তারিখ: নেই (অনুমান এপ্রিল,১৯৯৩)
যেদিন এ যুবক জানতে পেলো তার ভালোবাসার স্পর্শ আদর প্রেয়সীর নির্মল মনটাকে পাপ-বোধে করে তোলে অপবিত্র, সেদিনের আগেই তার মরে যাওয়া উচিৎ ছিলো। উচিৎ ছিলো একটা প্রচণ্ড আলোড়নে সে মুহূর্তে পৃথিবীটা ধ্বংস হয়ে যাওয়া। মেয়েটি জানলো না, এ কেমন বিষাক্ত ছোবলে যুবকটিকে তীব্র নীল করে দিলো। দাউ দাউ করে বিষের আগুনে পুড়তে লাগলো যুবকের বুক। অস্থি মজ্জা মাংশ পুড়ে কালো হয়ে গেলো। এমন অকস্মাৎ ধাক্কায় এভাবেই দূরে ঠেলে দিলে ? মীরও কি এভাবে পুড়েছিলেন ? নইলে কেন তিনি বলতে গেলেন-
‘দিলকে তঈঁ আতশ-এ হিজরাঁ-সে বচায়া নহ্ গয়া,
ঘর জ্বলা সামনে পর হমসে বুঝায়া নহ্ গয়া।’
(হৃদয়টাকে বিরহের দাহ থেকে বাঁচানো গেল না ;
দেখতে দেখতে ঘর পুড়ে গেল তবু আগুন নিভাতে পারলাম না।)
সেদিনের সেই বিনিদ্র রাত যুবকের বুকে কিসের চিতা জ্বালিয়েছিল কে জানে। প্রাতে গিয়ে যদি মাত্র একবারটি ঐ যুবকের মুখের দিকে তাকাতে, রূপা, তাইলে তুমিও হয়তো মীরের মতোই বলতে-
‘আহোঁকে শোলে জিস জা উঠতে থে মীর সে শব্,
বাঁ জাকে সুবহ দেখা মুশত্-এ গুবার পায়া।’
(যে জায়গাটিতে মীরের হাহাকারের শিখা লেলিহান ছিল কাল রাত্রে,
আজ ভোরবেলা সেখানে গিয়ে শুধু এক মুঠো ছাই দেখতে পেলাম।)
রবি ঠাকুর লোকটাও কিন্তু সুবিধের নয়-
“যতই দেখি তারে ততই দহি, আপন মন জ্বালা নীরবে সহি...”
এবং বারবার তোমার কাছেই ফিরে যাই। রূপা, কষ্ট পেয়ো না, আমরা যে জেনে শুনেই বিষপান করেছি ! এই বিষে ঢলে পড়েই তো মানুষ অমর হয়ে যায় !!
চলবে...
আগের পর্ব (০৫): Click This Link
পরের পর্ব (০৭): Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মে, ২০০৮ রাত ১২:৪৪