আমাদের জ্ঞান কি সীমিত, না অসীম? যদি আমরা অসীম না হই, তাহলে আমাদের জ্ঞান আসলেই কি সত্যিকার অর্থে অসীম হতে পারে? যুক্তিবিদ্যা কী বলে? আমাদের জ্ঞান যদি সসীম হয় তাহলে দর্শনের এই কালো বিড়াল অস্তিত্বহীন নয়। অতএব কোন না কোন দিন এটির গ্রেফতার অবশ্যম্ভাবী, কক্ষ যতেই অন্ধকারাচ্ছন্ন হোক না কেন। যদি আমরা এভাবে সব জ্ঞান পেয়ে যাই, তাহলে আর কি বাকী থাকে ঘটবার? মৃত্যু। মানব জাতির সমাপ্তি। জ্ঞানের ক্ষেত্রে অতএব, কোনটি? সীমিত, বা অসীম? (অসীম শব্দটির মধ্যে কেমন আধাত্ম-আধাত্ম ফ্লেভার আসে না? উপায়?)
বিশ্বাস হলো প্রমাণ ছাড়া কোন কিছুকে গ্রহন করা। প্রমান চাইতে গেলেই প্রশ্নকে গ্রহন করতে হবে। প্রশ্নকে এক পর্যায়ে থামিয়ে দেয়া ও যুক্তিছাড়াই বিশ্বাসকে জ্ঞান হিসাবে গ্রহন করা বা করতে বাধ্য করা হলো অন্ধ-বিশ্বাস। এসব আমরা জানি। কিন্তু যা আমরা জানি না তা হলো -
জ্ঞানের জগতে যে কোন প্রশ্ন করা যায়, কিন্তু সকল প্রশ্নের প্রমানভিত্তিক উত্তর পাওয়া যায় না। যে সব প্রশ্নের (প্রত্যক্ষ ও ব্যক্তিগত অর্থে) উত্তর পাওয়া সম্ভব হয় না সে ক্ষেত্রে আমরা যুক্তির (অবশ্য প্রাপ্ত তথ্যভিত্তিক) উপর নির্ভর করে জ্ঞান নির্মাণ করি।
সকল প্রশ্ন করা যায়, বা করতে পারা উচিত, কিন্তু সকল প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায় না; এবং উপরের আলোচনা অনুযায়ী সকল প্রশ্নের উত্তর পাওয়া অনুচিত! (আর কোন প্রশ্ন না থাকলে মৃত্যুছাড়া গত্যন্তর নাই)
কেমন ‘উত্তর’ সঠিক উত্তর? যে ‘উত্তরে’র পরে সে বিষয়ে আর নতুন কোন প্রশ্ন সৃষ্টি হবে না। কৃত প্রশ্নকে উত্তর হিসাবে ঘুরিয়ে-প্যাঁচিয়ে সেট করা হলো ‘বেগিং দ্যা কোশ্চেন’ বিভ্রান্তি। সুতরাং যে কোন প্রশ্নের সঠিক উত্তর হবে জানার তৃষনা নিবারণকারী। তেমন উত্তর কী পেয়েছেন? যদি পেয়ে থাকেন, ভেবেছেন কি, আপনার প্রাপ্ত উত্তর-এর পেছনে আরো সম্ভাব্য প্রশ্ন এসে পড়ে কি-না? কোন পরবর্তী প্রশ্ন সৃষ্টি করবেনা - এমন উত্তর আদৌ কি পাওয়া সম্ভব বা উচিত?
তাহলে কি ব্যাপারটা এই দাড়ালো যে, সকল প্রশ্নের উত্তর পেতে হবে বা পাওয়া যাবে - এটি একটা অন্ধ-বিশ্বাস?
আমার মতেঃ প্রশ্নের ব্যাপারে কোন সীমা টানা যাবে না, কিন্তু উত্তর পাওয়ার ব্যাপারে আমাদের সীমাবদ্ধতাকে মানতে হবে। অবশ্য অ-প্রাপ্ত উত্তরের ব্যাপারে আমাদেরকে যথাসম্ভব-প্রমাণ তথা যুক্তির উপর থাকতে হবে।যা হতে পারে ভিন্ন ভিন্ন।
যে সব বিষয়ে প্রত্যক্ষ ও ব্যক্তিগত প্রমান দেয়া সম্ভব নয়, সেসব বিষয়ে অন্যদের প্রদত্ত/গৃহীত যুক্তি ও তৎনির্ভর জ্ঞানকে শ্রদ্ধা করাই শ্রেয়। নীতি হিসাবে সম্ভবতঃ এটিকে মানবতাবাদ বা জ্ঞানতাত্ত্বিক মানবতাবাদ বলা যেতে পারে।