ইউনেস্কো ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে শাংহাইকে 'নকশা নগরের' খেতাব দিয়েছে। একই সালে শাংহাই বিশ্বমেলা সাফল্যের সঙ্গে আয়োজনের মধ্য দিয়ে শাংহাই শহরের সৃজনশীল উন্নয়নের ক্ষেত্রে দৃষ্টান্তমূলক ভূমিকা পালন করেছে।
(শাংহাই বিশ্বমেলা উদ্যান)
এখন শাংহাইতে নকশা গবেষণা, স্থাপত্য নকশা, সাংস্কৃতিক তথ্য মাধ্যম, পরামর্শ আর ফ্যাশন ভোগ এ পাঁচটি সৃজনশীল শিল্প গঠিত হয়েছে। নতুন থিয়েনদি, থিয়েনচিফাং, এম.৫০ সৃজনশীল উদ্যান শাংহাইয়ের নতুন প্রতীকী স্থাপত্যে পরিণত হয়েছে।
শাংহাই বিশ্বমেলার সফলতা শাংহাইকে আন্তর্জাতিক সৃজনশীল প্রবণতা থেকে শিক্ষাগ্রহণ করা এবং সৃজনশীল শিল্প প্রতিষ্ঠার জন্য স্বর্ণ সুযোগ সৃষ্টি করেছে। তারপর শাংহাই সৃজনশীল শিল্প মেলা হচ্ছে শাংহাইকে সৃজনশীল শহর প্রতিষ্ঠার জন্য আয়োজিত প্রতীকী কর্মসূচি।
২.শেনচেন
সবচেয়ে নবীন সহনশীল শহর, সবচেয়ে বহুবিধ নগর সংস্কৃতি
(দাফেং উপদ্বীপ)
২০০৮ সালের ৭ ডিসেম্বর ইউনেস্কো সংগঠিত বিশ্ব সৃজনশীল শহর নেটওয়ার্ক শেনচেনকে 'নকশা নগর' হিসাবে নির্ধারণ করে। শেনচেন চীনে এ খেতাব অর্জনকারী প্রথম শহর।
(শেনচেনের সিয়ান হু হ্রদের উদ্ভিদউদ্যান)
শেনচেনের বিস্ময় সৃজনশীলতা আর কল্পনা ছাড়া হতো না। সৃজনশীলতা এ শহরের প্রাণশক্তি ও চালিকাশক্তি যুগিয়েছে। শহরবাসীরা এখানে সৃজনশীল সৌন্দর্য ও বিশেষ মজা উপভোগ করেন।
(বিশ্বের জানালা পার্ক)
উন্নত মানের সমুদ্রের পানি শেনচেন উপসাগরে প্রবেশ করে। তা দিয়ে এক আনন্দময় উপকূলীয় ছুসুই রাস্তা তৈরি হয়েছে। এটা হচ্ছে দক্ষিণ চীনের বৃহত্তম উন্নত মানের রেস্তোঁরা ও বিনোদন অঞ্চল।
ছুসুই সড়কে সুস্বাদু খাবার, সংস্কৃতি ও বিনোদন আর বারসহ তিনটি বিশেষ অঞ্চল অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। সেখানে ৩০টিরও বেশি দেশি-বিদেশি উন্নত মানের নামকরা ব্র্যান্ডের রেস্তোঁরা আছে। আরো রয়েছে সৃজনশীল প্রদর্শন, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা এবং বৈশিষ্ট্যপূর্ণ শোভাযাত্রা আয়োজনে আনন্দমেলা সড়ক। উপসাগরে আসা-যাওয়া করা ভ্রাম্যমাণ জাহাজেও সুস্বাদু খাবার, সংস্কৃতি ও শিল্পকর্ম প্রদর্শিত হয়।
(দাইয়ুন হ্রদের সংগীত ফোয়ারা)
৩.উসি
সুন্দর দক্ষিণ চীন, সভ্যতা, বসবাসের উপযোগী চমত্কার পরিবেশসম্পন্ন শহর
প্রাচীনকাল থেকে উসি ধান ও মত্স্য উত্পাদনে চীনের সমৃদ্ধ অঞ্চল। তবে এখন উসি হলো চীনের নতুন শিল্প উন্নয়নের জন্মস্থল। উসির প্রাকৃতিক দৃশ্য খুব সুন্দর, সংস্কৃতি উন্নত এবং শিক্ষার মান উঁচু। সাত হাজার বছরেরও বেশি সময়ের সভ্যতার ইতিহাস, ৩,১০০ বছরের লিপিবব্ধ ইতিহাস এবং ২,২০০ বছরের নগর প্রতিষ্ঠার ইতিহাস রয়েছে উসির। উসির ঐতিহ্যিবাহী মুর্তি তাআফু, সংগীত এরছুয়ানইনইউয়ে এবং মোজা খাবার সিয়াওলংপাও এখন চীনের অন্যান্য স্থানেও খুব জনপ্রিয়।
wuxi grand theater
মানবিক, প্রাকৃতিক ও পর্যটন সম্পদের ঘনিষ্ঠ সম্মিলনের মধ্য দিয়ে উসি শহরের উন্নয়ন ঘটেছে। এখন গোটা উসি একটি বড় সুন্দর দর্শনীয় স্থানের মতো সুন্দর। উসিতে পাহাড় আছে; আছে পানি আর সংস্কৃতি।
উসি শহরে জাতীয় ডিজিটাল চলচ্চিত্র শিল্পউদ্যান নির্মিত হচ্ছে। চলচ্চিত্র সম্পর্কিত সংস্কৃতি হবে এ উদ্যানের প্রসঙ্গ। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের চলচ্চিত্র কোম্পানি এবং চীনের উচ্চ পর্যায়ের চলচ্চিত্র কোম্পানি এখানে আকৃষ্ট হবে।
৪.খুনমিং
(খুনমিংয়ের মনোহর রাত্রিকালীন দৃশ্য)
খুনমিং হচ্ছে ইয়ুনান প্রদেশের রাজধানী। সুদীর্ঘ ইতিহাস, উজ্জ্বলতর সংস্কৃতি, বর্ণিল জাতিগত ঐতিহ্য, বিস্ময়কর ও সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য আর অদ্বিতীয় আবহাওয়া মিলে খুনমিংয়ের বহুবিধ পর্যটন সম্পদ ও পণ্যের বৈশিষ্ট্য সৃষ্টি করেছে। খুনমিং হচ্ছে মানবজাতি বাস করা, স্বাস্থ্য রক্ষা করা এবং বিনোদন ও ভ্রমণ করার সবচেয়ে উপযুক্ত জায়গা। খুনমিং বহু জাতির উত্সব-সংস্কৃতি প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে নিজের বৈশিষ্ট্যপূর্ণ সৃজনশীলতা অধিকার করেছে।
খুনমিং 'তিয়েনছি সৃজনশীল মহাচত্বর' নির্মাণ করার জন্য ২০ কোটি ইউয়ান বরাদ্দ করেছে। এ মহাচত্বর শহরের সাংস্কৃতিক পরিচয় কার্ডে পরিণত হবে। তিয়েনছি সৃজনশীল মহাচত্বর খুনমিং শহরের সাংস্কৃতিক জীবনের জন্য এক সম্পুর্ণ নতুন উপায় এবং গণ অভিজ্ঞতা ভাগ করার বিশাল অবকাশ যোগাবে। এ জায়গাটি খুনমিংয়ের আধুনিক নগরের নতুন আকর্ষণীয় দিকে পরিণত হবে। 'তিয়েনছি সৃজনশীল মহাচত্বর' দক্ষিণ-পশ্চিম চীনের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক সম্পদের ওপর নির্ভর করে সারা দেশ, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া আর দক্ষিণ এশিয়ামুখী সাংস্কৃতিক ও শিল্পকর্ম বিষয়ক নানা কর্মসূচির আয়োজন করবে। এটি সুসম্পন্ন উপাদান আর বহুবিধ শিল্পের অভিজ্ঞতা ভাগ করার কেন্দ্র হবে।
(পাথরবন দর্শনীয় স্থান)
(পশ্চিম পাহাড়ে অবস্থিত তিয়েনছি হ্রদ)
৫.ইনছুয়ান(Yinchuan)
প্রাচীনকাল থেকে ইনছুয়ান 'সীমান্ত মুক্তা' বলে পরিচিত। নয়াচীন প্রতিষ্ঠার পর ইনছুয়ান শহর নিংসিয়া হুই জাতির স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের রাজধানীতে পরিণত হয়।
ইনছুয়ান উত্তর-পশ্চিম চীনের প্রধান শহর। পুরনো চেনপেইবু থানার চলচ্চিত্র উদ্যান থেকে এখনকার '৮০১' উদ্ভাবন উদ্যান পর্যন্ত সারা শহরে নয়া উদ্ভাবন দেখা যায়। গত বছর ইনছুয়ান সরকার 'উদ্ভাবন ইনছুয়ান-২০১১' নামের ধারাবাহিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
চেনপেইবু ইনছুয়ানের সিসিয়া জেলায় অবস্থিত। আগে এটি ছিল ছিং রাজবংশের গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত নগর। এখানে এ পর্যন্ত ৬০টিরও বেশি চলচ্চিত্র বা টিভি সিরিয়াল তৈরি হয়েছে।
Nanguan mosque
হুই মুসলিম
আগের পর্ব
চীনের অসাধারণ শহর সমূহ -১
ছবি ব্লগ-চীন
চীনের দিন গুলো(ছবি ব্লগ)