এই পথে, যেখানে রাত ছিল নিয়নবাতির রঙ খেলায় মত্ত, সেখানে ধূসরতা এখন। ধুলো নেই,
জন কিংবা যানের দেখা মেলে না একদম। ওই পথ বিষাদের সড়ককে অন্ধ সময় নাম দিয়ে
গেছে মহাকাব্যিক শূন্যতার সরলরেখা হিসেবে। স্ট্রীট লাইট বিহীন নিরবতার এই ছায়াবীথিতে
যেতে হবে তোমাকে। পৃথিবীটা কুচক্রী বুড়ি এক, ফেলে রাখে বেদনা কারাগারে, জানতে চায়
পথের কোলে ঘুমানো পাথরকুচি আশ্বাস। সৃষ্টি অথবা ধ্বংসের অগ্রন্থিত উপাখ্যান?
তুমি হাঁটবে। পাথুরে এই রাস্তাটুকু, তোমার পদস্পর্শ পাওয়ামাত্র মেলে ধরবে নগ্ন অভিশাপ।
ওইপাশে বেঁধে রাখা শ্বাপদ মূর্তি গুলোয় অগ্নিবাণ আসবে, প্রতিষ্ঠিত হবে প্রাণ। শোনা যাবে নগ্ন
হুংকার, শেকল ছিঁড়ে গেলে পশুত্ব প্রকাশ হবে অনিবার্য রূঢ়তায়।
ওরা উন্মত্ত জ্যান্তব! ওদের সলাপরামর্শ কামড়ের প্রক্রিয়া নিয়ে। বিমর্ষ তোমার চোখে আর্তির
ভাষা, খুব স্বাভাবিক একবুক আতঙ্ক- জলাতঙ্ক কিংবা মৃত্যু রোধের আগাম প্রস্তুতিটুকু!
নিরব অশ্রু ফেলো না মেয়ে
ভেবো নাকো হল বুঝি সবশেষ। এমন ভাবনা তাদের
যারা শুধু হেরে যায়; ভোর হয় না যাদের
অন্ধ জীবনবোধে।
চোখ মেল, তাকাও ওই দিকে। এখন আমাদের অবাক হবার সময়। আমরা দেখব নরম মোমের
মত আশাবাদী চোখে- এই ভ্যাপসা গরম, মৃত্যুন্মাদ অস্বস্তির মাঝেই, অনতিদূরের বনানীতে নেমে
আসবে প্রগাঢ় শান্তির করুণা ধারা। আধখানা চাঁদ অন্ধকারের সীমান্তের কাছাকাছি ওই আকাশের
বুক চিড়ে উঠে আসবে গলে যাওয়া বেদনাটুকু নিয়ে। স্বপ্নের নীলে স্নান দিয়ে দূর করবে
অনাবশ্যক অন্ধকার। খয়েরি শালের বনে ফুটবে বুনোফুল, জঠর জ্বালায় পুড়ে অঙ্গার, বিকারগ্রস্ত
শকুনের তির্যক হলুদাভ চোখ;
ভাগাড়ের মাঝেই খুঁজে পাবে বেঁচে থাকার রসদ!
তুমি যাবে কি হেটে হেটে,
এই পথে
সেই রূপকল্পের কাছাকাছি,
বিষাদ পুরাণের জন্মসড়ক থেকে,
আনুভূমিক জীবনের খোঁজে!
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৯:৪৪