আবারো ফিরে এলাম ছবি ব্লগ নিয়ে। চলতি পথে অনেক রকম মানুষের সাথে দেখা হয়। কিছু পরিচিত এবং কিছু অপরিচিত। আজকে কিছু পরিচিত মুখের অভিব্যক্তি আপনাদের দেখাব। এই অভিব্যক্তির কেতাবী ফটোগ্রাফীক নাম হলো পোট্রেট। এক একটা মানুষ যেন এক একটা গল্প। আমি সাধারন মানুষ। সাধারন একটি সনি সাইবার শট দিয়ে প্রায় সব গুলো ছবিই তোলা। তবে আমি ভাগ্যবান আমার চোখ সাধারন হলেও আমার ক্যামেরাটির দেখার ক্ষমতা বেশ ভালো। আমাদের মাঝে মিল হলো আমরা দুজনেই খুবই সাধারন।

চলুন তাহলে ছবিগুলো দেখি।
১।
এখানে দুটো ফুলের ছবি। একটি ফুল আর একটি ফুলকে ধরে পরম আদরে দাঁড়িয়ে আছে। চোখে মুখে দুজনেরই স্নিগ্ধতা ফুটে উঠেছে।
২।
সদ্য আচার চুরি করে হাতে ধরা খাওয়ার পর অভিব্যক্তি। হাসিতে দুষ্টামী, লজ্জা সবই দেখা যাচ্ছে।
৩।
মহেশখালীর জেলেপল্লীর শিশুরা। হাসো তো দেখি? বলা মাত্র এমন প্রানখোলা হাসি শিশুরা ছাড়া আর কেউ দিতে পারে কি? উল্লেখ্য এই ছবিটি এসএলআর দিয়ে তোলা।
৪।
এই যেমন দেখুন না, ইনি শত চেষ্টা করেও হাসতে পারছেন না।
৫।
আচ্ছা এই ভদ্রলোকের মন খারাপ কেন? কারন তিনি নিজের বিয়ের অনুষ্ঠানে বসে আছেন আর মাত্রই কবুল বলেছেন। আহা! স্বাধীনতা!!
৬।
একজন বম পুরুষ। যিনি কিনা আবার বিয়ের জন্য পাত্রী খুঁজছেন। বম তরুনরা বিয়ের সময় এলে কানে ফুল গুজে ঘুরে বেড়ান। যদিও এটা তার দ্বিতীয় বিবাহ! জিজ্ঞেস করলাম, বিয়ে করতে কেমন লাগে? তিনি একগাল হেসে বললেন, 'দামম, দামম'। বম ভাষায় এর মানে হলো, 'ভালো ভালো'
৭।
সামনে এগুতেই দেখা গেল এই বম মহিলার সাথে। বম সমাজে মহিলারা যদি বিয়ে করতে চায় তাহলে কানে পাতা গুজে ঘুরে। একবার ভাবলাম পিছিয়ে গিয়ে ঐ বম পুরুষ আর এই মহিলাকে পরিচয় করিয়ে দিই। কিন্তু শুনলাম, ভদ্রমহিলা নাকি ইতিমধ্যে অন্য একজনকে কথা দিয়েছেন। আমার আর ঘটকালী করা হলো না।

৮।
যারা বগালেকে গিয়েছেন, তারা এই ভদ্রলোককে চেনার কথা। বগালেক পাড়ে যে গ্রাম আছে, তিনি সেই গ্রামের কারবারী। সামান্য একটা বেনসন উপহার দিয়েছিলাম। আর তাতেই এই খুশি। শহরে পোলাপাইনদের এক প্যাকেট বেনসন দিয়েও এই হাসি পাওয়া যাবে না।

৯।
সামনে এগুতেই দেখা হল, কারবারী সাহেবের আসল কারবারীর সাথে। মানে ভদ্রলোকের স্ত্রীর সাথে। উনাকেও সিগারেট দিতে যাচ্ছিলাম। কিন্তু শহুরে সিগারেট দেখে খানিকটা বিরক্ত হয়ে নিজের পাইপ ধরালেন। আর বম ভাষায় কি যেন বিড়বিড় করে বললেন। আমি নিশ্চিত, সেই বিড়বিড়ানির অর্থ ছিল, পোলাপাইন, এক্কেরে পোলাপাইন। আমি লজ্জিত হাসি হেসে সামনে এগুলাম।
১০।
প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের বেড়ে উঠার কালের সাক্ষী। আমার সব মামা,খালা আম্মা এবং আমাদের ভাইবোনরা সবাই ইনার কোলের খেলে বড় হয়েছি। দীর্ঘ ৬৫ বছর তিনি আমাদের বাড়িতে কাজ করেছেন। এখন উনার বয়স ৯২ বছর। উনার ছবি তোলার দারুন শখ।
১১।
এই বৃদ্ধা ঘুর্নিঝড় আইলাতে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে একজন। সাহায্যের আশায় সেই সকাল থেকে অপেক্ষা করছেন।

১২।
প্রাক গোসল পূর্বক অসুর-ভীমের লড়াই।

১৩।
স্বপ্নযাত্রা!

১৪।
আলো ছায়ার খেলা-১
১৫।
আলো ছায়ার খেলা -২
দুটো ছোট্ট প্রানীর ভালোবাসা - একটা ছোট্ট ছবি গল্প
চলতি পথে দুটো ছোট্ট বাচ্চা কুকুরের সাথে দেখা। ছবি তুলতে গেলেই কাছে চলে আসে। তাদের খেলাধুলা নিয়ে ছোট্ট একটা গল্প। ভেবেছিলাম এই গল্পের নাম দিব, চলতি পথে দুটো বাচ্চা রাজাকার। পরে ভাবলাম এত কিউট দুটো বাচ্চা কুকুরের জন্য এই শিরোনাম অপমানজনক হবে। তাই এই শিরোনাম পরিত্যাগ করলাম। ভাবতে অবাক লাগে কতখানি ঘৃনা বুকে ধারন করলে একজন সাধারন মানুষ রাজাকারদের সাথে কুকুরেরও তুলনা করতে চায় না।

১৬।
বড় ভাইকে লক্ষ্য করছে।
১৭।
হাত বাড়িতে দিতেই জিহ্বা দিতে চেটে দিতে চাইল।
১৮।
ছবি তুলছি বুঝতে পেরেই, দেখুন না কি পোজ দিচ্ছে। কি ভালোবাসা!
১৯।
আচমকা কি যে হল! পারিবারিক শাসন না থাকলে যে কেউ বিগড়ে যেতে পারে - এই কথা প্রানীদের ক্ষেত্রেও সত্য বলিয়া প্রমানিত হইল।
এই পর্যায়ে এসে আর ছবি তোলার কিছু রইল না। তাই গল্প এইখানেই শেষ।

ধৈর্য ধরে এতক্ষন ছবি গুলো দেখার জন্য আগেই ধন্যবাদ দিয়ে রাখছি।

সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মে, ২০১৪ ভোর ৬:৩৭