somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছাত্রলীগের প্রতি একখানা খোলামেলা চিঠি

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৩:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মাননীয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীবৃন্দ,
প্রথমেই এই আবাল-অধম লেখকের পক্ষ হইতে আপনাদের সালাম জানাইলেও শুভেচ্ছা জানাইতে পারিলাম না বলিয়া বেয়াদপি নিয়েন না। মন থাইক্যা যা আসে না তা মিথ্যা প্রকাশ কইর‍্যা কি লাভ? পত্রের শুরুতে যে কুশলাদি জিগামু যে কেমন আছেন তার আর কোন প্রয়োজন নাই কারন প্রতিদিনই ধারাবাহিকভাবে আপনাদের সকল অবস্থার খবর গণমাধ্যমের মারফত জানিতে পারি। আর যাহা জানিতে পারি বা দেখিতে পাই তারপরে আর আপনাগো ব্যাপারে কিছু কওয়ার ক্ষেমতা বা সামর্থ্য আমার নাই।

তবে অপ্রিয় কিছু কথা যে না কইলেই না, সেই মহাজোট সরকার ব্যালট বিপ্লবের মাধ্যমে ব্যাপক জনসমর্থন নিয়া ক্ষমতায় আসার পর থিক্যাই কেন জানি আপনাদের রক্ত অতিশয় মাত্রায় গরম হইয়া উঠিয়াছিল। দেশের এমন কোন সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নাই যেইখানে আপনাদের ব্যানারে তাণ্ডব হয় নাই। এই ৪ বছরের মধ্যে এতো ঘটনা ঘটাইয়া ফালাইছেন যে কোনটা থুইয়া কোনটার উদাহরন দিমু তা আমি নিজেও বুঝবার পারতাছি না। এইগুলা যা করছেন তাহাদিগকে যে সাংগঠনিক রাজনীতি কয় না এই কথাটাও মনে হয় আপনারা ভুইল্যা গেছেন।

অথচ আপনাদের এই ঐতিহ্যবাহী দলের জন্ম দেশ স্বাধীনেরও প্রায় ২৩ বছর আগে। বঙ্গবন্ধু স্বয়ং এই ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। ইতিহাসের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামের পাতায় এই ছাত্রলীগের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা। অতীতে একসময় এই ছাত্রলীগেরই নেতা কর্মীদের দেশের মানুষ ভালোচোখে দেখত শুধু তাদের সাংগঠনিক কাজ কামের জন্য, চেহারা দেইখ্যা না। অতীতে যারা এই ছাত্রলীগের কাণ্ডারি ছিলেন তাদের মধ্যে আজ অনেকেই মন্ত্রী,সংসদ সদস্য হইয়া দেশের লাইগ্যা কাজ কইর‍্যা যাইতেছে। আর বর্তমানে আপনাগো কথা দেশের লোকজনের মনে আইলেই ভাইস্যা উঠে এক ভয়াবহ প্রতিচ্ছবি। আগে গাঁও গেরামের মাইনষে শিবির’রে কইতো রগকাটা-চাপাতি বাহিনী আর অহন তাঁরা আপনাগো নাম হুনলে কিছু না কইয়াই পারলে পলাইয়া যায় ডরে। ক্ষমতায় আওনের পর পরই বরিশাল পলিটেকনিকে আপনাগো ভাই ব্রাদার’রা যেই ভাবে দেশি রাম দাঁও,চাপাতিসহ আরো হাতিয়ার লইয়া নিজেরা নিজেরা কোপাকুপি করিল এবং ধারাবাহিকভাবে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়,রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়,জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়,কুষ্টিয়া ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়,ঢাকা পলিটেকনিক কলেজ,ঢাকা কলেজ,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দাঙ্গা হাঙ্গামা চালাইয়া যাইতেছে তাতে যে ভবিষ্যতে ভোটের বাজারে আগুন লাইগ্যা গেছে সেই হিসাব মনে হয় এহনো আপনাদের পর্যন্ত আইসা পৌঁছায় নাই। আপনেরা আগে সংঘর্ষ করছেন নিজেদের দলের মধ্যে আর এই শেষ বেলায় আইস্যা চড়াও হইলেন প্রতিপক্ষের উপড়ে। ইহাতে আপনাদের যে কি লাভ লোকসান হইতেছে তা একমাত্র মাবূদই ভালো কইতে পারবে। তয় আপনারা যে ছাত্র রাজনীতির গুনগত মান হারাইয়া ইহার বারোটা বাজাইয়া দিছেন তা শতভাগ দেশের মানুষই কইতে পারবে। আর এহন আপনাগো বদনাম কেউ কয় না, সবাই কয় নেত্রী শেখ হাসিনার কথা। তাইলে এইবার নিশ্চয়ই বুঝবার পারছেন যে আপনারা আপনাদের নেত্রীর মান-ইজ্জত কতখানি বাড়াইয়া দিছেন।

ভাইজানেরা, আল্লাহ্‌র ওয়াস্তে এইবার থামেন। ভোটের বাকি আর মাত্র একবছর; এর মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক ইস্যুতে বিরোধী দলের কঠোর আন্দোলন আসন্ন। এমতাবস্থায় যদি এই মাইরের ট্র্যাডিশন চালাইয়াই যান আর পরের ইলেকশনে যদি মূল দল হোঁচট খায় তার প্রধান কারন হইবেন আপনেরা। আর জানেনই তো হোঁচট খাইয়া বিরোধী দলের গ্যালারীতে যাইয়া পড়লে কি যাতনা!!! হাতে জহুরা থাকলেই যে পাবলিকরে দেহাইতে হইবে এমন শিক্ষা আপনারা কোন সময় হইতে রপ্ত করিয়াছেন ঠিক জানি না তয় মুরুব্বীরা একটা কথা কয় জহুরা বেশী দেহাইলে পতনও তাড়াতাড়ি কাছে আইয়া হাজির হয়।

শেষে আর কি কমু? আপনেরা তো স্বয়ং নেত্রী তথা প্রধানমন্ত্রীর কথাই মানেন না বা রাখেন না আর সেইখানে আমি অধম এতোগুলান কথা কইয়া ফালাইলাম তাইতে যদি আমার বেয়াদপি হয় তয় আল্লাহ্‌র ওয়াস্তে মাফ কইর‍্যা দিয়েন। অনেক কষ্টের চোটে কথাগুলান কইলাম ভাইজানেরা কারন নেতা না হইলেও “ওয়াঞ্চ আপন এ টাইম আমি নিজেও এই ছাত্রলীগেরই একজন ক্ষুদ্র অধম কর্মী আছিলাম”

সর্বোপরি মহান সৃষ্টিকর্তা আপনাদের সহায় হোন এবং হেদায়েত দান করুন সেই দোয়াই করি।

ইতি-
অধম একজন।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×