শহীদুল জহির বাংলাদেশের তরুন ওপন্যাসিকদের মধ্যে প্রতিশ্রুতি শীল। তার প্রথম উপন্যাস 'জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা' সেভাবে পাঠক মনে আগ্রহ না জাগালেও তার দ্্বীতিয় বই'সে রাতে পূণির্মা ছিল' পড়ে বুঝা গিয়েছিল যে শহিদুল জহিরের শক্তিমত্তা। তার এ উপন্যাসটা পড়লে খুব সহজেই। গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজের কথা মনে পড়ে। তিনি বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে এটা স্বীকারও করেছেন। এটা এমন একটা বই যেটা পড়ার সাথে সাথে পাঠক তার অন্য বইগুলোও পড়ার জন্য আগ্রহী হবে। এর পর তার একটা গল্পের বই বের হয়"ডলু নদীর হাওয়া' নামে। এর গল্পগুলো আগেই বিভিন্ন সাময়ীকিতে পড়ে ফেলেছি। অনেক দিন থেকে মাওলা ব্রাদার্স থেকে তার বইটির এ্যড দেয়া হচ্ছিল। হয়ত তিনি তখন তা লিখছিলেন। গেল বছর অবশেষে বইটা বের হয়। খুব আগ্রহ ছিল। আর কামনা করছিলাম বাংলাদেশে তরুনদের মধ্যে উপন্যাস লেখার আগ্রহ কম। শহীদুলা জহির যেন তা আরো এগিয়ে নিয়ে যান। এই বইটি পড়ে প্রথমে আমার যা মনে হয়েছে। তাহল একজন শিল্পীর স্বাধীনতা প্রসঙ্গে। এটা ঠিক যে যেমন খুশী লেখার স্বাধীনতা একজন লেখকের আছে। এটা কোন এক ভূতের গলি এলাকা যা তার আরো অনেক গল্পে থাকে। গাড়ীচোর, এবং সাতকানিয়া অভিবাসী এক লোক যে ট্রাকে করে অলৌকিক ভাবে সেখানে গিয়ে পড়ে। আসলে ঘঠনা তেমন কিছুই না একটা উপন্যাস। তবে তার ভাষার কারনে বইটা ভাল লাগে। তিনি যতেচ্ছভাবে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষাটাকে ব্যবহার করেছেন। এটা একটা সাহসী উদ্দ্যোগ। আসলে বাংলাদেশের অন্যন্য অঞ্চলের আঞ্চলিক ভাষা সাহিত্যে ব্যপক ভাবে ব্যবহার হলেও চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষা সাহিত্যে ব্যবহার করা যায় কিনা সেটা ভাবাচ্ছিল। কিন্তু শহীদুল জহির প্রমাণ করলো তা স্বচ্ছন্দে ব্যবহার করা চলে। তবে বাংলাদেশের উপন্যাসিকদের ব্যাপারে একটা নিন্দা আছে যে তাদের প্রথম বইই তাদের শ্রেষ্ট বই। সেক্ষেত্রে শহীদুল জহিরের সে রাতে পূর্ণিমা ছিল' বইটাই এ পযনর্্ত শ্রেষ্ট বই বলে চিহ্নিত করা চলে।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০