ময়মনসিংহ জেলা শান্তি কমিটি আজ ময়মনসিংহে এক প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে। সভায় বক্তব্য রাখেন লেঃ জেনারেল নিয়াজী, অর্থমন্ত্রী আবুল কাশেম, পূর্ত, বিদ্যুত ও সেচমন্ত্রী একে মোশাররফ হোসেন এবং স্থানীয় নেতারা। নিয়াজী ভারতীয় আক্রমণ সম্পর্কে সবাইকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন ভারত তার সম্প্রসারণবাদী লালসা চরিতার্থের জন্য আক্রমণ চালাচ্ছে। জনসভার পর কামালপুরে রাজাকারদের সমাবেশে তাদের সাফল্যের জন্য অভিনন্দন জানান নিয়াজী।
ভারতীয় হামলার অভিযোগে চট্টগ্রামে স্বাধীনতা বিরোধীরা হরতাল পালন করে এদিন। জুমার নামাজের পর একটি মিছিল শহর প্রদক্ষিণ করে লালদিঘি ময়দানে জমায়েত হয়। জামে মসজিদের ইমাম মওলানা আল মাদানীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কনভেনশন লিগ প্রধান ফজলুল কাদের চৌধুরী, পিডিবির মাহমুদুন্নবী চৌধুরী, ছাত্রসংঘ নেতা আবু তাহের, রিলিফ ও পুনর্বাসন মন্ত্রী অধ্যাপক শামসুল হক সহ অনেকেই।
ভারতীয় হামলা ও দুস্কৃতিকারী মুক্তিযোদ্ধাদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে কুষ্টিয়ার বিভিন্ন জায়গায় সমাবেশ হয় এদিন। এসব সমাবেশে বক্তৃতা করেন ইয়াকুব আলী, নুরুল ইসলাম, মোহাম্মদ হানিফ প্রমুখ। জেহাদী উদ্দীপনা নিয়ে এখানে মিছিল করে স্বাধীনতা বিরোধীরা। ভোলায় শাহ আজিজুর রহমানের সভাপতিত্বে শান্তি কমিটির এক সভায় বক্তৃতা করেন ইলিয়াস আলী মাস্টার। সিরাজগঞ্জের এক সভায় মওলানা আসাদুল্লা সিরাজী সেনাবাহিনীর সঙ্গে কাধ মিলিয়ে যুদ্ধ করার আহবান জানান সবাইকে।
গভর্নর ডঃ মালিক আজ এক বেতার ভাষণে দেশের এই সঙ্কটজনক অবস্থায় বিভ্রান্ত বা হতাশ না হয়ে ঐকবদ্ধভাবে শত্রুর মোকাবিলার জন্য সেনাবাহিনীর পাশে দাঁড়ানোর জন্য জনগণকে আহ্বান জানান। পাশাপাশি দ্রব্যমূল্য না বাড়াতে ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করেন তিনি। পাকিস্তান নৌবাহিনী প্রধান ভাইস এডমিরাল মোজাফফর হাসান নৌ বাহিনীর সদস্যদের শত্রুকে কোনো সুযোগ না দিয়ে খুজে বের করে খতম করার নির্দেশ দেন।
আজ পশ্চিম পাকিস্তানে সম্মিলিত কোয়ালিশন পার্টির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভাশেষে নুরুল আমিন জানান সভায় পূর্ব পাকিস্তানে ভারতীয় হামলার সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত আগা শাহী ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে দোষী করে বলেছেন তার কারণেই পাকিস্তান ও ভারত আজ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে। পাকিস্তানী বিমান হামলার কারণ জানিয়ে তিনি বলেন ভারতের স্থল আক্রমণের কারণেই পাকিস্তান বাধ্য হয়ে এই পদক্ষেপ নিয়েছে।
তথ্যসূত্র : দৈনিক পাকিস্তান, ইত্তেফাক ও পূর্বদেশ ৩, ৪ ও ৫ ডিসেম্বর, ১৯৭১
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে এপ্রিল, ২০০৮ সন্ধ্যা ৭:১৫