বেডে উঠে গায়ে লেপ দিয়ে জানালার পর্দা একটু ফাঁক করে তাকিয়ে আছি এমন সময় ট্রেন ছাড়ল।একটু পর বগির তত্ত্বাবধায়ক মহিলা এসে আমার টিকেটটি জমা নিয়ে একটা কার্ড দিলেন যেটাতে আমার বেড নাম্বার দেয়া ।এই ব্যবস্থার ফলে কোন বেডের যাত্রী কোথায় নামবে তা উনাদের জানা থাকে এবং সেই স্টেশন এ আসার আগে ডেকে দেয়। রাতের পথে ট্রেন চলছে এক দেড় ঘণ্টা পর ট্রেনের লাইট অফ হয়ে গেলো এর কিছুক্ষণ পর বগির তত্ত্বাবধায়ক মহিলা এসে সব জানালার পর্দা লাগিয়ে দিল যাতে বাইয়ের আলো এসে যাত্রীদের ঘুমের কোন ব্যাঘাত না ঘটাতে পারে। ট্রেনের প্রতিটা বগিতে একজন করে তত্ত্বাবধায়ক মহিলা থাকে পোশাকে স্যুটেট বুটেট উনি বগির সকল কাজ নিজে করেন। ময়লা সংগ্রহ করা , ঝাড়ু দেয়া এমনকি টয়লেট পরিষ্কারও করে থাকে আর বগির শেষ মাথাতে থাকে উনার অফিস।উনাদের দেখে আমার বাংলাদেশের টিকেট চেকার জমিদার সাহেবদের কথা মনে পড়লো।
কামরা গুলোর বিপরীত পাশদিয়ে থাকে প্যাসেজ আর এর সাথের প্রতিটা জানালার পাশে থাকে একটি ছোট টেবিল আর এর দু পাশে দুটো ফল্ডেবল চেয়ার । শুয়ে থাকতে না চাইলে বা শুয়ে থেকে বিরক্ত হয়ে গেলে সেখানে বসে বাইরের পরিবেশ উপভোগ করা যায় অনেকে সেখানে বসে খাবার খায়। আর এই টেবিলের নিচে একটি বিদ্যুতের বোর্ডে রয়েছে যেখানে মোবাইল, কম্পিউটার চার্জ দেয়া যায়।
প্রতিটা বগির শেষ মাথায় রয়েছে একটি টয়লেট।যা কোন স্টেশনে থামবার আগে বন্ধ করে দেয়া হয়। আর রয়েছে ৩-৪ টি বেসিন, লুকিং মিরর , ডাস্টবিন আর রয়েছে গরম পানির কল ।পানি প্রচণ্ডগরম এতে আমার হাত হালকা পোড়ে গিয়েছিল। এই গরম পানি দিয়ে চীনারা তাদের সবচে সহজ খাবার ইনস্ট্যান্ট নুডলস খায়।চা-কফি খাওয়া যায় আর আমিও কিছুক্ষণ পর পর কফি খেয়েছি।
যাদের বিড়ি ফুঁকার প্রয়োজন তাদের জন্যেও রয়েছে দুই বগির মাঝে বিশেষ ব্যবস্থা স্মুকিং এরিয়া।
চলবে...
চীনে ট্রেন ভ্রমণ-১..