আমি একটা জিনিস বুঝি না। আমরা কেউ আস্তিক, কেউ বা ঘোর নাস্তিক। কিন্তু আস্তিক হবার কারণে কিংবা নাস্তিক হলেই এত ভাব নেয়ার কি আছে? এখানে যারা লেখে তাদের সবারই নিজের মত করে ভাবতে পারার সক্ষমতা আছে, এটা আপনারা নিশ্চয়ই মানেন। তাহলে আস্তিকেরা এখানে এসে ধর্মপ্রচার করে কিভাবে লাভবান হবার ধান্দা করেন কিংবা নাস্তিক হয়ে ভাব নেবার অথবা নিজের নাস্তিকতা প্রচার করে স্মার্ট হবার চেষ্টাই বা কিভাবে করেন?
ধর্মবিশ্বাসটাকে তো নাস্তিকেরা অপরাধের পর্যায়ে গণ্য করার চেষ্টা করছেন। কেউ একজন আস্তিক তার মানে সে পচে গেছে, এমন ধারণা বা ধারণার প্রচার করাটা কর্তব্যের মধ্যে নিয়ে আসার মর্মার্থ বুঝতে পারি না। আস্তিকদের অনেকেই অনেক বিদ্বান, অনেক ওপরে অবস্থান করেন জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায়- তারা সবাই নিতান্ত নির্বোধ এমন ধারণা আসে কীভাবে?
আর সমানতালে আস্তিকেরা চেষ্টা করে যাচ্ছেন ধর্মভিত্তিক সমাজ বা রাষ্ট্র বিনির্মানের। কেন মনে হয় আপনারা সেটা করতে পারবেন? সেটা গ্রামের অশিক্ষিত কোন সাধারণ মানুষকে বোঝালেই সম্ভবত ভাল ফল দেবে, এখানে এই ব্লগটাতে এর সামান্য সুফল কোনদিন পাওয়ার দুরাশা করাটা বোধহয় উচিত হবে না। আর ধর্মভিত্তিক রাষ্ট এদেশে আর হবার আশাটারও জলাঞ্জলি দিয়ে দিন। এবার নিশ্চয়ই হারে হারে টের পেয়েছেন সাধারণ মানুষ আপনাদের কোন চোখে .দেখে!! আর আস্তিক ভাইয়েরা আপনাদের বিশ্বাস নিয়ে আপনারা থাকুন কারও কোন আপত্তি নাই। কিন্তু সেই লেবুটা বেশি কচলিয়ে আর তেতো করে তুলবেন না।
একটা কথা বলার জন্যই এত কথা। চরিত্র আসে নিজের শিক্ষা, বিবেকবোধের চর্চা থেকে। আপনি আস্তিক না নাস্তিক তা কোন কিছুই মিন করে না। আস্তিকদের চরিত্র আমরা দেখেছি একাত্তুরের সেই দিনগুলিতে এখনও দেখে চলেছি প্রতিনিয়তই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ জাতীয়-আন্তর্জাতিক প্রায় সব ক্ষেত্রেই। আস্তিকতা যদি শেখায় চরম অমানবিকতা আর পাশবিক নিমর্মতা তাহলে ধিক সেই বিশ্বাসে।
আবার নাস্তিকতা মানে যদি হয় ভোগের উদাত্ত উম্মত্ততা কিংবা সমাজ-ধর্ম-আচার-সংস্কৃতি সবকিছু ভুলে গিয়ে যা ইচ্ছা তা-ই করার শিক্ষা তবে ঘৃণাভরা বর্জনাহ্ববান সেটিকেও।
ব্লগ দর্শন, জীবনবোধ কিংবা অন্যান্য সবকিছুরই আলোচনার মুক্তপীঠ হতে পারে কিন্তু নিজেদের বিশ্বাস নিয়ে অসুস্থ লড়াইয়ের ক্ষেত্র কোনক্রমেই নয়।