একটা সাময়িকিতে সামাজিক ব্লগিং নিয়ে একটা লেখা দেবার জন্য রেডি করলাম। সেখানে দেবার আগেই সামুতে দিলাম । এখান থেকে নতুন ব্লগাররা কিছু জানতে পারবে এবং বস ব্লগারদের কাছে কিছু পরামর্শ এবং সংশোধন আহবান করছি। প্লিজ একটু হেল্প করবেন।
প্রাককথা
প্রযুক্তি উন্নয়নের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে চলছে আজকের সমগ্র বিশ্ব। এগিয়ে যাচ্ছে বিশ্বেও মানব সকল। দিন যতই গত হচ্ছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সংস্পর্শ মানুষের কাছে সহজ থেকে সহজতর হচ্ছে। এই প্রযুক্তিগত উন্নয়নের অন্যতম নির্ধারক হিবেবে কাজ করছে ইন্টারনেট সেবা। দিন গত হবার সাথে সাথে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ব্যাপক পরিমানে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরই সাথে পরিবর্তন হচ্ছে মানুষের ধ্যান-ধারণা, আলোচনা-সমালোচনা, লেখালেখি, মতামত, মুক্তচিন্তা শেয়ারিংয়ের কৌশল। মানুষ আজকে Hard থেকে Soft এর দিকে ধাবিত হচ্ছে। এক সময় ছিল যখন কেউ লাইব্রেরী গঠন করতে চাইলে তার প্রয়োজন হতো বিশাল একটা রুমের, সেলফের এবং বিভিন্ন ধরনের বইয়ের যার বিস্তৃতি হত মোটামুটি অনেক বড় আকারের, কিন্তু আজকে ক্ষুদ্র একটা যন্ত্র কম্পিউটারের মধ্যেই গড়ে তোলা সম্ভব বিশাল আকারের ডিজিটাল লাইব্রেরী যা হয়তো হতে পারে একটি বড় আকারের লাইব্রেরী এর চেয়েও শতগুন বড়। একসময় ছিল যখন একটা সংবাদ এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পৌঁছাতে লাগতো কয়েকদিন, আজকে তা কয়েক সেকেন্ডেই সম্ভব।
এভাবেই পত্রিকায় একটা লেখা পাঠিয়ে তা প্রকাশ করে পাঠকের কাছে পৌছাতে লাগবে বেশ কয়েকদিন বা বেশ কিছুটা সময়। কিন্তু বর্তমান সময়ে আপনি আপনার চিন্তা, বক্তব্য, মতামত বা সমালোচনা দুই এক সেকেন্ডের মধ্যেই পাঠিয়ে দিতে পারেন পাঠকদের কাছে। হ্যাঁ ব্লগিংয়ের কথাই বলছি। এই কাজটিই সম্ভব ব্লগের মাধ্যমে।
ব্লগ কি?
আমরা কম বেশি সবাই ব্লগ বা ওয়েব ব্লগ শব্দটির সাথে পরিচিত। যারা ভাবছেন “ব্লগ” এটা আবার কি? তাদের জন্য ব্লগ হচ্ছে বিশেষ ধরনের ওয়েব সাইট্, অনেকে একে ব্যাক্তিগত ডায়রীও বলে থাকে। তবে সময়ের সাথে ব্লগিং এর ধারাতে অনেক পরিবর্তন এসেছে। এখন ব্যাক্তিগত ডায়রীর পরিবর্তে ব্লগ একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ওয়েব সাইট থেকে ব্লগের মূল পার্থক্য হল ওয়েব সাইট আপডেট করা হয় অনিয়মিত ভাবে অপরদিকে ব্লগ আপডেট করা হয় নিয়মিত ভাবে। এমনকি কিছু কিছু ব্লগ প্রতি মিনিটে আপডেট করা হয়।
ইন্টারনেট জগতে “ব্লগ” এর বয়স দশ পার হয়েছে। Blog শব্দটির আবির্ভাব Weblog থেকে। Weblog শব্দটিসর্বপ্রথম ব্যবহার করা হয় দশ বছর আগে ১৯৯৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর। শব্দটির স্রষ্ট্রা মার্কিন নাগরিক জন বার্জার। এর ঠিক দু’বছর পর ১৯৯৯ সালের এপ্রিল এবং মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে পিটার মহোলজ নামে একব্যাক্তি Weblog শব্দটিকে ভেঙ্গে দুই ভাগ করেন- We Blog এর পরই সারা বিশ্বব্যাপী ব্লগ জনপ্রিয় হতে শুরু করে। তবে মাঝামাঝি সময়ে আরেকটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটে। তা হল অনলাইনে দিনলিপি লেখার সুবিধা নিয়ে যাত্রা শুরু করে ‘ওপেন ডায়েরি’ যা ছিল অনেকটা এখনকার ব্লগের মতোই। যারা ব্লগে পোস্ট দেয় তাদেরকে ব্লগার বলা হয়। ইংরেজী Blog শব্দের অর্থে Oxford Dictionary তে বলা হয়েছে- Blog is a personal record that somebody puts on their website giving an account of their activities and opinions and discussing places on the Internet they have visited.
কোন একটি নির্দিষ্ট ওয়েব সাইটে কোন বিষয়কে পাঠকদের মতামত প্রদানের জন্য তুলে ধরাকে ব্লগিং বলে। মত প্রকাশের একটি শক্তিশালী মাধ্যম হিসেবে এই দীর্ঘ দশ বছরে ব্লগ আমাদের জীবন যাত্রায় এনেছে নতুন মাত্রা।
বাংলা ভাষায় ব্লগ
২০০৬ সালের প্রথম মাস থেকে শুর হয় বাংলা ব্লগিং এর ইতিহাস। প্রথমে একটি বাংলা ব্লগিংসাইট তার যাত্র শুরু করার পরপরই আরও একাধিক সাইট অনলাইনে বাংলা ব্লগিং এর সুবিধা নিয়ে উপস্থিত হয়। এখন বেশ কয়েকটি ব্লগিং সাইট বাংলাভাষী অনলাইন ব্যবহারকারীদের কাছে পরিচিত হয়ে উঠেছে। কয়েক বছর পার হবার পরও এদের কেউ কেউ তেমন জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারেনি, কেউ জনপ্রিয় হবার চেষ্টা করছে, আবার কেউবা নতুন শুরু করে জনপ্রিয়তা অর্জনের লড়াইয়ে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রণ করছে। স¤প্রতি বেশ কিছু সামাজিক ব্লগ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। নিচে কয়েকটি প্রসিদ্ধ সামাজিক ব্লগ সাইটের ঠিকানা দেয়া হল
http://www.sachalayatan.com/
http://www.somewhereinblog.net/
http://amarblog.com/
http://www.sonarbangladesh.com/blog/
http:// http://www.techtunes.com.bd/
http://www.prothom-aloblog.com/
http://www.nirmaaan.com/blog/
http:// http://www.biggani.com/
http:// http://www.banglablog.bdnews24.com/
http://www.nishorga.com/
http://www.drishtipat.org/bangla/
http:// http://www.bishorgo.com/
http://www.amarbornomala.com
এগুলোর মধ্যে সামহয়্যারইন ব্লগ সবচেয়ে বেশী জনপ্রিয়। এছাড়া আমার ব্লগ এবং সচলায়তন বেশ জনপ্রিয়। স¤প্রতি সোনারবাংলা ব্লগ নামে নতুন আরো একটি ব্লগ সাইট চালু হয়েছে যার জনপ্রিয়তা সন্তোষজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়াও আন্তর্জাতিক কয়েকটি কোম্পানী ব্লগিং সাইট হিসেবে সারাবিশ্বেই তাদের জনপ্রিয়তা অনেক আগেই অর্জন করেছে। বিভিন্ন ফিচার বা সুবিধা নিয়ে এই ব্লগিং সাইটগুলো বিশ্বে কয়েক মিলিয়নের বেশী ব্লগকে প্রতিদিন সেবা দিয়ে যাচ্ছে।
ব্লগের প্রকারভেদ
কোন ব্লগে কি ধরনের পোস্ট দেওয়া হয় তার উপর ভিত্তি করে ব্লগকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এদের মধ্যে কয়েকটি হল:
১. ব্যাক্তিগত ব্লগ
এখানে ব্যাক্তি কোন একটি বিষয়ের উপর তার মতামত পোষ্ট আকারে তুলে ধরেন এবং পাঠকদের সাথে এর উপর মতামত আদান প্রদান করেন। এই ধরনের ব্লগে সাধারনত কোন ব্যক্তি তার প্রতিদিনের জীবন যাত্রা এবং তার নিজস্ব মতামত প্রকাশ করে। ব্যক্তিগত ব্লগ বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয়। এ ধরণের ব্লগ ব্লগার তার নিজের শখ থেকে করে থাকে। তাদের ব্লগ কেউ পড়ুক বা না পড়–ক এতে তাদের কোন আসে যায় না। নিজের আনন্দ লাভ করা এ ধরণের ব্লগের মূল উদ্দেশ্য।
২. সামাজিক ব্লগ
সামাজিক ব্লগ হল এমন ব্লগ সাইট যেখানে বিভিন্ন ব্যক্তি তাদের মতামত বা মুক্ত চিন্তা তুলে ধরতে পারে। একজন ব্যক্তি একটি পোষ্ট দেবার পর উক্ত ব্লগের অন্যান্য ব্লগাররা তার পোষ্টর উপর মন্তব্য করতে পারে। যেমন- সামহয়্যারইন ব্লগ, আমার ব্লগ ইত্যাদি সামাজিক ব্লগের অন্তর্ভূক্ত।
৩. ব্যবসায়িক ব্লগঃ
কোম্পানী/ প্রতিষ্ঠান তাদের কোন পন্য বা সেবার উপর নতুন নতুন তথ্য প্রদান করেন এবং পাঠক তাদের মতামত প্রদান করতে পারেন। এ ধরনের ব্লগ সাধারণত কোন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান তাদের পন্যের প্রচার বা গ্রাহকদের সাথে যোগাযোগ রক্ষার্থে করে থাকে। যেমন- গুগল ব্লগ, অপেরা ডেস্কটপ টিম ইত্যাদি।
৪. প্রশ্ন ব্লগ
প্রশ্ন ব্লগে ব্লগার প্রশ্নের উত্তর দিয়ে থাকেন। এই প্রশ্ন কোন ফর্ম বা ই-মেইলের মাধম্যে ব্লগাদের কাছে পৌছান হয়। যেমন: ইয়াহু এনসার হল প্রশ্ন ব্লগ।
৫. খবর ব্লগ:
যে সকল ব্লগে বিভিন্ন সা¤প্রতিক খবরের উপর বিশ্লেষন স্থান পায় তাদেরকে খবর ব্লগ বা News Blog বলে।
আরো কয়েক ধরনের ব্লগ বর্তমানে খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে যেমন মাইক্রো ব্লগ, টুইটার এমন একটি ব্লগ। এটি ব্যক্তিগত ব্লগের ভেতরেও পরে। এখানে কোন ব্লগার এখন কি করছেন বা ভাবছেন তা অতি সংক্ষিপ্ত আকারে লিখে থাকেন। যেমন: আমার টুইটার ব্লগ।
পোষ্ট করা ব্লগের ধরন অনুযায়ী ব্লগকে আবার কয়েকভাগে ভাগ করা যায়। এগুলো হল:
১) ফটোলগ: এ ধরনের ব্লগে ব্লগার তাদের ডিজিটাল ক্যামেরা দিয়ে তোলা
বা স্ক্যান করা ছবি আদান প্রদান করে থাকে।
২) ভিলগ: যে ব্লগে ব্লগার ভিডিও শেয়ার করা হয় তাকে ভিলগ বলে।
৩) লিংকলগ: বিভিন্ন ওয়েব সাইটের ঠিকানা দ্বারা গঠিত ব্লগ হল লিংকলগ
ব্লগকে আরো বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়। কিন্তু আমরা সেদিকে যাবো না। এখানে আমরা প্রধানত সামাজিক ব্লগিংয়ের নিয়ম কানুন নিয়ে আলোচনা করব।
ব্লগিং করতে যা যা প্রয়োজন
১.ব্লগিং করতে আপনার অবশ্যই যা প্রয়োজন তা হল আপনার কম্পিউটারে ইন্টারনেট কানেকশন।
২.একটা ইমেইল এ্যাকাউন্ট।
৩.নির্দিষ্ট ব্লগের সাইটে আপনার একটা ব্লগ এ্যাকাউন্ট।
৪.আপনার কম্পিউটারে অভ্র, বিজয় কিংবা যে কোন বাংলা টাইপিং সফটয়্যার ইনস্টল থাকতে হবে।
৫.বাংলায় টাইপিংস্পিড মোটামুটি সন্তোষজনক হতে হবে।
৬.ব্লগ সাইটের কিছু শব্দের সাথে পরিচিত হতে হবে এবং ব্লগের নীতিমালা গুলো জানা থাকতে হবে।
কিভাবে ব্লগিং করবেন
ব্লগিং করতে প্রথমেই আপনাকে নির্দিষ্ট ব্লগ সাইটে একটি ব্লগএ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। একাউন্ট খোলার সময় আপনার ই মেইল আইডি প্রয়োজন হবে। একটি নির্দিষ্ট নামে (বাংলায়) আপনাকে একটি এ্যাকাউন্ট খুলতে হবে যেটা হবে আপনার পরিচয়। ব্লগে আপনাকে সবাই ঐ নামেই চিনবে। এই নামটি পরবর্তীতে পরিবর্তনযোগ্য নয়। এছাড়াও ব্লগ এ্যাকাউন্টে লগইন করার জন্য প্রয়েজন হবে একটা Username এবং Password এর । এমন একটি Username হতে ববে যা ঐ ব্লগ সাইটে আর কারো দ্বারা ব্যবহৃত হচ্ছে না। আপনার ব্লগ এ্যাকাউন্ট সফলভাবে খোলার পর আপনার দেয়া নির্দিষ্ট Username এবং Password দিয়ে লগইন করে আপনার এ্যাকাউন্টে ঢুকতে হবে। লগইন করে ঢোকার পর আপনি নতুন ব্লগ বা নতুন পোষ্ট লিখতে পারবেন এবং তা ব্লগে প্রকাশ করতে পারবেন। স¤প্রতি কিছু ব্লগ সাইটে নতুন ব্লগারদের লেখাকে সরাসবি প্রথম পাতায় প্রকাশ করার অনুমতি দেয়া হয়না। একজন নতুন ব্লগার যদি নিয়মিতভাবে ভালো ও মান সম্মত লেখা পোষ্ট করেন তবে মডারেশন বোর্ড যাচাই বাছাই করে তার লেখাকে প্রথম পাতায় প্রকাশের সুযোগ দিতে পারে। এছাড়াও নতুন ব্লগারদেরকে প্রথমেই অন্য কোন ব্লগারের পোস্টে মন্তব্য করার অনুমতি দেয়া হয়না, প্রথম পাতায় একসেস পাবার পর তাকে মন্তব্য করার অনুমতি দেয়া হয়। এই নিয়মগুলো সাধারনত জনপ্রিয় ব্লগ সাইটের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। যেমন সামহয়্যারইন ব্লগ।
কিন্তু যে সকল ব্লগ সাইট নতুন বা তেমন একটা জনপ্রিয়তা পায়নি সে সাইটগুলোতে একাউন্ট এ্যাকটিভ করা মাত্র উক্ত ব্লগারকে ব্লগের সকল সুবিধা প্রদান করা হয়। যেমন- আমার ব্লগ সোনার বাংলা ব্লগ ইত্যাদি।
ব্লগে কি ধরনের লেখা লিখতে পারেন
সামাজিক ব্লগ গুলো একজন ব্লগারের স্বাধীন মতামত প্রকাশের অন্যতম একটি জায়গা। মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে বলেই যে আপনি যেকোন ধরনের আপত্তিকর লেখা পোস্ট করবন তা কখনই হবেনা। ব্লগে সাধারনত সমসাময়িক বিষয়গুলো নিয়েই বেশি লেখালেখি হয়ে থাকে। এছাড়াও আপনি ব্লগে ধর্ম, রাজনীতি, অর্থনীতি, প্রযুক্তি, সরকারের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণীমূলক লেখা, ছবি পোস্ট, ব্যক্তিগত অনুভুতি টিপস পোস্ট, টেকনোলোজি বিষয়ক সহযোগীতামূলক পোস্ট সহ বিভিন্ন ধরনের লেখা পোষ্ট করতে পারেন। এছাড়াও আপনি যদি কবি সাহিত্যিক লেখক বা কলামিস্ট হন বা হতে চান তবে আপনি আপনার কবিতা, প্রবন্ধ, উপন্যাস, কলাম ইত্যাদি ব্লগে পোস্ট করতে পারেন। সামাজিক ব্লগগুলোতে রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় বিষয়গুলো নিয়ে ব্লগারদের মধ্যে তুমুল আকারে ঝগড়া লক্ষ্য করা যায়। আপনিও আপনার আদর্শের পক্ষে এই ব্লগীয় ঝগড়ায় অংশগ্রহন করতে পারেন তবে সেক্ষেত্রে অবশ্যই ব্লগের নীতিমালার দিকে নজর রাখতে হবে।
কিভাবে লিখবেন সফল ব্লগ
ব্লগিং সার্থকতার অন্যতম প্রধান শর্ত হলো ব্যতিক্রমধর্মী রচনা। নিচের কয়েকটি পদ্ধতি অনুসরন করে আপনার ব্লগ লিখলে আপনার ব্লগটি শুধু জনপ্রিয়তাই পাবে না, এটি পাঠককে আবার আপনার ব্লগে আসতে আগ্রহীও করবে।
(১) ব্লগের মূলভাষ্যঃ
প্রতিটি ব্লগই একটি নির্দিষ্ট শ্রেণীর পাঠককে লক্ষ্য করে লেখা উচিত। আপনার ব্লগের প্রধান পাঠক শ্রেণী চিহ্নিত করুন। কোন কোন পাঠক আপনার ব্লগটি পড়বেন এবং কেন? আপনি আপনার ব্লগের মাধ্যমে কি অর্জন করতে চান শুধু এটাই ভাববেন না। পাঠক আপনার কাছ থেকে কি চায় সেটিও ভাবুন। তারপর সিদ্ধান্ত নিন, কোনটি আপনার জন্য উপযুক্ত এবং তারপর সেটির উপর লিখুন।
(২) দ্বিধাহীন বক্তব্যঃ
আপনার লেখায় মনের ভাব প্রকাশে কখনই দ্বিধা করবেন না। এতে লেখাটি পাঠকের কাছে আপনার পরিচয় করিয়ে দেবে। মনে রাখবেন পাঠকের সাথে আপনার সম্পর্ক যত বেশি ঘনিষ্ট হবে আপনার ব্লগ এর সফল হবার সম্ভাবনা তত বেশি থাকবে।
(৩) শুধু লিংক দিয়ে দায় মুক্ত হবেন নাঃ
ব্লগিং একটি সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। তাই অনেক সময় দেখা যায় অনেকে তাদের পোষ্টে অন্য আরেকটি অনলাইন পোষ্টের লিংক যোগ করে দিয়ে দায়মুক্ত হতে চান। এই ভুলটি কখনই করবেন না। পাঠক আপনার লিংকের মাধ্যমে কোন মজার কিছু পড়তে চান না। এমনও হতে পারে পাঠক আপনার ব্লগ থেকে আপনি তাকে যেখানে পাঠাচ্ছেন সেই ব্লগটি বেশি পছন্দ করে ফেলতে পারে। ফলে আপনি পাঠক হারাবেন। বরং পাঠক ধরে রাখতে আপনার ব্লগে উক্ত লিংকের উপর আপনার মতামত জানিয়ে বিস্তারিত জানার জন্য লিংকটি দিয়ে দিতে পারেন। মনে রাখবেন কোন মন্তব্য ছাড়া একটি লিংক পাঠক হারানোর প্রথম লক্ষণ।
(৪) উৎস সরবরাহ
কখনই কোন অনলাইন ব্লগ বা ওয়েবসাইট থেকে লেখা চুরি করে কপিরাইট লঙ্ঘনের চেষ্টা করবেন না। এতে যেমন আপনি আইনি জটিলতায় পড়তে পারেন তেমনি পাঠকও হারাতে পারেন। তবে আপনি যদি কোন ওয়েবসাইটে এমন কোন তথ্য পান যা আপনি আপনার ব্লগে আলোচনা করতে চান তাহলে ঐ ব্লগ বা ওয়েবসাইটের একটি লিংক যুক্ত করে দিন, তাহলেই আর কোন সমস্যা থাকবে না তবে কপি পেস্ট এড়িয়ে চলাটাই অতি উত্তম।
(৫) লেখাকে সাজান
আপনার ব্লগ পোষ্টের দৃষ্টিনান্দকিকতা আপনার আলোচনার বিষয় বস্তুর মতোই গুরুত্বপূর্ণ। আপনার ব্লগ পোষ্টটি ছোট ছোট অনেকগুলো প্যারা করে সাজান। প্রতিটি প্যারায় সম্ভব হলে দুই বা তিনের অতিরিক্ত বাক্য ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। বেশিরভাগ পাঠক অনেক বাক্যের জড়োসড়ো করে সাজানো ব্লগ পড়তে আগ্রহী হন না। ব্লগে যথেষ্ঠ ফাকা জায়গা পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষনে সক্ষম হয় এবং পাঠককে সম্পূর্ণ ব্লগ পোষ্টটি পড়তে আগ্রহী করে। তবে সবসময় অল্প কথায় পোষ্ট দেবার চেষ্টা করুন যা পাঠক সহজে পড়তে পারে।
ব্লগের শাস্তি
প্রত্যেক সামাজিক ব্লগ সাইটেরই নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম-নীতি থাকে যা মেনে চলে ব্লগিং করতে হয়। কোন ব্লগার যদি উক্ত নীতিমালা ভঙ্গ করেন তবে ব্লগ সাইটের মডারেশন বোর্ড তাকে শাস্তি দেবার অধিকার রাখেন। শাস্তি স্বরুপ আপনার নির্দিষ্ট পোস্ট কিংবা মন্তব্য আপনার কিংবা লেখকের অনুমতি ছাড়াই মুছে দিতে বা ব্লগ থেকে সরিয়ে দিতে পারেন। এছাড়াও আপনার নীতিমালা ভঙ্গের অপরাধের মাত্রা যদি খুব বেশী হয় তবে আপনাকে ব্লগের সুযোগ সুবিধা কমিয়ে দিতে পারে, এমনকি আপনাকে পুরোপুরি ব্যান বা লগইন ব্যান করতে পারে। লগইন ব্যান করলে আপনি আপনার এ্যাকাউন্ট আর কখনই ব্যবহার করতে পারবেন না। তাই ব্লগ এ্যাকাউন্ট খুলে প্রথমেই ব্লগের নীতিমালা গুলো ভালভাবে জেনে-বুঝে ব্লগিং করা উচিৎ।
তথ্যসুত্রঃ বিভিন্ন ব্লগ সাইট এবং আমার নিজের অভিজ্ঞতা
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে অক্টোবর, ২০১০ দুপুর ১:৩১