বাণিজ্যিকীকরণের যুগে বিলবোর্ড, প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন নি:সন্দেহে গুরুত্বপূর্ন প্রচারযন্ত্র। এগুলো দিনের পর দিন নিরবে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থেকে পণ্যের গুনগান করতে থাকে। পরিকল্পিতভাবে হলে, অনেকক্ষেত্রে এগুলো নগরীর শোভাও বাড়িয়ে তোলে।
কিন্তু আমাদের দেশে সবকিছুই (নৈতিকতা থেকে জীবন) যেখানে পন্য, সবই যেখানে অর্থের বিনিময়ে পাওয়া যায় ...বিজ্ঞাপনের প্রয়োজন সে দেশেই বেশী হবে। আর তাই পথেঘাটে, রাস্তার আইল্যান্ডে, ফুটপাথে, ভবনের ছাদে, দেয়ালে, সীমানা প্রাচীরে, বাসে, ট্রাকে, রিকশাতে, গাছে, বিদ্যুতের খুঁটিতে, ধানের ক্ষেতে, ব্রিজে, ওভারপাসে, ফ্লাইওভারে, ওভারব্রিজে, হাইওয়ের ঝুঁকিপূর্ণ মোড়ে, নগরীর শোভাবর্ধক ভাষ্কর্য সবজায়গায় উঁকি দিচ্ছে প্রকট বিকট বিজ্ঞাপন।
আসুন, দেখি কিছু নমুনা...
পৃথিবীর সবদেশেই বিলবোর্ড, প্ল্যাকার্ড বা ফেস্টুনের প্রচলন আছে। কিন্তু সেগুলো এমনভাবে স্থাপন করা হয় যাতে তা সাধারণ দৃষ্টিসীমার বাইরে থাকে এবং কোনভাবেই তা রোড সাইন বা সিগনাল বা পথ নির্দেশনাকে ঢেকে না ফেলে।আর তাই, নিজের দেশে নিজের বাসা খুঁজে পেতে সমস্যা হলেও আপনি বিদেশে গিয়ে কখনই পথ হারাবেন না
(উপরের চারটি ছবি সংগৃহীত)
এইসব অযাচিত বিজ্ঞাপন বা নির্বাচনী প্রচারণামূলক ব্যানার-ফেস্টুনগুলো আপনার অজান্তে আপনার ব্রেনের ভিতর তথ্য প্রবেশ করাতে থাকে। আপনি হয়তো সরাসরি তাকাচ্ছেন না কিন্তু দৃষ্টিসীমায় থাকায় তা অবচেতনভাবে চলে যাচ্ছে আপনার মষ্তিষ্কে। আপনার ব্রেনসেল গুলো ব্যাস্ত হয়ে পড়ছে পণ্যেযের তুলনা করতে কিংবা মডেলের নাম খুঁজতে কিংবা কাকে সামনে ভোট দেবেন সেই হিসাব করতে...আর এ সবই হচ্ছে আপনার অজান্তে আর অহেতুক কাজ করতে করতে আপনার ব্রেন এবং সংগে সংগে আপনিও একসময় ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন
আসুন, দেখি আরও কিছু নমুনা...
আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি পরিচ্ছন্ন বৃক্ষশোভিত পথে ২ দুই কিমি হেঁটে আপনি যতখানি ক্লান্ত হবেন, তারচেয়ে অনেক বেশী অবসন্ন বোধ করবেন মৌচাক-মগবাজার হেঁটে আসতে।
আসুন এবার বাইরের কিছু দৃশ্য দেখি...
(উপরের দুটি ছবি সংগৃহীত)
এসব করতে উন্নত বা ধনী দেশ হবার দরকার নেই। প্রয়োজন শুধু রাজনৈতিক সদিচ্ছা। বরং পরিকল্পনামাফিক করলে যেমন এর সংখ্যাও কমে আসবে, তেমনি বন্ধ হবে পণ্য বিক্রয়ের প্রকটতাও। আর তখন আপনার-আমার সবার জানালা দিয়ে বাইরে তাকালে আকাশই দেখা যাবে, এ কথা নিশ্চত করে বলা যায়
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১১:৩৫