“জীবন এবং মৃত্যু - এগুলো খুব সুন্দর এবং মধুর কোনও বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে আছে। তবে কীভাবে তা আমি জানি না।” কথাগুলো বলেছেন মার্কিন অভিনেত্রী ও গায়িকা গ্লোরিয়া সোয়ানসন। মৃত্যু নিয়ে মানুষ যেমন কৌতূহলী, তেমনই অনাগ্রহী। নিশ্চিত দুর্দশা নিয়ে মানুষ বেঁচে থাকতে চায়, তবু অনিশ্চিত স্বর্গসুখের জন্য মৃত্যুকে বরণ করতে চায় না। যদিও বুদ্ধ বলেছেন, “বিচক্ষণতার সাথে জীবন যাপন করলে মৃত্যুকে ভয় পাবার কোনই কারণ নেই।” কঠিন শর্ত! কেমন ‘বিচক্ষণতা’ তা তো পরিষ্কার কেউ জানে না।
মৃত্যু ও মৃত্যু পরবর্তি জীবন নিয়ে মানবজাতির রয়েছে সুপ্রাচীন আগ্রহ। মৃত্যুর পরে কী হবে এবিষয়ে অনেক তাত্ত্বিক মত প্রচলিত থাকলেও মৃত্যুর সময় কেমন লাগে, এ নিয়ে মৃতের আত্মীয়স্বজনেরা অনেক আলোচনা পর্যালোচনা করে থাকেন। অনেকে সেগুলো নিয়ে বিগত জীবনের চিত্র খুঁজে পান। অনেকে তা ভুলে যান।
মৃত্যু-পূর্ব অভিজ্ঞতাকে মার্কিন বিজ্ঞানী *কেনেথ রিং পাঁচটি পর্বে ভাগ করেছেন ১) শান্তি ও সন্তুষ্টি, ২) দেহের বিচ্ছিন্নতা, ৩) অন্ধকারে প্রবেশ, ৪) আলোর আবির্ভাব, ৫) আলোতে প্রবেশ। তিনি বলেন, ৬০% মানুষ প্রথম পর্বের অভিজ্ঞতা উপলব্ধি করতে পারে এবং মাত্র ১০% মানুষ মৃত্যুকালে পঞ্চম পর্ব, অর্থাৎ আলোতে প্রবেশের অভিজ্ঞতা বুঝতে পারে। এসব হলো বিজ্ঞানের কথা।
মানুষ সাধারণত মৃত্যুবরণ করে তিন ভাবে: অসুস্থতা বা দুর্ঘটনায় (দৈবাৎ), আত্মহত্যায় এবং মৃত্যুদণ্ডে। মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্তে একজন মৃত্যু পথযাত্রী কী করে এবং কী বলে, এবিষয়ে মানুষের কৌহূহলের শেষ নেই। এবিষয়ে প্রখ্যাত ব্যক্তিদের শেষ উক্তি নিয়ে একটি অনুসন্ধান চালিয়ে বেশ মজার তথ্য পেয়েছি। পরবর্তি কোন পর্বে মজার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করার ইচ্ছা আছে।
লেখক, রাজনীতিক এবং বিপ্লবী – একেক ব্যক্তিত্ব একেকভাবে মৃত্যুকে গ্রহণ করেছেন। শেষ বাক্যের মাধ্যমে মৃত্যু সম্পর্কে তাদের তাৎক্ষণিক অভিজ্ঞতা রেখে গেছেন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য। মৃত্যু সম্পর্কে নিজেদের পূর্ব-প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে জীবন সম্পর্কেও গুরুত্বপূর্ণ দর্শন দিয়ে গেছেন তারা। এগুলো দার্শনিকদের চিন্তা থেকে আলাদা হলেও তা আকর্ষণীয় এবং চিন্তা-জাগানিয়া। সকল কথার শেষ কথা হলো, কে শুনে কার কথা! অথবা বলা যায় ....না শুনে ধর্মের কাহিনী!
[বিষয়ভিত্তিক ভাগ করা হয়েছে। তৃতীয় পর্বে শেষ হবে।]
-------------------------------
*কেনেথ রিং ১৯৮০, নিউইয়র্ক: “লাইফ এট ডেথ: আ সাইয়েন্টেফিক ইনভেস্টিগেশন অভ নিয়ার ডেথ এক্সপিরিয়েন্স” পৃষ্ঠা ৪০।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ ভোর ৬:২২