somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সন্ধ্যায় আমার খবর আছে (পর্ব ১)

২৭ শে অক্টোবর, ২০১১ রাত ৯:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সন্ধ্যায় মীম আমাকে দেখা করতে বলেছে । কেন বলেছে আমি ঠিক জানি না । তবে গেস করতে পারি ।
আজ সন্ধ্যায় আমার খবর আছে । নিজের উপর কি যে রাগ হচ্ছে । কেন যে স্টুপিডের মত কাজ টা করতে গেলাম । কি দরকার ছিল মীম কে ভ্যালেনটাইনের কার্ড দেওয়ার !
কেনার সময় কি মনে করে কিনেছিলাম কে জানে । দেওয়ার আগেও কিছু মনে হয় নি । ঝামেলা বাধল দেওয়ার সময় ।
মীমের হলের সামনে গিয়ে ওকট ফোন দিলাম ।
“কোথায় ?”
ও বলল “এই তো রুমে ।“
“ একটু নিচে আসবে ?”
“ তুমি নিচে ? আচ্ছা আসছি ।“
একটু পরই ও গেটের সামনে আসলো । মনে হয় ঘুমিয়ে ছিল । চোখ খানিকটা ফোলা ফোলা লাগছিল ।
“ ঘুমিয়ে ছিলে ।“
“ হ্যা একটু শুয়ে ছিলাম ।“
“ সরি ঘুম ভাঙ্গালাম তোমার ।“
“ না ঠিক আছে । বল কি বলবে ?”
যে আবাহাওয়া মনের মধ্যে তৈরি করেছিলাম ততক্ষনে গায়েব হয়ে গেছে ।
“ না মানে !”
কি বলব বুঝতে পারছিলাম না । কিভাবে যে দিবো বুঝতেই পারছিলাম না ।
“ বল কি বলবে ?”
কোন মতে কার্ডের খামটা ওর হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললাম এটা তোমার জন্য । তারপর আর কোন কিছু যেন নেই । ওখান থেকে পালাতে পারলে বাঁচি । চলে এলাম বলতে গেলে পালিয়েই ।
আসার সময় নিজেকে ধাপড়াতে ইচ্ছা করছিল । এমন একটা কাজ কেন করলাম ।
ও কি না কি ভাবছে ! ফোনটা আসলো আরো ঘন্টা খানেক বাদে ।
“ হ্যালো ।“
খানিকটা ইতস্ততঃ করে বললাম ”হ্যালো ।“
“তুমি ও ভাবে চলে আসলে কেন ?”
“ আসলে ......”
“ ঠিক আছে তুমি সন্ধ্যার সময় আমার সাথে দেখা করবে । টিএসসিতে । ওখানে তোমার সাথে কথা হবে ।“
জানি না কি কথা বলবে ।
আল্লাহই জানে ।
কেন যে দিতে গেলাম !
কোন কারন নেই কোন কারন ছিলোও না কোন কালে । বলতে গেলে স্কুল জীবন থেকে ওর সাথে আমার দা কুমড়ার সম্পর্ক ছিল । আমার খুব ভাল করে মনে আছে আমি তখন সবে ক্লাস সেভেনে পড়ি । বাবা বদলি হলেন । আমাকে বদলাতে হল স্কুল । প্রথম দিন স্কুলে গিয়ে দেখি একটা মেয়ে হল ক্লাস ক্যাপ্টেন । ক্লাসটা সেই নিয়ন্ত্রন করছে । খোজ নিয়ে জানতে পারলাম সে হল হেডস্যারের মেয়ে । এই হল মীম ।
কয়দিনের মধ্যেই মীমের সাথে আমার গোলমাল বেঁধে গেল । ঘটনা এরকম যে আমি বাইরে যাবো । ও ক্লাস মনিটর ছিল । বাইরে যেতে হলে ওর অনুমুতি নিতে হত । আমি অনুমুতি চাইতে গেলাম ।
বললাম “বাইরে যাবো ।“
ও সাফ বলে দিল এখন যাওয়া যাবে না ।
“কেন ?”
ও উত্তর দিল না । আমার কখন বেশ বেগ পেয়েছে । অনুমুতির তোয়াক্কা না করে আমি কাজ সারতে চলে গেলাম । এসে দেখি স্যার চলে এসেছে । আর আমার নামে রিপোর্ট চলে গিয়েছে । কারন বলতে স্যার কিছু বলল না । কিন্তু ওর সাথে যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল ।
ওর প্রত্যেকটা কাজে আমি বিরোধিতা করতাম । এতো দিন মীমের নিয়ন্ত্রনে যারা ছিল তারা যেন ওর আন্ডার থেখে বের হতে শুরু করে দিল বিশেষ করে ছেলেরা ।
এটা দেখে ও আমার উপর আরো খেপে গেলো । আমিও কম যাই না । ওকে রাগানোর জন্য ওকে নিয়ে মজা করে ছোট ছোট ছড়া লিখলাম । যেমন
মীম মীম মীম/ রোজ পাড়ে ডিম আথবা আমাদের মীম রোজ যায় জিমে /জিমে গিয়ে ব্যাম করে আর তা দেয় ডিমে । হা হাহাহা ।
এতে যেন ও তেলেবেগুনে জ্বলে উঠত । পড়ালেখায় ভাল ছিলাম । সেদিক দিয়েও ওর সাথে চলত হাড্ডাহাড্ডি লড়াই । ওর থেকে যখন কোন বিষয়ে নম্বর বেশি পেতাম মনে অনাবিল আনন্দ পেতাম ।
কিন্তু মীম যেদিন মেডিক্যালে চান্স পেল না আমি পেলাম সেদিন ও খুব কেঁদে ছিল । সেদিন কেন জানি আমি খুশি হতে পারি নি । কোন কারন নেই । তবুও পারি নি ।
তারপর ও ভার্সিটিতে ভর্তি হয় । ওর সাথে আর দেখা হত না বললেই চলে ।
কিন্তু গত ঈদের কথা । হঠাত্ আমাদের হেড স্যার মানে মীমের আব্বা আমাকে বাড়িতে ডেকে পাঠালেন ।
“স্লামুয়ালাইকুম স্যার । আসো বাবা । ভাল আছো তুমি ?’
“ জ্বি ভাল আছি স্যার ।“
“ পড়া লেখা কেমন চলছে ?”
“ জ্বি ভাল চলছে । তুমি কবে যাবে ঢাকায় । এইতো ঈদের ছয় সাত দিন পর”
“তুমি কি আমার কি একটু কষ্ট করতে পারবে বাবা ?”
“ জ্বি স্যার বলেন । কোন সমস্যা নাই ।“
“ আমার শরীর টা ভাল যাচ্ছে না । তা না হলে আমি যেতাম । তুমি কি মীম কি তোমার সাথে ঢাকা নিতে পারবে । যত বড় হোক । মেয়ে তো । একা ছাড়তে সাহস পাই না । এই উপকার টা কর বাবা ।“
“ কোন সমস্যা নেই স্যার ।“


(চলবে)
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অবশেষে মায়ের বাড়ি ফেরা ও তুরিনের ভুয়া ডিগ্রি কাহিনী—এক আলোচিত আইনজীবীর পতনের গল্প

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৬ ই মে, ২০২৫ সকাল ৯:৪৭

অবশেষে মায়ের বাড়ি ফেরা ও তুরিনের ভুয়া ডিগ্রি কাহিনী—এক আলোচিত আইনজীবীর পতনের গল্প

ছবি যুগান্তর অনলাইন থেকে সংগৃহিত।

আলোচিত আইনজীবী ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ বিতর্ক বর্তমানে... ...বাকিটুকু পড়ুন

রহস্যঃ কী হলেছিলো মেরি সেলেস্ট জাহাজটির সাথে?

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৬ ই মে, ২০২৫ সকাল ১০:৫০



১৮৭২ সালের নভেম্বর মাসের এক শীতের সকালবেলা। সমুদ্রপথে যাত্রা পথে ব্রিটিশ ব্রিগেন্টিন জাহাজ ‘দেই গ্রাটিয়া’র নাবিকরা একটা অদ্ভুত ব্যাপার খেয়াল করল। তারা তাদের সামনে একটা জাহাজকে এলোমেলো ভাবে চলতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।।খালেদা জিয়া এখন ঢাকায়

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৬ ই মে, ২০২৫ সকাল ১১:৪৫









দীর্ঘ চার মাস পর যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে আজ মঙ্গলবার দেশে ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তাঁর সঙ্গে দেশে আছেন দুই পুত্রবধূ জুবাইদা রহমান ও সৈয়দা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবিক করিডোর: আশীর্বাদ না অভিশাপ?

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৬ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৩:৪১

মানবিক করিডোর: আশীর্বাদ না অভিশাপ?

ছবি, এআই দ্বারা তৈরিকৃত।

রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের জন্য মিয়ানমারের অভ্যন্তরে একটি নিরাপদ ত্রাণপথ বা "মানবিক করিডোর" স্থাপন নিয়ে সাম্প্রতিক কূটনৈতিক আলোচনা নতুন মাত্রা... ...বাকিটুকু পড়ুন

গেলো বসন্ত এলো বৈশাখ এলো নতুন বাংলা বছর ১৪৩২

লিখেছেন শায়মা, ০৬ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৪:২০


রঙে রঙে রঙিন বসন্ত ফুরোতে না ফুরোতেই চলে এলো বাঙ্গালীর প্রানের উৎসব নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়া পহেলা বৈশাখ। সেই উৎসব ঘিরে কেটে গেলো বেশ কিছুদিন। ব্যস্ততায় কাটলো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×