স্পষ্ট দেখা গেছে পাকিস্তান সরকারের তৎপরতা সম্পর্কে ঢাকার মার্কিন কনসুলেটে দুটো ভিন্ন ধারার উপস্থিতি। (বদলির আগপর্যন্ত) আর্চার ব্লাড ও তার মতো একদল রিপোর্ট করে গেছেন পাক বাহিনীর ঘৃন্য কর্মকান্ড নিয়ে। অন্য দিকে রাষ্ট্রদূত জোসেফ ফারল্যান্ডের মতো লোক ইস্ট পাকিস্তান পুলিশ বাহিনীকে ঢেলে সাজানোয় সাহায্যের অজুহাতে সেফটি অফিসার রবার্ট জ্যাকসনকে পূর্ব পাকিস্তানে আবারো নিযুক্তির সুপারিশ করেছেন। এ প্রসঙ্গে পূর্ব পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টির পত্রিকা মুক্তিযুদ্ধ (১ আগস্ট, ১৯৭১) প্রথম পাতায় কমরেড মনি সিংয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে ছাপা হয়
ইয়াহিয়া চক্রকে মদত দেয়ার জন্য জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক দল ও মার্কিন বিশেষজ্ঞ শিরোনামে প্রতিবেদন। সেখান জ্যাকসন সম্পর্কে স্পষ্ট বলা আছে। অবশ্য এই জ্যাকসন আর্চার ব্লাডের অধীনে কাজ করেছেন আগে। এবং বাংলাদেশে পাকিস্তান সরকারের গণহত্যায় মার্কিন সমর্থন নীতির বিরুদ্ধে ঘৃণা প্রকাশ করে টেলিগ্রাম পাঠানো ২৮ জনের একজন ছিলেন। স্বাধীনতার অনেক আগে থেকেই ফারল্যান্ড বিষয়ে গোটা পাকিস্তানে গুজব ছিলো তিনি ইন্দোনেশিয়ায় ছিলেন (কথা সত্যি না) এবং সেখানে কমিউনিস্টদের তালিকা প্রস্তুতিতে সুকোর্নো সরকারকে সহায়তা করেন। এই প্রমাণ না মিললেও পাবলিক সেফটি প্রোগ্রাম যা আদতে এন্টি কমিউনিস্ট প্রোগ্রাম ছিলো মার্কিন প্রশাসনের, তাতে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যৌথভাবে অপারেশন চালানোর প্রমাণ ইন্দোনেশিয়া ও ভিয়েতনামে মিলেছে। বাংলাদেশে হেইট ও ডুপিক নামে দুজনের কথা বলা হলেও চেষ্টা চালিয়ে এদের উপস্থিতি এখনো প্রমাণ করতে পারিনি। যাহোক, এনিয়ে বিস্তারিত লেখার ইচ্ছে আছে। তবে বুদ্ধিজীবি হত্যা শুরু হয়েছে ২৫ মার্চ রাতেই, চলেছে গোটা যুদ্ধকাল। ডিসেম্বরে বেছে বেছে বাকিদের শেষ করা হয়। পরিকল্পনায় মার্কিন প্রশাসনের হাত ছিলো নিশ্চিত, রাও ফরমান আলী নিজে জড়িত ছিলেন। আর তা বাস্তবায়িত করেছে আল-বদর যার নেতৃত্বে ছিলো এখনকার জামাতের অনেক বড় নেতাই।
নিচে ছবি আকারে দুটো ভিন্ন ধরণের টেলিগ্রামের অনুলিপি দেয়া হলো
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ বিকাল ৫:১৯