somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অতিপ্রাকৃত গল্পঃ নরকের মেয়ে

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




গল্পের শুরু


সুরুজ মিয়ার যখন বউয়ের সাঠে ঝগড়া করে বাসা থেকে বের হয় তখন তার মাথা ঠিক মত কাজ করে না । গাড়ি চালানোর সময় বউয়ের উপর ঝড়তে না পারা রাগটা রাস্তার উপর দিয়ে দিতে চায় । তখন তার ইচ্ছে করে সামনে যা কিছু আসুক সেটাকে পিসে ফেলে সামনে এগিয়ে যেতে ।

আজকেও সুরুজ মিয়ার মেজাজটা বেশ খারাপ । একে তো বাসা থেকে বের হওয়ার সময় বউয়ের সাথে ঝগড়া করে বের হয়েছে তার উপর বসের ঝাড়ি খেয়েছে একটু আগে । এখন তাই ঝড়ের বেগে সাপ্লাই ট্রাকটা চালাচ্ছে । সামনে যা আসবে তাকে পিসে ফেলতে মন চাইছে । অবশ্য এখন সেরকম সম্ভবনা কম । বনানীর এই রাস্তাটা রাতের বেলা একেবারে ফাঁকাই থাকে বলা । আর এখন মাঝ রাত । লোকজন নেই কেউ । সেটা সুরুজ মিয়াও ভাল করেই জানে । তাই তো এক্সসেলেটরে চাপ দিয়ে চলেছে । গাড়ি জোরে চালালে তার রাগ একটু কমবে !

সে যদি জানতো একটু পরে তার সাথে কি হবে তাহলে সে হয়তো এখনই গাড়ির গতি এখনই কমিয়ে ফেলতো । কিন্তু সুরুজ মিয়া সেটা জানে না । গাড়ি সপ্লাই ভ্যানটার গতি ঝাকি দিয়ে আরেকটু যখন বেড়ে গেল তখনই সামনে দেখতে পেল চার রাস্তার মোড়টা । লাল বাতি জ্বলে আছে । অবশ্য সুরুজ মিয়ার সেটা নিয়ে ভাবনা নেই । এতো রাতে এখানে কোন ট্রাফিক নেই, লাল বাতি দেখে থামার কোন মানে নেই । সুরুজ মিয়ার মোবাইলটা তখনই বেজে উঠলো । সামনের দিকে চোখ রেখেই সে মোবাইলটা পকেট থেকে বের করলো । স্ক্রিনে নামটা দেখেই তার মনটা ভাল হয়ে গেল ।

তার স্ত্রী ফোন করেছে । এখন ফোন দিয়ে কান্না কাটি করবে হয়তো । প্রত্যেকবার এমনই হয় । বের হওয়ার সময় ঝগড়া তারপর রাস্তায় ফোন দিয়ে কান্নাকাটি । সুরুজ মিয়ার চোখ তখন সম্পূর্ন ভাবে মোবাইল স্ক্রিনে নিবদ্ধ । তাই সে লক্ষ্যও করলো না যে চৌরাস্তার বাঁ দিক থেকে একটা ভ্যান আপন মনে ছুটে চলে আসছে । তার সিগনাল গ্রিন তাই সে খুব একটা চিন্তিতও হচ্ছে না ।

সুরুজ মিয়া যখন আবার চোখ তুলে সামনের রাস্তার দিকে তাকালো তখনই ভ্যানটাকে দেখতে । মোবাইলটা হাত থেকে পড়ে গেল আপনাআপনি । দুই হাত দিয়ে স্টিয়ারিং ধরে গায়ের সব শক্তি দিয়ে ব্রেকে চাপ দিল । কিন্তু সুরুজ মিয়া খুব ভাল করেই জানে এই দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব না । একে তো তার ট্রাক ভর্তি মালপত্র তার উপর তার ব্রেকটা ওতো ভাল করে কাজ করে না যে চাপার সাথে সাথেই থেমে যাবে । যত সময়ে থামবে তত সময় ভ্যান চালক আর ভ্যান মাটির সাথে মিসে যাবে । সুরুজ মিয়া আর দেখতে চাইলো না । চোখ বন্ধ করার আগে হেড লাইটের আলোতে ভ্যান চালকের অবাক হওয়া চোখটা দেখতে পেল ।

চোখ বন্ধ করেই রইলো সে । অপেক্ষা করতেই লাগলো একটা সংঘর্ষের আওয়াজের জন্য । কিন্তু যে সময় ভ্যানটাকে আঘাত করার কথা সে সময় পার হয়ে গেল অনেক আগেই । কোন সংঘ্সের আওয়াজ পাওয়া গেল না । সুরুজ মিয়া অবাক চোখ খুললো । তাকিয়ে দেখে তার তার ট্রাকটা সেই সিগনাল পার হয়ে আরও কিছু দুর এসে দুরে এসে থেমেছে ।
কোন আঘাত লাগে না ভ্যানের সাথে । কিন্তু এমন হওয়ার কথা না । কোন ভাবেই ভ্যান চালক সংঘর্ষ এড়ানোর কথা না !
সুরুজ মিয়া ট্রাক থেকে নামলো । অবাক হয়ে দেখলো চৌরাস্তারটার বাঁ দিকের ল্যাম্পপোস্টের ভ্যানটা দাড়িয়ে আছে । ভ্যান চালকের অবাক করা চোখটা এখন থেকেও সে স্পষ্ট বুঝতে পারছে । এমন কিছু একটা হয়েছে যেটা সে বুঝতে পারছে না । সুরুজ মিয়া যখন চোখ বন্ধ করে ফেলেছিলো তখনই কিছু একটা হয়েছে ।

সুরুজ মিয়া ভ্যান চালকের দিকে এগিয়ে আরও একজনের উপস্থিতি লক্ষ্য করলো । কালো রংয়ের হুডি আর জিন্সের প্যান্ট পরা একজন । আরও কয়েক কদম এগিয়ে যেতে বুঝতে পারলো সেটা একটা মেয়ে । মেয়েটা সুরুম মিয়ার দিকে এক ঝলক তাকিয়েই আবার বাঁ দিকে রাস্তার দিকে দ্রুত হাটা শুরু করলো । মিলিয়ে গেল অন্ধকারে !
এতো রাতে একটা মেয়ে একা এই রাস্তায় থাকার কথা না কোন ভাবেই । সুরুজ মিয়া ভয়ে ভয়ে ভ্যান চালকের দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো । ভ্যান চালক এখন বমি করছে রাস্তার উপর বসে !


কম্পিউটার মনিটরের দিকে মনোযোগ দিয়ে তাকিয়ে আছে ইভাঙ্কা । তার সামনে আরও দুজন মানুষ বসে আছে । সবারই মুখ গম্ভীর । একটু তারা তাকে একটা ভিডিও ক্লিপ দেখতে দিয়েছে । সেটাই দেখছে । কয়েকবার দেখা হয়ে গেছে এরই ভেতরে । একটা ট্রাক একটা ভ্যানকে চাপা দেওয়ার ঠিক আগ মুহুর্তে একটা আলোর ঝলকানি সেটার সামনে আছে । তারপর ভ্যানটাকে সেখান থেকে নিয়ে চলে যায় এবং দুর্ঘটনার হাত থেকে ভ্যানটা রক্ষা পায় ! চৌরাস্তায় ট্রাফিক সিগনালে লাগানো থাকা সিসি টিভি ক্যামেরায় ধরা পরেছে ঘটনাটা । এরই ভেতরে ইউটিউবেও ছড়িয়ে পড়েছে । সাধারন গতিতে দেখলে কেবল আলোর ঝলকানী ছাড়া আর কিছুই দেখা যায় না কিন্তু যদি স্লো-মোশনে দেখলে হালকা ভাবে বোঝা যায় একটা মানুষ এসে ভ্যানটাকে সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে গেছে । সে যে স্বাভাবিক কোন মানুষ নয় সেটা বুঝতে কারো কষ্ট হয় নি ।
ইভাঙ্কার দিকে তাকিয়ে কালো পোষাক আর সাদা কলারের মানুষটা বলল
-কিছু বুঝতে পারছো ?
-পারছি ।
-তোমার কি মত ?
-হ্যা ! আপনারা যা ভাবছেন এটা সেই । কোথাকার ভিডিও এটা ?
-বাংলাদেশ ।
-বাংলাদেশ ? কিন্তু ....
কিছু একটা বলতে গেল ইভাঙ্কা তাকে হাত দিয়ে থামিয়ে দিল সামনে বসা মানুষটা । তারপর বলল
-আমি বুঝতে পারছি তুমি কি ভাবছো । তবে এটা অসম্ভব না কিন্তু ! তার অস্তিত্ব সব ধর্মেই আছে । কেবল ভিন্ন নামে ! আর কিছু না ।
-কবে যেতে হবে ?
-যত দ্রুত সম্ভব ! এসব দুনিয়া থেকে যত দ্রুত সম্ভব মিটিয়ে ফেলা যায় ততই ভাল । আমি সব ব্যবাস্থা করে ফেলেছি । তোমার সাথে সানিয়েল যাবে !
ইভাঙ্কা আর কোন কথা বলল না । চুপ করে ঘর থেকে বের হয়ে গেল । অনুভব করছে তার শরীরে একটা অজানা উত্তেজনা শুরু কাজ করা শুরু হয়েছে । প্রত্যেকবারই এমন ভাবে শুরু হয় । যতক্ষনটা ঐ নরকের কিটটাকে এই পৃথিবীতে থেকে বিদায় না করতে পারছে ততসময় তার এই উত্তেজনা কমবে না!



এক

প্রথম ডাকটা লিলি ঠিক মত শুনতে পায় নি তবে ঠিকই বুঝতে পেরেছে বারটেন্ডার দিপক তাকে ডাকছে । লিলি গ্লাসটা নামিয়ে রেখে সেদিকে এগিয়ে গেল । দিপকের মুখে সব হাসি লেগেই থাকে । ওর দিকে তাকিয়ে আরেকবার হাসি দিল সে ।
-ডাকছিলে ?
-হুম । এটা টেবিল নাম্বার ১১ তে দিয়ে এসো । ভদ্রলোক তোমার নাম ধরে খোজ করছিলো । তোমাকে চেনে সম্ভবত ।
-তাই নাকি ?

লিলি বোতল আর গ্লাসটা হাতে নিয়ে এগিয়ে গেল ১১ নাম্বার টেবিলকের কাছে । টেবিলটা বারের একেবারে কোনার দিকে । স্বাধারনত কাপলরা যখন আসে এদিকটাতে বসে । এগিয়ে যাওয়ার সময় ওর মনে একটা অন্যরকম অনুভুতি হতে লাগলো । এই অনুভুতিটা যখনই হয়েছে তখন কোন অস্বাভাবিক ঘটনা ওর জীবনে ঘটছে । অবশ্য ওর পুরো জীবনটাই অস্বাভাবিক । এতো চিন্তা করে লাভ নেই ।

১১ টেবিলে আসতেই লিলি মানুষটাকে দেখতে পেল । বারের ভেতরে কখনই উজ্জল আলো থাকে না । তবে এদিকটাতে আলো আরও একটু কম । তবে এই কম আলোতেই ছেলেটার চেহারা খুব ভাল করেই তার নজরে এল । অবশ্য লিলির আলো আন্ধকারে খুব একটা সমস্যা হয় না ।
২৫/২৬ বছরের একটা যুবক । কালো শার্ট ইন করে পরেছে কালো জিন্সের সাথে । চুল গুলো মাঝারি উচ্চতায় । সুন্দর করে আচড়ানো । তবে মুখে খোঁচা খোঁচা দাড়ি । সেটাও চেহারার সাথে চমৎকার ভাবে মানিয়ে গেছে । এই দাড়ি না থাকলেই মনে হল চেহারাতে যেন কিছু একটা নেই । তবে সব থেকে লক্ষ্যনীয় যেটা, সেটা হল তার চোখ । এতো তীক্ষ চোখের দিকে লিলি আর আগে তাকিয়েছে কি না সেটা লিলি বলতে পারবে না ।



লিলি ভাল করে তাকিয়ে দেখলো । এই চেহারা সে আগে কোন দিন দেখে নি । এই বারেও সে এর আগে আসে নি সেটাও লিলি খুব ভাল করেই জানে । লিলির স্মৃতি শক্তি খুব ভাল । স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি ভাল । অজানা একটা সংঙ্কায় লিলির মনটা ভরে উঠলো । বোতলটা টেবিলের উপর রাখতে রাখতে লিলি বলল
-আপনার অর্ডার !
যুবক বলল
-থ্যাঙ্কিউ আদ্রিতা !

লিলির মনে হল ওযেন খুব জোরে দেওয়ার সাথে একটা ধাক্কা খেল । ওর নাম আদ্রিতা এটা কেউ জানে না এখানে । কারো জানার কথাও না । লিলির মনে হল এখনই এখান থেকে দৌড়ে পালিয়ে যায় । নিজেকে খানিকটা অসহায় মনে হল ওর কাছে । যুবক আবার বলল
-ভয় পেয় না । আমি এখানে একাই এসেছি । আর তোমার কোন ক্ষতি করতে আসি নি ।
লিলি নিজেকে খানিকটা সামলে নিয়ে বলল
-কে আপনি ? আমাকে কিভাবে চেনেন ?
-আমি কে এটা খুব বেশি জরুরী প্রশ্ন না । জরুরি প্রশ্ন হচ্ছে তোমার সামনে বিপদ ঘনিয়ে আসছে ! এমন একটা বিপদ যেটা তুমি একা সামলাতে পারবে না ।

লিলির মনে হল এখনই এখান থেকে চলে যাওয়া দরকার । সে সব সময়ই জানে তার পেছনে কিছু মানুষ লেগে আছে । তাকে মারার জন্য । জন্ম থেকে সে এটা জানে । তখন থেকেই সে পালিয়ে বেড়াচ্ছা । এক শহর থেকে অন্য শহরে এক দেশ থেকে অন্য শহরে ।

সামনে বসা যুবক একটা মোবাইল বের করে একটা ভিডিও চালু করলো । যে ভিডিওটা গত কয়েকদিন থেকেই ইন্টানেটে ভাইরাল হয়ে আছে । এক অলৌকিক মানুষ একজন ভ্যান চালককে বাঁচিয়েছে তার অলৌকিক শক্তি দিয়ে ।
লিলি নিজেকে যথাসম্ভব শান্ত রেখে বলল
-এটার সাথে আমার কি সম্পর্ক কি ?
কথা শুনে যুবক হাসলো । বলল
-কোন সম্পর্ক নেই ?
-না ! আর এটা একটা বানানো ভিডিও । সত্যি না ! সবাই এমন কথাই বলছে ।
যুবক আবারও বলল
-সবাই কি বলছে সেটা মুখ্য বিষয় নয় । কারন আমি যেমন জানি তুমি জানো যে ভিডিওটা সত্যি কি না । আর ভিডিওর যাকে সবাই সুপারম্যান বলে বলছে সে আসলে কোন সুপারম্যান নয় । সুপার গার্ল ! তার পরিচয় আমি যেমন জানি তুমিও জানো । জানো না ?
-না । আমি জানি জানি না !

যুবক এবার সত্যি সত্যিই হেসে ফেলল । লিলি কি বলবে কিছুই বুঝতে পারছে না । একবার মনে হচ্ছে এখান থেকে দ্রুত চলে যেতে । কিন্তু সব কথা না শুনে যেতেও পারছে না । তার জানতে হবে সামনে বসা এই যুবক আর কি কি জানে ! হাসি থামিয়ে যুবক বলল
-যাই হোক । এটা যেমন আমার চোখে পড়েছে । আরও কিছু মানুষের চোখে পড়েছে । যাদের কাজই হচ্ছে অস্বাভাবিক সব কিছুকে এই পৃথিবী থেকে বিদায় করে দেওয়া । তুমি এদের সাথে একা মোকাবেলা করতে পারবে না ।
-সেটা আমি দেখে নেব !

লাইনটা বলতেই লিলির ভেতরে একটা পরিবর্তন এল । সেটা লিলি নিজেও বুঝতে পারলো ভাল করে । এমনটাই হয় প্রতিবার । যখন তার ভেতরে জিনিসটা বাইরে আসতে চায় কিংবা ওর উপর নিয়ন্ত্রন নিতে চায় । লিলি লক্ষ্য করলো যুবকের মুখের ভাব পরিবর্তন হয়ে গেছে । যুবক বলল
-প্লিজ । ওটাকে তোমার নিয়ন্ত্রন নিতে দিও না । তাহলে কিন্তু সর্বনাশ হয়ে যাবে ! আমি জানি তুমি তোমার এই ক্ষমতা কোন দিন খারাপ কাজে ব্যবহার কর নি কিন্তু তুমি যতই এটা ব্যবহার করবে তোমার নিজের উপর নিয়ন্ত্রন ততটাই কমে যাবে । এটা তুমিও জানো খুব ভাল করে । জানো না ? দেখো তোমার চোখের রং পরিবর্তন হয়ে গেছে । আমার কথা শুনো !
-আপনি চলে যান এখান থেকে ! নয়তো ফল কিন্তু ভাল হবে না !
যুবক কিছু বলতে গিয়েও বলল না । লিলি বুঝতে পারছে ওর ভেতরে আস্তে আস্তে কিছু পরিবর্তন হচ্ছে । "আদরাত" আস্তে আস্তে ওর উপর নিয়ন্ত্রন নিতে শুরু করেছে ।
না ! এটা সে হতে দিবে না । তাকে এখনই চলে যেতে হবে । দুই সপ্তাহ আগেও সে গেছিলো সে রোমারির কাছে । এখনই এমন হচ্ছে । অথচ আগে মাস পার হওয়ার আগে এমনটা হত না । তাহলে কি আসলেই নিয়ন্ত্রন হারিয়ে যাচ্ছে ?
না ! এতো গুলো বছর তিল তিল করে নিজেকে নিজের নিয়ন্ত্রনে রেখেছে সে । কোন ভাবেই সেটা হারিয়ে ফেলতে দিবে না । অবশ্য ঐ ভ্যানওয়ালাকে বাঁচাতে না গেলে এমনটা হত না । প্রতিবারই যখন ও নিজের শক্তিটা ব্যবহার করে ও আদরাতের উপস্থিতিটা খুব ভাল করেই বুঝতে পারে । কুৎসিত তার চেহারা চোখের সামনে ভেসে ওঠে । যেন ওর দিকে তাকিয়েই সে হাসছে !

লিলি আর দাড়ালো না । সোজা দিপকের কাছে গিয়ে হাজির হল । তারপর তাকে বলে বাইরে চলে এল ।

রাত ১১টার মত বাজে । এখনও ঢাকার এই এলাকাটা জীবন্ত । যেন মনে হচ্ছে সবে মাত্র সন্ধ্যা হয়েছে । লিলি নিজের বাসার দিকে রওনা দিল । কালকেই ওকে আবার রোমারির কাছে যেতে হবে । যে কাজটা ওর করতে ভাল লাগে না সেটা আবারও করতে হবে !




দুই


লিলি দৌড়াচ্ছে । লিলির তীব্র শীত করতে লাগলো । তাকিয়ে দেখে ওর শরীরে কোন কাপড় পড়া নেই । অন্ধকার জঙ্গলের ভেতরে ওর বিবস্ত হয়ে দৌড়াচ্ছে । কোন দিকে যাচ্ছে ওর ধারনা নেই । চারিপাশে অন্ধকার । ওর কিছু দেখতে পাওয়ার কথা না তবুও ও পরিস্কার সব কিছু দেখতে পাচ্ছে । ছোট বেলা থেকেই ওর ভেতরে অস্বাভাবিক ব্যাপারটা আছে । যেখানে অন্ধকারে কেউ দেখতে পায় না লিলি অন্ধকারের ভেতরে সব কিছু পরিস্কার দেখতে পায় ।
বাঁ দিকে তাকাতেই লিলি সেই প্রাণীটাকে দেখতে পেল । ছোট বেলা থেকেই প্রায় প্রতিদিন স্বপ্নে সে প্রাণীটাকে দেখে আসছে তবুও আজও ওটাকে দেখলেই ওর ভেতরে একটা তীব্র আতঙ্কের সৃষ্টি হয় । জানে, ওর হাত থেকে ওর মুক্তি নেই । ওর ভেতরেই সেটা বাস করে । আস্তে আস্তে বড় হয় । ওকে গ্রাস করার জন্য ।
আজকে যখন বাঁ দিকে তাকিয়ে দেখতে পেল চাইলো যেন দ্রুত ওটার থেকে দুরে সরে যেতে চাইলো । কিন্তু ক্রমশ ওটা আরও কাছে চলে আসছে । জানে ওকে ধরতে পারলেই ওর আর নিস্তার নেই । এই তো কাছে চলে আসছে । লিলি আরও জোরে দৌড়াতে চাইলো । কিন্তু কুৎসীত প্রাণটার সাথে যেন ও পেরে উঠছে না । আস্তে আস্তে ওর দিকে এগিয়েই আসছে প্রাণীটা ।

লিলি ওটার দিকে তাকাতে চাইছে না কিন্তু ওটার দিক থেকে চোখও সরাতে পারছে না । ওটার দিকে তাকিয়ে দৌড়ানোর কারনেই হঠাৎ লিলি হোটচ খেয়ে পড়ে গেল । তীব্র একটা চিৎকার বের হয়ে এল মুখ থেকে । ঠিক তখনই ওর ঘুম ভেঙ্গে গেল ।

বিছানা থেকে উঠে বসলো । সারা শরীর ঘামে ভিজে গেছ । বুকে হাত দিয়ে দেখে এখনও সেটা লাফাচ্ছে । স্বপ্নটা ইদানিং আরও স্পষ্ট হয়ে আসা শুরু হয়েছে । লিলি জানে যত দিন যাবে সেটা ততই স্পষ্ট হয়ে উঠবে । তার আগে ওকে যেতে হবে রোমারির কাছে । যে কাজটা ও সব থেকে অপছন্দ করে সেটাই করতে হবে ।

বাইরে তাকিয়ে দেখে সকালে আলো তখনও ফোটে নি । তবে একটু পরেই ফুটবে । শোবার ঘরের বারান্দায় এসে দাড়ালো । একটু একটু ঠান্ডা বাতাস দিচ্ছে । তবে সেটা ওর ভাল লাগছে । গরম কাল থেকে ঠান্ডাটাই ওর বেশি পছন্দ । সকালের দিনটা এভাবেই ওর শুরু হয় । দিনের সব সময়ের ভেতরে এই সকালটাই ওর কাছে সব থেকে বেশি পছন্দ । এখানে একটা পবিত্র পবিত্র ভাব আছে । তখন ওর নিজেকে নিজের কাছ থেকে কেমন যেন নিরাপদ মনে হয় । অন্য দিকে রাতে মনে হয় সব থেকে অনিরাপদ আর অস্বস্তিকর । দিন দিন এটা যেন বাড়ছেই । তার উপর গতকাল রাতেই ঐ আগন্তুত । ওর ব্যাপারে এতো কিছু জানে কিভাবে ?
লিলি কিছুই ভেবে পেল না । সময় এসেছে এখান থেকে চলে যাওয়া ! অন্য কোথায় !
অন্য কোন শহরে কিংবা অন্য কোন দেশে ।

যখন থেকে বুঝতে শিখেছে তখন থেকেই কেবল সে দৌড়ে বেরাচ্ছে । শহর থেকে থেকে গ্রাম, গ্রাম থেকে শহর কিংবা দেশে থেকে অন্য দেশে । ১৬ বছর পর্যন্ত তার সাথে একজন মানুষ ছিল । ওর মা । ওকে দেখা শুনা করতো কিভাবে চলতে হবে কি কি করতে হবে সেসব ওকে শিক্ষা দিত। মায়ের কাছেই ও ওর সব কিছু শিখেছে । ইংরেজি বাংলা হিন্দি সহ আরও কয়েকটা ভাষা ওর মা ই ওকে শিখিয়েছে । শিখিয়েছে কিভাবে একা একা চলতে হয় । কারন সেও জানতো সারা জীবন সে তার সাথে থাকবে না, একদিন হলও তাই । ওর যখন ১৬ বছর বয়স তখন ওর মা মারা গেল । কিভাবে মারা গেল সেটা লিলি আজও ঠিক মত জানেও না । তখন ওরা থাকতো বোস্টন শহরে । একটা পার্ট টাইপ কাজ করতো লিলি । কাজ থেকে ফিরতে ফিরতে রাত হয়ে যেত । একদিন ফিরে দেখে নিজের ফ্ল্যাটে মরে পড়ে আছে সে । কোন রক্ত কিংবা যখমের চিহ্ন নেই । টেবিলের উপর ওর জন্য একটা নোট রাখা ছিল আর বেশ কিছু টাকা । চিঠিতে বলা ছিল ওকে এখান থেকে কোথায় যেতে হবে, কার কাছে যেতে হবে । সেদিন থেকেই লিলির একা একা পথ চলা । বোস্টন থেকে পাকিস্তান তারপর ইন্ডিয়া তারপর মায়ানমার । এখন সে বাংলাদেশে । প্রত্যেক দেশে একজন করে মানুষ থাকতোই তাকে সাহায্য করার জন্য । এক শহর থেকে যখন অন্য শহরে সে যেত তখন সেই শহরের থাকা সেই মানুষটা তাকে পরের শহরের কার কাছে যেতে হবে সেটা বলে দিত ।

লিলি জানে তার জীবনটা এভাবেই কাটবে । তাকে ছোট বেলা থেকেই শেখানো হয়েছে তাকে মারা জন্য কেউ আছে । কেউ ওকে খুজে বের করার চেষ্টা করছে । সেই মানুষ গুলোর কাছ থেকে ওকে পালিয়ে বাঁচতে হবে । তবে ওর প্রধান শত্রু ওর ভেতরেই বাস করে । ওটাকে নিজের নিয়ন্ত্রন করতে হবে । কারন যদি একবার ওর ভেতরে পশুটা যদি ওকে গ্রাস করে ফেলে তাহলে কেবল এই তার জন্যই নয় এই পুরো পৃথিবীর জন্যই সেটা একটা অমঙ্গলকর ঘটনা হবে ।



লিলি আবার নিজে ঘর ফিরে এল । ফোন হাতে নিয়ে রোমারির নাম্বার ডায়েল করলো । একবার রিং হতেই ওপাশ থেকে ভারি গলায় কেউ বলল
-হ্যালো
-কেমন আছো ?
-আমি তো ভাল আছি তবে তোমার কন্ঠ শুনে মনে হচ্ছে না তুমি ভাল আছে ।
একটু সময় চুপ থেকে লিলি বলল
-আমার দাগ গুলো মুছে যাচ্ছে
-এতো দ্রুত !!
লিলি রোমারির কন্ঠের বিশ্ময়টা বুঝতে পারলো ।
-হ্যা !
-এমন তো হওয়ার কথা না ।
-আসলে আমি ঐদিন এমন একটা কাজ করেছিলাম যেটা আমার করার কথা না । সেটার জন্যই এমন হচ্ছে !

ওপাশ নিরবতা বিরাজ করলো কিছু সময় । তারপর রোমারি বলল
-কখন আসতে চাও ?
-আজকে সন্ধ্যায় !
-আচ্ছা আসো ! আমি সব কিছু প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি !

লিলি ফোন রেখে দিল । আবার সেই দিন চলে এসেছে । যন্ত্রনা ভোগ করার করার দিন । ওর মায়ের কথা মনে পড়লো । সে একবার তাকে জড়িয়ে ধরে বলেছিলো যে তাকে জীবনভর এমন কষ্ট ভোগ করতে হবে যেটার জন্য সে দায়ী নয় । দায়ী অন্য কেউ । অন্য কারো পাপের ফল তাকে সারা জীবন ভোগ করতে হবে ।



তিন

লিলি চাবুকের দিকে আরেকবার তাকালো । সব চাবুকই কালো রংয়ের হয়ে থাকে কিন্তু এই চাবুকটা সাদা । তবে এর সারা শরীরে কালো অক্ষরে অদ্ভুদ ভাষায় কিছু লেখা ছোট ছোট করে । চাবুকটার দিকে একভাবে তাকিয়ে রইলো কিছু সময় । মনের ভেতরে একটা কথা বারবার উকি দিচ্ছে । এখান থেকে চলে যেতে বলছে সেটা । লিলি চিন্তাকে দাবিয়ে রাখলো । কোন ভাবেই এই চিন্তাকে জয়ী হতে দেওয়া যাবে না । কারন ওর ভেতরে যে প্রাণীটা আছে সেটা কেবল এই চাবুকটাকেই ভয় পায় ! আর ভয় পায় ঐ লোহার রিংটা । রিংটার মাঝে অদ্ভুদ একটা নকশা আকা । নকশাতে যাই বলা হোক না কেন সেটাকে ভেতরের এই প্রাণীটাকে খুব বেশি ভয় পায় । সেটা যখনই ওর শরীরের ছাপ ফেলে তখনই প্রাণীটার উপদ্রপ কমে আসে । একেবারে নিস্তবদ্ধ হয়ে যায় কিছু সময়ের জন্য । কিছু দিনের জন্য । লোহার রিংটা এখন আগুনে গরম করা হচ্ছে । একটু পরে সেটা দিয়েই ওর শরীরে ছাপ দেওয়া হবে । সব থেকে কঠিন পরীক্ষা এটাই ।
ভাবতেই পারছে না ঠিক দুই সপ্তাহ আগেই সে এখানে এসেছিল । প্রত্যেকবার এই রংটার গরম ছাপ ওর শরীরে মাস দেড়েক কিংবা দুই মাসের বেশি সময় থাকে । কিন্তু এইবার সব কিছু অলটপালট হয়ে গেছে ।
রোমারি ওর দিকে তাকিয়ে বলল
-তুমি রেডি ?
-হুম !


ঠিক একই অবস্থায় লিলি এর আগেও এসেছে । একই ভাবে তার দু হাত সিলিংলের সাথে বাঁধা শক্ত করে । পায়ের দিকটাও শক্ত করে মেঝের সাথে আটকানো । আগে ও মুখে কিছু পড়তো না কিন্তু চিৎকার করলে অনেকে শুনতে পাবে । পরে হয়তো সমস্যা হবে তাই এখন মুখে একটা মেডিক্যাল টেপও লাগিয়ে নেয় ! লিলির ঠিক সামনেই আগুন জ্বলছে । ওর সামনে রোমারি বসে মন্ত্র পড়া শুরু করলো !
প্রতিটা মন্ত্রের শব্দ ওর কানে যেতেই ও যেন অন্য জগতে চলে যাচ্ছে । একটু ঘোরের ভেতরে !

-রেডি ?
রোমারির কন্ঠটা বড় তীক্ষ হয়ে শোনালো !
ও মাথা ঝাকাতেই একটা শপাত করে আওয়াজ হল । সেই সাথে তীব্র একটা ব্যাথা ও অনুভব করলো ওর পেছনে । সেই সাথে আরও একটা অনুভুতি ওর ভেতরে আসলো । ওর ভেতরে কেউ যেন চিৎকার করে উঠছে । ছুটে পালানোর চেষ্টা করছে । এই সময় লিলির হুস হারাতে থাকে । এই জন্য ওর হাত আর পা দুটো শক্ত করে আটকে রাখা দরকার হয়ে পড়ে !




লিলির যেভার প্রথম তার ভেতরের যন্তুটাকে বাইরে আসতে দিয়েছিলো তখন ওর বয়স আট বছর । ওর স্কুলের এক ছেলে ওকে মেরেছিলো । লিলি তখনই আবিস্কার করলো ওর ভেতরে অন্য কিছু আছে যা ওকে বলছে ছেলেটাকে শাস্তি দিতে । এর আগে ও স্বপ্ন দেখতো কিন্তু সেটা এতোটা প্রকট ছিল না যতটা ওর রাগের কারনে প্রকাশ পেল । স্কুল থেকে ফেরার পথে ও ছেলেটার জন্য অপেক্ষা করছিল রাস্তার পাশে ঝোপের ভেতরে । তারপর ছেলেটাকে বাগে পেতেই ওর উপর হামলা করে বসে বসে । এমন ভাবে আক্রমন করে যে ছেলেটা ঠিক মত চিৎকার করার সুযোগ পায় নি । যখন লিলির হুস ফিরলো ও দেখলো ও ছেলেটার ঘাড়টা ভেঙ্গে ফেলেছে । নিজের চোখের নিজের কৃত কর্মটা ওর বিশ্বাস হচ্ছিলো না । তখনও ও দৌড় দিয়ে বাসার পৌছালো । এতো দ্রুত যে ও নিজেই অবাক হয়ে গেল । নিজেকে লুকিয়ে রাখলো ব্যাজমেন্টের ভেতরে । ও তখন ওর ভেতরের কন্ঠটা পরিস্কার শুনতে পাচ্ছিলো । যেটা বলছে ও যা করেছে সেটা ঠিকই করেছে । কিন্তু ওর মন সেটা মানতে নারাজ ছিল ।

সন্ধ্যায় সময় যখন ওর আম্মু বাসায় এল ওর চোখের দিকে তাকিয়েই বুঝে ফেলেছিলো যে খারাপ কিছু হয়েছে । ওর মুখ থেকে সব শুনে একেবারে নিরব হয়ে গেল । ওর মা ওকে এর পর বলল ওকে কি কি করতে হবে এবং কেন করতে হবে ! ঐ টুকু বসয়েই লিলি বুঝতে পেরেছিলো ও যা করেছে সেটার জন্য ওকে শাস্তি পেতেই হবে । আর এটাই হচ্ছে ওর শাস্তি । ঐ ছেলেটার ঘাড় ভাঙ্গা দৃশ্যটা লিলির মনে আজও গভীর ছাপ ফেলে আছে যেটা ওকে কোন খারাপ কাজ করতে বাঁধা দেয় !

প্রায় আধা ঘন্টা চলল লিলির উপর চাবুক বর্ষন । একটা সময় লিলি অনুভব করলো ওর ভেতরের প্রাণীটা একেবারে নিস্তেজ হয়ে গেছে । সেই সাথে রোমারিও লক্ষ্য করলো লিলির চোখের রংও স্বাভাবিক হয়ে এসেছে । এরপরেই আসল কাজ । গরম করা রিংটা নিয়ে এগিয়ে এল । মুখে মেডিক্যাল টেপ দিয়ে আটকানো সত্ত্বেও ও দাতে দাপ চেপে অপেক্ষা করতে লাগলো তিব্র একটা চিৎকার আটকানোর জন্য ।


দগদগে ঘাঁ নিয়ে লিলির শার্ট পরতে কষ্ট হচ্ছিলো । সারা শরীরে তীব্র ব্যাথা অনুভব করছে । তবে মনের ভেতরে একটা শান্তি কাজ করছে । আগামী কিছু দিন ও শান্তিতে থাকতে পারবে । রোমারি ওকে পোষাক পরতে সাহায্য করলো । তারপর ওর দিকে তাকিয়ে বলল
-তোমার আরও সাবধান হওয়া উচিৎ ! আমি আগেই বলেছি তুমি যত তোমার শক্তিটা ব্যবহার করবে তত জলদি তোমার শরীরের এই দাগটা মিশে যাবে । আর আদরাত তত দ্রুত বেরিয়ে আসবে !
লিলি দুর্বল কন্ঠে বলল
-আই নো । কিন্তু ঐ লোকটা মারা যেত !
-গেলে যেত ! দুনিয়ার মানুষকে বাঁচানোর জন্য তুমি আসো নি ! এবার থেকে আরও সাবধানে থাকবে । ঠিক আছে ?
-আচ্ছা !
-তোমার উপর চাবুক চালাতে আমার কি ভাল লাগে বল !

লিলি আর কোন কথা বলল না । সোজা হাটা দিল দরজার দিকে । ওকে অনেকটা পথ আবার ফেরৎ যেতে হবে । পেছন থেকে রোমারি বলল
-যেতে পারবে তো ? নাকি পৌছে দেব !
-সমস্যা হবে না । পারবো !

এই বলে লিলি বেরিয়ে গেল !




লিলি বেরিয়া যাওয়ার কিছু সময় পরেই রোমারির দোকানে আবারও বেল বেজে উঠলো ।
রোমারি চিৎকার করে বলল দোকান বন্ধ হয়ে গেছে । কিন্তু বেলটা আরও কয়েকবার বেজে উঠলো । বিরক্ত হয়ে দরজা খুলতে গেল যে । এবং সেটাই জীবনের সব থেকে বড় ভুল ছিল ওর । দরজার সামনে কালো পোষাকের একজন চমৎকার চেহারার মেয়েরার মেয়ে দাড়িয়ে । চেহারা চমৎকার হলেও মেয়েটার চোখে অন্য রকম কিছু একটা ছিল যেটা রোমারির চিনতে ভুল হল না । ভয় পেয়ে দরজা বন্ধ করতে গেল কিন্তু ততক্ষনে অনেক দেরি হয়ে গেছে ।
মেয়েটি নিজের পিঠে আটকানো খাপ থেকে চকচকে তরবারিটা বের করে ফেলেছে !



চার

পুরোটা দিন লিলি ঘুমিয়েই কাটিয়ে দিল । শরীরে প্রচন্ড ব্যাথা ছিল । একট নড়লেও ব্যাথাটা ওকে কাবু করে ফেলছিল । তবে পরদিন বিকেলের মাধ্যেই অনেকটা সুস্থ হয়ে গেল । আয়নায় নিচের পিঠটা ভাল করে দেখে ছিল । একেবারে তাজা হয়ে আছে রিংয়ের ছাপ টা । এটা যতদিন থাকবে ততদিন ভেতরের ওটা বাইরে বের হতে পারবে না । লিলি নিজের কাছে কাছেই একটু নিরাপদ বোধ হল । ছোট বেলা থেকেই এই নিজের ভেতরের ভয়টা ওকে বারবার ধাওয়া করে এসেছে, ওকে হামলা করতে এসেছে । প্রতিবার পশুটাকে প্রহার করার পরের কটা দিন লিলির সময় গুলো খুব ভাল যায় । নিজেকে খুব স্বাভাবিক মানুষ মনে হয় । ওর শরীরে সহ্য করবে না নয়তো ও প্রতিদিনই এমন কাজ করতো । নিজের থেকে ঐ পশুটাকে দুরে রাখার জন্য ও সব কিছু করতে পারে !

বিছানা থেকে উঠে লিলি আয়নাতে নিজেকে আরেকবার দেখলো । পিঠের দাগ গুলো একেবারে ষ্পষ্ট ভাবে দেখা যাচ্ছে । যে কেউ দেখলে মনে করবে ও পিঠে ট্যাটু একেছে । লিলির দাগ গুলোর দিকে আরও ভাল করে তাকিয়ে রইলো । এই দাগ গুলোর মাঝে কি এমন ক্ষমতা আছে যে ঐ পশুটাকে একেবারে নিস্তেজ করে রাখে । যতদিন এই দাগটা মুছে না যায় ততদিন আদরাত একেবারে শক্তিহীন হয়ে থাকে । দাগ গুলো আস্তে আস্তে মুছে যেতে থাকলেই ওটা দেখা দেয় নিজের অস্তিত্ব জানান দিতে শুরু করে !

লিলির আজকেও রোমারিও কাছে যেতে হবে । যে রিচুয়্যালটা আদরাতকে দমিয়ে রাখার জন্য করা হয় সেটার দুইটা পার্ট থাকে । একটা একটা পিজিক্যাল অন্যটা আধ্যাতিক । কালকে একটা ভাগ গেছে আজকে অন্যটা করতে হবে । রাতে কাজ থেকে ফিরার সময় যেতে হবে রোমারীর কাছে ! তারপরেই বেশ কিছু দিন নিশ্চিন্ত ।

তবে লিলি খুব বেশি নিশ্চিন্ত হতে পারছে না । বারে দেখা হওয়া সেই ছেলেটার কথা ভাবতে লাগলো । ছেলেটা ওর ব্যাপারে অনেক কিছুই জানে । অন্য সময় হলে লিলি দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার ব্যস্ট হয়ে যেত কিন্তু এই ছেলেটার বেলায় সেটা সে ভেতর থেকে অনুভব করলো না । বারবার মনে হল যে ছেলেটা ওর কোন ক্ষতি করবে না । কিন্তু ছেলেটা বলছিলো অন্য আসছে । তাহলে কি তারা আসছে ?
যাদের থেকে ও পালিয়ে বেড়াচ্ছে তারাই আসছে ? ওকে খুজে পেয়ে গেছে !

তার মানে আবার ওকে পালাতে হবে । আবারও নতুন কোন জাগয়াতে নতুন কোন পরিবেশ গিয়ে থাকতে হবে । লিলি ঠিক করলো আজকে রোমারির কাছ ব্যাপারটা খুলে বলবে । প্রতিবার এমনই হয় । রোমারির মত কারো খোজ নিয়েই তাকে নতুন জায়গাতে যেতে হবে ।



অন্ধকারে হাটতে হাটতে যখন রোমারির বাড়ির কাছে চলে এল তখনই মনে হল কিছু একটা ঠিক নেই । অন্য সময় হলে ও এই অনুভুতিটা আরও পরিস্কার ভাবে বুঝতে পারতো কিন্তু এখন সেটা অনুভব করতে পারছে না । রোমারির দরজার সামনে ক্লোজ লেখাটা দেখে একটু সন্দেহ হল । সকাল থেকে ও রোমারিকে ফোন দিচ্ছে কিন্তু একবারও ফোন ধরে নি । এমনটা খুব একটা হয় না স্বাধারনত । কেবল মাত্র যখন রোমারি যখন লম্বা ধ্যানে বসে তখন বাদে । তাহলে ও আজকে সারাদিন লম্বা ধ্যানে বসেছিলো ?
সেটাও তো এতোক্ষনে শেষ হয়ে যাওয়ার কথা !

লিলি দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকলো । দরজা খোলা দেখে ওর মনের সন্দেহটা আরও একটা বেড়ে গেল ।

ঘরে আবছাটা অন্ধকার হয়ে আছে । পরিচিত জায়গাটা কেমন অপরিচিত মনে হচ্ছে ! কেমন একটা অন্য রকম গন্ধও ছড়িয়ে আছে চারিদিকে । এদিক ওদিক চোখ দিতেই লিলির চোখটা পড়লো কাউণ্টারের শেষের দিকে ।
একটা হাত !
হাতটা চিনতে লিলির একদম কষ্ট হল না । এবং হাতটা এমন ভাবে পড়ে আছে যে লিলির বুঝতে কষ্ট হল না রোমারীর কপালে কি হয়েছে । সে আর কিছু দেখতে চাইলো না । চোখ ফেটে কান্না এল । এই শহরে কেবল এই একজনই পরিচিত মানুষ ছিল !
কে মারলো ওকে ?
কেনই বা মারলো ?
এখন কি করবে ও ?

নাহ ! সবার আগে ওকে এখান থেকে বের হতে হবে ! দরজা খুলে বের হয়ে এল । তারপর সোজা বাসার দিকে । নির্জন রাস্তায় দ্রুত পা চালালো । ভাবতে লাগলো এর পরে ও কোথায় যাবে ? প্রতিবার রোমারীর মত একজনের কাছ থেকে নতুন কারো খোজ পেত সেখানে গিয়ে তার সাথে যোগাযিগ করতো । সেই তার একটা ব্যবস্থা করে দিত । নতুন জায়গায় পালিয়ে যাওয়ার থেকেও ওর দরকার এমন একজন যে কি না ওর ভেতরে পশুটাক আটকিয়ে রাখতে সাহায্য করবে ! যদি ওটা আটকানো না যায় তাহলে ও নিজের অস্তিত্ব আস্তে আস্তে বিলীন হয়ে যাবে !
কি করবে ও !

আরও কিছু দুর যাওয়ার পরেই হঠাৎ করেই লিলি লক্ষ্য করলো জায়গাটা একেবারেই নির্জন হয়ে আছে । এমন কি কোন ঝিঝি পোকাও ডাকছে না । উত্তরার এই এলাকাটা একটু বেশি নির্জন । এখনও খানিকটা গাছ পালা আছে । বাড়ি ঘর গুলোও ফাকা ফাকা হয়ে আছে । শরের শেষ মাথায় একদম ! লিলি দাড়িয়ে পড়লো । ওর ভেতরে মন বলছে সামনে দিয়ে বিপদ আসছে । ওকে পালাতে হবে ! কোন দিকে যাবে !

-লিলি !
তীক্ষ স্বরে কেউ ডেকে উঠলো ! এক ঝটকাতে পেছনে ফিরে তাকালো । অন্ধকার থেকে একটা মেয়ে বের হয়ে এল । কালো আটসাট পোষাক পরা মেয়েটার এক হাতে একটা খোলা তরবারি ! অন্য হাতে একটা কালো রংয়ের চাবুক দেখা যাচ্ছে !
লিলির মনের ভেতরে থেকেই কেউ যেন বলে উঠলো পালাও ! এখনও পালাও !

গতকালকের আগে হলেও লিলি কোন চিন্তা করতো না । ওকে ধরতে পারে এমন ক্ষমতা কারো ছিলো না । কিন্তু আজকে ও একেবারে ক্ষমতা হীন । লিলি দৌড়াতে যাবো ঠিক তখনই সামনের মেয়েটি নিজের হাতের চাবুকটা তুলে ওর দিকে চালালো । নিজেকে বাঁচানোর জন্য ও দুরে যেতে চাইলো কিন্তু অনেক দেরি হয়ে গেছে । ওর একটা একটা হাতে এসে লাগলো চাবুকটা !

ঠিক যেন কাটা বিঁধে গেল । তীব্র একটা যন্ত্রনা বোধ করলো । অন্য হাতটা দিয়ে যখন ও চাবুকের মাথাটা সরাতে যাবে তখনই লক্ষ্য করলো অন্য আরেকটা চাবুকের মাথা একে অন্য হাতটা আটকে ফেলল । লিলি এবার সত্যিই সত্যিই ভয় পেল । তীব্র ভয়ের কারনে হাতের যন্ত্রনা ওর কাছে ঠিক মত অনুভুত হল না আর !

কালো আটসাট পোষাক পরা মেয়েটি ইংরেজিতে বলল
-তোমাকে আমরা অনেক দিন ধরেই খুজছি ! আর পালাতে পারবে না তুমি !
-আমি কারো ক্ষতি করি নি......।

লিলি বলার চেষ্টা করলো । মেয়েটি যেন ওর কথা শুনে বেশ হাসি পেল । তারপর বলল
-আজকে কর নি কিন্তু সামনে করবে ! তোমার ভেতরে যে আছে সে করবে ।
-আমি.....

লিলি অনুভব করলো ওর সময় শেষ । সামনের মেয়েটা পাশে আরও একটা লোক চলে এসেছে । তার কাছে চাবুকের আরেক মাথা দিয়ে মেয়েটি খোলা তরবারি নিয়ে সামনে এগিয়ে আসছে । এবারই ওর সময় শেষ ।

লিলির চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে এল । ওকে এখন মরতে হবে । ওকে মরতেই হবে ! লিলি চোখ বন্ধ করে ফেলল । তারপর ওর মায়ের মুখটা মনে করার চেষ্টা করলো । কেমন ছিল যেন সে !
কই কিছুই তো মনে পড়ছে না !

কিন্তু তারপর মনে হল কিছু একটা সমস্যা হয়েছে । ওর একটা হাতের চাবুকের টানটা ঢিল হয়ে এল ! চোখ খুলে তাকিয়ে দেখে সামনের মেয়েটা থেমে গেছে । ওর অন্য পাশে যে লোকটা আরেকটা চাবুক ধরে ছিল সে মাটিতে পড়ে আছে । কেউ কিছু বুঝতে পারছে না !

লিলি তখনই দেখলে সেই যুবক এসে হাজির হল যেন অন্ধকার থেকে । ওকে দেখে লিলি যতটা অবাক হল সামনে খোলা তরবারি হাতে মেয়েটা তার থেকেও বেশি অবাক হল !
-রাফায়েল !
-ইভাঙ্কা ! কেমন আছো বেইবি ! লং টাইম নো সি !
-রাফায়েল !
সামনের মেয়েটা যার নাম সম্ভবত ইভাঙ্কা, বলল
-এখানে তোমার কোন কাজ নেই । এটা আমাদের ব্যাপার !
রাফায়েল যেন খুব মজা পেল । বলল
-উহু ! এখানেই আমার কাজ ! ভালই ভালই লিলিকে ছেড়ে দাও ! আমি ওকে নিয়ে চলে যাই । কারো কোন ক্ষতি হবে না । কিন্তু যদি ওর ক্ষতি করতে চাও তাহলে ফল ভাল হবে না !
ইভাঙ্কা বলল
-আমাদের ভেতরে ডিল হয়েছে । আমরা কেউ কারো পথে আসবো না ! তুমি আমাদের পথে আসছো !
-ভুল ! তোমরা আমার পথে আসছো !
-দেখ এর ফল কিন্তু ভাল হবে না ! পুরো এজেন্সি কিন্তু তোমার পেছনে লাগবে !
-তোমার এজেন্সিকে আমি ভয় পাই ? এটা তুমিও জানো ! আমি আবারও বলছি লিলিকে ছেড়ে দাও ! আর কোন ঝামেলা চাই না !
-একে ছেড়ে দিবো !

ইভাঙ্কার ভেতরে যেন খুনির জোক চেপে গেল । মেয়েটি তার তরবারি উপরে তুলে লিলির দিকে লাফ দিল । রাফায়েল নামের ছেলেটা তখনও বেশ খানিকটা দুরে । কোন ভাবেই সম্ভব না যে সে ইভাঙ্কাকে আটকাতে পারবো । লিলির মনে হল ওর সময় এবার আসলেই শেষ হয়েছে । কিন্তু অবাক হয়ে দেখলো লাফ দেওয়া ইভাঙ্গা যখন ওর দিকে এগিয়ে আসছিলো তখনই মাঝ পথেই আটকে গেল । শূন্যের ভেসে রইলো কিছু সময় । লিলির মনে হল কেউ যেন শূন্য থেকেই ওকে আটকে রেখেছে । তারপর চোখের সামনেই ছুড়ে ফেলে দিলো কিছুটা দুরে ।

অন্য হাতের চাবুক ধরে রাখা লোকটাকেও কেউ যেন শূন্যে তুলে ছুড়ে ফেলে দিল । লিলি কেবল তাকিয়ে তাকিয়ে দেখতে লাগলো । রাফায়েল কখন ওর কাছে চলে এসেছে ও লক্ষ্যই করে নি । ওর দিকে তাকিয়ে বলল
-তুমি ঠিক আছো ?
-হ্যা ? হ্যা !
-তোমার হাত দিয়ে রক্ত পরছে !
তাকিয়ে দেখলো আসলেই রক্ত পড়ছে ।
রাফায়েল বলল
-চল আমাদের এখন এখান থেকে চলে যাওয়া উচিৎ ! দুরে তাকিয়ে দেখি ইভাঙ্কা মাটি থেকে উঠে দাড়িয়েছে । রাফায়েলের দিকে তাকিয়ে বলল
-এর ফল তোমাকে ভোগ করতে হবে রাফায়েল !
-দেখা যাবে !

তারপর আর দাড়ালো না । বলতে গেলে লিলিকে এক প্রকারকোলে করে নিয়ে দৌড়াতে লাগলো । কিছু লিলি পেছন তাকিয়ে দেখলো ইভাঙ্কা কিংবা কেউ ওদের পিছু নিচ্ছে না । দাড়িয়ে রয়েছে ! লিলি বলল
-ওরা কেউ আসছে না ।
-এখন আসবে না ওরা ! কারন এখন ওদের রিসোর্স কম । ওরা কেবল তোমার প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিলো । আমাকে আশা করে নি । কিন্তু পরের বার যখন আসবে তখন আমার প্রস্তুতি নিয়ে আসবে ! তার আগেই আমাদের এখন থেকে চলে যেতে হবে !
-তুমি কে ?
-তোমার মতই কেউ ! চল ঐ যে আমাদের বাহন !

লিলি তাকিয়ে দেখলো একটা কালো রংয়ের বাইক রাস্তার উপর দাড় করানো রয়েছে । রাফায়েল ওখানে উঠতে বলল
-শক্ত করে ধরবে । আমাদের অনেকটা পথ যেতে হবে । সেই চট্টগ্রাম !
-এতো দুর কেন ?
-তোমাকে কারো কাছে রেখে আসবো !
-কে ?

রাফায়েল কোন কথা না বলে কেবল হাসলো । রহস্যময় হাসি ! লিলির এতো কিছুর পরেও রাফায়েলের হাসিটা কেন জানি ভাললাগলো । খানিকটা ভরশা দেওয়ার মত হাসি । এমন একটা হাসি যেটা দেখলে সকল দুঃচিন্তা চলে যায় । মনে হয় যে এ থাকলে কোন ভয় সমস্যা হতে পারে না !



পরের পর্ব


সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:১৫
১৩টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ভারতীয় পতাকার অবমাননা

লিখেছেন সরলপাঠ, ০২ রা ডিসেম্বর, ২০২৪ ভোর ৪:৪৩

বাংলাদেশের ২/১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতীয় পতাকার অবমাননা আমার কাছে ছেলেমী মনে হয়েছে। ২০১৪ সাল থেকে ভারত বাংলাদেশের রাজনীতিতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করার কারণে বাংলাদেশের মানুষের মনে প্রচন্ড রকমের ভারত বিদ্বেষ তৈরি হয়েছে।

কিন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভিসা বন্ধ করায় ভারতকে ধন্যবাদ।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা ডিসেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩



ভারত ইদানীং ভিসা দিচ্ছেনা; তারা ভিসা না দিয়ে আমাদেরকে শিক্ষা দিতে চায়! তাদের করদ রাজ্য হাতছাড় হওয়া খুবই নাখোশ, এতোই নাখোশ যে মোদী মিডিয়া দিনরাত বয়ান দিচ্ছে এই দেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতের চিকিৎসা বয়কট এবং

লিখেছেন পবন সরকার, ০২ রা ডিসেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৫৬


ভারতের এক হাসপাতাল ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশের কোন রুগিকে তারা চিকিৎসা দিবে না। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো যে হাসপাতাল থেকে এই ঘোষণা দেয়া হয়েছে সেই হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার জন্য বাংলাদেশের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। চামচা পুঁজিবাদ থেকে চোরতন্ত্রে পরিণত হয়েছিল দেশ

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০২ রা ডিসেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:১৩






চামচা পুঁজিবাদ থেকে দেশ চোরতন্ত্রে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনৈতিক শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, আমলা, রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা মিলে চোরতন্ত্র করেছে।

সোমবার... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখ হাসিনাকে ভারত ফেরত পাঠাবে তবে............

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০২ রা ডিসেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:৪২


শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে বিচারের জন্য ভারতের কাছে ফেরত চাইতে হলে অবশ্যই বাংলাদেশকে প্রতিহিংসামূলক বিচারপদ্ধতি বাদ দিতে হবে। বিচারে শেখ হাসিনা যাতে ন্যায় বিচার পান বাংলাদেশকে আগে তা নিশ্চয়তা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×