
বর্তমান

পূর্বে
২১ শতকে নগর ব্যবস্থাপনায় নতুন দৃষ্টিভঙ্গির সূচনা করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। সিউলে CheongGyeChon Restoration প্রকল্পের অধীনে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (দোতলা সড়ক) ভেঙ্গে লেক তৈরি করা হয়েছে। এই প্রকল্প শেষে ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ৩ অক্টোবর ২০০৫ পর্যন্ত উৎসব উদযাপনের মধ্য দিয়ে প্রাকৃতিক পানিপ্রবাহ পুনরায় চালু হওয়ায় পরিবেশ ও সংস্কৃতিগত দিক থেকে শহরটির পুনর্জন্ম হয়েছে। এর লেকটির উপর দিয়ে পথচারী ও সাইক্লিস্টদের পারাপারের জন্য ২২টি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মূল লক্ষ্য ছিল উপরিভাগের পানির ব্যবহার, বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও পরিবেশ সংরক্ষণ করা। এছাড়া দূর্ঘটনা প্রতিরোধ এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ভাঙ্গার অন্যতম কারণ। উল্লেখ্য ১৯৬০ এর দশকে জলাধারের উপর কংক্রীটের আচ্ছাদন দেয়া হয়। কিন্তু এর উপর নির্মিত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কারণে ১৯৮০ এর দশকে দূষণ এবং দূর্ঘটনা ভীষণভাবে বেড়ে যায়।
ঢাকায় যানজট নিরসনে দোতলা সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। অথচ ৪০/৫০ বছর পূর্বের শুরু হওয়া এসব অবকাঠামো থেকে অনেক শহরেই দূর্ভোগ থেকে মুক্তির জন্য ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে। আর আমাদের মতো দেশগুলির দিকে এসব জঞ্জাল তৈরির জন্য উৎসাহিত করছে গাড়ি কোম্পানী ও কনস্ট্রাকশন কোম্পানীগুলি যাদের দালাল হিসেবে কাজ করছে ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, আইএমএম ও এডিবির মতো প্রতিষ্ঠান। এর সাথে যুক্ত রয়েছে এদেশীয় কিছু দোসর। দোতলা সড়কের মতো প্রাইভেট কার নির্ভর অবকাঠামো নির্মাণ করে ঢাকার যানজট নিরসন করা সম্ভব নয়। দোতলা সড়কে ওঠানামার স্থানে কি রকম জট তৈরি হবে আর প্রভাবে সারা শহরে যানজটের অবস্থা কি ভয়াবহ হবে। তা একটু ভালোভাবে চিন্তা করলে সহজেই অনুমান করা যায়। বরং ঢাকার যানজট নিরসনে প্রাইভেট কারের নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি পাবলিক বাস, হাঁটা, সাইকেল, রিকশাসহ গণপরিবহন ব্যবস্থাকে আরো কার্যকর করতে উদ্যোগ গ্রহণ জরুরী।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে আগস্ট, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:১১