২৫ নভেম্বর, আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিবাদ দিবসঃ নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধের কোনো বিকল্প নেই
আজ ২৫ নভেম্বর, ইন্টারন্যাশনাল ডে ফর দ্য এলিমিনেশন অব ভায়োলেন্স এগেইনস্ট উইমেন’ বা আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিবাদ দিবস। বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে, পরিবর্তিত হচ্ছে সমাজ কাঠামো, বিকশিত হচ্ছে সভ্যতা। পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে মানুষের জীবনযাত্রায়। কিন্তু আশ্চর্য হলেও সত্য, বন্ধ হয়নি নারী নির্যাতন। বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক নারী এবং সমাজের উন্নয়নে তাদের অবদান অনস্বীকার্য। উন্নয়নের যে কোনো ধারাকে গতিশীল করতে নারী-পুরুষের সমান অংশগ্রহণ জরুরি। আর এই পরিপ্রেক্ষিতে নারীর শিক্ষা থেকে শুরু করে যাবতীয় নিরাপত্তা ও অধিকার নিশ্চিত করা রাষ্ট্রেরই দায়িত্ব। যদি কোনোভাবে নারীর এসব অধিকার ক্ষুণ্ন হয় এবং নারীর প্রতি সহিংসতা বাড়তে থাকে তবে তা যেমন দুঃখজনক, অন্যদিকে জাতীয় জীবনে উন্নতির ক্ষেত্রেও প্রতিবন্ধক। আন্তর্জাতিকভাবেও নারীর প্রতি সহিংসতাকে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। কেননা এ লঙ্ঘন বারবার মানবতা, অর্থনীতি, সমাজ সর্বোপরি দেশের যাবতীয় উন্নয়নকেই বাধাগ্রস্ত করে। যা কোনো ভাবেই প্রত্যাশিত নয়। নারীর উপর সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য ১৯৮১ সালে ল্যাটিন আমেরিকার নারীদের সম্মেলনে ২৫ নভেম্বর ‘নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রতিবাদ দিবস’ ঘোষণা করা হয়। ১৯৯৩ সালে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় অনুষ্ঠিত বিশ্ব মানবাধিকার সম্মেলনে এ দিবসটি স্বীকৃতি পায়। তখন থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দিবসটি পালন করা হচ্ছে। ১৯৯৩ সালে জাতিসংঘে নারীর প্রতি সহিংসতা বিলোপ-সংক্রান্ত ঘোষণায় বলা হয়েছে, এমন কোনও কাজ যা নারীর দৈহিক, যৌন কিংবা মানসিক ক্ষতির কারণ হয় কিংবা সামাজিক ও ব্যক্তিজীবনে নারীর স্বাধীনতাকে জোরপূর্বক হরণ করে, তাকেই নারীর প্রতি সহিংসতা বলা যায়। এর পর ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ২৫ নভেম্বরকে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। জাতিসংঘের ঘোষণা অনুযায়ী সারা বিশ্বে ২৫ নভেম্বর আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন বিলোপ দিবস থেকে ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস পর্যন্ত পালিত হবে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ। বিশ্ব জুড়ে নারী নির্যাতন প্রতিরোধের ব্যাপারে সচেতন করতে ১৯৯৭ সাল থেকে প্রতি বছর একটি নির্দিষ্ট প্রতিপাদ্য বিষয় নিয়ে বাংলাদেশে এই দিবসটি পালন করে আসছে বাংলাদেশের নারী ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো। নারীপক্ষের এবারের প্রতিপাদ্য “বাল্যবিয়ে রোধ কর, নারী নির্যাতন বন্ধ কর।”
এত আয়োজন ও প্রতিবাদের পরেও বিশ্বের সতকরা ৫ জনের একজন নারী শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের শিকার। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার গত ২১ নভেম্বর প্রকাশিত রিপোর্ট থেকে জানা যায়, বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ নারী পারিবারিক নির্যা্তনের শিকার। বেশ কয়েকটি গবেষণার ফলাফল থেকে গত শুক্রবার এ্ই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। গবেষণায় আরো বলা হয় বিশ্বের মোট নারীর ৭ শতাংশ জীবনের কোন না কোন সময়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের তথ্য অনুযায়ী, দেশে জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ধর্ষণের শিকার হন ৫৪৪ জন। এর মধ্যে গণধর্ষণের শিকার ১৫০ জন। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয় ৭৮ জনকে। ৯৩ জনকে ধর্ষণের চেষ্টা চালানো হয়। বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১০ সাল থেকে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত পাঁচ বছরে তিন হাজার ৯২ জন ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। বাংলাদেশে ১৯৯২-২০০৮ সময়ে সম্পাদিত গবেষণা ও জরিপে দেখা যায় যে, শতকরা ৪২-৭০ ভাগ ক্ষেত্রে নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘঠেছে। শিশু কিশোরী এবং ১৯-৪৯ বছর বয়সী নারীদের মধ্যে বেশী নির্যাতনের ঘটনা ঘটে থাকে। জাতীয় পর্যায়ের ২৪টি দৈনিক প্রত্রিকায় প্রকাশিত নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনার পরিসংখ্যান নিম্নরূপঃ
(সূত্রঃ নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রাম।)
পরিবার থেকে রাষ্ট্র অবধি কোথাও নারীরা নিরাপদ নয়। ঘরে, ঘরের বাইরে, রাসত্মাঘাটে, যানবাহনে, কর্মক্ষেত্রে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সর্বত্রই নারী নিরাপত্তাহীন। নিরাপত্তা বিধানে দায়িত্বরত পুলিশবাহিনী দ্বারাও সহিংসতার শিকার হচ্ছে নারী। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর একটি জরিপ এবং সুশীল সমাজের মতামত অনুযায়ী দেখা যায়, শতকরা ৬০ ভাগ নারী তার জীবনে কোনো এক সময়ে সহিংসতার শিকার হয়েছে। কখনো গোপনে, কখনো প্রকাশ্যে কিংবা অর্থনৈতিকসহ নানাভাবে নারীদের নির্যাতনের শিকার হতে হয়। বাংলাদেশ পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী ২০০১সালের জানুয়ারি থেকে ২০১২ সালের জুন পর্যন্ত নারী নির্যাতনের চিত্র নিম্নরূপঃ
যদি এভাবে সহিংসতার শিকার হতে হয়, যদি নারীর প্রতি সহিংসতার কারণে প্রাথমিক স্কুল থেকে ১৮ শতাংশ শিশু ঝরে যায়, তবে তা ভবিষ্যতের জন্য নেতিবাচক ফল বয়ে আনবে। নারী নিজে বা তার পরিবার সহিংসতার কথা সহজে প্রকাশ করতে চায় না, প্রকাশ করলে বা বিচার চাইলে তাদেরকেই নানাভাবে হয়রানির শিকার হতে হয় এবং নানা প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয়। তারা নিজ পরিবার, সমাজ ও প্রশাসন থেকে প্রয়োজনীয় সহমর্মিতা, সমর্থন, সহযোগিতা পায় না। এই বাস্তবতাকে মোকাবিলা করতে হলে পরিবার ও সমাজের প্রতিটি ব্যক্তিকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হবে, প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। প্রতিটি অপরাধের বিচার ও দোষীর শাস্তির নিশ্চয়তা বিধানে রাষ্ট্র যাতে কার্যকর ভূমিকা রাখে সে বিষয়েও প্রত্যেককে স্বোচ্চার হতে হবে। এসব সমস্যা সমাধানে সামাজিক আন্দোলন তথা সবার সচেতনতা সবচেয়ে বেশি জরুরি। এর সঙ্গে নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ করতে সরকারকে কার্যকরী পদক্ষেপ সহ বিদ্যমান আইনের সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
ইংরেজীতে একটি প্রবাদ রয়েছে – “ Prevention is better than Cure” প্রবাদটি একেবারেই মিথ্যে নয়। প্রতিকারের আগে প্রতিরোধ করা উত্তম। তাই আসুন, আমরা সহমর্মী ও সমব্যথি হয়ে সহিংসতার শিকার নারীর পাশে দাঁড়াই, নারীর উপর সহিংসতার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলি, সহিংসতার ঘটনা লুকিয়ে না রেখে দোষীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে এবং বিচার পেতে সহিংসতার শিকার নারীকে সহযোগিতা করি। নারী-পুরুষ সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পারলে তবেই তা হবে সত্যিকারের অর্জন। আর এ ক্ষেত্রে নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধের কোনো বিকল্প নেই।
ভারতপন্থি রাজনীতি করে সামনের দিনগুলিতে সুবিধা করা যাবে না
আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে অন্যতম অভিযোগ ছিল যে তারা ভারতকে বাংলাদেশের উপর আধিপত্য করতে দিয়েছিল এবং তার বিনিময়ে তারা ক্ষমতায় ছিল। ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা 'র' এর কথায় এই দেশের গোয়েন্দা, প্রশাসন... ...বাকিটুকু পড়ুন
হাতিম আল তাই-এর এলাকা দেখতে যাচ্ছি
..
...
.....
হাতিম তাই-এর কথা মনে আছে? উদারতার প্রতীক হাতিমের শহর হাইল আছি এখন। আমি যেখানে আছি সেখানে থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরেই তুওয়ারিন এলাকা। সেখানেই হাতিম আল তাই-এর কবর আছে, সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। জয়ের যত গাড়ি
জয়ের মালিকানাধীন ৮ বিলাসবহুল গাড়ির তালিকা । যার মধ্যে রয়েছে ম্যাকলারেন ৭২০এস (মূল্য ২ লাখ ৫০ হাজার ৫৭৮ ডলার), মার্সিডিজ বেঞ্জ এএমজি জিটি (মূল্য ১ লাখ ৯ হাজার... ...বাকিটুকু পড়ুন
প্রস্তুত আছেনতো?
♦أَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشِّيْطَانِ الرَّجِيْمِ (বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহ্'র নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি)
♦بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ (পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহ্'র নামে)
♦ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ (আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক)
(ছবি নেট হতে)
মিডিয়া... ...বাকিটুকু পড়ুন
ভারত বা ইউরোপীয়ান পন্হী রাজনীতি নয়, ইসলামী পন্হীরা জয়ী হবে।
আমি ১ জন ব্লগারকে "জ্বীন ব্লগার" হিসেবে জানি; তিনি রাজনৈতিক পোষ্টও লেখেন; উনি আরবে চাকুরী করেন! গতকাল, উনার রাজনৈতিক পোষ্ট বের হয়েছে, সেটার সারমর্ম হলো: শেখ হাসিনা... ...বাকিটুকু পড়ুন