somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মাঈনউদ্দিন মইনুল
উন্নয়ন ও মানবাধিকার কর্মী। শিশুর শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের অধিকার এবং নারীর অর্থনৈতিক স্বাবলম্বীতার জন্য কাজ করি। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, রাজনীতি ইত্যাদি বিষয়ে কৌতূহলী।

Inner Peace অন্তরের শান্তি

২২ শে নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মানুষের আত্মশক্তির প্রমাণ পাওয়া যায়, অন্যের আক্রমণে তার প্রতিক্রিয়া বা স্বাভাবিক থাকার দক্ষতা দেখে। দুর্বলচিত্তের ব্যক্তিরা ব্যক্তিগত আক্রমণের শিকার হয়ে নিজেদেরকে স্বাভাবিক রাখতে পারেন না। প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে নিজের অন্তরের শান্তি হারিয়ে ফেলেন। ফলে তিনি যা করেন, তাতে আর আগের মতো প্রাণ পাওয়া যায় না। তাছাড়া আক্রান্ত ব্যক্তিটি যদি হয়ে থাকেন কোন জনহিতৈষী, তবে তো কোন কথাই নেই। মহাত্মা গান্ধীর জীবনী এবং তার একটি প্রামাণ্যচিত্রে দেখেছি, প্রতিপক্ষের আক্রমণকে কীভাবে স্মিতহাস্যে অতিক্রম করে যেতেন। অন্যের যেকোন প্রকার আক্রমণকে যথাযথভাবে মোকাবেলা বা বিষয়টি থেকে নিজেকে ছাড়িযে নিতে না পারলে, নিজেরই সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়।


অন্তরের শান্তি না থাকলে, মানুষ যে নিজের কার্যকারীতা হারায় তার একটি সাম্প্রতিক দৃষ্টান্ত পেলাম।একজন খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ, যার প্রতিটি কথায় শক্তি পাওয়া যেতো; যার প্রতিটি বক্তব্য আমাদের জন্য প্রণিধানযোগ্য, উদ্ধৃতিযোগ্য ছিলো - তার কথাগুলো আজ কত বিষাক্ত হয়ে যাচ্ছে। সবকিছুকে তিনি আর ইতিবাচক হিসেবে জনগণের সামনে প্রতিষ্ঠিত করতে পারছেন না। কারণ তিনি ব্যক্তিগত জীবনে এখন আর সন্তুষ্ট নন।


সন্তুষ্ট থাকার পথে সবচেয়ে বড় বাধাটি হলো, অন্যের প্রতি রাগ বা অসন্তুষ্টি বা ঈর্ষা। নিজের স্ত্রী আর নিজের ভাইবোন থেকে শুরু করে বন্ধু বা সহকর্মী পর্যন্ত, প্রতিদিন কত মানুষের সাথে আমাদের পথ চলা! মানুষের জঙ্গলে বাস করে, মানুষকে এড়িয়ে চলতে চাই। “কুমিরের সাথে ঝগড়া করে জলে বাস করা যায় না” - প্রবাদটি আমরা বেশ ভালো বুঝি, কিন্তু মানুষের সাথে ঝগড়া করে অবলীলায় ‘স্থলে’ বাস করে চলেছি! পানিতে চলার জন্য সাঁতার শিখি, স্থলে চলার জন্য গাড়িতে ওঠি - মানুষের মধ্যে বাস করার জন্য আমরা কোন উপায় অবলম্বন করি না, তা কি হয়?


মনস্তাত্ত্বিক দার্শনিকেরা বলেন, সকল রোগই মন দিয়ে প্রবেশ করে, মনই হলো সকল রোগের উৎপত্তিস্থল। অশান্ত মস্তিষ্কে কখনও ভালো পরিকল্পনা আসে না। অন্তরে অস্থিরতা নিয়ে জীবনকে ভালো পথে পরিচালনা দেওয়া যায় না। চীনারা মার্শাল আর্টকে সুস্থ জীবনের উপায় হিসেবে দেখে। দেহ মন আত্মাকে তারা অন্তরের শান্তি বা inner peace দিয়ে একত্রিত করার চেষ্টা করে। একটি শান্ত মনই পারে সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নিতে। অনেকে বলেন সুস্থ দেহে সুস্থ মন, এটি ঠিক। কিন্তু সুস্থ মনে সুস্থ দেহ - প্রথমত এই কথাটিকে বিশ্বাস করতে হবে। মনের ভেতর কামনা লালসা জিঘাংসা আর পরশ্রীকাতরতা রেখে দিয়ে ব্যায়াম করলে আর ঔষুধ খেলে কোনই লাভ হয় না।


“যা হবার তা হবেই, যা হয়েছে তা হবারই কথা ছিলো - সৃষ্টিকর্তা তোমায় ধন্যবাদ।” আমার এক দূরবর্তী বন্ধুর দাদি একথাটি জপে তার জীবন শেষ করেছেন। সমগ্র জীবন দিয়ে তিনি দেখেছেন, যা হবার তা হবেই আর যা হয়েছে তা হবারই কথা ছিলো। তিনি সকল অবস্থায় সৃষ্টিকর্তাকে কৃতজ্ঞতা জানাতে ভুলতেন না। বন্ধুর ওই দাদিটি একশো পাঁচ বছর বেঁচেছিলেন পৃথিবীর পূর্বপ্রান্তের একটি দেশে। মাঝে মাঝে ভাবি, প্রকৃতিতে দৃষ্টি দিলে কত চিহ্ন পাওয়া যায় একটি সিস্টেমের, কত প্রমাণ পাওয়া যায় একজন সিস্টেম এনালিস্টের, কত আকৃতি দেখা যায় একজন কারিগরের - তবু কেন কৃতজ্ঞ হয় না এই অন্তর! তবু কেন শান্ত হয় না দুরন্ত আত্মাটি?


Inner Peace জোর করে আনানো যায় না, এটি আসে অন্যের সাথে আমার সহাবস্থানের অভ্যাস থেকে। পার্শ্ববর্তি মানুষগুলোর সাথে, অথবা যাদের সাথে বিভিন্নভাবে যোগাযোগ হয় - তাদের সাথে একটি স্বাস্থ্যসম্মত সম্পর্ক থেকেই আসে অন্তরের শান্তি। এর সাথে অর্থ বা শক্তির কোন সম্পর্ক নেই।



[ শান্তির সন্ধান করতে গিয়ে কিছু তথ্যকণা ]


------------------------------------------------------------------------
আমার ‘সাদামাটা’ জীবন দর্শনগুলো:
ক)) জীবন ও মৃত্যুর অচেনা বন্ধন
খ)) কৃষক ও ছাগলের গল্প
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:১৫
৩২টি মন্তব্য ৩২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×