somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাজিন রিভিউ - “Man of Steel”

১৫ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১১:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঘুম থেকে উঠে দাঁত মাজা। পাউরুটিতে কামড়। তারপর অফিস। ধুর আর ভালো লাগে। ইশশ যদি উড়তে পারতাম। যদি গুন্ডা বদমাইশগুলারে এক ঘুষিতে উড়ায়ে দিতাম কিংবা রাজাকার গুলারে যদি নিজের চোখ থেকে রে মাইরা জ্বালায় দিতাম। এভাবেই মানুষের সাধারন জীবনের বিতৃষ্ণা থেকে সামান্য রেহাই দিতে DC Comics এর Jerry Siegel এবং Joe Shuster নামক দুই তরুন সৃষ্টি করেন Superman নামক এক অতিমানব। ধীরে ধীরে কমিকসের জোয়ার আসে। আসে একের পর এক Superhero । কিন্তু ভেজালটা লাগাইলো Christopher Nolan। ২০০৮ সালে The Dark Knight দেখার পর দর্শকদের মনে সুপারহিরো মুভি নিয়ে উচ্চাশা পুরাই আসমান পার হইয়া গেল। সে আশাকে কিছুটা পূরণ করার প্রচেষ্টা নিয়ে এবার পৃথিবীর সর্বপ্রথম কমিক সুপার হিরো নিয়ে Zack Snyder এর মুভি Man of Steel ।

কানসাসের এক গ্রামের কৃষকের ছেলে ক্লার্ক (Henry Cavill) । ছোটবেলায় স্কুলে গিয়ে দেখে এইডা কী হইতেসে? মানুষের দিকে তাকাইলে হাড্ডি পর্যন্ত দেখা যায়। কে যেন আরেফিন রুমীর ৪ নম্বর ভালোবাসা নিয়া কথা কয় এটাও শোনা যায় আবার কেউ বাথরুমে বসে “বোরকা পরা মেয়ে পাগল করেছে ... “ গান ফিসফিস করলে সেটাও শোনা যায়। মহা মুসিবত। অনন্ত জলিলের মুভি দেইখা সবাই হাইসা ভাসায় দেয় কিন্তু ক্লার্ক একটু চেষ্টা করলেই অনন্ত জলিলের মত “ঢাকার পোলা ... ভেরি ভেরি ইশমার্ট” হতে পারে। এতে হাসির কী হলো?

অবশেষে একদিন নিজের বাবার (Kevin Costner) কাছে জানতে পারে যে সে তার সন্তান নয়। এমনকি সে এই পৃথিবীরই কেউ নয়। একটি স্পেস শিপে করে ক্ষেতের মধ্যে তাকে পাওয়া গিয়েছিল। ছোটবেলায় কোন এক বিয়ে বাড়িতে দৌড়াদৌড়ি করছিলাম। হঠাৎ দেখি আমি এমন এক রুমে আছি যেখানে আমার মা-বোন , পরিবারের কেউই নেই। নিজেকে ভয়ংকর একা লেগেছিল। ক্লার্ক জানতে পারে যে সে এমন এক জায়গায় আছে যেখানে তার প্রজাতির কোন প্রাণীই নেই। কতটা একা হয়ে গেল সে সেটা বোঝানো কঠিন।

ক্লার্ক যখন যৌবনে তখন নেমে পড়ে এক খোঁজে। নিজের পরিচয়ের সন্ধানে। দেখা পায় তার আসল বাবা (Russell Crowe) এর সাথে। এদিকে ক্লার্কের উৎপত্তিস্থল “Krypton” গ্রহ থেকে এসেছে কিছু এলিয়েন। খুঁজতে এসেছে ক্লার্ককে। তাদের পর পৃথিবীতে কিছু বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা চালাবে। কী যে করবে সেটাতো বোঝাই যাচ্ছে। ক্লার্কের যা শক্তি সবই তো তাদের কাছেও আছে। ক্লার্ক কী পারবে তাদের থামাতে?

মুভিটির প্রথম ভাগে বেশ আবেগঘন হওয়ায় বেশ দারুন লাগে। পরের ভাগ ধুম-ধারাক্কা মারামারি একটু গাজাখুঁড়িই। মুভিটির প্রযোজক Christopher Nolan হলেও মুভিটি Zack Snyder এর 300 টাইপই হয়েছে। তবুও Superman নিয়ে বানানো এটাই সেরা মুভি।

মুভিতে সবচাইতে দুর্দান্ত লাগা জরুরী মুভির নায়ককে। সেটাই লেগেছে Henry Cavill কে । সুপারম্যানের চরিত্রে Henry Cavill ছাড়া এখন চিন্তা করাই কষ্টকর। দারুন অভিনয় সাথে সুদর্শন এক নায়ক। প্রতিদিন ৫০০০ ক্যালরী খাবার এবং ঘন্টার পর ঘন্টা ব্যায়াম ঠিকই কাজে দিয়েছে। Lois চরিত্র Amy Adams কেও ভালো লাগে। এছাড়া Kevin Costner, Diana Lane, Michael Shannon সবাই ভালো করেছে। তবে অসাধারণ করেছেন Russell Crowe । Marlond Brando ‘র করা চরিত্রের জন্য এমন যোগ্যই কাওকে দরকার ছিল।

মুভির Soundtrack এর কথা না বললেই নয়। সব সময়ের মত ফাটাইসেন Hans Zimmer। পুরো মুভিতে সাউন্ডট্র্যাক বেশ উপভোগ্য। মুভিটি একশান সম্পর্কে আগেই বলেছি বেশ আজগুবি। খুব একটা অসাধারণ লাগেনি। কিছুটা ট্রান্সফর্মার টাইপ বিরক্তিকর। Zack Snyder এই জায়গাতেই Nolan এর কাছে ধরা খাইলেন।

আরেক ব্যাপার খুবই অবাক করা। মুভিটি কিন্তু 3D তে তে ধারণ করা হয়নি। বরং পরবর্তীতে 3D তে রুপান্তরিত করা হয়েছে। সে কারণে IMAX 3D তে দেখলেও মুভিটিকে সাধারণ 2D মুভি লাগবে। ব্যাপারটি আমার কাছে কিছুটা ধাপ্পাবাজি লেগেছে। সেকারনে মুভিটির জন্য 3D দেখার পয়সা খরচের দরকার নেই।
কিছু কিছু দৃশ্য আসলেই অসাধারণ আবার কিছু দৃশ্য একেবারেই গাজাখুঁড়ি। কিন্তু সব মিলিয়ে সবাইকে নিয়ে দেখার মত একটি ছবি।

রেটিং – ৩.৫ /৫
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জুন, ২০১৩ রাত ৯:০৪
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×