শহীদুল ইসলাম প্রামানিক
কলেজ থেকে বের হয়ে কিছু কেনাকাটার প্রয়োজনে শহরের পুরাতন বাজারে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে ফিরে স্টেশনের কাছাকাছি আসতেই পাঁচটার ট্রেন ছেড়ে দিল। দৌড়ে স্টেশনের ভিতরে ঢুকলেও চলন্ত ট্রেনে উঠা সম্ভব হলো না। বাধ্য হয়ে স্টেশনের প্লাট ফর্মের বেঞ্চের উপর বসে বসে পরবর্তী ট্রেনের অপেক্ষা করতে লাগলাম। কিন্তু পরবর্তী ট্রেন রাত নয়টার আগে আসবে না। বিকাল পাঁচটা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বসে বসে সময় কাটানো খুবই বিরক্তির ব্যাপার। তাই কালক্ষেপণ করার জন্য স্টেশনের পূর্বপার্শ্বের সিনেমা হলে গিয়ে টিকেট কেটে ঢুকে পড়ি।
সিনেমা হল থেকে বের হয়ে তাড়াতাড়ি স্টেশনে গিয়ে দেখি ৯টা বেজে গেছে কিন্তু ট্রেনের কোন খবর নেই। স্টেশন মাষ্টারের কাছে জিজ্ঞেস করতেই তিনি বললেন, ট্রেন আসতে দেরি হবে।
কতক্ষণ দেরি হবে প্রশ্ন করায় তিনি সময়ের কোন নিশ্চয়তা দিতে পারলেন না।
রাত নয়টার ট্রেন রাত সাড়ে এগারটায় এসে পৌঁছল। তাড়াতাড়ি ট্রেনে উঠে সিট দখল করে বসে পড়লাম। আমার গন্তব্য স্টেশনে যখন ট্রেন এসে পৌঁছল তখন রাত পৌনে একটা। মফস্বল এলাকার ছোট স্টেশন। তখনও এই এলাকায় কোন বিদ্যুৎ আসে নাই। পুরো স্টেশন ঘুটঘুটে অন্ধকার। স্টেশনের উত্তর পার্শ্বে টিনের ছোট একটি ছাপড়া ঘরে চায়ের দোকান। একবার ভাবলাম চায়ের দোকানে বসে রাতটা কাটিয়ে দিব। কারণ এই স্টেশন থেকে আরো চার মাইল কাঁচা রাস্তা হেঁটে যেতে হবে। এই চার মাইলের ভিতর অনেক ফাঁকা মাঠ, পোড়ো ভিটা এবং জংলাপূর্ণ জায়গা পার হতে হবে। একার পক্ষে এই অন্ধকার রাতে এরকম ভয় ভীতির পথ পাড়ি দেয়ার সাহস হচ্ছে না। চায়ের স্টলে গিয়ে এককাপ চা খেয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতেই দোকানদার চায়ের চুলা নিভিয়ে দিয়ে বলল, ”ভাই আমি এখন দোকান বন্ধ করে বাড়ি চলে যাব। আপনি দয়া করে দোকানের বাইরে গিয়ে বসেন”।
দোকানদারের এ কথায় যেন মাথায় বাজ পড়ল। আমি এখন কোথায় যাব? কি করব? কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না।
অবশেষে বুদ্ধি করে দোকানদারের কাছ থেকে চারানা দিয়ে একটা ম্যাচ আর আটানা দিয়ে বারোটা বিড়ি কিনে নিলাম। আসলে আমার ধুমপানের অভ্যাস নেই। অন্ধকার রাতে চলতে গিয়ে ভুত-প্রেতের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যে এই ব্যবস্থা। হাতে আগুন থাকলে নাকি ভুত প্রেত কাছে আসে না। ম্যাচ জ্বালিয়ে একটি বিড়ি লাগিয়ে টানতে টানতে নিজের সাহসে ভর করে রওনা হলাম। অন্ধকার রাস্তা তারোপর বৃস্টির পানিতে কর্দমাক্ত হওয়ায় বেশি জোরে হাঁটা সম্ভব হচ্ছে না। কিছুদূর এগিয়ে যেতেই সামনে দু’জন লোকের দেখা পেলাম। তারাও পূর্ব দিকে যাচ্ছে। তাদের পিছনে পিছনে হেঁটে যাচ্ছি। আলাই নদীর উপর বড় ব্রীজটা পার হওয়ার পড়েই রাস্তা তিনদিকে ভাগ হয়ে গেছে। তারা দু’জন রাস্তা পরিবর্তন করে অন্য রাস্তায় চলে গেল। মুষ্কিল হলো আমি যে রাস্তায় যাব সে রাস্তায় কিছুদূর গেলেই সাধুর আশ্রমের ঝোপঝাড়পূর্ণ পোড়ো ভিটা। একে তো জঙ্গলাপূর্ণ ভিটা তারোপর বড় বড় শিমুল গাছসহ নানাজাতীয় গাছগাছালিতে ভরা। এই ভিটার আশেপাশে কোন বাড়ি ঘর নেই। চোর-ডাকাত কিংবা ভুত-প্রেত আক্রমণ করলে গলা ফাটিয়ে চিল্লালেও কেউ এগিয়ে আসবে না।
সাধুর আশ্রমের কাছাকাছি এসে ভয়ে শরীর কাঁটা দিয়ে উঠল। এখন কি করব বুঝতে পারছি না। পিছনে ফিরে যাব না সামনে এগিয়ে যাব ভেবে পাচ্ছি না। পিছনে গিয়েই বা কোথায় থাকব? থাকার তো জায়গা নেই। ভাবলাম সামনেই যেতে হবে। মনে সাহস নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে লাগলাম। সাধুর আশ্রমের কাছে এসে ম্যাচ জ্বালিয়ে বিড়ি একটা লাগানো ছিল আরেকটা লাগিয়ে নিলাম। কারণ, বিড়ির আগুন একটা কোন কারণে নিভে গেলেও আরেকটি যেন জ্বালানো থাকে। তাতে বিপদের সময় আগুন নিয়ে সমস্যা হবে না।
দুই হাতের আঙ্গুলের চিপায় দু’টি বিড়ি জ্বালানো অবস্থায় একটার পর একটা বিড়ি টানতে টানতে ভিটার কাছাকাছি চলে এলাম। ভিটার প্রথমেই একটা জামগাছ। জাম গাছের নিচে আসতেই উপরে ডাল নড়ে উঠল। চমকে উঠলাম। ভয়ে গা শিউরে উঠল। যত দোয়া দরুদ মনে ছিল সব জোরে জোরে উচ্চারণ করতে করতে দ্রুত পা চালিয়ে ভিটা পার হয়ে এলাম। গাছের ডাল নড়া ছাড়া অন্য কোন সমস্যা হলো না।
সামনে কিছুদূর যাওয়ার পর বাঁশঝাড়। বাঁশঝাড়ের নিচে আসতেই চোখে পড়ল একটি বাঁশ রাস্তা বরাবর পূর্ব-পশ্চিম লম্বা হয়ে হেলে আছে। মনের মধ্যে সন্দেহ দেখা দিল, হেলানো বাঁশের তল দিয়ে যাওয়ার সময় নাকি ভূতে বাঁশ চাপা দিয়ে মানুষ মেরে ফেলে। সেই ভয়ে বাঁশের কাছাকাছি গিয়ে ম্যাচ জ্বালালাম। ম্যাচের আলোতে বাঁশের চেহারা পুরোপুরি দেখে নিলাম। আসলে হেলে নয়, রাস্তার পাশের বাড়িওয়ালা বাঁশ কেঁটে কঞ্চিসহ রাস্তার পাশে রেখে দিয়েছে। এটা দেখে বাঁশের ভয় কেটে গেল। বাঁশ ঝাড়ের পূর্ব পার্শ্বেই রাস্তার ডান পার্শ্বে কয়েকটি বাড়ি। বাড়িগুলো পার হয়ে সামনে কিছুটা ফাঁকা মাঠ। মাঠ পার হলে পূর্ব পার্শ্বে কয়েকটা হিন্দু বাড়ি। মুষ্কিল হলো হিন্দু বাড়িগুলোর কাছে যাওয়ার আগে কয়েকশ গজ পশ্চিমে রাস্তা ভাঙ্গা। ভাঙ্গা রাস্তার ওই পাড়ে বড়ই গাছ। এই বড়ই গাছটিতে নাকি ভূতের ভয় আছে। সাদা শাড়ি পরে মহিলা দাঁড়িয়ে থাকে। তারোপর রাস্তার ভাঙা অংশে এক হাঁটু পরিমাণ পানি। একহাঁটু পানি সমস্যা নয়, সমস্যা হলো পানির ভিতর বড় বড় গর্ত আছে। গর্তের ভিতর পা পিছলে পড়ে গেলে যদি ভূতে কাদা পানিতে চুবিয়ে ধরে। সেই ভয়ে গা ছমছম করতে লাগল। কিন্তু উপায় নেই। যত ভূতের ভয়ই করুক না কেন এই রাতে এটা পার হতেই হবে।
ভাঙ্গা রাস্তার পশ্চিম পার্শ্বে এসে, প্যান্ট নিচে থেকে হাঁটু পর্যন্ত গুটিয়ে নিয়ে পানিতে নামতে যাবো, ঠিক সেই মূহুর্তে মেঘলা রাতের আবছা অন্ধকারে পূর্ব দিকে চোখ পড়তেই থমকে গেলাম। রাস্তার ভাঙ্গা অংশ ত্রিশ চল্লিশ ফুট হবে। এর পূর্ব পার্শ্বেই বড়ই গাছ। বড়ই গাছ থেকে বিশ ত্রিশ হাত লম্বা সাদা কি যেন একটা দেখা যায়। সাদা জিনিষটি মাঝে মাঝে নড়ে উঠে। পানিতে না নেমে উপরে উঠে এলাম। ম্যাচ জ্বালিয়ে আরেকটি বিড়ি ধরালাম। বিড়ির আগুন ম্যাচের আগুন জ্বালানোর পরও সাদা জিনিষটি যেমনি ছিল তেমনি থাকল। সাদা জিনিষটি বড়ই গাছ থেকে লম্বা হয়ে বিশ ত্রিশ হাত ফাঁকে আরেকটি লম্বা উঁচু মানুষের মত কি যেন একটা দেহের সাথে জড়িয়ে আছে। এটা দেখার পড়ে শরীর ঝাঁকি দিয়ে উঠল। এই জায়গা সম্বন্ধে আগেও অনেক ঘটনা শুনেছি। অনেকেই নাকি এই জায়গায় ভয় পেয়েছে। আজকে আমি নিজেও সেই ভয়ের কবলে পড়ে গেলাম। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে আবার ম্যাচ জ্বালালাম। আগুন দেখে যেন সাদা ভূতটি সরে যায়। কিন্তু তাতেও কিছুই হলো না। বরঞ্চ বাতাসে নড়তে লাগল। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকার সাহস আস্তে আস্তে কমতে লাগল। পিছনে ফিরে পিছনের বাড়িগুলোতে যাওয়ার চিন্তা ভাবনা করতে লাগলাম। পিছনে ফিরে যাবার আগে শেষ চেষ্টা স্বরুপ হ্যাট্ হ্যাট্ করে উচ্চ শব্দে তিনবার ধমক দিলাম। কিন্তু তাতেও সাদা জিনিষটি সরে গেল না। বুঝতে পেলাম এটা জঘন্য ভূত। এই ভূত আমার কথায় হয়তো যাবে না। ভয়ে শরীর কাঁটা দিয়ে উঠল। পিছনে ফিরে যাওয়ার আগে সাহস করে হাতে একটি মাটির ঢেলা নিয়ে জোরে একটা ঢিল ছুঁড়ে দিলাম। ঢিল ওপারে সাদা জিনিষটির উপর পড়তেই জোরে জোরে “কেটারে কেটারে” শব্দ হলো। হঠাৎ ভূতুরে কন্ঠে “কেটারে কেটারে” শব্দ হওয়ায় চমকে উঠলাম। হৃৎপিন্ডের রক্ত বন্ধ হওয়ার উপক্রম হলো। এ যে সত্যি সত্যিই ভূতের কবলে পড়েছি। ভয়ে পিছন ফিরে দৌড়াতে লাগলাম। দৌড়ে অনেক দূর পিছনে চলে এলাম। নিরাপদ দূরুত্বে এসে দাঁড়িয়ে হাপাতে লাগলাম। পিছনে তাকাতে সাহস হচ্ছিল না তারপরেও মনে সাহস নিয়ে পিছনে তাকালাম। মনে মনে ভাবলাম পিছনে তাকিয়ে কিছু দেখলেই আবার দৌড় দিব। কিন্তু কোন কিছু দেখা গেল না। তবে ভাঙার ওপার থেকে কোন শুয়ারের বাচ্চারে, কোন হারামজাদার বাচ্চা ঢিল দিল রে ইত্যাদি অকথ্য ভাষায় গালাগালির শব্দ কানে এলো । অনবরত ভূতের গালাগালি চলতে থাকায় ভয়ে আরো কিছুটা পিছনে চলে এলাম। কিন্তু গালাগালি আর থামছে না। কান পেতে ভূতের গালি শুনতে লাগলাম। ভূতের কণ্ঠ শুনে পরিচিত মনে হলো। বুঝতে পেলাম এটা ভুত নয়, এটা মানুষ হবে। মানুষের মত কথা শুনে সাহস নিয়ে আবার পানির কিনারে চলে এলাম। এসে জিজ্ঞেস করলাম, ‘ওপারে কেটা গো’?
ওপার থেকে জবাব এলো, তুমি কেটা গো?
আমি বললাম, আমি কাচারীর কাছের লোক। তুমি কেটা?
এবার জবাব এলো, তুই কাচারির কাছের মানুষ আমাকে চিনিস না রে?
এবার তার কথা থেকে নিশ্চিত হলাম এটা আর কেউ নয় সত্যি সত্যি মানুষ এবং আমাদের পশ্চিম পাড়ার আজিম ভাইয়ের বোন গয়া পাগলী।
আমি আবার বললাম, -- তুই কি গয়া পাগলী?
গয়া পাগলী নাম বলার পরে একটু নরম সুরে জবাব এলো, হ, তুই কেটারে?
-- আমি ঐ যে কাচারির পূর্ব পাশের বাড়িটা।
আমার কথা শেষ না হতেই পাগলী জবাব দিল, তা তুই আমাকে ঢিল দিলি কি জন্যে রে?
আমি বিনয়ের সুরে বললাম, অন্ধকার রাত তো, আমি তোকে চিনতে পারি নাই।
-- চিনতে পারি নাই দেখি কি তুই আমাকে ঢিল দিবি নাকি?
-- বুঝি নাই তো ভুল হয়ে গেছে।
-- ভুল করলি কেন রে?
-- ভুল যখন করছি তখন তুই আমাকে মাফ করে দে।
-- মাফ করবো কি জন্যে রে?
-- তা হলে তুই কি করবি?
-- তুই এপারে আয়, তোকে-- তোকে--- আমি পানির মধ্যে চুবারো রে।
-- আমি ছোট মানুষ আমাকে পানিতে চুবাস না, পানিতে চুবালে আমি মরে যাবো তো!
-- তোক আমি মারিই ফেলাবো।
বুঝতে পেলাম পাগলী ক্ষেপে গেছে, একে ঠা›ডা করা দরকার, তা না হলে পানি পার হতে দিবে না। পাগল মানুষ, বলা যায় না কখন কি করে বসে। কাজেই বুদ্ধি করে বললাম, পাগলী তুই রাগ করিস না, আগামীকাল আমার বাড়ি আসিস, তোকে পেট ভরে ভাত খাওয়াবো।
ভাতের কথা শোনার সাথে সাথেই যেন আগুনে পানি পড়ে গেল, পাগলী উচ্চ গলা নরম করে জবাব দিলো, ভাত দিবু তো?
-- হ্যাঁ ভাত দিবো। পেট ভরে ভাত দিবো।
-- কি দিয়া ভাত দিবি?
-- কি দিয়া ভাত মজা লাগে?
-- আলু ভর্তা আর ডাল দিয়া ভাত মজা লাগে?
-- ঠিক আছে কাল সকালে আসিস আলু ভর্তা আর ডাল দিয়াই ভাত দিবো।
ভাতের কথা শুনে পাগলী ঢিলের কথা ভুলে গেল। পাগলী ভাতের কথা শুনলে মুহুর্তেই সব ভুলে যায়। পাগলীকে অনেক সময় ছেলে মেয়ারা ক্ষেপিয়ে তুললে রেগে গিয়ে ধাওয়া করতে থাকে। এই অবস্থায় কেউ যদি বলে এই পাগলী ওদের মারিস না তোকে পেট ভরে ভাত দেবো। সাথে সাথে সে থেমে গিয়ে জিজ্ঞেস করবে, ভাত দিবি তো?
যদি বলে, দেবো। পাগলী পাল্টা প্রশ্ন করবে কি দিয়া?
যদি বলা যায় আলুভর্তা আর ডাল, তাহলে পাগলী খুশি হয়ে কিছুক্ষণ আগে যে রেগে গিয়েছিল সব ভুলে যায়।
পাগলী তিন বছর আগেও ভাল ছিল। বয়স পঞ্চাশের কাছাকাছি। বিয়ে হয়েছে। দীর্ঘ দিনের বিবাহিত জীবনে তার কোন সন্তানাদি হয় নাই। স্বামী আরেকটি বিয়ে করেছে। সতীনের জ্বালাতন আর স্বামীর অনাদর অবহেলার একপর্যায়ে অসুখ-বিসুখ এবং চিকিৎসার অভাবে পাগল হয়ে যায়।
পাগলীর কথায় যখন নিশ্চিত হলাম এটা গয়া পাগলী তখন পানি পার হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিলাম। পানি পার হয়ে এপার এসে দেখি পাগলী বড়ই গাছের সাথে সাদা শারীর এক আঁচল বেঁধে আরেক আঁচল পরে মাঝখানের কাপড় লম্বা করে ছড়িয়ে দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, আরে পাগলী তুই রাত করে কাপড় লম্বা করে দিয়ে দাঁড়িয়ে আছিস কেন?
পাগলী জবাবে যা বলল তা হলো এই, পাগলী পানি পার হওয়ার সময় পা পিছলে পড়ে গিয়ে কাপড় চোপড়সহ পুরো শরীর ভিজে যায়। তাই বড়ই গাছের সাথে কাপড় বেঁধে কাপড় শুকাতে দিয়েছে। পাগলীর এই চার পাঁচ হাত লম্বা করে শুকিয়ে দেয়া কাপড়কেই এতক্ষণ ভয় ভীতির কারণে বিশ ত্রিশ হাত লম্বা মনে হয়েছে।
আমি বললাম, রাত করে ভিজা কাপড় শুকাবে নাকি? তার চেয়ে বাড়ি চলে যা, বাড়িতে গেলে তাড়াতাড়ি কাপড় শুকাবে?
আমার একথার জবাবে পাগলী বলল, যা তুই যা, আমি কাপড় শুকালেই বাড়ি যাবো।
পাগলী যা মনে করেছে এর ব্যতিক্রম হয়তো করবে না, তাই আর বেশি কিছু না বলে আমি চলে এলাম।
(চলবে----)
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:৫৯