জাতিসংঘের সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণা (পর্ব - ০১)
জাতিসংঘের সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণা (অনুচ্ছেদ ১১ - ২০)
১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণা।এই ঘোষণা প্রণয়নকে একটি যুগান্তকারী ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করা যেতে পারে। এই ঘোষনা একটি মুখবন্ধ ও ত্রিশটি অনুচ্ছেদ রয়েছে।
অনুচ্ছেদ-১১ঃ
(ক) যে কেউ কোন দণ্ডযোগ্য অপরাধে অভিযুক্ত হলে তার আত্মপক্ষ সমর্থনের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে এবং গণআদালত কর্তৃক আইন অনুযায়ী দোষী সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত নিদোর্ষ বলে বিবেচিত হওয়ার অধিকার রয়েছে।
(খ) কাউকেই কোন কাজ বা ত্র“টির জন্য দন্ডযোগ্য অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করা চলবে না যদি সংঘঠন কালে তা জাতীয় বা আর্ন্তজাতিক আইন অনুযায়ী দণ্ডযোগ্য অপরাধ বলে গণ্য না হয়ে থাকে। আবার দন্ডযোগ্য সংগঠন অপরাধ সংগঠন কালে যতটুকু শাস্তি প্রযোজ্য ছিল তার চেয়ে অধিক শাস্তি প্রয়োগ চলবে না।
অনুচ্ছেদ-১২ঃ
কাউকে তার ব্যক্তিগত গোপনীয়তা, পরিবার, বসতবাড়ি বা চিঠিপত্রের ব্যাপারে খেয়াল খুশিমত হস্তক্ষেপ অথবা অসম্মান, সুনামের উপর আক্রমন করা চলবে না।
অনুচ্ছেদ-১৩ঃ
(ক) প্রত্যেক রাষ্ট্রের সীমানার মধ্যে চলাচল ও বসতি স্থাপনের অধিকার প্রত্যেকেরই রয়েছে।
(খ) প্রত্যেকেরই নিজ দেশসহ যে কোন দেশ ছেড়ে যাওয়ার, স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের অধিকার রয়েছে।
অনুচ্ছেদ-১৪ঃ
(ক) নির্যাতন এগানোর জন্য প্রত্যেকেরই অপর দেশ সমূহের আশ্রয় প্রার্থনা ও ভোগ করার অধিকার রয়েছে।
(খ) অরাজনৈতিক অপরাধসমূহের অথবা জাতিসংঘের উদ্দেশ্যে ও মূলনীতি বিরোধী কার্যকলাপ থেকে সত্যিকারভাবে উদ্ভুত নির্যাতনের ক্ষেত্রে এ অধিকার প্রার্থনা করা নাও যেতে পারে।
অনুচ্ছেদ-১৫ঃ
(ক) প্রত্যেকেরই একটি জাতীয়তার অধিকার রয়েছে।
(খ) কাউকে যথেচ্ছাভাবে তার জাতীয়তা থেকে বঞ্চিত করা অথবা তাকে তার জাতীয়তা পরিবর্তনের অধিকার অস্বীকার করা চলবে না।
অনুচ্ছেদ-১৬ঃ
(ক) পূর্ণবয়স্ক পুরুষ ও নারীদের জাতিগত, জাতীয়তা অথবা ধর্মের কারণে কোন সীমাবদ্ধতা ব্যতিরেকে বিবাহ করা ও পরিবার গঠনের অধিকার রয়েছে। বিবাহের ব্যাপারে, বিবাহিত অবস্থা এবং বিবাহ বিচ্ছেদ কালে তাদের সম-অধিকার রয়েছে।
(খ) কেবল বিবাহ-ইচ্ছুক পাত্র-পাত্রীর অবাধ ও পূর্ণ সম্মতি দ্বারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া যাবে।
(গ) পরিবার হচ্ছে সমাজের স্বাভাবিক ও মৌলিক একক, গোষ্ঠী, সমাজ ও রাষ্ট্র কর্তৃক সংরক্ষিত হওয়ার অধিকার এর রয়েছে।
অনুচ্ছেদ-১৭ঃ
(ক) প্রত্যেকেরই একাকী এবং অপরের সহযোগীতায় সম্পত্তির মালিক হওয়ার অধিকার রয়েছে।
(খ) কাউকে তার সম্পত্তি থেকে খেয়াল খুশি মত বঞ্চিত করা চলবে না।
অনুচ্ছেদ-১৮ঃ
প্রত্যেকেরই চিন্তা, বিবেক ও ধর্মের স্বাধীনতার অধিকার রয়েছে। নিজ ধর্ম অথবা বিশ্বাস পরিবর্তনের স্বাধীনতা এবং একই অথবা অপরের সহিত যোগসাজশে ও প্রকাশ্যে বা গোপনে নিজ ধর্ম বা বিশ্বাস শিক্ষাদান প্রচার, উপাসন ও পালনের মাধ্যমে প্রকাশ করার স্বাধীনতা এ অধিকারের অর্ন্তভূক্ত।
অনুচ্ছেদ-১৯ঃ
প্রত্যেকেরই মতামতের ও মতামত প্রকাশের স্বাধীকার রয়েছে; বিনা হস্তক্ষেপে মতামত পোষণ এবং যে কোন উপায়াদির মাধ্যমেও রাষ্ট্রীয় সীমানা নির্বিশেষে তথ্য ও মতামত সন্ধান, গ্রহণ ও জ্ঞাত করার স্বাধীনতা এ অধিকারের অন্তর্ভূক্ত।
অনুচ্ছেদ-২০ঃ
(ক) প্রত্যেকেরই শান্তিপূর্ণভাবে সম্মিলিত হওয়ার অধিকার রয়েছে।
(খ) কাউকেই কোন সংঘভূক্ত হতে বাধ্য করা যাবে না।