বাংলায় এই ফুলের নামঃ মহুয়া
অন্যান্য স্থানীয় নামঃIndian Butter Tree, South Indian Mahua
বৈজ্ঞানিক নামঃ Madhuca longifolia var. latifolia
পরিবারঃ Sapotaceae (mahua family)
অন্যান্য প্রজাতিঃ Madhuca indica, Madhuca latifolia
মহুয়া মধ্যম থেকে বৃহৎ আকারের একটি বৃক্ষ। এই গাছ ২০ মিটার পর্যন্ত উচু হতে পারে। এর গুড়ি তুলনামুলক ভাবে ছোট এবং শীর্ষদেশ গোলাকার ও বিস্তৃত। এই বৃক্ষের শিকড়গুলি ছড়ানো এবং তার বেশী অংশ মাটির উপরে থাকে। এর গায়ে লম্বালম্বি ফাটল থাকে। এর কাঠ শক্ত থেকে অতি শক্ত হয় এবং বিস্তৃত অংশে কোমল কাঠ থাকে। সাধারণতঃ কাঠের রং হয় লালচে বাদামী। এর প্রতি ঘনফুট কাঠের গড় ওজন ২৫০ কিলোগ্রাম পর্যন্ত হয়।
এর ফুলগুলি মাংসল, হালকা ধূসর রং এর এবং গাছে যখন সম্পূর্ণ ফুল ফোটে তখন ফুল থেকে আকর্ষনীয় মিষ্টি সুগন্ধ বের হয়। এর ফল হয় ডিম্বকৃতি। জুন থেকে জুলাই মাসের মধ্য এর পরিপক্ক বীজ পাওয়া যায়।এই গাছের বৃদ্ধিতে আলোর প্রয়োজনীয়তা খুব বেশী ছায়াতে এর বৃদ্ধি প্রয় বন্ধ হয়ে যায়। মহুয়া গাছ খুব ধীরে বড় হয়।
ল্যাটিফোলিয়া প্রজাতির মহুয়া বাংলাদেম সহ ভারতীয় উপমহাদেশের সর্বত্র দেখতে পাওয়া যায়। বাংলাদেশে আরেকটি প্রজাতি হলো Madhuca indica । এই গাছ বহু ধরনের মাটিতে জন্মে তবে বেলে মাটিতে ভালো জন্মে পলিমাটিতেও এই গাছ বেশ ভালো হয়। এই গাছ খরা প্রতিরোধক। বাংলাদেশে এই গাছ বেশিরভাগ দিনাজপুর ও মধুপুর অঞ্চলে দেখতে পাওয়া যায়। আবাদি বৃক্ষ হিসাবে মহুয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ গাছ।
মহুয়া ফুলে প্রচুর পরিমান শর্করা, খনিজ দ্রব্য ভিটামিন ও ক্যালসিয়াম রয়েছে। এই ফুল চালের সাথে রান্না করলে এর পুষ্টিমান বৃদ্ধিপায়। আখের পরই মহুয়া ফুল মদ ও সিরকা তৈরীর গুরুত্বপূর্ণ উৎস। এটা গবাদি পশুর খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করা যায়। এই ফুল ও ফল উপজাতি লোকেরা ঐতিহ্যবাহী খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করে। এর ফলে ২০% থেকে ৫০% ফ্যাটি অয়েল থাকে বলে সাবান প্রস্তুতের কাজে ব্যবহার করা যায়। মহুয়া বীজের খৈল সার হিসাবে ব্যবহার করা যায়। অনেকের ধারণা মহুয়া খৈল পোড়ানো ধূয়া সাপ ও পোকামাকড় তাড়াতে পারে। মহুয়া তৈলের প্রলেপ ত্বকের রোগ নিরাময়, বাত, মাথাব্যাথা, জোলাপ ও অর্শ রোগের ওষধ হিসাবে ব্যবহার করা হয়। এর বীচি থেক আঠা পাওয়া যায়। এর তুষ সক্রিয় কার্বন তৈরীর কাজেও ব্যবহার করা হয়।
সূত্র - ইন্টারনেট
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মার্চ, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৪৭