১। আজকাল ডিজুস ছেলেমেয়েরা ফেসিয়াল টিস্যু পেপার চেন্জ করার মতো BF / GF চেন্জ করে। দুধ থেকে সর টা খেয়ে ছেলেরা ভাগে আর মেয়েরা কাঁদে। সবশেষে ধরা খায় মেয়ের বাপ! ছেলেটা যদি আইটি এক্সপার্ট হয় তাহলে তো আরো খবর আছে। এক হাজার টাকার মোবাইলেও আজকাল HD ক্যামেরা পাওয়া যায়। মজাই মজা শেষ হয়ে গেলে ছেলেরা ব্যস্ত হয় পরে অন্য মেয়ে নিয়ে আর সারা দেশ ব্যাপক বিনোদনের ফ্রি সুযোগ পায়। মোবাইল কম্পানিগুলি তে খোঁজ নিয়ে দেখেন, মোবাইল ডাটা প্যাক সব শেষ কি দেখে! এসব মেয়েরা যে আজন্ম বেকুব তা তারা গলায় ফাঁস লাগিয়ে শেষ বারের মতো প্রমান দিয়ে যায়!
পুরুষ যদি নিত্য নতুন জামা বদলানোর মতো নিত্য নতুন নারী সঙ্গী তথা গার্লফ্রেন্ড পেয়ে যায় সবার অগোচরে, তবে সে কেন একটা মেয়েকে মোহরানা দিয়ে সম্মানের সাথে ঘরে তুলে স্ত্রীর মর্যাদা দিবে! একজন যুবকের কাছে নারী যদি বিয়ে ছাড়াই সহজ লভ্য হয়, তাহলে ঐ যুবকের কী দরকার বিয়ে নামের ঝুট ঝামেলায় নিজেদের জড়ানোর !
২। বিউটি পার্লার গুলি কে আমি ব্যাপক ভয় পাই। ৪ বছর বুয়েটে ৮ সেমিস্টারে যে ইনজিনিয়ারিং আমি শিখতে পারি নি এরা মাত্র একদিনে সেটা অবলীলায় করে দেখায়। আমার এক বন্ধুর বিয়েতে কত কষ্ট করে চিটাগাং থেকে এসে হাজির হলাম এন্টারটেইনমেন্টের জন্য। বন্ধুর ছোট শালীকে দেখে মনের দু:খ কে পাথর চাপা দিয়ে বন্ধুকে শান্তনা দিতে গেলাম। হাজার হোক এটাকে পার করার সময় বন্ধুর কি প্যারা যাবে সেটা ভেবে! বন্ধু আমার কথা শুনে ওর ২৯টা দাঁত বের করে হাসি দিয়ে বলল মিরপুরে নাকি পার্সনা আর ওমেনস ওয়ার্ল্ড নামে দুইটি নতুন বিউটি পার্লার খুলেছে। এদের ব্যাপক পারফোরম্যান্স। পারফোরম্যান্স যে ফাটাফাটি এর বিয়ের ছবি দেখেই বুঝেছিলাম। TNA WWE তে যারা এখনও কালী দেখননি তারা এটা বুঝবেন না। পকেটের টাকা খরচ করে শ্বশুর বাড়ী থেকে যে খাট কিনে দিয়েছিল সেটা কোন দোকা থেকে কিনেছিল জানতে চেয়েছিলাম। মনে বড় ডর লাগে। আমার বন্ধু না আবার ধরা খায়!
বিউটি পার্লার গুলির ব্যাপক ইনজিনিয়ারিং নলেজ নিয়ে যাদের সন্দেহ তাদের জন্য ফেসবুক থেকে এই ছবি টা দিলাম। কারো সাথে মিলে গেলে নিজ গুনে ক্ষমা করে দিবেন। ইলেকশন ইনজিনিয়ারিং ও এর কাছে কিছু না! EC বিপদে পড়লে এদের কাছে সর্ট কোর্স করতে পারে নিজেদের জ্ঞানের শাখা পল্লবিত করার জন্য। তাদের জ্ঞানের বড়ই অভাব!
৩। ইদানিং ইউটিউবে একটা বিশেষ শ্রেনীর পারফর্মারদের আর্ভিভাব হয়েছে। এদের কাছে গানের চেয়ে চেহারা দেখানো বেশী গুরুত্বপূর্ন। হাত পা গুলি যেভাবে গানের সময় নড়াচড়া করায় তাতে মনে হয় সুরের চেয়ে এগুলির এক্সাসাইজ বেশী দরকার। ভালো ভালো বাংলা গানগুলি যেভাবে বেড়ালের মত মিউ মিউ করে গাইতে দেখা যায় তাতে বেড়ালও লজ্জা পাবে। মেয়েদের গানও বাদ দেয় না। সবার গলায় যে সব গান হয় না আপনি আমি বুঝলেও এরা সেটা বুঝে না। সবাই এদের আচার আচরন নিয়ে ব্যাপক কৌতুহল বোধ করেন কিন্তু ঘটনা কি সেটা বুঝতে পারেন না। ঘটনাটা আমি ব্যাখ্যা করছি। আশা করি সব কনফিউশন এবারই দূর হয়ে যাবে.......
এদের আচার আচরন দেখলে আমার মেল গিগলো মনে হয়। কিছু মনে করবেন না [গিগলো/GIGOLO শব্দের অর্থ গুগল মামা কে জিগ্গেস করেন, এখানে আর দিলাম না]। এদের একজন আমার অত্যন্ত পছন্দের কিছু গান এমন গলায় গেয়েছিল যে আমার মনে হচ্ছিল মোবাইলের মধ্যে ঢুকে স্যান্ডেল দিয়ে থাবরিয়ে আসি। এদের আচার আচরন গায়কের মতো না। প্রশ্নই উঠে না। গলার কথা আর বল্লামই না। রাস্তার টোকাইরা বা বাসার বাথরুমে কাজের পোলাপানও এটার চেয়ে ভালো গান গায়। এরকম আচার আচরনের ছেলেদের ইন্টারনেটে বেশ কিছু সাইটে পাওয়া যায়। মেয়েরা, বিশেষ করে বেশ কিছুদিন ধরে যারা একা আছেন কিন্ত আগে ছিলেন না তারা এসব ইন্টারনেটে দেখে...........। এর বেশি কিছু না।
৪। কয়েক দিন আগে সামু তে চটি গল্পের এক লেখকের আবিভার্ব হয়েছিল। ধুমকেতুর মতো যেমন এসেছিলেন তেমনি আবার ব্লক হয়ে গায়েব হয়ে যান। তার লেখা পড়ে আমি এমনই মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম যে ড্রাফট মন্তব্য টা পোষ্ট টা করতে দেরী হয়ে যায়। ততক্ষনে দেখি সেটা গায়েব! অসুবিধা নাই ড্রাফট মন্তব্য টা সেভ করে রেখেছি। মন বলছে ঔ লেখক কে এখানে পাওয়া যেতেও পারে! ভবিষ্যতে কারো যদি এরকম বেসম্ভব ইচ্ছা করে তার জন্য নিচে এটা তুলে দিলাম। এবার আর মন্তব্য টা পোষ্ট টা করতে দেরী হবে না।
নির্ঘাত নিউমার্কেটের/নীলক্ষেতের ফুটপাতে যেসব চটি বই বিক্রি করে সেখান থেকে কাট পিছ! কি নিদারুন লেখা? আমার হাতে সুযোগ থাকলে আপনাকে লিটারোটিকা অ্যাওয়ার্ড দিতাম। তো ভাই ইন্টারনেটে এত শত এসব চটি সাইট আছে তা বাদ দিয়ে সামুর কথা কেন মনে হলো আপনার? কেউ কেউ জুতা সহ মাইনাস দিতে চাচ্ছেন। আমি জুতার মান সম্মান নষ্ট করলাম না। হাজার হোক আমাদের পায়েই তো দেই! তাই ঝাড়ু সহ মাইনাস উপহার রইল আপনার জন্য।
৫।বাংলাদেশে বিনোদনের ব্যাপক অভাব! এই অভাব পুরনোর জন্য আমি আগে মাঝে মাঝে আমার বড় ছেলের সাথে মিস্টার বিন দেখতাম। ভালোই লাগত। তবে ইদানিং এই অভাব আর বোধ করি না। সকাল বেলা অফিসে এসে বাংলা পত্র পত্রিকা খুললেই বাংলাদেশের রাজনীতিদের যে ডায়ালগ গুলি পড়ি তাতেই সারা দিনের বিনোদন হয়ে যায়। যেমন ধরেন না এই ডায়ালগ টা, "বিএনপির কর্মীরা রানা প্লাজা ধাক্কা দিয়েছে বলেই রানা প্লাজা ধ্বসে পড়েছে"। এরপর আর সারা দিন বিনোদনের কোন দরকার আছে? অফিসে এসেই প্রথমে আমি সারা দিনের বিনোদনের ব্যবস্থা করি, তারপর না কাজ। মন ভালো থাকলে কাজেও মন আসে!
৬। বাংলাদেশের শেয়ার মার্কেট নিয়ে আমার ব্যাপক কৌতুহল। আমি নিশ্চিত সারা বিশ্ব খুঁজেও আপনি এরকম একটা মার্কেট পাবেন না। সবাই এখানে সব কিছু বোঝে। ফেসবুক খুলে দেখেন না? শত শত হাজার হাজার অ্যাডমিন প্রতিদিন আপনাকে ফ্রি ফ্রি শেয়ারের নাম সাজেস্ট করছে। বলেন কোথায় পাবেন এত মানব দরদী জনহিতকর কাজ। সবাই আপনার ভালো চায়। তবে এত ভাল কাজ গুলির মাঝে লোকজন কিভাবে যে ফুতুর হয়ে যায় সেটা ভৌতিক কান্ড। কি নাই এখানে? পুলিশ থেকে শুরু করে গন আন্দোলন, গন অনশন, আদর করে ডেকে এনে মুঁলি বাশ দেয়া, ১০ টাকার জিনিস ৫০০ টাকা করে আম পাবলিক কে হারিকেন দিয়ে ধরিয়ে দেয়া, অর্থ মন্ত্রী থেকে প্রধান মন্ত্রী সবই আছে এখানে। একবার ঢুকবেন তো সারা জীবন আর বের হতে পারবেন না, থুক্কু পারবেন তবে ইয়ে মানে ঘটি বাটি সব রেখে আসত হবে। ১৯৯৬ বা ২০১০ যারা দেখেছেন তারা আরো ভালো বলতে পারবেন। একটা এনালগ আরেকটা ডিজিটাল। বোতল একই তবে মাঝে মাঝে পানি টা পাল্টে দেয় এই আর কি! তবে আমার ব্যক্তিগত ধারনা এজন্য বিএনপি দায়ী। কারন সবসময় বিএনপি বিরোধীদলে থাকলেই এই সব ঘটনা ঘটে।
৭। ফেসবুক আর এর স্ট্যাটাস নিয়ে আমি আরো বড় বিপদে আছি। ফেসবুক দিয়ে আসলে কি করব সেটা আজও বুঝলাম না। অতি সম্প্রতি ফেসবুকে আমার এক যন্ত্র প্রকৌশলী বান্ধবী শাক রান্না করতে যেয়ে ভূলে পাঁচফোরন দিয়ে যে কি বিশাল বিপদ সৃষ্টি করছিলেন তা পড়ার পর এখন থেকে প্রতিবার শাক খাবার সময় পাঁচফোরন আছে নাকি সেটা চেক করে নেই। খাবার মুখে দেবার আগের একটা চেকলিস্ট বানাবো নাকি ভাবছি? আশা করছি খুব শিগগিরি ফেসবুকে এটা পেয়ে যাবো। ফেসবুকে সব কিছু পাওয়া যায়। কি নাই এটাতে? কিছুদিন আগে এক নাতির দাদাকে কবরে শোয়ানোর আগে দাদার সাথে শেষ সেলফি দেখে আমি মুগ্ধ। মার্ক জুকারবাগের ইমেইল আড্রেস টা অনেক খুঁজেছি। পাইনি দেখে পাঠাতে পারিনি, সেজন্য আমি এই জাতীর পক্ষ থেকে অতিশয় লজ্জিত। ভাবছি কবে আজরাঈলের সাথে এদের শেষ ষ্ট্যাটাস টা দেখতে পাবো। কয়েক দিন আগে আমার এক ডাক্তার খালু শ্বশুর ইংল্যান্ড থেকে বাংলাদেশে এসেছেন। আমার বাসায় বেড়াতে আসার পর উনি যখন বললেন উনার সহ পরিবারে কারো ফেসবুক একাউন্ট নেই, আমি তো আমি আমার ৭ বছরের ছেলে পর্যন্ত অবাক। বলে কি? আমরা ফেসবুক আর এর স্ট্যাটাস নিয়ে যে কি পরিমান ক্রেজি তার একটা নমুনা নীচে দিলাম।
বর্তমান এবং সমসাময়িক পরিস্থিতি নিয়ে আমার মতো একজন অতি তুচ্ছ আমজনতা কি ভাবে আর মন কি চায় সেটাই তুলে ধরার এক ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। পুরো লেখাটাই আমার ব্যক্তিগত মতামত। কারো সাথে বা মতামতের সাথে মিলে গেলে আমি দায়ী না। পরিস্থিতি দায়ী। একদিন ভাবলাম হুট করে যা মনে আসে সেগুলি এক জায়গায় লিখে রাখলে কেমন হয়? বেশ কিছুদিন ধরে সেটাই করে যাচ্ছি। নীচের লেখাগুলি সেখান থেকেই কপি পেষ্ট। নিজের জীবনের কাছ থেকে যে ঘটনা গুলি দেখে মনের মধ্যে প্রতিক্রিয়া তৈরী হয়েছে সেগুলি ধারাবাহিক ভাবে তুলে ধরে যাব যদি সময় ও সুযোগ থাকে। এই এক্সপেরিমেন্টের এটাই প্রথম পোষ্ট। সহ ব্লগারদের প্রতিক্রিয়া দেখে পরের টা দিব নাকি চিন্তা করবো! এরকম লেখার আমার অভাব নেই। আমার মাথায় সারাক্ষনই এরকম উল্টা পাল্টা লেখা ঘুরে............
বিশেষ দ্রষ্টব্য: আমি সবসময় এক্সপেরিমেন্ট করতে ভালোবাসি। এটাও সেরকম একটা চেষ্টা। সহ এক ব্লগার ভাইয়ের স্টাইল টা ভালই লাগে। এই লেখার সব দায়দায়িত্ব আমার আর কারও ভাল লাগলে ধন্যবাদ টা তাকে দিবেন।
সবাইকে ধন্যবাদ ও শুভ কামনা রইল।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত @ নীল আকাশ, সেপ্টেম্বর, ২০১৮