১৫ই জুন দুপুর ২:৪২ আপডেট
নর পিশাচ হাসান সাঈদ গ্রেফতার হয়েছে
২১শেজুন দুপুর ১:২০ আপডেট
আনুষ্ঠানিক সংবাদ সন্মেলনে রুমানা পাষন্ড হাসান সাঈদের বিচার দাবী করেন। বিয়ের পর থেকে নির্যাতন করলেও প্রতিবার হাসান সাঈদ তার কাছে ক্ষমা চাইতো, রুমানা তাকে বিশ্বাস করতেন ও প্রচন্ড ভালোবাসতেন বলে সব সহ্য করে সংসার করেছেন।
নরপশু হাসান সাঈদের দেয়া পরকীয়ার অভিযোগ সম্পর্কে রুমানা জানান, হাসান সাঈদের মুখের কথার বাইরে এর কোন অস্তিত্ব নেই।
শোকে মূহ্যমান রুমানা ও তাঁর পিতা রুমানার দৃষ্টি শক্তি ফিরে আসার জন্য সকলের দোয়া প্রার্থী।
১৭ই জুন দুপুর ১: ৪৬ আপডেট
"নরপিশাচ হাসান সাঈদ রিমান্ডে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে যে সে পরিকল্পিত ভাবে রুমানাকে হত্যা করতে চেষ্টা করেছিলো। পরিকল্পণার অংশ হিসেবে নৃশংসতার দিন শাশুড়ি সহ বাড়ির অন্যদের কৌশলে বাইরে পাঠিয়ে রুমানাকে বাসায় রেখেছিলো।
বিয়ের পর থেকে রুমানার প্রতি করা শারিরিক ও মানসিক নির্যাতনের কথাও সে স্বীকার করে।
নিজের পাপিষ্ঠ ও কলুষিত জীবনের ঘানি টেনে জেলে পচতে চায়না বলেও সে জানায়, এবং তাকে তার পাপের শাস্তি স্বরুপ ক্রসফায়ারে গুলি করে হত্যা করার অনুরোধ জানায়।"
(যারা এই নরপশুর বানানো “ফেসবুকে প্রেমিকের নাম মুছে দেবার গলপ” বিশ্বাস করে আস্ফালন করছিলো, বিভিন্ন ভাবে বিষয়টি নিয়ে রুমানাকে এবং নরপপশু সাঈদের বিচার চাওয়া মানুষদের কটাক্ষ, বিদ্রুপ, দোষারোপ ও ব্যঙ্গ করে এবং কুলাঙ্গার সাঈদের পক্ষে মন্তব্য ও পোস্ট দিয়েছে তাদেরকে কিছুই বলার নেই)
পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ ও শান্তির আশ্রয় মায়ের কোল ঘেঁষে পাঁচ বছরের ছোট্ট শিশু আনুশা যখন আঁকাআঁকি শিখছিলো, হঠাৎ এক হিংস্র জন্তূ পিছন থেকে চুলের মুঠি ধরে উপরে ফেলে মায়ের দুচোখ। অবোধ শিশুর সামনে তার মায়ের নাক কামড়ে চিবিয়ে খেয়ে ফেলে ক্ষুধার্ত নেকড়ের মতো। এখানেই তার নারকীয় উল্লাসের শেষ নয়, আতংকিত হতভম্ব নিষ্পাপ শিশুটি দেখে কি ভীষণ নির্মমভাবে প্রহরিত হচ্ছে তার রক্তাক্ত ক্ষত বিক্ষত মা, এক বুনো বরাহ কামড়ে কামড়ে দগদগে করে তুলছে তার স্নেহময়ী মা কে, তার নিরাপত্তা আর চিরশান্তির আশ্রয় স্থান মায়ের শরীর। অবোধ আনুশা দেখে তাদের রক্ষক পিতা হঠাৎ কেমন পশুর মতো খুবলে খুবলে খেতে চাইছে তার মার শরীর।
পাশবিক নির্যাতনের শিকার এই মায়ের অপরাধ তিনি তাঁর পেশার সর্বোচ্চ ডিগ্রী অর্জন করতে চেয়েছিলেন এবং তার যোগ্যতা অর্জন করেছিলেন।
আমাদের দেশের আনাচে কানাচে প্রতিনিয়ত শত শত নারী নির্যাতিতা হচ্ছেন, নররূপী একপাল হিংস্র হায়নার থাবায় রক্তাক্ত হচ্ছেন, কেউ বা অকালে হারায় প্রাণ। তাঁদের সকলের কথা আমরা জানিনা... তারপরও যখন এমন নির্যাতন, নারী নিগ্রহের খবর আমাদের কানে এসে পৌঁছে, অনেকে বলেন- “নারীর স্বনির্ভরতার অভাব, অশিক্ষার কারনে নরপশুদের এমন স্পর্ধা!”
দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ স্বনামধন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সন্মানিতা শিক্ষিকা যখন শুধু স্বনির্ভর হবার অপরাধে, উচ্চ্তর শিক্ষা লাভ করার যোগ্য হবার অপরাধে এমন পাশবিক নির্যাতনের শিকার হন.. তখন নারী নির্যাতনের কারন আর অশিক্ষা বা পরনির্ভশীলতার দোহাই দেয়া যায়না।
সদা হাস্যময়ী এই প্রাণোচ্ছল মুখের পিছে লুকিয়ে আছে কি ভীষণ কান্না আর এক নির্যাতিতার দীর্ঘদিনের আর্তনাদ।
একজন রুমানা মনজুরের উপর এই নারকীয় নির্যাতনের প্রতিবাদে মুখর অধিকাংশ পুরুষ, অথচ এর মাঝেও দেখা যাবে এমন একটি বিষয়ে প্রশ্ন তোলার মতো, রুমানাকে দায়ী করতে চাইবার মতো দু চারজন মানুষ রূপী অদ্ভুত জীবের অস্তিত্ব! আমাদের সমাজে ভালো মানুষের সংখ্যা বেশি তারপরও মানুষরূপী এসব অদ্ভুত জীবের রক্তচক্ষু নিয়ে দাঁত খিঁচিয়ে হুংকারের ঘৃন্য শব্দটি এতো বেশি প্রকট যে একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান, একটি উচ্চশিক্ষিতা স্বনর্ভির নারী রুমানা মনজুরকেও এসব হুংকারের ভয়ে দিনের দিনের পর সয়ে যেতে হয় নপুংসক স্বামীর শারিরিক নির্যাতন! এই নির্যাতন থেকে মুক্তি পেলে সামাজিক অবমাননা আর নির্যাতনের শিকার হতে হবে, শিশু কন্যা আনুশার ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পরবে এই শংকায় নরপশু স্বামীর সাথে বিচ্ছেদ না ঘটিয়ে সয়ে যান দিনের পর দিন।
আজ রুমানার এই পরিনতির জন্য ঘৃন্য নরপশুটি সহ তার আশ্রয়দাতা এবং আমাদের সমাজের সেসব রক্তচক্ষুধারী সকলেই দায়ী।
দেশের আইন, আমাদের ধর্ম যেখানে স্বামীর সাথে বনিবনা না হলে স্ত্রীকে তালাক দেবার অধিকার দেয়, সেখানে একপাল অদ্ভুত জীবের ভয়ে কতো নারীর জীবন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, কতো শত কোমলমতি শিশুর নির্মল শৈশব কলুষিত হচ্ছে হিংস্রতা আর পারিবারিক জীবনের কুৎসিত একটি রূপের মাঝে।
কি অদ্ভুত আমাদের দেশ!
কি অদ্ভুত আমাদের আইন, নিয়ম কানুন!
এই কিছুদিন পূর্বে রাজপথে রক্তপাত, মারামারি হলো.... “নারী পুরুষের সম অধিকার” আইনপেশের পক্ষে সরকারের কঠোর অবস্থানের জন্য! এই অবস্থান যে কতোখানি অন্তঃস্বারশূণ্য লোকদেখানো প্রহসন মাত্র তা রুমানা মনজুরের মতো ঘটনগুলো চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।
রুমানার প্রতি এমন নারকীয় তান্ডবের পরও তাঁর পাশন্ড ঘাতককে গ্রেফ্তার করা হয়নি, ৫ই জুন ঘটনা ঘটলেও তা ১৩ই জুন একটি ট্যাবলয়েড পত্রিকায়(ধন্যবাদ সেই “মানব জমিন” পত্রিকাকে, যাদের কারনে আজ সারা দেশে ও মিডিয়ায় এমন নৃশংস নির্যাতনের কথা প্রচার পেয়েছে) ঠাঁই পায় মাত্র!! শুধু তাই নয়, বুয়েট থেকে পাশ করা “হাসান সাঈদ” নাম- এই পরিচয় ছাড়া এই নরপশু সম্পর্কে আর কোন তথ্য প্রচারিত হয়নি। এই সুযোগে রুমানার পরিবার ঘটনাটি আড়াল করতে চাইছে এমন বলা হচ্ছে, ঘটনায় রুমানার দায় এড়াতে আড়াল করা হচ্ছে এমন ঈঙ্গিত দিতেও কোন কোন কুলাঙ্গার পিছপা হয়নি।
কেউ ভেবে দেখেছেন শিক্ষিত একটি পরিবারের উচ্চশিক্ষিত একটি মেয়ের উপর এমন নির্যাতনের পরও ঘাতক সম্পর্কে সকল তথ্য এমন ধোঁয়াটে কেনো?
আমাদের দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে তা দিবালোকের মতোই স্পষ্ট হবার কথা।।
জ্বী.. নষ্ট রাজনীতির বিষবাস্পের কালো ছোবল!!!
একসময় ট্যাক্সি/ ক্যাব সংশ্লিষ্ট ব্যবসাকারী বর্তমানে বেকার এই কুলাঙ্গারের ছবি ১৪ ই জুনের পূর্বে প্রকাশিত হয়নি। প্রকাশ পায়নি হাজার হাজার মানুষের জীবনে দুর্ভোগ ডেকে আনা সাম্প্রতিক শেয়ার কেলেঙ্কারীতে রুমানার স্বামী নামের কুলাঙ্গারটির বড় অংকের মুনাফা লাভের কথা.. যেমন ভাবে প্রকাশ পায়নি কাকাতালীয় ভাবে “হাসান সাঈদ” নামের বন্য জন্তুটি বন ও পরিবেশ মন্ত্রী হাসান মাহমুদের ভাতিজা।।
আর এই পরিচয়ের সুবাদে পুলিশের খাতায় “নিখোঁজ” বা লাপাত্তা আসামী হয়ে সে প্রকাশ্যে হুমকী দিচ্ছে নির্যাতিতা রুমানা ও তাঁর পরিবারকে। নিজে যে দাঁতাল শূকর সে সম্পর্কে হাসান সাঈদের আত্মবিশ্বাস ছিলো বিধায় এই নপুংসক ভেবেছিলো কামড়ে কামড়ে হত্যা করবে স্ত্রী রুমানাকে, অন্ধ করতে সক্ষম হলেও হত্যায় ব্যর্থ জন্তুটি এখন ক্ষমতাসীনের নিরাপত্তা হেফাজতে বসে গুলী করে অথবা এসিডে ঝলসে হত্যা করার হুমকী দিয়ে যাচ্ছে!!
এদেশে নির্যাতিতা ধর্ষিতাদের ছবি সহ তাদের নির্যাতনের কাহিনী রসালো ভাবে প্রকাশ পেলেও নির্যাতনকারী, ধর্ষক বা হত্যাকারীদের ছবি এক অলৌকিক উপায়ে লোক চক্ষুর অন্তরালে থেকে যায়।২০০৪ সালে একপাল নরপশুর লালসা ও পৈশাচিকতার শিকার নিহত রাহেলার সুবিচারের জন্য আমরা ২০০৭ সালে সোচ্চার হতে শুরু করি, তৃণমূল পর্যায়ের হলেও রাজনৈতিক প্রভাবের কারনে রাহেলার ধর্ষকেও হত্যাকারী লিটন আজও গ্রেফ্তার হয়নি, শুধু তাই নয় সাত বছর পরও সেই কুলাঙ্গারের ছবি প্রকাশ পায়নি।
মৃত্যু শয্যায় শায়িত অবস্থায় রাহেলার সাক্ষাৎকারটির সাথে রুমানার সাক্ষাৎকারটির বড় বেশি মিল!!!
তবে রুমানার পরিনতি যেনো হতভাগী রাহেলার মতো না হয়...
আসুন, বছরের পর বছর অপেক্ষা করে নয়.. দলমত নির্বিশেষ আমরা সকলে রুমানা মনজুরের জন্য সুবিচারের দাবীতে সোচ্চার হয়ে উঠি।
ক্ষমতার দুর্গন্ধযুক্ত আড়ালে লুকিয়ে থাকা নর পিশাচ হাসান সাঈদকে চিনে রাখুন.. এই পশুটি যেকোন সময় আপনার কন্যার উপর হামলে পড়তে পারে.. এই নরপশুর পিতামাতা যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী, সুতরাং ক্ষমতার কর্দমাক্ত আসনে চড়ে কুলাঙ্গারটি সেখানেও পৌঁছে যেতে পারে... সকলে সাধ্যমতো যে যেই দেশে আছেন স্থানীয় আইনশৃংলারক্ষাকারী বাহিনীকে এই পিশাচ সম্পর্কে অবগত করুন।
রুমানার প্রাণনাশের প্রচেষ্টাকারী এই বন্য জন্তুটিকে অবিলম্বে গ্রেফ্তার করা না হলে আমরা ভুলে যাবো, হাসান মাহমুদ আমাদের দেশের মন্ত্রী, আমরা ভুলে যাবো ক্ষমতার যে নোংরা থাবা এই নরপিশাচকে রক্ষা করতে চাইছে, তারা আমার দেশের মানুষ।।
মিডিয়াতে রুমানা সংবাদ:
প্রথম আলো
বহির্বিশ্বের বিভিন্ন মিডিয়ার লিংক