somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার যুক্তির চোখ, কবিতার বিজ্ঞানভবন

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ রাত ১:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কবিতায় যুক্তির পৃথিবী কতটা সচল? আমার বিস্তারিত জানা নেই, তবে যে টুকু অনুভব করি তাতে বোধ হয় কবিতায় যুক্তিই শেষ কথা নয়। কবিতা সমস্তের বাইরের একটা কিছু। যাকে "কবিতা" নামটি ছাড়া আর কোন নামে হয়তো চিহ্নিত করা যায় না। কবিতা আসলে একটা আলাদা ডিসিপ্লিন। এর সঙ্গী কেউ নয়। কেননা কবিতা নয় বিজ্ঞান, কবিতা নয় দর্শন, বা কবিতা নয় মহাকাশে রকেট চালনা যে প্রতিটা পদক্ষেপে চুলচেরা হিসাব থাকবে, কথার প্রেক্ষিতে কথা থাকবে, এর থাকবে দৃশ্যময়তা। কবিতার এই যুক্তিকরণকে মনে হয়, এটা হয়তো উপযোগবাদী ধারণা মাত্র। কবিতার কাছ থেকে এতো পাওয়ার প্রত্যাশার দরকারই বা কি। কবিতা কিন্তু নয় মানব মুক্তির পথ। কেননা তা নয় ধর্মগ্রন্থ। তাহলে কবিতা কি গনিত? সে উত্তর পাঠক মাত্রেই জেনে থাকেন।

যুক্তির আরেক নাম শৃঙ্খল। দুটো পরস্পর বিরোধী যুক্তিকে পাশাপাশি দাড় করালে একটার পরাজয় অবধারিত। এবং তারপর? আমরা হয়তো অধিকতর যুক্তির দিকে যাবো। কিন্তু যে যুক্তি টি খোড়া হলো এই মাত্র তা কি আসলে কিছুই নয়? সেও কিন্তু একটা যুক্তি। যুক্তির বিপরীতে যুক্তি, তথ্য, সূত্র প্রদান হয়তো এক বিতর্ক সভা। এই সভা সমিতি থেকে সত্য সর্বদা দূরে থাকে বোধ করি। হয়তো বা সেই চিরসত্য বলে কিছু নেই। এখানে মূলত জয় পরাজয় থাকে। এর মানে এই নয় যে পাল্টা যুক্তি গুলো নিতান্তই অবান্তর। কিন্তু যুক্তির যে বিবেকবান জগৎ তা এদের দুটো কে একত্রে স্থান দেয় কি? কিন্তু জীবন তেমন নয়। বাতাস বড় ধীরে বয়, এটা যুক্তির উপলব্ধি নয়। হৃদয়ের, স্লায়ুর, ত্বকের। এবং আমারা হয়তো জানি মগজ ছাড়া আর কোন কিছু আমাদের অনুভব ধারণে সক্ষম নয়। তবে এটা শেষ কথা নয়। সমস্ত দেহই এক মগজ, স্নায়ুতন্তুজাল। চোখ দিয়ে বাতাস দেখা যায় না, ত্বক দিয়ে যায়।

আমার কি কবিতায় থিসিস দেবো, নাকি এন্টি-থিসিস দেবো, নাকি কবিতা সিনথেসিস করবো। কবিতায় এ তিন করার কোন স্থান নেই। কারণ কবিতা যদি হয় দর্শন বা তর্কশাস্ত্র বা আমার বিজ্ঞানের বই তাহলেতো আর কবিতা পড়ার দরকার নেই। দেরিদা বা ফুকো বা আইনস্টাইন বা হাইজেনবার্গ কি কবিতা-লেখক? আমি তাদের আলাদা গুরুত্ব ও সন্মানের সাথে দেখে থাকি। তবে কবিতা আলাদা একটা বিজ্ঞান। কারো সাথে এর তুলনা অবান্তর। কবিতাতো অধরার যাত্রা পথ। তবে এই পথ নানা দিক দিয়ে গেছে। তবে এ পথের শেষ কোথায়?

পৃথিবীর যে রচিত ইতিহাস বা চিন্তার বিকাশ তা কত দিনের? আর আমরা তো চিন্তার পদ্ধতি দিয়ে বিশৃঙ্খলাকেই শৃঙ্খলাবদ্ধ করে যাচ্ছি। শৃঙ্খলার শৃঙ্খলাকরণই কি চিন্তা-পদ্ধতির উদ্দেশ্য? না। এবং না। বিশৃঙ্খলকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করাই যুক্তির কাজ। এটা ঠিক কোন সংগ্রামও নয়। এটা মাত্র একটা চলমানতা। ধীরে বয়ে চলে, আস্তে আস্তে গড়ে ওঠে। কোন কিছুতে এই চলমানতার কিছু আসে যায় না। বেঁচে থাকার জন্য যুক্তিই এক অধিবিদ্যা, আর বেঁচে থাকি অযৌক্তিক।

জ্ঞানের বিকাশ ভাষার সাথে সম্পর্কিত। ভাষা তাই অনেক শক্তিশালী। ভাষা দিয়ে একটা পৃথিবীর ভেতর লক্ষ পৃথিবীর জন্ম দেওয়া সম্ভব। আর ভাষা দিয়েই দাড় করানো যায় যাকিছু, প্রতিস্থাপিত আরো এক পৃথিবী। ফলে এই ভাষার কাছে সমস্ত পরাজিত। সে সর্বদা সত্য প্রকাশ করে না। আর এই ভাষা প্রতিষ্ঠিত রাজ্যে থাকে সত্য মিথ্যার অবাধ যাতায়াত। এই সত্য মিথ্যাই কবিতা বিজ্ঞানের মৌল সূত্র বোধ হয়। আর যুক্তি মিথ্যাকে নাকচ করে।

তবে কবিতা হবে নানা রকম। এর কোন নির্দিষ্ট পদ্ধতি নেই। কারণ তা কবিতা। আসলে নাকচ গ্রহন বা বর্জন শেষ কথা নয়। নানা রকম কবিতা গ্রহনের সক্ষমতা মূখ্য মনে হয় আমার কাছে। কবিতাকে যুক্তি যন্ত্রে বা বিজ্ঞানের গজ-ফিতা বা তথা কথিত দর্শনের আওয়াজ আর তত্ত্ব-চাবি দিয়ে মাপলে তাকে অবান্তর মনে হওয়া স্বাভাবিক। কবিতা আলাদা একটা নন্দন, জন্ম হয় মানুষের হাতে অদেখা মিহি-ভুবন। এটা মগজ এবং দেহ নির্ভর। এর কোন রূপ এ জগতে দেখা যায় না। সে আমার স্বপ্ন নয়, কোন এক বোধ হয়ে কাজ করে। আমরা তাকে পারি না এড়াতে।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ রাত ১:৫১
১৩৯ বার পঠিত
৮টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আরাকানে 'স্বাধীন মুসলিম রাজ্য' প্রস্তাব কতটা বাস্তবসম্মত ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১১:১২


বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামী সম্প্রতি একটি ‘স্বাধীন মুসলিম রাজ্য’ গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে, যা আসলে হাস্যকর এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতি, মিয়ানমারের সামরিক জান্তা, আরাকান আর্মি , এবং চীনের ভূ-রাজনীতির ব্যাপারে সম্পূর্ণ অজ্ঞতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

১০০ টা নমরুদ আর ১০০ টা ফেরাউন এক হলেও একজন হাসিনার সমান নৃশংস হওয়া সম্ভব ছিলো না!!

লিখেছেন তানভির জুমার, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১২:৫২

সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর জন্য কবর খুঁড়তে হয়েছিলো ২ টা।
একটা না।
ফাঁসির ৪ ঘন্টা আগেও সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী জানতেন না, আজকেই তাকে যেতে হবে।
ফ্যামিলি যখন শেষবারের মতো দেখা করতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিলিস্তিন নিয়ে এতো লাফালাফির কি আছে?

লিখেছেন অপলক , ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১:১০

ফিলিস্তিনে গত ৩ বছরে মারা গেছে এখন পর্যন্ত মাত্র ৫১ হাজার। বাংলাদেশে ১৯৭১এ মাত্র ৯মাসে মারা গেছে ৩ লক্ষ, যদিও শেখ মুজিব বলেছিল, ৩০ লক্ষ।
কোথায় ৫১ হাজার কোথায় ৩০ লক্ষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিরোনামহীন ...

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১১:১৯





****
আরো দেখতে চাইলে ভেতরে আসেন ...







...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুগে-গুজবে বাংগালী....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১২:২৩

হুজুগে-গুজবে বাংগালী....

"হুজুগে-গুজবে বাংগালী"- বলে আমাদের একটা দুর্নাম প্রতিষ্ঠিত হয়ে গিয়েছে। গুজব আর হুজুগ যমজ ভাই।
গুজব বা হুজুগের সবকিছু মানুষ কিনতে পারে না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দ্যোতনা দেয় অন্ধ বিশ্বাস।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×