বারাক ওবামা, যাকে একজন মানবতাবাদী তরুণ নেতা ও প্রেসিডেন্ট হিসেবে গোটা বিশ্ব ভাবতে পছন্দ করে, তাঁর সাহসের প্রেরণাদায়ী ব্যক্তিত্বদের মধ্যে একজন বাঙালিও রয়েছেন, যিনি আমাদেরই লোক, ড. মুহাম্মদ ইউনূস।


এ পর্যন্ত এসে লেখাটা শেষ হয়ে যেতে পারতো। অন্তত বাঙালি হিসেবে সবচেয়ে বেশি খুশি হতাম আমি। কিন্তু তা যে হলো না, এর কারণ নিউজ ওয়ার্ল্ড নিউইয়র্ক-এর একটি খবরে কতকগুলো বিষণ্ন প্রশ্ন এসে ভর করলো মনে। তার ব্যাখ্যা আর নাই দিলাম। তার চে’ ‘যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সম্মাননা পেলেও ড. ইউনূসের খোঁজ নেয় নি বাংলাদেশ দূতাবাস’ শিরোনামে প্রকাশিত খবরটাই না হয় হুবহু উদ্ধৃত করি-



‘যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মাননা অনুষ্ঠানে ড. ইউনূসকে কোনো সম্মান দেখায়নি বাংলাদেশ দূতাবাস। নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিউইয়র্কে বাংলাদেশী একজন কূটনীতিক বলেন, সরকার থেকে আমাদের কোন নির্দেশনা দেয়া হয়নি। ফলে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও তাকে সালাম জানাতেও যেতে পারিনি।
১২ আগস্ট হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট ওবামা বিশ্বের ১৬ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত করেন। মূলত এটা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা।
অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট ওবামা নিজ হাতে সম্মাননার মেডেলটি পরিয়ে দেন ড. ইউনূসের গলায়। বাংলাদেশী ড. ইউনূসের নাম ঘোষণার সাথে সাথে হোয়াইট হাউসের পাম রুম উল্লসিত হয়ে উঠেছিল। সেখানে প্রেসিডেন্ট ওবামা বললেন, বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের আত্মবিশ্বাসকে জাগ্রত করেছেন ড. ইউনূস।
মেডেল নেয়ার বিভিন্ন দেশ তাদের কৃতী সন্তানদের অভিবাদন জানাতে প্রেরণ করেছিল স্ব স্ব দেশের দূতদের। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ছিল ব্যতিক্রম। হোয়াইট হাউসের সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না কোনো বাংলাদেশী কূটনীতিক।
পুরস্কৃত ব্যক্তিত্বদের সম্মানে স্ব স্ব দেশের দূতাবাস সংবর্ধনা ছাড়াও বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালায় তাদের এই অর্জনকে তুলে ধরার উদ্যোগ নেয়। এ ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ দূতাবাস ছিল নির্বিকার।
১১ থেকে ১৪ আগস্ট চার দিন ওয়াশিংটনে অবস্থান করেছেন ড. ইউনূস। কিন্তু বাংলাদেশী কূটনীতিকরা তাকে কুশলবিনিময়ের ন্যূনতম সৌজন্য দেখাননি।

নিউইয়র্কের জেএফকে এয়ারপোর্টে তিনি এসে নামলে শত আমেরিকানের বিমুগ্ধ চোখ ছিল ড. ইউনূসকে ঘিরে।
গত শুক্রবার দেশে ফেরার সময়ও জেএফকে টার্মিনালে অজানা-অচেনা শত মানুষ ঘিরে ধরেছিল তাকে একনজর দেখতে। হুড়োহুড়ি লেগে গিয়েছিল ছবি তোলার জন্য। ড. ইউনূস ছিলেন একা। নিজে নিজেই বোর্ডিং কার্ড নিয়েছেন। সেখানেও বাংলাদেশী কোনো কর্মকর্তাকে দেখা যায়নি। বিষয়টি এয়ারপোর্টে উপস্থিত অনেক বাংলাদেশীর চোখ এড়ায়নি। এ জন্য তার প্রতিবাদ করেছেন প্রকাশ্যে। জানতে চেয়েছেন এই উপেক্ষা-অবহেলার হেতু কী।’


ব্যক্তির স্বার্থান্ধ চোখ আর রাষ্ট্রের ব্যক্তি নিরপেক্ষ চোখে কি কোন ভিন্নতা থাকতে নেই ? রাজনীতির ঘোরপ্যাঁচ হয়তো বুঝি না। তবে কৈশোরের পাঠ্যে শিখে নেয়া প্রবাদটি ঠিকই মনে পড়ে যায়- গেঁয়ো যোগী ভিখ পায় না। একান্তই বাঙালি প্রবাদ। এই যোগী যে ভিখ পায় না, তা কি গ্রামবাসীর স্বচ্ছ স্মৃতিতে যোগীর বেড়ে ওঠার ভাঙাচোরা ছবি-কণার অহেতুক উৎপীড়ন, না কি যোগীকে ধারণ করার ক্ষমতা গ্রামবাসীর থাকে না, কে জানে। তবে এটা ঠিক যে, তপস্যার সঙ্কুল পথ ও যাত্রা যোগীকে পরিচিতির মগ্নতা থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। সময়ের পরিশ্রুত প্রজন্মের নির্মোহ চোখই পারে যোগীর যোগ্যতা মেপে দেখার স্থিতি ধারণ করতে।

ড. ইউনূস কে ও কী, তা জানতেও হয়তো আমাদেরকে আরো কিছুকাল অপেক্ষা করতে হবে, সময়ের সেই পরিশ্রুত প্রজন্মের জন্যে।
৪৫৬ বার পঠিত
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টারের মতো প্রতিষ্ঠানের উচিত তাদের অবস্থান পুনর্মূল্যায়ন করা এবং বাংলাদেশকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া।

লিখেছেন জ্যাকেল , ২৩ শে নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৫

বাংলাদেশে গণমাধ্যমের ভূমিকা বরাবরই সংবেদনশীল এবং গুরুত্বপূর্ণ। একটি গণতান্ত্রিক সমাজে গণমাধ্যমের কাজ হলো সত্য প্রকাশ, জনমতের প্রতিনিধিত্ব এবং গণতন্ত্রকে সুরক্ষা দেওয়া। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন মহলে অভিযোগ উঠেছে যে, বাংলাদেশের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার সাজিদ কমেন্ট অফ রাখায় এখানে লিখছি (সাময়িক)

লিখেছেন মিরোরডডল , ২৩ শে নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:০৫


সাজিদের বিদায় পোষ্ট দেখলাম, কমেন্ট সেকশন বন্ধ রাখায় ভাবলাম এখানেই লিখে যাই।

জানিনা কি বলবো, হয়তো এটাই দেখা বাকি ছিলো।
চলে যাবার কারণ জানিনা কিন্তু অনুমান করতে পারছি।
Man! you shouldn't leave.

ব্লগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখ হাসিনা রাজনৈতিক নিপীড়নের শিকার হতে যাচ্ছেন?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৩ শে নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৫৭


আজকাল মানুষ চেনা বড্ড কঠিন হয়ে পড়ছে। কে কোন উদ্দেশ্য নিয়ে কার পক্ষে দাঁড়াচ্ছে তা বুঝা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। রাজনীতিতে এই কথা আরো বেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কখনো বিদায় বলতে নাই

লিখেছেন ডার্ক ম্যান, ২৩ শে নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



ব্লগে কিছুদিন ধরে অনিয়মিত হওয়ায় কখন কি ঘটে জানি না।
কিছুক্ষণ আগে মিররডলের একটা পোস্টে জানতে পারলাম , ব্লগার আমি সাজিদ ঘোষণা দিয়ে ব্লগ ছেড়েছেন । তার সাথে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তীব্র নিন্দা জানাই

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৩ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:০৭



চাঁদগাজী একজন গ্রেট ব্লগার। তার তুলনা হয় না।
সামু তার সাথে বারবার অন্যায় করেছে। একটা দিন তাকে শান্তিতে ব্লগিং করতে দেওয়া হয়নি। সামুর ইতিহাসে তাকে সবচেয়ে বেশি বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×