somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিবর্তনবাদঃ বিষয় চিত্রকলা

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৫:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সেই প্রস্তরযুগ থেকে শুরু করে আজকের ডিজিটালযুগ পর্যন্ত মানুষের জীবনাচরন, দৈনন্দিন অভ্যাসের অনেক বিবর্তন ঘটেছে। আমার এই লেখার বিষয় চিত্রকলা যা কিনা মানুষের হদয়ের ভেতরের এক আজব গোপন কুঠুরী - সৃষ্টিশীলতার ভেতর থেকে বের হয়ে আসে। হাজার লক্ষ্ বছর পাড়ি দিলেও, আমার মনে হয় এই একটা জায়গাতে মানুষ এখনো আদি অকৃত্রিম রয়ে গেছে। অভিজ্ঞতা, জ্ঞান-বিজ্ঞান, টেকনিকের জন্য তাদের কাজের ধারায় পরিবর্তন এসেছে। কিন্তু মূল অনুভূতির জায়গাটার খুব একটা পরিবর্তন ঘটেনি।
বর্ননার সুবিধার্তে এই সুবিশাল সময়টাকে কয়েক ভাগে ভাগ করা যায়।

১)আদি প্রস্তরযুগ থেকে মধ্যযুগ
২)মধ্যযুগ থেকে রেঁনেসার প্রারম্ভ
৩)রেঁনেসা
৪)ইম্প্রেশেনিজম
৫)আধুনিক আর্ট
৬)ডিজিটাল আর্ট

১) আদি প্রস্তরযুগ থেকে মধ্যযুগঃ আদি প্রস্তরযুগের শুরুটা আনুমানিক ত্রিশ হাজার বছর আগে শুরু বলে ধরা হয়। মানবসভ্যতার ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাচীন শিল্পকর্মটি খুঁজে পাওয়া যায় পশ্চিম ইউরোপের এক গুহার গায়ে।

১৫,000 – ১0,000 BC
সে সময়ে খাদ্যের খোঁজে অনবরত ভাম্যমান মানুষের মনে শিকার ছাড়া আর কিই বা স্হান করে নিতে পারে? কী জীবন্ত এই ছবি!
খ্রীস্টপূর্ব দুই-তিন হাজার বছর আগে ইজিপ্ট, মেসোপটেমিয়া (আজকের ইরাক), চায়না আর ভারতীয় উপমহাদেশে মানব সভ্যতা গড়ে উঠেছিল।


খ্রীস্টপূর্ব ৩৫00-২৬৮৬ B.C (ইজিপ্ট)


ব্যাবিলন আর্ট - খ্রীস্টপূর্ব ১৯00-১৬00 B.C.


খ্রীস্টপূর্ব ৪000 B.C.-১৮00 B.C. (হরপ্পা সভ্যতার নিদর্শন)


খ্রীস্টপূর্ব ১৭৬৬ B.C.-১০৪৫ B.C (চায়নার শাং বংশের নিদর্শন)

আজ পর্যন্ত পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষভাবে গ্রীক সংস্কৃতির প্রভাব বিশেষ করে স্থাপত্য এবং ভাস্কর্যের ক্ষেত্রে ইউরোপসহ সারাবিশ্বের উপর ছড়িয়ে আছে। উত্তর ইটালীতে ইটরাসক্যান সভ্যতার সময়ে ধর্ম ভিত্তিক মানুষের বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গির চিত্রকলার ব্যাপক প্রসার ঘটে। রোমানরা পোট্রেটের ব্যাপারে সবসময়ই বেশ আগ্রহী ছিল। পরবর্তীতে গ্রীক এবং ইটরাসক্যান সংস্কৃতির প্রভাবে পূর্ণাঙ্গ মানুষের ভাস্কর্যের দিকে তাদের চিত্রকলা ঘুরে দাড়ায়।
মধ্য আমেরিকায় মায়ান সভ্যতার সংস্কৃতির সাথে ইজিÌেটর ফারাওদের এক অদ্ভূত সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায় যদিও সময় (প্রায় আড়াই হাজার বছর) এবং ভৌগলিক অবস্থানের বিচারে তাদের মাঝে দূরত্ব বহুদূর।


খ্রীস্টপূর্ব ৯০০-৭০০ ( গ্রীক জ্যামেতিক আর্ট)


খ্রীস্টপূর্ব ৯০০-২০০ ( ইট্রাস্ক্যান আর্ট)


খ্রীস্টপূর্ব ৫১০-২৩৫ খ্রীস্টাব্দ (রোমান আর্ট)


খ্রীস্টপূর্ব ৩০০-৮০০ খ্রীস্টাব্দ (মায়ান আর্ট)

২)মধ্যযুগ থেকে রেঁনেসার প্রারম্ভ
এ সময়টাতে ইউরোপের স্থাপত্য আর চিত্রকলায় ধর্ম সরাসরি জড়িয়ে পরে। শুরুটা বাইজেন্টাইন আর্ট দিয়ে যার ধারাবাহিকতায় ফ্রান্সে গোথিক আর্টের উৎপত্তি। এটা পরে সারা পশ্চিম ইউরোপে ছড়িয়ে পরে। এখানে গীর্জার গায়ে স্থাপত্যকর্মে বাইবেলের কাহিনী বর্ননা করা হয়। ভারতেও এসময় দেবদেবীদের কেন্দ্র করে তাদের শিল্পকর্ম গড়ে উঠে। একমাত্র ব্যতিক্রম মধ্য এশিয়ায়। এখানে ইসলাম মতাদর্শের আদর্শে নকশাকে কেন্দ্র করে শিল্পকলার প্রসার ঘটে।


বাইজেন্টাইন আর্ট ১৪তম - ১৬তম শতাব্দী


গোথিক আর্ট ১১তম - ১৬তম শতাব্দী


ইন্ডিয়ান আর্ট ৯তম - ১৫তম শতাব্দী


ইসলামিক আর্ট ৭তম - ১৫তম শতাব্দী

৩)রেঁনেসা
১৩তম থেকে ১৫তম শতাব্দী পর্যন্ত ইতালী থেকে সূচনা হয়ে পরবরতীতে সারা পশ্চিম ইউরোপে রেঁনেসার জাগরন ঘটতে থাকে। এ সময়টাতে আর্টিস্টরা তাদের চারপাশের দৃশ্যমান পৃথিবীকে তুলে ধরার জন্য সৃষ্টিশীলতা আর সূক্ষ্মতার সমন্বয়ে এক নতুন ধারা নিয়ে আসে। লিউনার্দো দ্যা ভিঞ্চিকে এর পুরোধা বলা যায়।

ভিঞ্চির বিখ্যাত মোনালিসা ছবিটি

৪)ইম্প্রেশেনিজম
১৯শতকে প্যারিসের একদল দলছুট আর্টিস্ট অয়েল পেন্টিঙ্গএ এক নতুন মাত্রা যোগ করে। তারা আলো আর রঙ্গের ব্যবহারে সচরাচর সাধারন দৃষ্টি থেকে প্রকৃতিকে ভিন্ন মাত্রিকতায় তুলে ধরে।


ক্লডো মানের ইম্প্রেশন, সানরাইজ

ভান গগের স্টারি নাইট

৫)আধুনিক আর্টঃ
পিকাসো আর সালভাদর দালী বিংশ শতাব্দির দুই বিখ্যাত শিল্পী।


পিকাসোর ক্রন্দনত মহিলা

সালভাদর দালীর ছবি

৬)ডিজিটাল ছবিঃ
বর্তমানে মানুষের সৃষ্টিশীলতা আর কম্পিউটার প্রযুক্তি মিলিয়ে নতুন ধারা ডিজিটাল আর্টের বিপ্লব চলছে।



সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ৮:৫৯
৪৫৬ বার পঠিত
২৯টি মন্তব্য ১৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গাজী মুক্ত সামু!!

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২২ শে নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২







মনপুরা মুভিতে একটা ডায়ালগ ছিলো যে, গাজী বেটারে তুমি চিনো না, বেশি ফাল পাইরো না। এদিকে ব্লগের গাজীকে সবাই চিনে, যারা লাফালাফি করে তারা ব্যবস্থা নেয়,গাজী কিছু করতে পারে না,ব্যান... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মবিদ্বেষের উদ্দেশ্য-বিধেয়

লিখেছেন জটিল ভাই, ২২ শে নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬

♦أَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشِّيْطَانِ الرَّجِيْمِ (বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহ্'র নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি)
♦بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ (পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহ্'র নামে)
♦ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ (আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক)


(ছবি নেট হতে)

গত... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসুন সবাই মিষ্টিমুখ করুন

লিখেছেন মেঠোপথ২৩, ২২ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:০৪



কোণ খুশিতে যদি কেউ জিজ্ঞাষা করেন, তবে বলব আপনি আপনার মত করে ভেবে নিয়ে খান। তবে কোন মিষ্টিটা খাইলেন , তা জানাতে ভুইলেন না কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদ গাজীর ব্যান তুলে নিন/ ব্লগ কর্তৃপক্ষ ‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ২৩ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩




আমি যদি গাজী’ ভাইয়ের যায়গায় হতাম জিবনেও সামু’তে লেখার জন্য ফিরে আসতাম না।
হয় বিকল্প কোন প্লাটফর্ম করে নিতাম নিজের জন্য। অথবা বাঁশের কেল্লার মত কোথাও লিখতাম।
নিচে ব্লগার মিররডডল-এর করা পুরো... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টারের মতো প্রতিষ্ঠানের উচিত তাদের অবস্থান পুনর্মূল্যায়ন করা এবং বাংলাদেশকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া।

লিখেছেন জ্যাকেল , ২৩ শে নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৫

বাংলাদেশে গণমাধ্যমের ভূমিকা বরাবরই সংবেদনশীল এবং গুরুত্বপূর্ণ। একটি গণতান্ত্রিক সমাজে গণমাধ্যমের কাজ হলো সত্য প্রকাশ, জনমতের প্রতিনিধিত্ব এবং গণতন্ত্রকে সুরক্ষা দেওয়া। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন মহলে অভিযোগ উঠেছে যে, বাংলাদেশের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×