somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সভ্যতার জন্য আমরা আত্মহত্যা করতে পারি না- সুন্দরবন বাঁচাতে হবেই

০৫ ই অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৪:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




এটা কি কেবল বিরোধীতার খাতিরে বিরোধীতা করা। আমার মনে হয় তা না। ভারত, মালয়েশিয়া কিম্বা চীন। কেউ আমাদের শত্রু নয়। আমার বন্ধুও নয়্। সবাই কৌশলগত সম্পর্ক রক্ষা করে। আমরাও করি। বাঙালিরা একটু আগে প্রবণ জাতি। কিন্তু বাস্তবতা তারা সব সময় উফরব্ধি করেছে। তাই দু:শাসনের বিরুদ্ধে এখানকার মানুষের অবস্থান পুরনো। এটা হাসিনা, খালেদা এরশাদ কিম্বা জামায়াত বলে কথা নয়। আমরা যারা বয়সে তরুণ তারা রাজনীতির চেয়ে মানুষের ভালোবাসা এবং তাদের ভবিষ্যত নিয়ে ভাবতে চাই। ভাবি। এখানে বাম রাম ইসলাম মুসলিম ও বড় কথা নয়। বড় কথা আমাদের একটি সমৃদ্ধ ও বাসযোগ্য দেশ গড়া।

রাজনৈতিক দল গুলো সব সময় দোষারোপের রাজনীতি করেন। আর যারা ক্ষমতায় থাকেন তারা অনবরকত মিথ্যা কথা বলেন। ম্যাকিয়াভ্যালির প্রিন্স বইটি যারা পড়ে থাকবেন, তারা নিশ্চয় জানবেন, তার বইটির মূল স্রোতের সাথে আমাদের দেশের রাজনীতির শীর্ষ নেতাদের কি মিল। কী অসধারণ মিথ্যা বলার ভঙ্গি। আসলে আমরা সবাই নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত! এটা যেমন ঠিক আবার এমন অনেকেই আছেন, নিজের চেয়ে দেশ সমাজকে নিয়ে বেশি ভাবেন। ভাবছেন বলে আমরা এখনো টিকে আছি।

রামপাল নিয়ে প্রচণ্ড বিতর্ক হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী দিনাজপুরের রেফারেন্স টেনেছেন। বড়পুকুরিয়াতে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র হয়েছে, ক্ষতি হয়নি। মালয়েশিয়া ও চীনের সাথে প্রকল্প হবে সামনে, তখন বিরোধীতা হয় কিনা সেটিও উনি দেখতে চান বলে জানিয়েছেন। আজ রামপালের উদ্বোধন করতে গিয়ে তিনি এ সব অভিলাষ ব্যাক্ত করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিজ্ঞ রাজনীতিক। অনেকটা ম্যাকেয়াভেলির প্রিন্সের রাজার বৈশিষ্ট্যের সাথে উনার অনেক মিল চোখে পড়ে। হয়তো শাসকদের এমনই হতে হয়। দেশ পরিচালনার জন্য তাদের অনেক রকমের কমপ্রোমাইজ করতে হতে পারে। কিন্তু সুন্দরবন- একটাই। এখানে কোনো রকমের ছাড় দেয়ার সুযোগ দেখছি না।

আমাদের গ্রামের কথা বলি, আগে পাশের বাড়ির লোক ডাকলে আওয়াজ হতো। নইলে নিঝুম-নি:শব্দ। আর এখন বাড়ির সামনে দিয়ে সিএনজি ছোটে অটোরিকশার ভো ভো শব্দ। রিকশা আগে বুকিং দিয়ে আনতে হতো, এখন এমনিই আসে। রাস্তায় দাঁড়ালে কয়েক মিনিট পর পরই পাওয়া যায়। সময়ের সাথে সব বদলাচ্ছে। যে গ্রামে সকালে ঘুম থেকে উঠে চোখ কচলালে সামনে এক কিলোমিটার ফাঁকা ময়দান চোখে পড়তো., সেখানে এখন ২০ গজও পড়ে না।

সুন্দরবন আগের মত নেই। অনেক বদলেছে। মিঠা পানির নদীর পানি লবনাক্ত হয়েছে। জীব বৈচিত্র্য ধ্বংশ হচ্ছে। বাঘ মেরে চামড়া-হাঁড়গোড় পাচার হচ্ছে। হরিণ শিকারেরর কবলে পড়ছে। পাখি কমে গেছে। গাছের আগা মরা রোগ বাড়ছে। এ সব নিয়ে এমনিতে সঙ্কটে সুন্দরবন। তদার ওপর এখন বাড়তি উপদ্রুপ রামপাল।

সুন্দরবনের মিঠা পানির নদীর লবণক্ততা বেড়েছে কেন ? পরিবেশবিদেরা বলছেন, ফারাক্কার প্রভাবে। যে দেশটির ফারাক্কার মত বাঁধ দেয়, আমাদের নদী মারে, আমাদের নদীর মাছ মারে, তারা আমাদের বিদ্যুতের নামে সুন্দরবন মারবে না, এটা কি আমরা বিশ্বাস করতে পারি। যারা আমাদের জাতীয় পশু রয়েল ব্যাঙ্গল টাইগারকে তাদের বলে প্যাটেন্ট করানোর আবেদন করেছে, তারা কি করে আমাদের সুন্দরবন রক্ষা হোক তা চাইবে। আমি অন্তত তাদের আস্থায় আনতে পারি না। আর আমার অবস্থান একবারেই একটা মৌলবাদী - সেটি হলো আমি আগা গোড়াই ভারত-পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। এই দুটো দেশে কখনোই চায়নি আমরা ভালো থাকি। আমাদের দেশের মানুষ ভালো থাকুক। এরা দক্ষিণ এশিয়ায় কৌশলগত কারণে পরাশক্তির সাথে হাত মিলিয়ে আমাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে শোষন করেছিল, এখনো করছে, সামনেও করবে।

তাই আমি বরাবরই রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিরোধী। এটা ভারত না করে যদি আমরা নিজেরা এককভাবেও করতাম, তাহলেও আমি এর বিরোধী। কারণ এটি আমাদের হাজার বছরের বর্ম সুন্দরবনকে ধ্বংশ করবেই।সভ্যতার জন্য আমি ঐতিহ্য বিসর্জন দিতে পারি না। আমি আত্মহত্যা করতে পারি না। কারণ আমার জীবন-জীবিকার জন্য সুন্দরবনকে দরকার।

এটা হাসিনা না করে খালেদা কিম্বা এরশাদ বা জামায়াত করলেও বিরোধীতা করতাম। তাই রাজনীতিক বিবেচনা নয়, সময়কে ধরে কথা বলুন। চলমান সময় আর সামনের দিন এক হবে-এটা ভাবার কোনো সুযোগ নেই। বন্ধ হোক রামপাল।
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মপোলব্ধি......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৫১

আত্মপোলব্ধি......

একটা বয়স পর্যন্ত অনিশ্চয়তার পর মানুষ তার জীবন সম্পর্কে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায়। এই বয়সটা হল পঁয়ত্রিশ এর আশেপাশে। মানব জন্মের সবকিছু যে অর্থহীন এবং সস্তা সেটা বোঝার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি !

লিখেছেন হাসানুর, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩২



হঠাৎ ইলিশ মাছ খেতে ইচ্ছে হল । সাথে সাথে জিভে ..জল... চলে এল । তার জন্য একটু সময়ের প্রয়োজন, এই ফাঁকে আমার জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প ক্ষমতায় আসছে এটা ১০০% নিশ্চিত। আমেরিকায় ইতিহাসে মহিলা প্রেসিডেন্ট হয়নি আর হবেও না।

লিখেছেন তানভির জুমার, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৩৩

আর এস এস সহ উগ্র হিন্দুদের লিখে দেওয়া কথা টুইট করেছে ট্রাম্প। হিন্দুদের ভোট-আর ইন্ডিয়ান লবিংএর জন্য ট্রাম্পের এই টুইট। যার সাথে সত্যতার কোন মিল নেই। ট্রাম্প আগেরবার ক্ষমতায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প জিতলে কঠোর মূল্য দিতে হবে ইউসুফ সরকারকে?

লিখেছেন রাজীব, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৪২

ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মন্তব্যে বাংলাদেশের মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। ৫ তারিখের নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে আরেকবার বাংলাদেশের মিষ্টির দোকান খালি হবে।

আমি এর পক্ষে বিপক্ষে কিছু না বললেও ডায়বেটিসের রুগী হিসেবে আমি সবসময়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×