অগত্যা বাধ্য হয়েই শুরু করলাম IELTS, TOEFL আর GRE। আমেরিকা মুখ্য ছিল না, ছিল দেশ ছাড়ার তাগিদ, ভাগ্যের অন্বেষনে। চারটি দেশে যাবার সুযোগ আসল, বেছে নিলাম আমেরিকা।
কিন্তু হায়, বাস্তব এখানেও বড় কঠিন। বাবার দেয়া সারাজীবন জমানো টাকায় এক সেমিস্টারের টিউশন ফি তো ঠিকই দিলাম কিন্তু থাকা, খাওয়ার খরচ? দেশে তো মধ্যবিত্ত সচ্ছল ঘরের আদরের সন্তান ছিলাম। মা এক গ্লাস পানিটি পর্যন্ত এনে দিয়েছে, কিছুই করতে হয়নি নিজেকে, আর এখানে দিন চলবে কিভাবে থেকে সুরু করে বাথরুম পরিষ্কার পর্যন্ত নিজেকে করতে হয়। যাই হোক এক প্রফেসরকে পেলাম যার ছাত্র দরকার, কেননা তার ব্যবহার এত খারাপ যে কেউ তার কাছে থাকতে চায় না। কিন্তু আমার তো জীবন মরন সমস্যা, সুতরাং রাজী হয়ে গেলাম কাজ করতে। আমার ইচ্ছা ছিল রোবোটিক্স এ কাজ করব, কিন্তু আবারও ভাগ্যের তাগিদে শুরু করলাম কম্পিউটার এইডেড ডিজাইন এন্ড ম্যানুফেকচারিং এ, তাও আবার মাকর্া মারা এক প্রফেসরের সাথে। একেই বলে নিয়তি, কাকে কোথায় নিয়ে যায় কেউ বলতে পারে না।
দেড় বছর হতে চলল মাকে দেখিনা। সেদিন এক সহ ব্লগারের মা সংক্রান্ত পোস্ট পড়ে আর থাকতে পারলাম না ... আগামী ডিসেম্বরে হয়ত দেখব মাকে।
এত ত্যাগের পর কেউ কেউ দেশে ফিরে, শুরু করতে চায় নতুন জীবন, এত কষ্টের বিনিময়ে আশা করে একটু ভাল অবস্থান। কিন্তু সব সম্ভবের দেশে কেউ কটু কথা শোনাতে ছাড়েনা।
আমেরিকা খারাপ হতে পারে, আমিও এতে একমত। কিন্তু আমরা আমেরিকা এসে কি দোষ করলাম। লোকজন তো অন্যান্য দেশেও যায়, কষ্টেও থাকে, তাদের দিকে কেন কেউ আঙ্গুল তোলে না! যত দোষ আমেরিকা প্রবাসীর?
দয়া করে কেউ ব্যক্তিগত ভাবে নিবেন না। আমোরিকার আরো বিষয় নিয়ে লেখার ইচ্ছে রইল।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০