শুরুতেই একটা ডিস্ক্লেইমার দিয়ে রাখি যে আমি ফটোগ্রাফার না

মেয়েদের নিয়েও পর্ব আছে। মেয়েদের পোজ নিয়ে জানতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন।
শুরুতেই একটা টিপ্সঃ ক্যামেরা নয়, আপনার কম্পোজিশনের উপর নির্ভর করে আপনার ছবি কতখানি ভালো হবে। ধরুন আপনার কাছে হয়তো ক্যানন মার্ক থ্রী আছে কিন্তু আপনার শট কম্পোজিশন খুব দূর্বল, তার মানে আপনি ভালো ফটোগ্রাফার হতে পারবেন না।
সাইড টিপ্সঃ প্রচুর ছবি তুলুন। এই লেখা পড়ছেন? ঝটপট কিছু ছবি তুলে ফেলুনতো এই লেখার।

রিয়ার টিপ্সঃ আপনার মডেল বা সাবজেক্টকে ইনভলভ করুন। তাকে বোঝান আপনি কি চাচ্ছেন। আপনি কিভাবে ফটো তুলতে চাচ্ছেন সেটা জানতে পারলে সাবজেক্ট কনফিডেন্টলি পোজ দিবে এবং আপনার কাজ সহজ হবে।
চলুন ঝটপট দেখে নেই কিছু বেসিক পোজ যেগুলো ফলো করে আপনি আপনার বন্ধু বান্ধব বা দুলাভাই-ভাসুরদের তুখোড় ছবি তুলতে পারবেন।
১ - পোর্ট্রেইট এর জন্য খুবই সিম্পল একটা পোজ। বুকের উপর হাত বেঁধে দাঁড়ানো সাব্জেক্ট এর শুধু উপরের অংশটুকু শুট করবেন। সাব্জেক্ট এর বাম পাশের শোল্ডার একটূ ভেতরে আর ডান পাশের শোল্ডার কিছুটা সামনে এসে একটা ডায়াগনাল লুক দিলেও দুই কাধ সমান্তরাল আছে। পেট চেক করেন এইবার, ভুড়ি থাকলে দম নিয়া ভিতরে ঢুকায়া ফেলতে বলেন

২ - হাত ভাজ করে রেখে পুরো বডির ছবিও তোলা যায় এবং এটাও কার্যকরী। আপনি সাব্জেক্টকে এক পায়ের উপর ভড় দিয়ে দাঁড়িয়ে অন্য পা সামনে এনে এভাবে দাঁড়াতে বলতে পারেন। তবে খেয়াল রাখবেন সাব্জেক্ট যেনো দুই পায়ের উপরি ভর না দেয়; দিলে তাকে বাজে দেখাবে।
৩- এইটা একটা চমৎকার স্টাইল যেটা একটু এদিক সেদিক হলেই বাজে দেখায়

৪ - চেংড়া পোলাপানের শার্ট এর কোন প্যান্টে গুজে আরেক কোনা ঝুলিয়ে রেখে এভাবে তুলতে পারেন। হেভী পার্ট; অসাম সালা

৫ - উপরের পোজটার আরেক রুপ। গায়ের জ্যাকেট শোল্ডারের উপর ফেলে এক পা সামনে নিয়ে এভাবে দাঁড়াতে পারে। অন্য হাতের বুড়ো আঙ্গুল পকেটে বা বেল্টের ভেতর গুজে রাখতে পারে। শুধু স্যান্ড গেঞ্জি পায়ে থাকলে খেয়াল রাখবেন মডেল জানি পেশীবহুল হয়; চেংড়া চুংড়ারা স্যান্ড গেঞ্জী পড়লে আরো চেংড়া লাগে।
৬ - বসে ছবি তুলতে চান? এই স্টাইল টা ফলো করতে পারেন। এক পায়ের উপর আরেক পা উঠিয়ে বুকের উপর হাত ভাঁজ করে। সাবজেক্ট যেনো রিলাক্সড থাকে আর কিছুটা হাই এঙ্গেল থেকে তুললে বেটার আসে।
৭ - ফুল বডির ছবি তোলার ক্ষেত্রে আপনি আপনার বন্ধুকে এভাবে দেয়ালের দিকে পিঠ দিয়ে দাড়াতে বলতে পারেন। এভাবে দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে এবং পা ভাজ করে দাড়ানোটা খুবই কমন হলেো বেশ কার্যকরী পোজ। তিনটে জিনিস খেয়াল রাখবেনঃ
এক - আপনার বন্ধু যেনো ৪৫ ডিগ্রীতে মুখ করে থাকে অর্থাৎ সে সোজাও তাকাবেনা এবং আপনার দিকেও তাকাবেনা, এর মাঝামাঝি...
দুই- আপনি যেহেতু তার ফুল বডি নিচ্ছেন (৩ ভাগের এক ভাগ নিলেও) মাথার উপর রুম রাখবেন এবং ফ্রেমের ডানে রুম রাখবেন (আপনি যদি সাব্জেক্টের ডান পাশ থেকে ছবি তুলেন তাহলে বামে রুম রাখবেন)... এই রুম রাখার ব্যাপারটা নির্ভর করছে আপনার উপর... এখানে কোন রুল নেই তবে খেয়াল রাখবেন আপনার সাব্জেক্ট যেনো রুল অফ থার্ড এর কোন একটা বিন্দু তে থাকে ...
তিন - ব্যাকগ্রাউন্ড অতীব সৌন্দর্য না হলে আনার প্রয়োজন নেই; ডিএসএলআর ইউজ করলে ব্লার করে দেবার সুযোগ তো আছেই...
৮ - দেয়ালে ঠেক দিয়ে দাড়ানোর আরেকটা স্টাইল। ক্যাজুয়াল এবং ফর্মাল দুই ড্রেসেই সাবজেক্টকে ভাল দেখাবে। আই লেভেল ওর লো অ্যাঙ্গেল...
৯ - পেশাজীবী মানুষের ছবি তুললে তার হাতে এমন কিছু ধরায়া দিতে পারেন যাতে তার পেশা সম্পর্কে ধারনা পাওয়া যায়। যেমন ধরেন, ফাইল, ল্যাপটপ, রিভলভার, স্টেথোস্কোপ অথবা ক্যামেরা

১০ - পেশাজীবী মডেল কে তার ডেস্ক এর উপর পশ্চাতদেশ দিয়া এইভাবে বসায়া দিতে পারেন। তার পশ্চাতদেশের এক অংশ ডেস্কে থাকবে আর কি

=> বিরাট বড় টিপাস্টিপসঃ কখনোই নারী বা মেয়েদের স্টাইলে ছেলেদের (পুরুষদের) ছবি তুলবেন না। বাচ্চা ছেলেদের আর মেয়েদের স্টাইল একটা আরেকটাকে ফলো করলেও, পুরুষদের বেলায় নারীদের স্টাইল খাটেনা। পুরুষরা নিজেদের ছবিতে একটু কুল দেখতে চায়। স্মার্টনেস কিভাবে ফুটিয়ে তোলা যাবে সেটা নির্ভর করবে আপনার উপর। প্রচুর পোজ আছে, প্র্যাক্টিস করুন। একি সাবজেক্ট এর কয়েকটা পোজে ছবি তুলুন (যদি আত্মবিশ্বাস কম থাকে) ... ছেলেদের শোল্ডার ফ্রেমে সমান রাখার চেষ্টা করুন যেনো তাদের পেশীবহুল মনে হয় (অবশ্যই যাদের কিছুটা পেশী আছে আর কি)... আর হাত রাখতে পারেন ৪ জায়গায়।
ক) কোমড়ে
খ) বুকে ভাজ করে
গ) পকেটে
ঘ) পাশে ঝুলায়া ফালায়া রেখে
খ এবং গ সবচেয়ে বেটার। তারপরেও আপনি চাইলে একি পোজে হাত ছেড়ে দিয়ে বা বেঁধে রেখে তুলে দেখতে পারেন।
==> ছুডোমুডো টিপ্সঃ আপনার সাবজেক্ট কে বলুন সে যেনো তার চিবুক একটু ঝুলিয়ে দেয়। মানে মুখ চেপে যেনো না থাকে।
====> আরো টিপ্সঃ বেশীরভাগ ক্ষেত্রে আপনার সাবজেক্টের চোখের ডিরেকশন আর নাকের ডিরেকশন যেনো একি দিকে থাকে।
======> মাইরা লা টাইপ টিপ্সঃ সাবজেক্ট খাড়ায়া থাকুক আর বইসা থাকুক, তার পিঠ যেনো স্ট্রেইট থাকে। কুজো পুরুষ দেখতে খারাপ লাগে।
========> আরেকটা কথাঃ ক্লাস শেষে টাকা দিয়া বাড়ি যাইয়েন

জানা প্রশ্নঃ রুল অফ থার্ড কি?
জানা উত্তরঃ আপনার ফ্রেম কে আনুভুমিক (horizontal) ভাবে সমান ৩ভাগ ও লম্বিক (vertical) ভাবে সমান ৩ ভাগ করার পর লাইনগুলো একটা আরেকটাকে যেসব জায়গায় ছেদ করেছে, সে ছেদনের আশে পাশে সাব্জেক্ট কে রেখে ছবি তুললে ছবি সাধারনত ভালো দেখায়। এখানে দেখুন
বাই দ্যা ওয়ে, রুল অফ থার্ড মানতেই হবে এমন কোন কথা নেই। আপনি এই রুল ভাঙ্গতেই পারেন। এটা জাস্ট একটা ফর্মুলা ধরতে পারেন।
ডাউনলোড ডাউনলোড
পুরুষদের ভিন্ন ভিন্ন ৫০০ পোজ দেখতে এবং জানতে এখান থেকে এই পিডিএফ টা ডাউনলোড করে নিতে পারেন। (৪১ মেগাবাইট)
~~~~ অনেক বড় হয়ে যাবে ভেবে ১০টা পোজ দিয়া এই পর্ব শেষ করলাম... আরো ১০/১২ টা পোজ দিয়া পরের পর্ব দিয়া দিবো শিগ্রী... এছাড়া মেয়েদের ও বাচ্চাদের পোজ নিয়াও পোস্ট আসতে পারে (নাও আসতে পারে)


* কেউ যদি দাবী করে থাকেন যে প্রফেশন্যাল কাজে এসব পোজ খুবই ফালতু দেখায় বা আপনি আরো অনেক পোজ জানেন, তাহলে দয়া করে আমাদের সাথে শেয়ার করবেন। আর এই পোস্টটির শুরুতেই বলে রেখেছি এটা অ্যামেচারদের জন্য


* লেখাটি ডিজিটাল ফটোগ্রাফী স্কুল ও আইহার্টফেইস এর সাহায্যে লেখা।
* ফিচার ইমেইজের মডেল আমাদের বাড়ি তোলার সময়কার কন্সট্রাকশন কাজে জড়িত এক ছেলের।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৬:১০