somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পুরোনো সেই বিশ্বকাপের কথা

২৬ শে মে, ২০১০ বিকাল ৪:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিশ্বকাপ শুরু হতে আর মাত্র কয়েকদিন বাকী। সারা বিশ্ব বিশ্বকাপের আনন্দে মেতে উঠবে। তবে বিশ্বকাপের আগে আমি খানিকটা পেছনে ফিরে যেতে চাই।

১৯৮১ সালে আমাদের বাসায় প্রথম টেলিভিশন আসে। সেটাই তখন পাড়ার একমাত্র টিভি ।
১৯৮২ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশন প্রথম ভূউপগ্রহ কেন্দ্রের মাধ্যমে বিশ্বকাপের খেলা সরাসরি প্রচার করে।আমি তখন একেবারে শিশু কিন্তু আমার দেখা প্রথম সরাসরি বিশ্বকাপের কথা ষ্পষ্ট মনে আছে। গভীর রাতে খেলা শুরু হত। পড়ার ছেলেরা দলবেঁধে খেলা দেখতে আসত। বাসার উঠানে টিভিটাকে নিয়ে আসা হত, দর্শকেরা দুটি দলে বিভক্ত হয়ে যেত। জয়ী দল নাচতে নাচতে পরাজিতরা বিমর্ষ বদনে বাড়ী ফিরত।

সে বছর একজন খেলোয়াড়ের কথা আমার মনে পড়ে তার নাম থামাস নাকানো। ক্যামেরুনের এই খেলোয়াড় দলের গোলপোস্টের নীচে দাঁড়াতেন। তার খেলা ভালো লাগার কারণ আমি ছোটদের দলের গোলরক্ষক ছিলাম।

আমাদের টেলিভিশন ছিল সাদাকালো। কিন্তু আমার দৃষ্টিতে সেই বিশ্বকাপ ছিল সবচেয়ে রঙ্গীন।

ইতালি সেবার বিশ্বকাপ জিতেছিল। আর সেবার সেরা খেলোয়াড় হয়েছিলেন পাওলো রসি। পাড়ায় সে বার একটা শব্দ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল সেটি হলো রসি পাইলো ।

১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপ আমাদের জন্য অনেক আনন্দ বয়ে আনে। কারণ আবার সেই গ্যালারির উত্তেজনা তৈরি হয়। সে সময় আমি ফ্রান্সকে সমর্থন করতে শুরু করি। কারণ ফ্রান্সের এক খেলোয়াড়ের নাম ছিল প্লাতিনি। তার খেলা ভালো লাগত। এই বিশ্বকাপে ম্যারাডোনার যাদু দেখার সৌভাগ্য হয়। তবে ম্যারাডোনার কাছে পরাজিত হলেও ইংল্যান্ডের গোলরক্ষক পিটার শিলটনই ছিল আমার প্রিয় খেলোয়াড়।

১৯৯০ সালের বিশ্বকাপ আমার জন্য ছিল হতাশার বছর কারণ প্রচন্ড ভালো খেলেও ব্রাজিল আর্জেন্টিনার কাছে পরাজিত হয়। এই বিশ্বকাপের ফাইনালে আর্জেন্টিনা জর্মানীর কাছে পরাজিত হয়। ফাইনালের রেফারিং নিয়ে বেশ সমালোচনা হয়েছিল। বিষয়টি বাংলাদেশের আর্জেন্টাইন ভক্তদের মোটেও ভালো লাগেনি। এদের একজন রেফারি কোডেসালের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আদালতে মামলা করে দেয়।


১৯৯৪ সালের বিশ্বকাপ বাংলাদেশর জন্য এক ভিন্ন মাত্রা যোগ করে। যদিও বাংলাদেশের জনগণ ব্রাজিল বা আর্জেন্টিনাকে সমর্থণ করে, তারপরে বাংলাদেশের পাবর্ত্য চট্টগ্রামের বাস করা বৌদ্ধরা ইতালিকে সমর্থন করে। এর কারণ রবার্তো ব্যাজিও। তিনি ছিলেন ইতালির মধ্যমাঠের সেরা খেলোয়াড়। ব্যাজিও ছিল বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী। ব্যাজিও কক্সবাজারের এক বৌদ্ধ মন্দিরের সংস্কার কাজে অর্থ দান করেছিলেন।



তবে কেবল বৌদ্ধরা ব্যাজিও ইতালিকে সমর্থন করেনি। এই বিশ্বকাপে বাংলাদেশের অন্যতম এক নায়িকা ইতালিকে সমর্থন করে। তার সমর্থণের কারণ, ইতালির ফুটবলাররা ছিলেন সুদর্শণ। (ভিভা ইতালিয়া)

তবে তাদের চাওয়া পুরণ হয়নি কারণ ১৯৯৪ সালে চ্যাম্পিয়ন হয় ব্রাজিল। আর তারা চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ইতালীকে হারিয়ে।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে মে, ২০১০ বিকাল ৫:১৩
৪১৪ বার পঠিত
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

১. ২৬ শে মে, ২০১০ বিকাল ৪:৫৪

পথভ্রষ্ট বলেছেন: ৯০ বিশ্বকাপ ফাইনাল বাবার কোলে বসে দেখেছিলাম। তখন ক্লাস ফাইভে পড়ি। তারপর ৯৪ প্রায় সবগুলো। আমি ছিলাম ইটালির সাপোর্টার। সেই থেকে এখনো।

২. ২৬ শে মে, ২০১০ বিকাল ৫:১২

ইসতিয়াক এম জ্যানাস বলেছেন: ৯৮ এর আগে বিশ্বকাপ কি বুঝতাম না :D :D :D

৩. ২৬ শে মে, ২০১০ বিকাল ৫:২১

নাসিরউদ্দিন হোজ্জা বলেছেন: যে ভাবে ফুটবল বিশ্বকাপ বাংলাদেশে অর্থনীতি ও রাজনীতিতে প্রভাব ফেলে



১৯৮২ সালের বিশ্বকাপ সম্বন্ধে একটা স্মৃতি আমার মনে আছে। আমাদের মফস্বল শহরে যে পাড়ায় আমি বাস করতাম, তার কাছে একটা বস্তি ছিল। সেখানে অনেক গরীব লোক বাস করত।যাদের অনেকের পেশা ছিল চুরি করা। ফুটবল বিশ্বকাপের কারণে সেবার মানুষ রাত জেগে খেলা দেখতে শুরু করে। এর ফলে চোরদের চুরি করতে সমস্যা দেখা দেয়। একদিন স্কুল থেকে ফেরার সময় দেখি তারা সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছে, রাত জেগে খেলা দেখানো বন্ধ কর।



চোরদের জন্য বিষয়টি বেদনাদায়ক হলেও পুলিশের জন্য বিশ্বকাপ আর্শীবাদ স্বরূপ, বিশেষ করে বিশ্বকাপের খেলা যদি গভীর রাতে অনুষ্ঠিত হয়।





তবে বিশ্বকাপ ফুটবলের সেরা তারকা রাজনীতির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে দেখেছি বিশ্বকাপের পর পরই।১৯৯০ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা ফাইনালে জার্মানীর কাছে হেরে যায়। ফাইনালের এই পরাজয় ম্যারাডোনা মেনে নিতে পারেনি। মাঠে সে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। তার সাথে কেঁদে উঠে হাজার হাজার বাংলাদেশি। বাংলাদেশীদের মাঝে ম্যারাডোনার জনপ্রিয়তাকে পূঁজি করে সে সময় স্বৈরশাসকের একজন উপ-রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দেয় যে, তারা বাংলাদেশে ম্যারাডোনাকে নিয়ে আসছে। কিন্তু যখন একজন বাংলাদেশী সাংবাদিক এই তার সম্ভাব্য বাংলাদেশ যাত্রা নিয়ে প্রশ্ন করে তখন ম্যারাডোনা জানাতে চায় বাংলাদেশ কোথায়? পুরো সংবাদটি ছিল রাজনৈতিক জনপ্রিয়তা অর্জনের জন্য এক মিথ্যাচার।





আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যৌবনে চারটি বিয়ে করা কি সুন্নাত?

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ০৩ রা জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ৯:৫২

আপনি যদি বিয়ে করে সুন্নাত পালন করতে হয় তাহলে তা আপনার প্রথম স্ত্রী যদি মারা যায় তা ও আপনার বয়স ৫০ এর অধিক হলে, ত‌খন করতে পারবেন কারণ প্রথম স্ত্রী... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭২-এর স্বাধীনতার ঘোষণা পত্র ২০২৪-এর অর্জন না

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৫ ভোর ৫:৩৯


৭২-এর রক্তস্নাত সংবিধান বাতিল করে । নিজেদের আদর্শের সংবিধান রচনা করতে চায় এরা‼️বাংলাদেশের পতাকা বদলে দিতে চায়! বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত ভালো লাগেনা এদের!জাতিয় শ্লোগানে গায়ে ফোস্কা পরা প্রজন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আয়নাঘর শুধু ক্যান্টনমেন্টেই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়েও ছিল

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, আয়নাঘর শুধু ক্যান্টনমেন্টেই ছিল না। বিশ্ববিদ্যালয়, হোটেল এমনকি ব্যক্তিগত বাড়িতেও ছিল। আপনারা শুধু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুরই অন্তরে.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১১:০০

প্রতিযোগিতার এই দুনিয়ায় এখন আর কেউ নিজের মতো হতে চাই না, হতে চাই বিশ্ববরেণ্যদের মতো। শিশুকাল থেকেই শুরু হয় প্রতিযোগিতা। সব ছাত্রদের মাথায় জিপিএ ৫, গোল্ডেন পেতে হবে! সবাইকেই ডাক্তার,... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। এইচএমপিভি

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৩




করোনা মহামারির ৫ বছরের মাথায় নতুন একটি ভাইরাসের উত্থান ঘটেছে চীনে। হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস বা এইচএমপিভি নামের নতুন এই ভাইরাসটিতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে দেশটিতে।চীনের সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×