রাত ৪টা পার হয়ে গেছে অথচ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন থেমে চলছে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ; ইট-পাটকেলের জবাবে টিয়ার শেল । অনেকদিন পর আজ নির্ঘুম কাটবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের । তা কতদিন হবে ?? নিকট অতীতে এমন প্রতিবাদ হয়েছে ২৩ জুলাই শামসুন্নাহার হল আন্দোলন ২০০২ এবং তারপর হুমায়ন আজাদ স্যার জংগীদের দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার পর এমন অবস্থা হয়েছিল । আর আওয়ামী লীগ আমলে নারী নির্য়াতন নিয়ে আন্দোলন হয়েছিল ।
একেবার সাধারণ শিক্ষার্থীরা একাত্ম হয়ে এমন আন্দোলন বহুদিন দেখেনি এ ক্যাম্পাস । ১৯৯০ এ স্বৈরাচারী আন্দোলনের পর এমন একাত্ম হয়নি আনেকদিন । তবু সে আন্দোলন ছিল জাতীয় আন্দোলন । তখন পুলিশ কিংবা নিরাপত্তাকর্মীরা এমন নির্লজ্জভাবে হামলা করেনি ।
তবে অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে আজকের পুলিশী হামলার প্রচণ্ডতা-ভয়বহতা-বর্বরতা । সবসময় পুলিশ নিয়ে অভিযোগ ছিল পুলিশকে সবসময় রাজনৈতিক সরকার গুলো ব্যবহার করছে । কিন্তু নির্দলীয় এ সরকারের আমলে তবে পুলিশ কার স্বার্থ রক্ষায় এমন যুদ্ধাংদেহী আচারণ করছে ।
ঘটনার সূত্রপাত একজন ননকমিশনড সৈনিকের উদ্ধত আচারণ এবং সাধারণ শিক্ষার্থীকে ধরে নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে খেলার মাঠে আশ্রয়প্রাপ্ত (!) সেনা ক্যাম্প এ নির্যাতন করে । তার প্রতিবাদ করায় এমন নির্লজ্জ হামলা । শত শত শিক্ষার্থী আহত এবং এদের মাঝ কয়েকজনের অবস্থা আশংকজনক ।
অন্য এক সূত্রে জানা গেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে লোক প্রশাসন ও সাংবাদিকতা বিভাগের আন্তবিভাগ খেলা দেখের সময় এক সেনা সদসের এক ছাত্রীকে মন্তব্যের জের ধরে ঘটনার সূত্রপাত ।
হায়রে কি বিচিত্র দেশ । অন্যায়ের প্রতিবাদ এর কি প্রতিশোধ । এতদিন দেখা পুলিশকে ব্যবহার করত রাজনৈতিক সরকার গুলো । এবার সেনাসমর্ধিত সরকার সেনাসদস্যদের অন্যায়কে সমর্থন করে নিরীহ শিক্ষার্থীদের উপর কাপুরুষচিত বর্বর হামলা চালালো এবং পুলিশ সেই হাতের পুতুল । তবে রাজনৈতিক এবং নিরপেক্ষ সরকারের মধ্যে কি ব্যবধান রইল ?
সেনাসদস্যদের এমন আচরণ-ব্যবহার নতুন নয় । সম্প্রতি জাতিসংঘের শান্তি মিশনে অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকেও এমন অভিযোগ এসেছে ।
আইয়ুব-ইয়াহিয়ার প্রেতাত্মার প্রতিনিধিতকারী এই বাহিনী স্বাধীনতার পর নাম পাল্টিয়েছে শুধু , সেই নতুন বোতলে পুরোনো মাল । ১৯৭৫ সালে মুক্তিযুদ্ধের স্তম্ভকে আঘাত করার পর একেএকে যে দুই-চার জন মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী কর্মকর্তা ছিল তাদের নিধন করে একবারে প্রেতাৎমাদের যোগ্য উৎসূরি হয়েছে । তারা সবসময়ই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারীদের সাথে বিমাতা সূলভ আচারণ করেছে ।
বর্তমান সরকারঃ সাধারণের পেষন এবং সেনাবাহিনী আর জামাতের তোষন ছাড়া আর বাকি যা করছে সব কি আই ওয়াশ ?? অবস্থা দৃষ্টে কিন্তু তাই দাড়ায় ।
পুলিশের এমন বেপওয়ারা আচারণের পিছনে সেনাবাহিনীর কি প্রত্যক্ষ মদদ নেই ?? সেনা চীফ স্টাফ জালালীর হেয়ালি পূর্ণ উদ্ধত মন্তব্য : ছাত্রছাত্রীরা ইমোশনাল হওয়ায় এমন ঘটনা ঘটে । এবং সেনা সদস্যদের অন্যায়কে পাশ কাটানোর চেষ্টা আমাদের হতবাক করে দেয় । বরং পুলিশ-শিক্ষার্থীরা দোষী কি না সে বিষয়ে তদন্তে তার আগ্রহই বেশী ।
নিদর্লীয় সরকার কেন দলীয় সরকারের মতন আচারণ করছে ?? তাহলে এ সরকারের পিছনে কারা ? সেনাবাহিনী?? সেনাবাহিনী কেন একটি বিশেষ দলের প্রতি ভ্রাতা সুলভ আচারণ করছে??আর সেনাবাহিনী তবে কেন জামাতের আজন্মের আক্রোশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর ক্ষেপা??
এমন হাজারো প্রশ্নের জন্ম হচ্ছে দিন কে দিন । তবে যাই হোকনা কেন এ সরকারের লক্ষ্য, কোন অশুভ স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তিকে সরকারে বসানোর চেষ্টা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা হতে দেবে না । তেমনি কোন সেনা শাসনো ?
বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিনিধিতমূলক এ সরকারের আর কত জনবিরোধী কার্যকলাপ সহ্য করবে মানুষ ??
তবে সব কিছুর আগে সেনা সদস্যদের বিচার, বিশ্বিদ্যালয় থেকে সেনা ক্যাম্প, পুলিশী পাহাড়া প্রত্যাহার করতে হবে । আর হাটু বাহিনী কে আদবকায়দা শেখার জন্য বাধ্যতামূলক প্রশিক্ষন দিতে হবে । জনগনের টাকায় হিংস্র মানবতা বিরোধী বর্বর কোন বাহিনী আমাদের দরকার নেই ।