somewhere in... blog

মুক্তিযোদ্ধার কোটার বিরোধিতার নামে মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান!!!

১১ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৩:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি মুক্তিযোদ্ধার কোটার অন্যতম ঘোর বিরোধী। এই বিষয়ে লিখেছিলাম-

"মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেই আমার জানামতে একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা আলি রাজা খান টুকুকে জিজ্ঞাস করছিলাম আপনি রাষ্ট্র থেকে কোন সুযোগ সুবিধা নেন না কেন? উত্তর না দিয়ে তার পাল্টা প্রশ্ন ছিল আমরা কি যুদ্ধে গিয়েছিলাম পরবর্তীতে দেশ স্বাধীন হলে কিছু সুযোগ সুবিধা পাবো এই আশায়??? রাষ্ট্র থেকে সুযোগ সুবিধা নেয়না এই রকম প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা আমাদের দেশে যেমন আছে তেমনি রাষ্ট্র থেকে সব ধরণের সুবিধা নেয়া সার্টিফিকেটধারী ভুয়া মুক্তিযোদ্ধারও অভাব নেই আমাদের দেশে।

আওয়ামী সরকার আসলেই তথাকথিত মুক্তিযোদ্ধাদের এবং তার পরিবারদের একটু বিশেষ নজরে দেখা হয় বলেই অনেকে অভিযোগ করেন। আর এই অভিযোগ কে সত্য প্রমান করে বর্তমান সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি এতোই সম্মান দেখিয়েছে যে, মুক্তিযোদ্ধাদের নাতীদের পর্যন্ত বিশেষ সুবিধা এবং কোটার ব্যাবস্থা করেছে। সৎ মানুষের ছেলে যেমন ডাকাত হতে পারে তেমনি মুক্তিযোদ্ধার ছেলেও রাজাকার হতে পারে এক্ষেত্রে অবাক হবার কিছু নেই, তারপর তো মুক্তিযোদ্ধার নাতী কথা আসে যা আরও হাস্যকর। একসময় প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা থেকেও বর্তমানে রাজাকারি মন মানুষিকতার অনেক মুক্তিযোদ্ধার উদাহরণও আমরা দিতে পারি। তাই এককালে মুক্তিযুদ্ধ করেছে বলেই তার ১৪ পুরুষ ধরে পারিবারিক ভাবে তাকে সুবিধা দিতে হবে এধরণের দাবী অযৌক্তিক।

মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি প্রশ্ন রয়েই যায়, আপনারা কি আপনাদের বা আপনাদের পরিবারের সুবিধার জন্য মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন? আপনার নাতীর বা সন্তানের যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও শুধু আপনার নাম ভাঙ্গিয়ে যোগ্যতম স্থানে অধিষ্ঠিত হওয়া কি আপনার জন্য লজ্জার নয়? আর আপনার নাতী বা সন্তানের প্রতি প্রশ্ন আপনার দাদা মুক্তিযুদ্ধ করেছে তাতে আপনার অবদান কি? আপনি এখন পর্যন্ত দেশের জন্য কি করেছেন? সরকারী সার্ভিসে সৎ ও যোগ্য মেধাবীরা গেলে দেশের উন্নতি হবে। আপনি নিজেকে সৎ ও যোগ্য মেধাবী প্রমান করে তারপর দেশের সেবা করেন। শুধু জন্মগত ভাবে রাষ্ট্রীয় একটা বিশেষ সুবিধা লাভ করে আপনি যেখানে যাচ্ছেন সেখানে আপনার থেকে হাজার গুণে যোগ্যরা যেতে পারছে না এটা কি আপনার কাছে অনৈতিক মনে হয় না???

রাষ্ট্রীয় কাজে যোগ্যরা স্থান পেলে দেশের উন্নতি হবে। তাই যোগ্যদের বঞ্চিত করে অযোগ্য দের স্থান দেয়া কতোটা উচিৎ তা রাষ্ট্রের পুনঃবিবেচনা করতে হবে। তারপরও প্রকৃত যারা পিছিয়ে আছে যেমন উপজাতি বা এই রকম কিছু জনগোষ্ঠীকে সুবিধা দেবার মানবিক দিককে অস্বীকার করা না গেলেও মুক্তিযোদ্ধার নাতীকে সুবিধা দেবার মতো বালখিল্যতা কে কোন ভাবেই প্রশ্রয় দেয়া যায় না। আসুন এর প্রতীবাদ করি।"

লেখাটি পাবেন এখানে

কিন্তু পরবর্তীতে যা শুনলাম তা চিন্তারও বাহিরে। কোটা পদ্ধতি বাতিলের দাবীতে একদল মুক্তিযোদ্ধাদের গালাগালি সহ মানুষদের বিভিন্ন ভাবেই হেনস্থা করেছে। শাহবাগের প্রজন্ম চত্বর এর নাম নাকি রেখেছে মেধা চত্বর। এই বিষয়ে ফারজানা আহমেদ লতার স্ট্যাটাস টা হুবাহু কপি করছি আমি,

"গিয়েছিলাম পিজি তে। ডাক্তার দেখিয়ে রাস্তায় একটা কিছুই পাই না। রিকশা সি এন জি কিচ্ছু না। এত জ্যাম যে সুস্থ মানুষ অসুস্থ হয়ে যাবে। কারন শাহবাগে মুক্তিযুদ্ধ কোটা বিরোধী আন্দোলনে নেমেছে মেধাবী বিসি এস পরীক্ষার্থীরা। তাঁরা প্রকৃত মেধার মূল্যায়ন চায়। তা চাক, আমার আপত্তি নাই। আমার বাবাও সারটিফিকেট নেন্নি যুদ্ধ করার জন্য। তার কথাই হল, যুদ্ধ করেছি কি সার্টিফিকেটের জন্যে? তার সনদ টা থাকলে হয়ত আজকে আমি ল ইংলিশের মত টপ ক্লাস বিষয়ে পড়তাম ঢাকা ভার্সিটিতে। আমার টায়ার্ড লাগছিল বলে আমি অনেকখন পাব্লিক লাইব্রেরীর সিঁড়িতে বসেও থাকলাম, আম্মুকে ফোন দিয়ে কথা বলছিলাম। আবার উঠলাম এবং রিকশা নিতে গেলাম। তাদেরকে অনুরোধ করায় তাঁরা বলল রিকশা বা গাড়ি নিলে তাঁরা নাকি ভাংচুর করবে। মেধার মুল্যায়ন চায় আবার ভাংচুর করতে চায় এটা কেমন কথা এই কথা বলার কারনে তাঁরা আমাকে অত্যন্ত মেধা দেখিয়ে বলল খাঁ*** মাগী ায় তরে চু**।
আমি প্রতিবাদ করলে তাঁরা আরও মেধা খরচ করে বলে মুক্তিযোদ্ধাগো লগে লগে আমারেও নাকি চ**।
আমি কিছু বলার আগেই তাঁরা আমাকে ধাক্কা দিয়ে রাস্তায় ফেলে দেয়, আমি হাত দিয়ে ঠেকাতে গেলে আমার বা হাতের কনিষ্ঠা আঙ্গুল টা ঊল্টে যায়, আমার হাতে এখন ব্যান্ডেজ। তাঁরা তখন শ্লোগানে মুক্তিযোদ্ধাদের গালে তালে তালে জুতাও মারছিল। এই যদি হয় মেধা তবে বিসিএস দেইনি বলে আমি গর্বিত। মেধার নাম যদি হয় মুক্তিযোদ্ধাদের গালে জুতা মারা, একটা মানুষ (মেয়ে বললে সুবিধা নেয়া হবে) কে লাত্থি মারা রাস্তায় ফেলে, হাত ভেঙ্গে দেয়া। তবে এ দেশে আবার বৃটিশ রা আসুক, পর্তুগীজরা আসুক, পাকিস্তানি রা আসুক। সভ্য হতে এদের অনেক বাকি। স্যরি বাবা, তুমি ঠিক করোনি এই দেশের জন্যে লড়ে। ফিরিয়ে নাও তোমার যুদ্ধ, ফিরিয়ে নাও তোমার স্বাধীনতা। প্লীজ! মানসিক ভাবে এতখানি বিপর্যস্ত আগে কোনদিন হইনি।"

বিস্তারিত এখানে

আমি মুক্তিযোদ্ধার কোটার বিরোধিতা করি তাই বলে মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করতে পারবো না।
৪৫৬ বার পঠিত
১৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দৃষ্টি আকর্ষণঃ সৌহার্দ্যপূর্ণ ব্লগ কমিউনিটি গঠনের আহ্বান।

লিখেছেন সামহোয়্যারইন ব্লগ টিম, ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:২৫

সম্মানিত ব্লগারগণ,

আপনাদের সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা। সামহোয়্যারইন ব্লগ টিমের পক্ষ থেকে আমরা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই, যা আমাদের এই কমিউনিটির পরিবেশকে আরও সুন্দর, সমৃদ্ধ এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযুদ্ধ’ তাহলে আওয়ামী লীগের নিজস্ব সম্পত্তি আবারো প্রমাণ হলো!

লিখেছেন এ আর ১৫, ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৪ ভোর ৫:৪১

মুক্তিযুদ্ধ’ তাহলে আওয়ামী লীগের নিজস্ব সম্পত্তি আবারো প্রমাণ হলো!
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আওয়ামী লীগ ব্যবসা করেছে মিথ্যা নয়। ডান/বামদের দাবী মুক্তিযুদ্ধের ‘আওয়ামী ন্যারিটিভ’ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধকে আওয়ামী লীগের দলীয় ইতিহাস বানিয়ে ফেলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিরাট ব্যাপার-স্যাপার | রম্য =p~

লিখেছেন জটিল ভাই, ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

♦أَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشِّيْطَانِ الرَّجِيْمِ (বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহ্'র নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি)
♦بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ (পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহ্'র নামে)
♦ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ (আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক)


(ছবি নিজের মোবাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাই সরাসরি দুইস্তর বিশিস্ট প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন: নতুন বাংলাদেশের অঙ্গীকার

লিখেছেন বিদ্রোহী ভৃগু, ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৪

ভূমিকাঃ

ছাত্র-জনতার সফল জুলাই বিপ্লবের পর আজ বাংলাদেশ গণতন্ত্র, মৌলিক মানবাধিকার, আইনের শাসন ও প্রকৃত উন্নয়নের এক নতুন পথে যাত্র শুরু করেছে। নোবেল লরিয়েট ড। ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তবর্তীকালীন সরকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

সুপার সানডে : সংঘর্ষ ও নৈরাজ্যের পথে বাংলাদেশ!

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৪৭


আজকের দিনটি বাংলাদেশের সচেতন মানুষের দীর্ঘদিন মনে থাকবে। এত সংঘর্ষ ও মারামারি অনেকদিন পর ঢাকাবাসী প্রত্যক্ষ করলো। দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে মানুষ আগে থেকেই উদ্বিগ্ন তার উপর বিভিন্ন অবরোধ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×