বাংলাদেশের নদ-নদী ( অবস্থা খুব খারাপ )
মহানন্দা নদী, ময়ূর নদী, মাতামুহুরী নদী, মুহুরী নদী, মেঘনা নদী, যমুনা নদী,রূপসা নদী, শঙ্খ নদী, শিবসা নদী, শীতলক্ষা নদী, সাঙ্গু নদী, সুরমা নদী, হালদা নদী- যদি একটু ভালো করে লক্ষ্য করেন তাহলে দেখবেন বাংলাদেশের নদী গুলোর নাম অদ্ভুত সুন্দর । ভৌগোলিক অঞ্চলভেদে ছোট নদীকে বিভিন্ন নামে ডাকা হয়।
পদ্মা বাংলাদেশের দ্বিতীয় দীর্ঘতম নদী । হিমালয় পর্বতমালার গঙ্গোত্রী নামক হিমবাহ হতে গঙ্গা নামে উৎপত্তি হয়ে ভারতের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ হতে বাংলাদেশের চাঁপাই নবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলায় (মানাকোসা ও দুর্লভপুর ইউনিয়ন) নদীটি বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।পদ্মা ও মেঘনার মিলিত প্রবাহটি মেঘনা নামে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে।রাজা রাজবল্লভের কীর্তি পদ্মার ভাঙ্গনের মুখে পড়ে ধ্বংস হয় বলে পদ্মার আরেক নাম কীর্তিনাশা।বর্তমানে পদ্মার সেই প্রবাহ আর নেই। বিগত কয়েক বছর ধরে ক্রমাগতভাবে পলি জমে নদীর বিভিন্ন স্থানে (বিশেষ করে রাজশাহীতে) অনেক (প্রায়) স্থায়ী চরের সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে পানির প্রবাহ ও মাছের বৈচিত্র্যতা ও প্রাচুর্যতাও কমে যাচ্ছে। এছাড়া নদীর বিভিন্ন স্থানে নিষিদ্ধ মাছ ধরার জাল (কারেন্ট জাল) ব্যবহার করে ছোট-বড় সব ধরনের মাছ আহরণের ফলেও মাছের উৎপাদনের উপর ঋণাত্মক প্রভাব পড়ছে।
নদীগুলোর দু’পাশেই গড়ে উঠেছে সহস্র নগর ও বন্দর। নদীগুলোর কোনটি ছোট আবার কোনটি বড় কিন্তু প্রতিটি নদীই নির্দিষ্ট অঞ্চলে তার নিজস্ব অবদানের ক্ষেত্রে স্বমহিমায় স্বীকৃত। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে অবস্থিত চিত্রা নদীও তেমনি একটি নদী যা বছরের পর বছর ধরে বয়ে চলেছে তার অববাহিকায় গড়ে ওঠা নানান সভ্যতার স্মৃতি নিয়ে।উত্তাল প্রমত্ত চিত্রা নদী আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। আজ চিত্রা নদীর দিকে তাকালে তার সেই প্রবাহময়তা আর দেখা যায় না। বিভিন্ন কারণে তার আজ অতীব দরিদ্র দশা,যার মধ্যে মনুষ্য সৃষ্ট কারণ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, তবে প্রাকৃতিক কারণও নদীটির বিলুপ্তপ্রায় দশার জন্য প্রণিধানযোগ্য।চিত্রা নদীর পারে তানভীর মোকাম্মেল পরিচালিত একটি বাংলা চলচ্চিত্র। ১৯৯৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিটি বিভিন্ন দেশের চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয় এবং একাধিক জাতীয় পুরস্কার লাভ করে। ১৯৪৭ সালের দেশবিভাগ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে হিন্দুদের জীবনে যে প্রভাব ফেলেছিল, তা এই ছবিতে দেখানো হয়েছে। কাহিনীর শুরু ১৯৪৭ থেকে এবং শেষ হয় ৬০’-এর দশকে। অভিনয় করেছেন মমতাজউদ্দীন আহমেদ, আফসানা মিমি, তৌকীর আহমেদ, রওশন জামিল, সুমিতা দেবী প্রমুখ।
সীমান্ত নদীর উজানে পানি প্রবাহে বাধার কারণে বিপর্যস্ত ভাটির দেশ হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশের নদ-নদীগুলো। পানির অভাবে বাংলাদেশের অধিকাংশ নদ-নদী মরে যাচ্ছে। বর্ষায় নদীগুলোতে পলি পড়ে ভরাট হচ্ছে। নাব্য হারানোর ফলে দেখা দিচ্ছে বন্যা। অধিকাংশ নদ-নদী শুকিয়ে যাওয়ায় মারাত্মক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে দেশের শিল্প-বাণিজ্য, কৃষি, মত্স্য সম্পদ, নৌপরিহন ও আবহাওয়া-পরিবেশে।দেশের মানুষের বেঁচে থাকার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এ দেশের নদ-নদীর সঙ্গে জড়িত দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন।সাধারণত প্রাকৃতিক দুটি উত্স থেকে পানি পেয়ে থাকে বাংলাদেশের মানুষ। প্রথমটি হলো নদ-নদী, খাল-বিল, হাওর-বাঁওড় ও পুকুরের পানি। দ্বিতীয়টি হলো ভূগর্ভস্থ পানি। প্রথমটির ওপর দ্বিতীয়টি সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল।আবহমানকাল থেকেই এদেশের মানুষের জীবন-জীবিকা নদীনির্ভর। দেশের সভ্যতা, সংস্কৃতি ও জীবনযাত্রা গড়ার ক্ষেত্রে অন্যতম নিয়ামক হলো নদী। বাংলাদেশ নামক ভূখণ্ডের বেশিরভাগ অঞ্চল তিনটি প্রধান নদীবাহিত পলি দ্বারা গঠিত। অতীতে এই ভূখণ্ডে অসংখ্য নদনদী ছিল, যার অধিকাংশই মরে গেছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড মাঠপর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ, পানি বিজ্ঞানের ডাটাবেস, বিভিন্ন প্রকাশনা, রিপোর্ট ইত্যাদির ভিত্তিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা নদীগুলোকে শনাক্ত করেছে।
বঙ্গোপসাগরের জোয়ার-ভাটার টানে সাগর থেকে আসে লোনা পানি। এই লোনা পানিকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আসা প্রতিরোধ করে উজান থেকে আসা নদ-নদীগুলোর মিঠা পানি। বাংলাদেশের প্রায় সব নদ-নদীর পানির পানিপ্রবাহের মূল উত্স সীমান্ত নদী।উজান থেকে নেমে আসা আকস্মিক পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে হাজার হাজার একর জমির ফসল। ফারক্কা বাঁধের প্রভাবে এ শুকনো মৌসুমে গঙ্গা অববাহিকার নদ-নদী খালবিলগুলো শুকিয়ে গেছে। প্রবাহশূন্য হয়ে পড়েছে মহানন্দা, গড়াই, মাথাভাঙ্গা, বেতনা, ভৈরব, কপোতাক্ষ, ইছামতির মতো বড় বড় নদীগুলো। মিঠাপানির অভাবে হুমকিতে পড়েছে সুন্দরবন। লবণাক্ততা মারাত্মকভাবে বেড়ে গেছে সুন্দরবনসহ দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে।ব্রহ্মপুত্র-যমুনা অববাহিকার প্রধান নদী ব্রহ্মপুত্রে এখন পর্যন্ত কোনো বাঁধ নেই। কিন্তু শুকনো মৌসুমে চীন ও ভারত অসংখ্য পাম্প বসিয়ে এই নদীর পানি টেনে নেয়। ফলে শুষ্ক মৌসুমে পানি প্রবাহ কমে আসে ব্রহ্মপুত্র ও যমুনাতে।কাপ্তাই লেকের পানি কমতে থাকায় ও অবৈধ দখলের কারণে হুমকিতে পড়েছে কর্ণফুলী। এসব নদীর উজানে বাধার কারণে বিপর্যয় নেমে এসেছে ভাটি অঞ্চলে।
নদী বাঁচাতে কিছু কিছু নদী খননের কথা বলছে সরকার। এরমধ্য কুষ্টিয়ায় গড়াই নদীর খননও শুরু হয়েছে। কেউ কেউ বলছেন খনন করে নদী রক্ষা করা সম্ভব। কিন্তু কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ বলছেন, পানির প্রবাহ না থাকলে কোনো নদীই খননের মাধ্যমে রক্ষা করা সম্ভব নয়। নদী খননের নামে অর্থ বরাদ্দ করে লুটপাটই করাই নদী খননের মূল উদ্দেশ্য। দেশকে বাঁচাতে হলে নদ-নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় করতে হবে। নদীগুলোর প্রবাহ ঠিক রাখতে এবং দেশকে বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে পানি পাওয়ার নিশ্চয়তা বিধান করা জরুরি। পলি জমে কমপক্ষে ৯৫টি নদী বিলুপ্তির অপেক্ষায় ধুঁকছে।নদী দখলের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা বাঞ্ছনীয়। সেই সাথে ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, তা দ্রুতায়িত করা দরকার।নদীর কোনো বিকল্প নেই। আমাদের মতো অনুন্নত ও কৃষিপ্রধান দেশের জন্য নদীই হচ্ছে জাতির প্রাণপ্রবাহ। এই প্রাণপ্রবাহ যে কোন মূল্যে রক্ষা করতে হবে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে নদীর গুরুত্ব আরও বেড়ে গেছে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার কারণে আবাসন ও শিল্পায়নের প্রয়োজনে কর্ষণযোগ্য ভূমি যখন সংকুচিত হয়ে পড়েছে।
বাংলা সাহিত্যে নদী গুরুত্বপূর্ স্থান দখল করে আছে। তন্মধ্যে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়-এর পদ্মা নদীর মাঝি অন্যতম। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে সুজন-সখী’র গান হিসেবে ‘সব সখীরে পাড় করিতে নেব আনা আনা, তোমার বেলা নেব সখী’ - প্রেমের গানটি তৎকালীন সময়ে সকলের মুখে মুখে ছিল। দক্ষিণ এশিয়ার দীর্ঘতম দুটি নদী - গঙ্গা আর ব্রহ্মপুত্র যেখানে বঙ্গোপসাগরে মিশেছে সেখানেই কালের পরিক্রমায় গড়ে ওঠা বঙ্গীয় ব-দ্বীপ। এই গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র মোহনা অঞ্চলে প্রায় ৩০০০ বছর বা তারও পূর্ব থেকে যে জনগোষ্ঠীর বসবাস, তা-ই ইতিহাসের নানান চড়াই উতরাই পেরিয়ে এসে দাড়িয়েছে বর্তমানের স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশ রূপে।বাংলাদেশের অধিকাংশ এলাকা সমূদ্র সমতল হতে মাত্র ১০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত।বুড়িগঙ্গাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে রাজধানী ঢাকা। নগরীর মলমূত্র, আবর্জনা, রাসায়নিক বর্জ্যের ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে নদীটি। বুড়িগঙ্গার পানি আর পানি নেই। বিষ হয়ে গেছে।শরীরে বিষ নিয়ে বুড়িগঙ্গা আর কতদিন বেঁচে থাকবে? সবার চোখের সামনেই ধীরে ধীরে মরে যাচ্ছে কালের স্বাক্ষী বুড়িগঙ্গা। রাজনীতির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে বুড়িগঙ্গাকে।
বৃহত্তর খুলনার ৭১টি নদী (সুন্দরবন ব্যতীত)- ভদ্রা, আঠারোবাকী, আলাইপুর খাল, খোলপটুয়া, শিবসা, রূপসা, বলেশ্বর, গাসিয়াখালী, পশুর, আড় পাঙ্গানিয়া, ওড়াটামা, ইছামতি, নমুদ সমুদ্র, সোনাগাঙ্গ, ভাঙ্গরা, কুঙ্গা, মালঞ্চ, সাতক্ষীরা, সুতেরখালি, রাইমোঙ্গল, মারজাতী, হরিণ ভাঙ্গা, মহাগঙ্গা, গলাঙ্গী, খোলপেটুয়া, হরিপুর, সোনাই, বুধহাটার গাঙ্গ, ঢাকি, গালঘেমিয়া, উজীরপুর কাটাখাল, গুচিয়াখালী, বদুরগাছা, ডেলুটি মনস, কয়ারা, আড়শিবসা, কালিন্দী, মজুদখালি খাল, আকরার খাল, মংলা, সোলা, পায়রা, আগুনমুখা, মুহুরী, মোদলা, হাড়িয়াভাঙ্গা, গানগুবী, কচা, পাকাশিয়া, মৈয়ার গাং, কাবিপাতা, ঝাঁক, শিয়ালীর খাল, নারায়ণ খালি, মেনস কদমতলী, বাংরা শীলা, কলাগাছিয়া, বাঁশতলী, সালখী, শাকবাড়িয়া, আলকী, মানিকদিয়া, চন্দেশ্বর, পানকুশী, বলেশ্বর, বলমার্জার বা মাঞ্জাল, কাগীবাগ, রামপাল।
বৃহত্তর বরিশাল জেলার ৫৮টি নদী- বিষখালী, স্বরূপকাঠি, বাবুগঞ্জ, হেমদা, লোহালিয়া, শাহবাজপুর, নয়াভাঙ্গা, রাজগঞ্জ, গনেশপুর, দুবালদিয়া, তোরকি, কীর্তনখোলা, ধরমগঞ্জ, ঝিলিনহো, মনকুঠা, মুলতানী, কারখোমা, আলগি, ধুলিয়া, গঙ্গালিয়া, বুড়িশ্বর, কালিগঙ্গা, হরিণঘাটা, পাতুয়া, তেঁতুলিয়া, ধালিয়া, নীলাশী, নবগঙ্গা, শাহবাজপুর, ভোলা, পাকাশিয়া, চন্দনা বা পাংশা, জাবনাসবাদ, বলেশ্বর, শশ্মানঘাট, মৈয়ার গাং, নয়া ভাঙ্গনী, গৌরনদী, কালাবদর, মীরগামারী, কোচা, লোতা, ইলিশ তেঁতুলিয়া, কবাখালি, মধুমতি, আঁধারমানিক, রাবনাবাদ বা পটুয়া, বুড়া গৌরাঙ্গ, বাকেরগঞ্জ, আমতলা, ধানসিঁড়ি, সুগন্ধা, ঝালকাঠি, চালনা, এলেংখালী, নলবিটি, খরবোরাবাদ, গলাচিপা।
শীতলক্ষ্যাও এখন বিষাক্ত বর্জ্যের ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। শিল্প বর্জ্য আর নর্দমার ময়লায় সয়লাব শীতলক্ষ্যা। দশ লাখের বেশী মানুষের পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা চলে এই নদীতেই। পানির সঙ্গে সেই ময়লা একাকার হয়ে পানি আর পানি থাকে না। কলকারখানার বর্জ্য আর মানুষের সৃষ্ট বর্জ্যের ভয়াবহ দূষণে অত্যাধুনিক বিদেশী প্লান্টেও এ নদীর পানি বিশুদ্ধ করা যাচ্ছে না। বিশুদ্ধ করার পরও পানিতে দুর্গন্ধ থেকেই যায়। পানির দুর্গন্ধে নদীর পাড়ে বাস করাও কষ্টকর।তিস্তার পানি প্রবাহ এ এযাবতকালের সর্ব নিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। তিস্তা ব্যারাজ থেকে দেড়শ’ কিলোমিটার পর্যন্ত নদী এখন মরা গাঙে পরিণত হয়েছে। স্রোত না থাকায় ভরাট হয়ে যাচ্ছে নদী। ১৯৭৭ সালে তিস্তার উজানে গজলডোবা নামক স্থানে ভারত একটি ব্যারেজ নির্মাণ করে তিস্তার দূর্বার গতিকে থামিয়ে দেয়। ভৈরব এবং কপোতাক্ষ থেকে বের হওয়া নদীগুলো বর্ষার কয়েক মাস পানি থাকে, বাকি সময়গুলো শুকিয়ে যায়। আর নদী শুকিয়ে যাওয়ায় মানুষ নদীর দু’তীরে দখল করে বসতবাড়ি-মার্কেট তৈরি করছে। পদ্মা নদীর ওপরেই ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ নির্মাণ করেছিল ব্রিটিশ শাসকরা। মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতীয় বিমানবাহিনীর বোমা বর্ষণের ফলে এর কয়েকটি স্প্যান ধসে পড়েছিল।
১৯৭৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে ২৪ হাজার কিলোমিটার নৌপথ ছিল। সেই নৌপথ কমতে কমতে এখন প্রায় ৬ হাজার কিলোমিটারে নেমেছে। শুষ্ক মৌসুমে আরও কমে হয় ৩ হাজার ৮০০ কিলোমিটার। এ তথ্যের উত্স বিআইডব্লিউটিএর নদী সংরক্ষণ বিভাগ।ভারতের কূটনৈতিক আচরণের অভিজ্ঞতা দেখে মনে হয়, বাংলাদেশ অংশে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ৫৪টি অভিন্ন নদীর মৃত্যু ঘটবে।আমাদের দেশে আজকাল গ্রামে গ্রামে টিউবওয়েল বা চাপকল ব্যবহার করা হয় খাবার পানির জন্য, কিন্তু গ্রীষ্ম মৌসুমে অনেক কলেই পানি উঠছে না। বাংলাদেশের জন্য পানির সমস্যাটি এখন খুবই দুশ্চিন্তার বিষয়।সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, নদীমাতৃক দেশ এখন মরুভূমি হতে চলেছে।আমরা এখনো সজাগ না হলে,নদী দেখতে হয় ভারত নয় বইয়ের পাতায় নদী খুজবে আমাদের পরব্তি বংশধরেরা!যে দেশের পরিচয় দিতে গিয়ে প্রথমেই বলা হতো নদীর কথা, যে দেশটিকে বলা হতো নদীমাতৃক দেশ, সেই নদীমাতৃক দেশেই কি না অনেক নদী শুকিয়ে গিয়ে মরুভূমির কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। জলবায়ুর পরিবর্তন করছে মানুষ। এর প্রভাব পড়ছে নদীগুলোতে। এই যে নদী তার নাব্যতা হারাচ্ছে, এটাও তো মানুষেরই কারণে। নদীর পানি দূষিত হচ্ছে। ব্যবহারের উপযোগিতা হারাতে হারাতে এখন এ পানিই মানুষের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পাহাড় কেটে নদীর বুকে ঠেলে দিচ্ছে মাটি; সেই মাটি ধারণ করছে নদী। একসময় নিজের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাচ্ছে পাহাড় আর সমতলের মানুষের অত্যাচারের কারণে। এভাবে বিলীন হয়ে গেছে দেশের ১৭টি নদী। এর বাইরে শুধু ঢাকা শহরেরই ১৮টি নদীর চিহ্নও এখন খুঁজে পাওয়া যাবে না। শুধু বুড়িগঙ্গা নদীর বুকেই নাকি ১০ ফুট পুরু পলিথিনের স্তর পড়েছে। এই তথ্য বলে দেয়, বুড়িগঙ্গা কী অবস্থায় বেঁচে আছে আমাদের মাঝে। ঢাকার হাজারীবাগ ট্যানারি থেকে যে বর্জ্য পড়ছে বুড়িগঙ্গায়, সেই বর্জ্য ধারণ করার ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলেছে এই নদী।নদীর যদি মুখ থাকত, তাহলে তার পক্ষে বলা সম্ভব হতো মানুষের হাতে সে কতটা নির্যাতিত হচ্ছে।এখনো সময় আছে, বাংলাদেশের নদীগুলোকে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনার জন্য নিয়মিত ড্রেজিং করতে হবে। মানুষের অত্যাচারও কমাতে হবে। তা না হলে একদিন এমন সবুজ দেশটির জন্য আমাদের আফসোস করতে হবে।


সত্যজিৎ রায়ের চলচ্চিত্রে মুসলিম চরিত্রের অনুপস্থিতি: এক অনালোচিত প্রশ্ন?
সত্যজিৎ রায়, যিনি বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে পরিচিত, তাঁর চলচ্চিত্র, গল্প এবং গোয়েন্দা সিরিজ ফেলুদা বাস্তববাদী চরিত্র, সমাজচিত্র, এবং গভীর দার্শনিকতা নিয়ে আলোচিত। তবে তাঁর কাজের মধ্যে একটি... ...বাকিটুকু পড়ুন
সুরের জাদু: গিটার বাজালে কি ঘটবে?
গাজীপুরের পুবাইলের পুরনো গির্জাটি রাতের আঁধারে যেন জীবন্ত হয়ে ওঠে। এই গির্জার নির্মাণকালে কিছু না জানা কুসংস্কারের অনুসরণ করা হয়েছিল। গাজীপুরের লোককথায় বলা হয়, এই গির্জার নিচে আটটি... ...বাকিটুকু পড়ুন
শুধু হিংস্র, আগ্রাসী নয় ভারত লুটেরা, লোভী এবং সাম্রাজ্যবাদীও বটে.....
শুধু হিংস্র, আগ্রাসী নয় ভারত লুটেরা এবং লোভীও....
জন্মলগ্ন থেকেই ভারতের হিংস্র ও আগ্রাসী। পাকিস্তানের সাথে যোগ দিতে চাওয়া এবং স্বাধীন থাকতে চাওয়া কিছু অঞ্চল যেমন হায়দ্রাবাদ, ত্রিবাংকুর, ভূপাল, যোধপুর, জুম্ম-কাশ্মীর,... ...বাকিটুকু পড়ুন
২০০৮- ২০২৪, হাসিনা ভারতের জনম জনমের ঋণের কিছুটা শোধ করেছেন মাত্র
২০০৮- ২০২৪, হাসিনা ভারতের জনম জনমের ঋণের কিছুটা শোধ করেছেন মাত্র
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন
শিক্ষকদের দ্বৈত চরিত্র এবং বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার বেহাল দশা!
বাংলাদেশে শিক্ষার মান নিয়ে সবার মুখে নানা রকম কথা শোনা যায় । কেউ কেউ বলছেন দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নতি হচ্ছে , কেউ বলে দিন দিন তা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন