ব্যাপারটা বোধকরি পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা থেকে এসেছে। পুরুষরা তাদের ক্ষমতা ফলাতে ভালোবাসে। অল্প বয়সী মেয়েদের শাসন করতে সুবিধা। মেয়েদের চিন্তা ভাবনাকে mold করে তাদের সাথে যাতে তাল মেলায় সেটা নিশ্চিত করা যায়। মহানবী (সাঃ) তার চেয়ে বেশী বয়সী কাউকে বিয়ে করেছিলেন এই তথ্যটাকে তার ব্যবসায়ী বুদ্ধির চেয়ে বেশী কিছু নয় দাবী করে পুরো ব্যাপারটাকেই অগ্রাহ্য করেন পুুরুষতান্ত্রিক সমাজের লোকেরা। তাই কিশোরী মেয়েদের বিয়ে করতে একদমই বাঁধে না মাঝবয়সী কারো।
যদিও তুলনামূলক অল্প বয়সে বিয়ে করার ফলে সেসমস্ত নারীরা নিজস্ব বুদ্ধিবিহীন, সংসার সামলানোয় ব্যাস্ত, সন্তান উৎপাদনের যন্ত্র বই আর বেশী কিছু হতে পারেন না। তারপরও সঙ্গত কারনেই সেমস্ত পরিবার টিকে থাকার সম্ভাবনা বেশী থাকে। আর তাই এই অল্প বয়সী বিয়ে করার প্রথা চলে আসতে থাকে। আমি তো এযুগেই এই ধরনের লোক দেখেছি যারা অনেক শিক্ষিত হয়েও অত্যন্ত অল্প বয়সী না হলে বিয়ে করবেন না এরকম গোঁ ধরে থাকেন।
ধীরে ধীরে শিক্ষিত মানুষের মধ্যে কম ব্যবধানে বিয়ে করার প্রবনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কেননা বিয়ের নতুন মানে সবার কাছে ধরা দিচ্ছে - বিয়ে মানে শুধু একজন প্রজননক্ষম সজ্জাসঙ্গী নয়। এর মানে আরো অনেক ব্যাপক। স্ত্রী একজন জীবন সঙ্গিনী। সুখ-দুঃখ, হাসি-আনন্দ, সফলতা-বিফলতা সবকিছুতে তার রয়েছে সমান ভাগীদার হবার অধিকার। আর তাই পশ্চিমে মনের মিল থাকাটাই সবচে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হয় আর কিছু নয়।
সমবয়সীদের মাঝে বিয়ে ব্যাপারটা ইদানীং খুব ঘটছে। একই সাথে পড়াশুনা, চাকরী বাকরী করতে গিয়ে কাছাকাছি আসা, মনের মিল খুঁজে পাওয়া এবং শেষে ঘর বাঁধা এভাবে হয়ে আসছে ব্যাপারগুলো। অনেক অভিভাবক আবার মেনে নিতে পারেন না ব্যাপারটা। তখন ঘটে সমর্্পক বিচ্ছেদের মতো হৃদয়বিদারক ঘটনা।
আমি আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি, সমবয়সী স্ত্রীর কাছ থেকে সবকিছুতে যে রকম সাপোর্ট পাওয়া যায় সেরকমটা একটা অল্প বয়সী মেয়ের কাছ থেকে আশা করা মুশকিল। সবকিছুতে যে বন্ধুর মত শেয়ার করা, নিজের ভাললাগার বিষয়গুলোর সাথে একই এজগ্রুপের স্ত্রী সাথে মিল খুঁজে পাওয়া এগুলো আসলেই সম্ভব হয়না স্ত্রীর এজ গ্রুপ ভিন্ন হলে।
অবশ্য যুক্তি বুদ্ধি গড়ে ওঠা একটা মেয়ের নিজস্ব চিন্তা ভাবনাকে সম্মান করবেন এমন পুরুষ পাওয়াও সমস্যা। মেয়েরা করবে ঘরের কাজ আর পুরুষ শাসন করবে সংসার - এই ধারনা আমাদের দেশ তো বটেই এমনকি ইন্ডিয়া, চীন এসব দেশেও প্রচলিত। অনেক পুরুষ হয়ত সমবয়সী বিয়েকে খারাপ হিসেবে দেখে না। কিন্তু সেই ব্যাক্তিই যখন সমবয়সীকে বিয়ে করে তখন সব কিছুতে স্ত্রীর খবর দারী পছন্দ করে না।
অবশ্য এই সমস্ত ক্ষেত্রে বিবাহ বিচ্ছেদের সম্ভাবনা খুব বেশী থাকে। পুরুষের তুলনায় মেয়ে বেশী বুঝলে বা খবরদারী করতে চাইলে সেটা পুরুষশাশিত সমাজে বেড়ে ওঠা স্বামীর পচ্ছন্দ হয়না। এ ধরনের বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনাও খুব বিরল নয়।
কারন যাই হোক: আপনি এই সমবয়সী বা নারীর বয়স পুরুষের চেয়ে বেশী এই ধরনের বিয়ের ব্যাপারটাকে কিভাবে দেখেন?
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জুন, ২০০৬ রাত ১১:৩৬