এই চোখে দেখেছি যুদ্ধ,
দেখেছি ভাইয়ের রক্তভেজা মাটিতে বোনের শাড়ির ছিন্ন আঁচল।
নতুন করে বাঁচবো বলে এই কন্ঠে দিয়েছি স্লোগান।
হাতে উঠেছিলো গ্রেনেড, ধ্বংস করেছি শত্রুসেনার ঘাঁটি,
ক্লান্ত দু'পায়ে দৌড়েছি আহত সহযোদ্ধাকে কাঁধে নিয়ে,
বুকে ছিলো অনেক সাহস,
ছিলো দেশ বাঁচানোর তীব্র তাগিদ।
সেদিন প্রাণপণ যুদ্ধ করেছিলাম মা-কে ভালবেসে...
আজ মায়ের কান্নার আঁচে চোখ পুড়ে ছাই হয়ে যায়,
অভিমানের শিকলে জড়ানো কণ্ঠ আমার,
ভুলে গেছে প্রতিবাদের ভাষা।
বুলেটবিদ্ধ অথর্ব হাত হঠাৎ যেন কেঁপে ওঠে পুরনো শকুনের গন্ধ পেয়ে,
টের পাচ্ছি,পায়ের নীচের মাটি সরে যাচ্ছে ধীরে ধীরে,
বয়স আর দারিদ্রের ভারে নুয়ে গেছে কাঁধ,
বুকের ডানপাশে বেয়নেটের দাগ দেখে গৌরবে গা শিউরে ওঠেনা,
লজ্জার জ্বলুনিতে, অপারগতার ব্যাথায় কুঁকড়ে যাই...
জীবনের গোধূলিতে এ কোন যুদ্ধ দেখি?
এ যুদ্ধ তো মা-কে ভালবেসে নয়,
এ যাত্রা তো শান্তির পথে নয়,
কেবল ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে ক্রমশঃ
হাজার মায়ের বুক খালি করে দেয়ার যুদ্ধ চলছে,
নারকীয় হত্যাযজ্ঞের পাঠচক্র চলছে।
এ দৃশ্য দেখার চেয়ে,
একাত্তরে শহীদ হলেই হয়তো ভালো হতো।
শত্রুর গুলিতে ঝাঁজরা হয়ে,
মৃত মায়ের লাশের ওপর ঘুমিয়ে গেলেই হয়তো ভালো হতো।