somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশ্বজিতের বেশিরভাগ আঘাত তেমন গুরুতর ছিলনা

২১ শে ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিশ্বজিতের মৃত্য ছিল দুসপ্তাহ টক অব দা কান্ট্রী।
ছাত্রলীগের কতিপয় এন্টিপিকেটারের হাতে নির্মম ভাবে নিহত হয়েছিল বিশ্বজিত!
বিশ্বজিতের বেশিরভাগ আঘাত তেমন গুরুতর ছিলনা। পোষ্টমর্টেম রিপোর্টে এ ব্যাপারটি সমর্থিত হয়েছে। কিছু পত্রিকার রিপোর্টে গুরুতর বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।
মিটফোর্ড হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের পোস্টমর্টেম রিপোর্টের নথিপত্র অনুসন্ধান করে দেখা গেছে।
বিশ্বজিৎ দাসের ময়না তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করেছেন ডা. মাকসুদুর রহমান। রিপোর্ট নম্বর ৪৬৭/১২। রিপোর্ট তৈরির তারিখ ১৫ই ডিসেম্বর/২০১২। এই মৃত্যুকে স্পষ্টভাবে HOMICIDE - মানে 'হত্যাকান্ড' বলা হয়েছে,

রিপোর্টে উল্লেখ করেছেন, পিঠের ডান পাশে ৩ ইঞ্চি দৈর্ঘ্য ও দেড় ইঞ্চ প্রস্থের একটি ছুরি (চাপাতি) জাতীয় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বাম পা থেঁতলে গেছে। মৃত্যুর কারণ অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ। তার দেহে ২৩টি আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়, এর একটি আঘাত ছিল গুরুতর, প্রায় ৩ইঞ্চি গভীর ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আঘাতে তার বগলের নীচে জখমের ফলে তাঁর শরীরের একটি বড় ধমনী কাটা পরে। এই আঘাতেই রক্তক্ষরনে সে মারা যায়।

অতচ বেশীরভাগ পত্রিকা লেখে
"ময়নাতদন্ত রিপোর্টে বিশ্বজিতের দেহে কোন চাপাতির আঘাত নেই"

ইত্তেফাক লেখে
বিশ্বজিতের শরীরে কোন কোপের চিহ্ন নেই!

এর নাম সাংবাদিকতা! দেশে আন্ডার মেট্রিক সাংবাদিক যে বেড়ে গেছে এটাই তার প্রমান।
সাংবাদিক হয়েও জানেন না পোস্ট মর্টেম কি জিনিস! এই রিপোর্টে কি কি থাকে!
ময়নাতদন্ত ও ইনজুরিনোট নেয়ার সময় কয়েকটা টেকনিক্যাল জিনিষ বিবেচনা করা হয়। যেমন -
আঘাতের সংখ্যা,
আঘাত গুলো কোথায়,
ক্ষতস্থান কতটা গভীর,
ইনজুরি সৃষ্টিতে কি ধরনের অস্ত্র ব্যবহার হয়েছে?
অর্থাৎ আগ্নেয়াস্ত্রের গুলি জাতীয় না ছুরি জাতীয়। ধারালো না ভোতা, কত ইঞ্চি গভীর খত এর সঙ্গে লিখবেন কোন ধমনী বা হাড় কাটা পড়েছে কি না ইত্যাদি।

ময়নাতদন্তকারি ডাক্তারের চোখের সামনেও যদি ঘটনাটি ঘটে থাকে তারপরও তিনি রিপোর্টে সেই অস্ত্রের নাম (চাপাতি, রামদাও, বন্দুক বা পিস্তল) লিখতে পারেন না। লিখবেন বুলেটের আঘাত, বা ধারালো বা ভোতা অস্ত্রের আঘাত।

কতিপয় জার্নালিষ্ট হামলে পড়ছে, এমন করে লেখছে যে...... মানুষের মনে হয়, চাপাতির কোপের কথা না লিখে খুনীদের সেভ করার চেষ্টা করছে দলিয় ডাক্তার! আশ্চর্য! তারা কি জানেনা যেহেতু আক্রান্ত ব্যক্তি মারা গেছে ক্ষতস্থানের ব্যাপকাতা দেখে শাস্তির পরিমান নির্নয় হওয়ার কারন নেই।

যেভাবে বিশ্বজিত আক্রান্ত হয়ে মারা পড়লো
দ্বিতীয় দিন হরতালে শিবিরের চোরাগুপ্তা হামলা ঠেকানোর জন্য অন্যান্ন পয়েন্টের মত ভিক্টরিয়া পার্ক অঞ্চলে জবি ছাত্রলিগের কিছু ছাত্র লাঠিসোটা নিয়ে সেখানে মোতায়েন ছিল, হঠাৎ এক শিবির পিকেটার জটলার সামনে একটি ককটেল ছুড়ে দৌড়ে গলির ভেতর ছুটে পালাতে থাকে। ছাত্রলিগের গুন্ডারা ধর ধর বলে গলির ভেতর ছুটে যায়, হতভাগ্য বিশ্বজিত সেই গলিতে হাটছিল, হঠাৎ ধর ধর চিৎকার শুনে সেও ভয়ে দৌড় দেয়, মারমুখি জটলাটি বিশ্বজিতকে বোমাবাজ ভেবে পিটুনি শুরু করে দেয়, একজনের হাতে চাপাতি ছিল, সম্মিলিত আঘাতে রক্তাক্ত হয়ে যায় বিশ্বজিতের শার্ট, এতে দ্রুত রক্তক্ষরন হতে থাকে। বিশ্বজিত পিটুনি খেতে খেতে দোতালা থেকে নিচেও নামে। আপাত দৃষ্টিতে এইসব আঘাত মোটেও গুরুতর ছিল না, কারন সে একবারও লুটিয়ে নিথর হয়ে পরেনি। হামলাকারিরা চলে গেলে পর অনেক্ষন রক্তক্ষরনে দুর্বল হয়ে যাওয়ার পর সে বসে পরে পানি চেয়েছিল, একজন একগ্লাস পানি এনে দিয়েছিল। এর পর সঙ্গা হারায়।
সেখানে প্রায় ২০ জন সাংবাদিক ও ৩০ জন ফটোসাংবাদিক ছিলেন। হামলাকারিরা চলে যাওয়ার পরও এই সাংবাদিক নামের মানুষ! রা তাকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যাবস্থা করেন নি। রক্তদান তো দুরের কথা। সাংবাদিকদের সাথে মাইক্রবাস ও অগনিত মটরসাইকেল ছিল। একটি মটর সাইকেলে খুব কাছের ন্যাসানাল হাসপাতালে নিতে পারতো, বা না পারলে অন্তত রিক্সাচালকের সাথে যেয়ে হাসপাতালে ডাক্তারকে বলে রক্ত দেয়ার ব্যাবস্থা করতে পারতো। তারা বিশ্বজিতকে ফেলে রেখে চলে যায় ভিডিও গুলো কার আগে টেলিকাস্ট করবে!
অনেক্ষন পড়ে থাকার পর এক দয়ালু রিক্সা চালক তাকে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যায়। এতে ৪০ মি লাগে, হাসপাতালে আধা ঘন্টা ফেলে রাখা হয়, কারন ইমারজেন্সিতে কোন ডাক্তার নেই। বিশ্বজিত তখনো জীবিত। এরপর ডাক্তার এলে রিক্সাওয়ালাকে সেলাইন ও রক্ত কিনে আনতে বলা হয়, রিক্সাওয়ালার কাছে অল্প টাকা ছিল। সে সুধু একটা সেলাইন কিনে আনে। হাসপাতাল কতৃপক্ষ রক্ত দেয়ার কোন ব্যাবস্থা না করায় কিচ্ছুক্ষন পর হতভাগ্য বিশ্বজিত বিনা চিকিৎসায়ই মারা যায়।
রিক্সাচালকের বক্তব্য বিভিন্ন চ্যানেলে দেখানো হয়েছিল।

রিক্সা চালকের সাথে দুএকজন সাংবাদিক থাকলে বিশ্বজিতকে দ্রুত রক্ত দিয়ে বাচানো সম্ভব ছিল।

আমার দেখা মাত্র তিনটি পত্রিকা ময়নাতদন্তের বিবরন সঠিক ভাবে ছেপেছে।
মানব জমিন
বাংলাদেশ প্রতিদিন
সমকাল
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মে, ২০১৩ বিকাল ৫:২১
৫টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭



আমাদের ব্রেইন বা মস্তিষ্ক কিভাবে কাজ করে লেখাটি সে বিষয়ে। এখানে এক শিম্পাঞ্জির কথা উদাহরণ হিসেবে টেনেছি মাত্র।

ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

×